ঢাকা, সোমবার ১৪ জুলাই ২০২৫
৩০ আষাঢ় ১৪৩২, ১৮ মহররম ১৪৪৭

ঢাকা, সোমবার ১৪ জুলাই ২০২৫
৩০ আষাঢ় ১৪৩২, ১৮ মহররম ১৪৪৭
আওয়ামী লীগকে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

নতুন মুখ নিয়ে দল পুনর্গঠন করুন

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
নতুন মুখ নিয়ে দল পুনর্গঠন করুন
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল, এম সাখাওয়াত হোসেন (অব.)

আওয়ামী লীগকে নতুন মুখ নিয়ে দল গোছানোর আহ্বান জানিয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এম সাখাওয়াত হোসেন (অব.) বলেন, লোক জড়ো করুক আর যা-ই করুক, আমি আপনাদের একটা অনুরোধ করি, এমন কিছু করবেন না যে আপনাদের (আওয়ামী লীগ) জীবন বিপন্ন হয়। এ দেশের পাবলিক এখনো আপনাদের গ্রহণ করতে আসেনি। আমি বরং মনে করি, আপনারা আপনাদের পার্টি রি-অর্গানাইজ (পুনর্গঠন) করুন। আপনারা পার্টি গোছান উইথ নিউ ফেস (নতুন মুখ নিয়ে), উইথ নিউ অঙ্গীকার এবং আশা করি, উইথ থ্রু পলিটিক্যাল পার্টি অ্যাক্ট।

গতকাল সোমবার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল (সিএমএইচ) ও সচিবালয়ে পৃথক দুই বিফ্রিংয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা এসব কথা বলেন। যাদের হাতে অবৈধ অস্ত্র আছে তাদের আগামী সাত দিনের মধ্যে (আগামী সোমবার) স্থানীয় থানায় অস্ত্র জমা দেওয়ার নির্দেশও দেন তিনি।

এম সাখাওয়াত হোসেন রাজনৈতিক দলগুলোর উদ্দেশে বলেন, দয়া করে আপনারা দেশকে অরাজকতার মধ্যে ঠেলবেন না; ইনক্লুডিং সদ্য বিদায় হওয়া পার্টি (আওয়ামী লীগ)। আপনারা পার্টি গোছান।

আপনাদের দলকে তো কেউ নিষিদ্ধ করেনি। যেকোনো দল নিষিদ্ধ করা বাজে সংস্কৃতি। আমরা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে আপনাদের সাহায্য করব।

আন্দোলনের মুখে পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে যাওয়া শেখ হাসিনার উদ্দেশে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, আপনি আসবেন, আপনার দেশ।

আপনি আসেন না কেন? নাগরিকত্ব তো যায়নি। ২১ বছর প্রধানমন্ত্রিত্ব করেছেন। আপনি স্বেচ্ছায় চলে গেছেন, কেউ তো যেতে বলেননি। স্বেচ্ছায় আসেন, ভালো থাকবেন, আবার আসবেন। আমরা সবাই আপনাকে শ্রদ্ধা করি।
কিন্তু গণ্ডগোল পাকানোর তো কোনো মানে হয় না। গণ্ডগোল পাকিয়ে তো কোনো লাভ হবে না। বরং জনগণ আরো খেপে উঠবে।

গতকাল দুপুরে সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোটের নেতাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, যারা এগুলো করছে (সংখ্যালঘুদের ওপর সহিংসতা) তাদের উদ্দেশে এবং রাজনৈতিক দলগুলোর উদ্দেশে বলছিআপনারা আপনাদের এলাকায় এগুলো (সংখ্যালঘুদের ওপর সহিংসতা) ঠিক করুন। আসনভিত্তিক যদি আমরা হিসাব নিতে থাকি, আপনারা ভালো করে জানেন আমি নতুন লোক নই। গত পাঁচ বছর আপনারা আমার সঙ্গে ছিলেন। আই উইল মেক শিওর দ্যাট কনস্টিটিউয়েন্সি...একেবারেই কোনো ইলেকশন যাতে না হয়। আমি এখনো ইনফ্লুয়েন্স রাখি ইলেকশন কমিশনে।

১৫ আগস্ট ছুটি থাকবে কি নাসাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে উপদেষ্টা বলেন, এটার বিষয়ে আমি কোনো সিদ্ধান্ত দিতে পারব না। এটা ক্যাবিনেটের কাজ। আমি ক্যাবিনেটে ওটা নিয়ে আলোচনা করব।

এর আগে গতকাল সকালে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আহত আনসার সদস্যদের দেখতে সম্মিলিত সামরিক (সিএমএইচ) হাসপাতালে যান স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা। সেখানে এক বিফ্রিংয়ে বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের অনেক অবদান আছে উল্লেখ করে এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, এটা আমরা অস্বীকার করতে পারি না। দলকে পুনর্গঠন করুন, রাজনৈতিক দলের মতো যেভাবে থাকে, নির্বাচন এলে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন, জনগণ ভোট দিলে ভোটে যাবেন।

মারামারি করে কোনো লাভ নেই উল্লেখ করে এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, এখানে আরো কিছু লোকের মৃত্যু আমরা চাই না। এরই মধ্যে ৫০০, হয়তো আরো বেশি লোক উভয় পক্ষের মারা গেছে। পুলিশের এই অবস্থা হয়েছে। আনসারের এই অবস্থা হয়েছে। আমরা যদি উসকানি দিতাম, আপনারা টিকতে পারতেন না। তাই ব্যক্তিগত স্বার্থে আপনারা এত বড় একটা দলকে নষ্ট করবেন না। এটা (আওয়ামী লীগ) আমাদের গর্ব। এটা নষ্ট করার কোনো অধিকার নেই।

প্রতিবিপ্লবের জন্য হাজার হাজার মানুষের রক্তের প্রয়োজন উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, আর কেউ যদি মনে করেন যে আবার একটা কাউন্টার রেভল্যুশন (প্রতিবিপ্লব) করে আসবেন, কাউন্টার রেভল্যুশন করতে হলে হাজার হাজার লোকের রক্তের প্রয়োজন। যদি আপনারা সেই দায়িত্ব নিতে চান, তাহলে আমার কিছু করার নেই।

কোনো রাজনৈতিক দল নয়, দেশের তরুণ প্রজন্ম এবার বিপ্ল করেছে উল্লেখ করে এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, দে হ্যাভ গিভেন দেয়ার লাইভস (তাঁরা তাঁদের জীবন দিয়েছেন), যেটা আপনারা কোনো দিন দিতে পারতেন না। পুলিশের গুলি খাওয়ার জন্য দাঁড়িয়ে আছেন। তাঁদের কোনো দুঃখ নেই। তাঁরা (তরুণ) আপনাদের (প্রতিবিপ্লবকারীদের) মোকাবেলা করবেন। অনুরোধ করছি, দয়া করে দেশকে স্বাধীন রাখুন।

তিনি আরো বলেন, যে অস্ত্র বাইরে পাওয়া যায় না, যেটা সিভিলিয়ানের হাতে যাওয়ার কথা না, পুলিশ-র‌্যাবের জন্য যে অস্ত্র, সেটা সিভিলিয়ানের হাতে কিভাবে গেল? আহত আনসার সদস্যদের বক্তব্য শুনে আমার কাছে আশ্চর্য লাগছে। পুলিশের ফায়ার (গুলি) কম লেগেছে তাদের। সিভিলিয়ান পোশাকে ৭.৬২ রাইফেলের গুলি লেগেছে। ম্যাসিভ ইনভেস্টিগেশন দরকার। এরা কারা। কাদের হাতে ৭.৬২ রাইফেল গেল। চিকিৎসকরা দেখালেন ৭.৬২ পুরো বুলেট। এটা খুবই উদ্বেগজনক।

সাখাওয়াত হোসেন বলেন, পুলিশ সদস্যদের হাতে ৭.৬২ রাইফেল আছে সেটা মেনে নিলাম, কিন্তু সিভিল পোশাকে কারা আনসার গেটের মধ্যে গিয়ে গুলি করেছে? এটা খুবই মারাত্মক। তার মানে আমরা সিভিলিয়ানকেও আর্মড করেছি। যে অস্ত্র সিভিলিয়ানের হাতে যাওয়ার কথা নয়, যে অস্ত্র পুলিশ-র‌্যাবকে অথরাইজড করা হয়েছিল, সেই অস্ত্র কিভাবে বাইরে গেল? আমি এ ধরনের স্বৈরাচার ব্যবস্থা দেখিনি।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা আরো বলেন, আহত অনেক আনসার সদস্যের কারো হাত নেই, কারো পা নেই। তাঁদের ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। শুধু ক্ষতিপূরণ নয়, তাঁদের চাকরিতেও পুনর্বহাল রাখতে হবে।

এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, আন্তর্জাতিক পর্যায়েও আমাদের সাহায্য চাইতে হবে যে এই ঘটনা কেন ঘটল বাংলাদেশে! আমি এরই মধ্যে অনুমোদন দিয়েছি। সামনে যে মিটিং হবে, সেখানে বলব যে কিভাবে, কারা হুকুমদাতা, কেন হয়েছে?

তিনি কোনো গণমাধ্যম বন্ধ করার পক্ষে নন বলেও উল্লেখ করেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা। তিনি বলেন, আমি গতকাল (রবিবার) একটা কথা বলেছি। সে জন্য দুঃখিত। রাগের মাথায় বলেছি যে আবার চাটুকারিতা করলে বন্ধ করে দেব। এটা আমার কাজ নয়।

সব পুলিশ সদস্য খারাপ নন বলেও উল্লেখ করেন এম সাখাওয়াত হোসেন। তিনি বলেন, তাঁদের উপলব্ধি হয়েছে। তাঁরা নিজেরাই এখন আগের পোশাক পরে আসতে চান না। অপরাধগুলো তাঁরা করেননি, তাঁদের দিয়ে করানো হয়েছে।

 

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

আজ রাজপথে নামছে বিএনপি

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
আজ রাজপথে নামছে বিএনপি

পুরান ঢাকার মিটফোর্ড হাসপাতালের সামনে ব্যবসায়ী লাল চাঁদ ওরফে মো. সোহাগ হত্যাকাণ্ডের অপপ্রচার ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে শান্তিপূর্ণভাবে আজ থেকে রাজপথে থাকবে বিএনপি। বিএনপি মনে করছে, এই হত্যাকাণ্ড নিয়ে জামায়াতে ইসলাম, ইসলামী আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) রাজপথ দখল করার চেষ্টা করছে বলে মনে করছে বিএনপি। এ জন্য রাজপথে বিএনপিও শক্তি ও জনসমর্থন দেখাবে।

এখন পর্যন্ত এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত কাউকে ছাড় দিচ্ছে না দলটি।

এমনকি এ ধরনের ঘটনা যাতে আর না ঘটে সে জন্য দলে শুদ্ধি অভিযান চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন দলের শীর্ষ নেতা। দলের নেতারা বলছেন, হত্যার সঙ্গে সরাসরি জড়িত দুজনকে চিহ্নিত করতে পারেনি আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী। কিন্তু বিরোধী পক্ষ একতরফাভাবে বিএনপির ওপর দায় চাপাচ্ছে। বিএনপিকে উদ্দেশ্য করে কটূক্তি করছে।
এর জবাব দিতে রাজপথে শক্তি দেখাবে দলটি। এরই অংশ হিসেবে আজ সোমবার ছাত্রদল ও ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপি এবং অন্য অঙ্গসংগঠন পৃথক শোডাউন করবে। বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী কালের কণ্ঠকে বলেন, বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠন প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করবে। জনগণ বিএনপির সঙ্গে আছে।
জনগণকে নিয়ে দেশবিরোধীদের ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করা হবে।

মাঠে নামছে ছাত্রদল : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি জানান, গোপন তৎপরতায় দীর্ঘদিন ধরে অভ্যস্ত গুপ্ত সংগঠন কর্তৃক মব সৃষ্টির অপচেষ্টা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ বিনষ্ট করা এবং সারা দেশে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির প্রতিবাদে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল আজ রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে বিক্ষোভ মিছিল করবে। গুপ্ত সংগঠন বলতে ইসলামী ছাত্রশিবির ও তাদের সহযোগী সংগঠনকে বোঝানো হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির।

ছাত্রদলের ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী, আজ দুপুর ২টায় রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে শাহবাগ পর্যন্ত বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হবে। পাশাপাশি সারা দেশের সব জেলা ও মহানগরে বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হবে।

জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব ও সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির এ কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন।

কর্মসূচির বিষয়ে ঢাবি শাখা ছাত্রদলের সভাপতি গণেশ চন্দ্র রায় সাহস বলেন, গুপ্ত সংগঠন হিসেবে সেসব সংগঠনকেই বোঝানো হয়েছে, যারা প্রকাশ্যে নিজেদের রাজনৈতিক কার্যক্রম পরিচালনার বদলে গোপনে রাজনৈতিক এজেন্ডা বাস্তবায়ন ও সহিংসতা ছড়িয়ে দেওয়ার মাধ্যমে রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে অস্থিরতা ও বিশৃঙ্খলা তৈরি করছে। গত ৫ আগস্টের পর একটি মুক্ত রাজনৈতিক পরিবেশ থাকা সত্ত্বেও তাদের এহেন গুপ্ত কার্যক্রম এ দেশের রাজনৈতিক পরিবেশকে অসহনশীল করে তুলছে এবং রাজনৈতিক বিষয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত করে তুলছে। এ রকম কুচক্রী কার্যক্রমের বিরুদ্ধেই জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল তার কর্মসূচি গ্রহণ করেছে, যেন দেশবাসীকে এসব বিভ্রান্তিকর বিষয়ে সচেতন করে তোলা যায়।

গুপ্ত সংগঠন বলতে কাদের বোঝানো হচ্ছে জানতে চাইলে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির বলেন, ছত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর যারা ক্যাম্পাসগুলোতে মব সৃষ্টি করে সাধারণ শিক্ষার্থী নামে অপ্রীতিকর পরিস্থিতি তৈরি করছে, তারাই গুপ্ত সংগঠন। ছাত্রশিবির এবং গুপ্তভাবে সংগঠন পরিচালনা করতে ছাত্রশিবিরকে যারা পৃষ্ঠপোষকতা করে, আশ্রয়-প্রশ্রয় দেয় তারা।

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

সশস্ত্র বাহিনীর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেসির মেয়াদ আরো দুই মাস বাড়ল

বিশেষ প্রতিনিধি
বিশেষ প্রতিনিধি
শেয়ার
সশস্ত্র বাহিনীর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেসির মেয়াদ আরো দুই মাস বাড়ল

বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীতে কর্মরত সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন ও এর ওপরের সমপদমর্যাদার কর্মকর্তাদের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতার মেয়াদ আরো দুই মাস (৬০ দিন) বাড়ানো হয়েছে। এ বিষয়ে গতকাল রবিবার প্রজ্ঞাপন জারি করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। এর আগে গত ১৩ মে থেকে তাঁদের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেসির ক্ষমতার মেয়াদ দুই মাস বাড়ানো হয়েছিল। সেই মেয়াদ গতকাল শেষ হয় ।

মেয়াদ বাড়ানোর আদেশে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীতে কর্মরত সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন ও এর ওপরের সমপদমর্যাদার কমিশন্ড কর্মকর্তাদের (কোস্ট গার্ড ও বিজিবিতে প্রেষণে নিয়োজিত সমপদমর্যাদার কর্মকর্তারাসহ) ‌‘দ্য কোড অব ক্রিমিনাল প্রসিডিউর, ১৮৯৮-এর ১২(১) ও ১৭ ধারা অনুযায়ী স্পেশাল এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা অর্পণ করা হলো। এর মেয়াদ হবে ১৪ মার্চ থেকে ৬০ দিন পর্যন্ত। সারা দেশে তাঁরা এই ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারবেন বলেও প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে।

প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, সেনাবাহিনীর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা ফৌজদারি কার্যবিধি-১৮৯৮-এর ৬৪, ৬৫, ৮৩, ৮৪, ৮৬, ৯৫(২), ১০০, ১০৫, ১০৭, ১০৯, ১১০, ১২৬, ১২৭, ১২৮, ১৩০, ১৩৩ ও ১৪২ ধারার অপরাধগুলো বিবেচনায় নিতে পারবেন।

প্রথমে গত বছরের ১৭ সেপ্টেম্বর সেনাবাহিনীর কমিশন্ড অফিসারদের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছিল জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। পরে ৩০ সেপ্টেম্বর প্রজ্ঞাপন সংশোধন করে বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর কমিশন্ড অফিসারদের (সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন ও এর ওপরের সমপদমর্যাদার কর্মকর্তা) এই ক্ষমতা দেওয়া হয়। অর্থাৎ শুধু সেনাবাহিনী নয়, বিমান ও নৌবাহিনীর কমিশন্ড অফিসারদেরও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা দেওয়া হয়। তখন ৬০ দিনের জন্য এই ক্ষমতা দেওয়া হয়েছিল।

সেই মেয়াদ নভেম্বরের মাঝামাঝি শেষ হয়েছিল। পরে সেই ক্ষমতার মেয়াদ কয়েক দফায় বাড়ানো হয়।

মন্তব্য

শেখ হাসিনাসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে গুমের অভিযোগ বিএনপির

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
শেখ হাসিনাসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে গুমের অভিযোগ বিএনপির

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক ও সাবেক পুলিশপ্রধান (আইজিপি)  বেনজীর আহমেদসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর কার্যালয়ে গুমের অভিযোগ দিয়েছে বিএনপি।

গতকাল রবিবার দুপুরে ভুক্তভোগীদের সঙ্গে নিয়ে এই অভিযোগ দেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির নির্বাহী সদস্য এবং তথ্য সেলের সমন্বয়ক সালাহউদ্দিন খান।

অভিযোগ তদন্ত করে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম।

২০১৯ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত গুমের ঘটনায় ১১ জন ভুক্তভোগীর নাম উল্লেখ করা হয়েছে লিখিত অভিযোগে।

তাঁরা হলেনঝালকাঠির নলছিটির মোহাম্মদ আলী খান, সাবেক যুবদল নেতা মো. জিল্লুর রহমান, আকিদুল আলী, খোরশেদ আলম, অ্যাডভোকেট আশরাফ আলী, মো. বাবুল, এনামুল, এরশাদ আলী, মো. গিয়াস উদ্দিন খান, মো. কবির উদ্দিন খান ও নজরুল ইসলাম।

অভিযোগে বলা হয়েছে, ২০১৯ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন সময় এসব ভুক্তভোগীকে অপহরণের পর আয়নাঘরে আটকে রেখে নির্যাতন করা হয়। গত বছর ৫ আগস্ট সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পলায়নের পর মোহাম্মদ আলীকে হাত ও চোখ বেঁধে পূর্বাচলের শেষ প্রান্তে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে ফেলে আসা হয়। পাঁচ বছর তিন মাস ১৩ দিন পর তিনি মুক্তি পান।

এ ঘটনায় মোহাম্মদ আলী খান বিএনপি মহাসচিবের মাধ্যমে ন্যায়বিচার চেয়ে আবেদন করেন।

তাঁর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ১১ জন ভুক্তভোগীর নাম উল্লেখ করে আবেদনটি করা হয় বলে জানান সালাহউদ্দিন খান।

সালাহউদ্দিন খান সাংবাদিকদের বলেন, ভুক্তভোগীরা শেখ হাসিনাসহ ১৬ জন এবং অজ্ঞাতপরিচয় আরো ৩০ থেকে ৩৫ জনের নাম উল্লেখ করে ন্যায়বিচারের আশায় আবেদন করেছেন। ভুক্তভোগীরা বলেছেন, শুধু বিএনপি করার অপরাধে বিগত সরকারের নির্মম নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে তাঁদের।

মন্তব্য

সোহাগের পরিবারের পাশে তারেক রহমান

বরগুনা প্রতিনিধি
বরগুনা প্রতিনিধি
শেয়ার
সোহাগের পরিবারের পাশে তারেক রহমান

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে পুরান ঢাকায় নিহত ব্যবসায়ী লাল চাঁদ ওরফে সোহাগের পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছেন দলটির ভাইস চেয়ারম্যান নূরুল ইসলাম মনি। গতকাল রবিবার বিকেলে তিনি বরগুনা জেলার পাথরঘাটা উপজেলার কাকচিড়া ইউনিয়নের সোহাগের গ্রামের বাড়িতে যান। তিনি স্থানীয় কাকচিড়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে আয়োজিত সভায় বক্তব্য দেন।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে তিনি নিহত সোহাগের পরিবারকে ৫০ হাজার টাকা আর্থিক সহায়তা প্রদান করেন।

সোহাগের পরিবারের যেকোনো প্রয়োজনে পাশে থাকারও আশ্বাস দেন। এ ছাড়া হত্যাকাণ্ডের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে বিএনপির পক্ষ থেকে সব ধরনের সহায়তার আশ্বাস দেন। স্বামীর হত্যার বিচার চেয়ে তখন সোহাগের স্ত্রী লাকি আক্তার বলেন, আমি আমার স্বামীর হত্যাকারীদের ফাঁসি চাই। আমার পরিবারের নিরাপত্তা চাই।
সভায় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান নূরুল ইসলাম মনি বলেন, এই এলাকার সন্তান ঢাকার মিটফোর্ডের ব্যবসায়ী সোহাগকে তাঁর ব্যাবসায়িক পার্টনার ও তাদের ভাড়াটেরা নৃশংসভাবে হত্যা করেছে। বিএনপি ঘটনার সঙ্গে সঙ্গে তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। দলের পক্ষ থেকে এর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করা হয়েছে। সম্পৃক্তদের দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
বিএনপি কোনো অপকর্মকে প্রশ্রয় দেয় না। পাথরঘাটা উপজেলা বিএনপির আহবায়ক চৌধুরী মো. ফারুকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় বক্তব্য দেন বরগুনা জেলা বিএনপির সাবেক সহসভাপতি ফজলুল হক মাস্টার, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক কে এম সফিকুজ্জামান মাহফুজ, জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক জাবেদুল ইসলাম জুয়েল, জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম নাভিল প্রমুখ।

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ