ঢাকা, সোমবার ১৪ জুলাই ২০২৫
৩০ আষাঢ় ১৪৩২, ১৮ মহররম ১৪৪৭

ঢাকা, সোমবার ১৪ জুলাই ২০২৫
৩০ আষাঢ় ১৪৩২, ১৮ মহররম ১৪৪৭

অনলাইনে সক্রিয় কিডনি কেনাবেচার দালালচক্র

রেজোয়ান বিশ্বাস
রেজোয়ান বিশ্বাস
শেয়ার
অনলাইনে সক্রিয় কিডনি কেনাবেচার দালালচক্র

‘আপনি কি কিডনি ট্রান্সপ্লান্ট করাতে চান? কোথায় করাবেন, কার মাধ্যমে করাবেন, ডোনার পাবেন কোথায়—এসব নিয়ে আর ভাবনা নয়, আমরা প্যাকেজের ভিত্তিতে কিডনি ট্রান্সপ্লান্টের সব কাজ করে থাকি।’

রাজধানীর মিরপুরের দরজি রবিন খানকে চাকরি দেওয়ার কথা বলে দালালচক্র ভারতে নিয়ে তাঁর একটি কিডনি কেটে নেয়। এই ঘটনায় ধানমণ্ডি থানায় মামলা করেন তিনি। সম্প্রতি ওই মামলার তদন্তে নেমে কিডনি বেচাকেনার দালালচক্রের চার সদস্যকে গ্রেপ্তার করে ধানমণ্ডি থানার পুলিশ।

তাঁদেরই একজন আতাহার হোসেন বাপ্পিকে গ্রেপ্তারের পর তাঁর ফেসবুক মেসেঞ্জারের মেসেজে কিডনি কেনাবেচার এমন তথ্য পায় পুলিশ।

ওই মেসেজে আরো বলা হয়, ‘বাংলাদেশে নন-রিলেটিভ ডোনার দিয়ে কিডনি ট্রান্সপ্লান্ট করানো যায় না। যাঁদের রিলেটিভ ডোনার নেই, তাঁদের বাংলাদেশের বাইরে গিয়ে ট্রান্সপ্লান্ট করাতে হবে। আমরা ডোনার ও অ্যাটেনডেন্ট, বাংলাদেশের লিগ্যাল পেপার, পাসপোর্ট, ভিসা, কলকাতার সব টেস্ট, কলকাতার লিগ্যাল পেপার তৈরি, বোর্ড মিটিংসহ ওটি পর্যন্ত সব কাজে সহযোগিতা করে থাকি।

আপনারা যাঁরা কিডনি ট্রান্সপ্লান্ট করাতে চান, তাঁরা আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন। আমাদের কথার সঙ্গে কাজের শতভাগ মিল পাবেন।’

গ্রেপ্তার দালালচক্রের আরেক সদস্য রাজু হাওলাদারের ফেসবুক মেসেঞ্জার পরীক্ষা করেও একই ধরনের তথ্য পায় পুলিশ। তাঁর মেসেঞ্জারে এক নারীকে উদ্দেশ করে লেখা হয়, ‘ম্যাডাম, আমার এক বন্ধু এই কাজ করে।

আপনার পরিচিত কেউ থাকলে আমার সঙ্গে যোগাযোগ করবেন।’

কিডনি কেনাবেচার সঙ্গে জড়িত দালালচক্র এভাবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ অনলাইনে কিডনি ট্রান্সপ্লান্টের প্রচারণা চালাচ্ছে। যদিও আইনে স্পষ্ট করে বলা আছে, মানবদেহের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সংযোজন আইন-১৯৯৯-এর ৯ ধারায় অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ কেনাবেচা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। আর মানবদেহের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সংযোজন (সংশোধন) আইন-২০১৮ অনুযায়ী ২২ ধরনের নিকটাত্মীয় কিডনি রোগীর জীবন রক্ষায় নিজের একটি কিডনি দিতে পারবেন। ওই তালিকার বাইরে অন্য কারো শরীর থেকে কিডনি নিয়ে আরেকজনের শরীরে প্রতিস্থাপনের আইনি সুযোগ নেই।

আইনে আরো বলা আছে, কেউ যদি নিকটাত্মীয়ের বাইরে অন্য কারো কিডনি প্রতিস্থাপন করে তাহলে তাকে তিন থেকে সাত লাখ টাকা জরিমানাসহ সাত বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হবে। একই সঙ্গে যে হাসপাতালে অবৈধভাবে কিডনি প্রতিস্থাপন করা হবে ওই হাসপাতালের রেজিস্ট্রেশন নবায়ন বাতিল করা হবে।

অবৈধভাবে কিডনি কেনাবেচা বন্ধে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কার্যকর উদ্যোগ না থাকায় এই বাণিজ্য অব্যাহত আছে। অনেক ক্ষেত্রে নিম্ন আয়ের মানুষ দালালচক্রের প্রতারণার শিকার হয়ে কিডনি বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছে।

দেশে ঠিক কতসংখ্যক কিডনি কেনাবেচার দালালচক্র রয়েছে, তার সঠিক তথ্য না থাকলেও সম্প্রতি গ্রেপ্তার হওয়া চক্রের সদস্যদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, অন্তত ২২টি কিডনি বেচাকেনার দালালচক্র দেশে সক্রিয়। এর মধ্যে প্রথম দলটি রাজধানীতে অবস্থান করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিত্তশালী যেসব রোগীর কিডনি ট্রান্সপ্লান্টেশন প্রয়োজন তাদের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করে। দ্বিতীয় দলটি প্রথম দলের চাহিদা অনুযায়ী দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের অভাবী মানুষকে চিহ্নিত করে প্রতারণার মাধ্যমে কিডনি ট্রান্সপ্লান্টেশনের ডোনার হতে ঢাকায় নিয়ে আসে। আর তৃতীয় দলটি অর্থের বিনিময়ে রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে কিডনি ডোনারদের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করায়।

ডায়াগনস্টিক টেস্টে কিডনি ট্রান্সপ্লান্টেশনের জন্য উপযুক্ত ব্যক্তির পাসপোর্ট, ভিসা করে তাকে ভারতে পাঠানো হয়। সেখানে আরেকটি চক্র কিডনি ডোনারকে এয়ারপোর্ট বা স্থলবন্দর থেকে নিয়ে যাওয়া থেকে হাসপাতালের ডকুমেন্টেশন, কিডনি ট্রান্সপ্লান্টেশনের অস্ত্রোপচারসহ সব কাজ শেষ করে ফের দেশে পাঠিয়ে দেয়।

কিডনি বিক্রি চক্রের বিষয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) খন্দকার মহিদ উদ্দিন কালের কণ্ঠকে বলেন, এই চক্রের সদস্যরা মূলত যারা আর্থিক অনটনে আছে তাদের টার্গেট করে। এরপর কৌশলে তাদের কাছ থেকে কিডনি নিয়ে চড়া দামে বিক্রি করে। ভারতেও এই চক্রের সহযোগী থাকার তথ্য পাওয়া গেছে। চক্রের সদস্যরা দরিদ্র মানুষকে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে পাশের দেশে (ভারতে) নিয়ে যায়। সেখানে জিম্মি করে অর্থের প্রলোভনসহ নানা কৌশলে হাতিয়ে নেয় কিডনি। এসব কিডনির গ্রহীতারা বাংলাদেশি। বিশেষ করে চক্রটি কলকাতা ও গুজরাটে সক্রিয়।

গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের জিজ্ঞাসাবাদের উদ্ধৃতি দিয়ে পুলিশ আরো জানায়, গ্রেপ্তার হওয়া চারজন একটি চক্রের সদস্য। এই চক্রে ১০ থেকে ১২ জন দালাল রয়েছেন। এর মধ্যে তিনজন ভারতে অবস্থান করছেন। বাংলাদেশের দালালরা ভারতের কিডনি বিক্রি চক্রের দালালদের সঙ্গে যোগসাজশে এই কাজ করেন। প্রতিটি কিডনি বিক্রির মধ্যস্থতা করে এঁরা লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেন। এঁদের ফাঁদে পড়ে অনেকে কিডনি হারিয়েছেন।

র্যাবের তদন্তে জানা গেছে, শুধু রাজধানীতে নয়, জয়পুরহাট, ফরিদপুর, চট্টগ্রাম, খুলনা, সিলেটসহ দেশের আরো কিছু এলাকায় এই দালালচক্র রয়েছে।

সূত্র মতে, কিডনি বিক্রির ঘটনায় গত ১৩ বছরে দেশে ৪৫টি মামলা করা হয়েছে। এসব মামলায় ১৩৭ জনকে আসামি করা হলেও বেশির ভাগ এখনো ধরা পড়েনি।

কিডনি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. হারুন-অর-রশিদ কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘কিডনি প্রতিস্থাপনের ৩০ শতাংশ হয় জীবিত নিকটাত্মীয় থেকে আর ৭০ শতাংশ হয় ক্যাডাভেরিক ট্রান্সপ্লান্টের মাধ্যমে। বিশ্বের বিভিন্ন ইসলামী দেশ, বিশেষ করে সৌদি আরব, ইরান ও কুয়েতে ক্যাডাভেরিক ট্রান্সপ্লান্ট করা হচ্ছে।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন কিডনি বিশেষজ্ঞ কালের কণ্ঠকে বলেন, সাধারণত নিকটাত্মীয়ের মধ্যে কিডনি প্রতিস্থাপন করা হয়। পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখা হয় ডোনার প্রকৃত অর্থেই রোগীর আত্মীয় কি না। কিন্তু পাশের দেশের কয়েকটি হাসপাতাল আছে, মধ্যস্থতাকারী একটি চক্র এসব হাসপাতালে বাংলাদেশ থেকে কিডনি পাচার করে কিংবা সেখানে ডোনার নিয়ে কিডনি প্রতিস্থাপন করে। এটি সম্পূর্ণ বেআইনি কাজ।

 

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

আজ রাজপথে নামছে বিএনপি

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
আজ রাজপথে নামছে বিএনপি

পুরান ঢাকার মিটফোর্ড হাসপাতালের সামনে ব্যবসায়ী লাল চাঁদ ওরফে মো. সোহাগ হত্যাকাণ্ডের অপপ্রচার ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে শান্তিপূর্ণভাবে আজ থেকে রাজপথে থাকবে বিএনপি। বিএনপি মনে করছে, এই হত্যাকাণ্ড নিয়ে জামায়াতে ইসলাম, ইসলামী আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) রাজপথ দখল করার চেষ্টা করছে বলে মনে করছে বিএনপি। এ জন্য রাজপথে বিএনপিও শক্তি ও জনসমর্থন দেখাবে।

এখন পর্যন্ত এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত কাউকে ছাড় দিচ্ছে না দলটি।

এমনকি এ ধরনের ঘটনা যাতে আর না ঘটে সে জন্য দলে শুদ্ধি অভিযান চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন দলের শীর্ষ নেতা। দলের নেতারা বলছেন, হত্যার সঙ্গে সরাসরি জড়িত দুজনকে চিহ্নিত করতে পারেনি আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী। কিন্তু বিরোধী পক্ষ একতরফাভাবে বিএনপির ওপর দায় চাপাচ্ছে। বিএনপিকে উদ্দেশ্য করে কটূক্তি করছে।
এর জবাব দিতে রাজপথে শক্তি দেখাবে দলটি। এরই অংশ হিসেবে আজ সোমবার ছাত্রদল ও ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপি এবং অন্য অঙ্গসংগঠন পৃথক শোডাউন করবে। বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী কালের কণ্ঠকে বলেন, বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠন প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করবে। জনগণ বিএনপির সঙ্গে আছে।
জনগণকে নিয়ে দেশবিরোধীদের ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করা হবে।

মাঠে নামছে ছাত্রদল : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি জানান, গোপন তৎপরতায় দীর্ঘদিন ধরে অভ্যস্ত গুপ্ত সংগঠন কর্তৃক মব সৃষ্টির অপচেষ্টা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ বিনষ্ট করা এবং সারা দেশে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির প্রতিবাদে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল আজ রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে বিক্ষোভ মিছিল করবে। গুপ্ত সংগঠন বলতে ইসলামী ছাত্রশিবির ও তাদের সহযোগী সংগঠনকে বোঝানো হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির।

ছাত্রদলের ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী, আজ দুপুর ২টায় রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে শাহবাগ পর্যন্ত বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হবে। পাশাপাশি সারা দেশের সব জেলা ও মহানগরে বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হবে।

জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব ও সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির এ কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন।

কর্মসূচির বিষয়ে ঢাবি শাখা ছাত্রদলের সভাপতি গণেশ চন্দ্র রায় সাহস বলেন, গুপ্ত সংগঠন হিসেবে সেসব সংগঠনকেই বোঝানো হয়েছে, যারা প্রকাশ্যে নিজেদের রাজনৈতিক কার্যক্রম পরিচালনার বদলে গোপনে রাজনৈতিক এজেন্ডা বাস্তবায়ন ও সহিংসতা ছড়িয়ে দেওয়ার মাধ্যমে রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে অস্থিরতা ও বিশৃঙ্খলা তৈরি করছে। গত ৫ আগস্টের পর একটি মুক্ত রাজনৈতিক পরিবেশ থাকা সত্ত্বেও তাদের এহেন গুপ্ত কার্যক্রম এ দেশের রাজনৈতিক পরিবেশকে অসহনশীল করে তুলছে এবং রাজনৈতিক বিষয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত করে তুলছে। এ রকম কুচক্রী কার্যক্রমের বিরুদ্ধেই জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল তার কর্মসূচি গ্রহণ করেছে, যেন দেশবাসীকে এসব বিভ্রান্তিকর বিষয়ে সচেতন করে তোলা যায়।

গুপ্ত সংগঠন বলতে কাদের বোঝানো হচ্ছে জানতে চাইলে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির বলেন, ছত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর যারা ক্যাম্পাসগুলোতে মব সৃষ্টি করে সাধারণ শিক্ষার্থী নামে অপ্রীতিকর পরিস্থিতি তৈরি করছে, তারাই গুপ্ত সংগঠন। ছাত্রশিবির এবং গুপ্তভাবে সংগঠন পরিচালনা করতে ছাত্রশিবিরকে যারা পৃষ্ঠপোষকতা করে, আশ্রয়-প্রশ্রয় দেয় তারা।

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

সশস্ত্র বাহিনীর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেসির মেয়াদ আরো দুই মাস বাড়ল

বিশেষ প্রতিনিধি
বিশেষ প্রতিনিধি
শেয়ার
সশস্ত্র বাহিনীর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেসির মেয়াদ আরো দুই মাস বাড়ল

বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীতে কর্মরত সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন ও এর ওপরের সমপদমর্যাদার কর্মকর্তাদের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতার মেয়াদ আরো দুই মাস (৬০ দিন) বাড়ানো হয়েছে। এ বিষয়ে গতকাল রবিবার প্রজ্ঞাপন জারি করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। এর আগে গত ১৩ মে থেকে তাঁদের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেসির ক্ষমতার মেয়াদ দুই মাস বাড়ানো হয়েছিল। সেই মেয়াদ গতকাল শেষ হয় ।

মেয়াদ বাড়ানোর আদেশে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীতে কর্মরত সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন ও এর ওপরের সমপদমর্যাদার কমিশন্ড কর্মকর্তাদের (কোস্ট গার্ড ও বিজিবিতে প্রেষণে নিয়োজিত সমপদমর্যাদার কর্মকর্তারাসহ) ‌‘দ্য কোড অব ক্রিমিনাল প্রসিডিউর, ১৮৯৮-এর ১২(১) ও ১৭ ধারা অনুযায়ী স্পেশাল এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা অর্পণ করা হলো। এর মেয়াদ হবে ১৪ মার্চ থেকে ৬০ দিন পর্যন্ত। সারা দেশে তাঁরা এই ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারবেন বলেও প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে।

প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, সেনাবাহিনীর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা ফৌজদারি কার্যবিধি-১৮৯৮-এর ৬৪, ৬৫, ৮৩, ৮৪, ৮৬, ৯৫(২), ১০০, ১০৫, ১০৭, ১০৯, ১১০, ১২৬, ১২৭, ১২৮, ১৩০, ১৩৩ ও ১৪২ ধারার অপরাধগুলো বিবেচনায় নিতে পারবেন।

প্রথমে গত বছরের ১৭ সেপ্টেম্বর সেনাবাহিনীর কমিশন্ড অফিসারদের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছিল জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। পরে ৩০ সেপ্টেম্বর প্রজ্ঞাপন সংশোধন করে বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর কমিশন্ড অফিসারদের (সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন ও এর ওপরের সমপদমর্যাদার কর্মকর্তা) এই ক্ষমতা দেওয়া হয়। অর্থাৎ শুধু সেনাবাহিনী নয়, বিমান ও নৌবাহিনীর কমিশন্ড অফিসারদেরও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা দেওয়া হয়। তখন ৬০ দিনের জন্য এই ক্ষমতা দেওয়া হয়েছিল।

সেই মেয়াদ নভেম্বরের মাঝামাঝি শেষ হয়েছিল। পরে সেই ক্ষমতার মেয়াদ কয়েক দফায় বাড়ানো হয়।

মন্তব্য

শেখ হাসিনাসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে গুমের অভিযোগ বিএনপির

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
শেখ হাসিনাসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে গুমের অভিযোগ বিএনপির

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক ও সাবেক পুলিশপ্রধান (আইজিপি)  বেনজীর আহমেদসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর কার্যালয়ে গুমের অভিযোগ দিয়েছে বিএনপি।

গতকাল রবিবার দুপুরে ভুক্তভোগীদের সঙ্গে নিয়ে এই অভিযোগ দেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির নির্বাহী সদস্য এবং তথ্য সেলের সমন্বয়ক সালাহউদ্দিন খান।

অভিযোগ তদন্ত করে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম।

২০১৯ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত গুমের ঘটনায় ১১ জন ভুক্তভোগীর নাম উল্লেখ করা হয়েছে লিখিত অভিযোগে।

তাঁরা হলেনঝালকাঠির নলছিটির মোহাম্মদ আলী খান, সাবেক যুবদল নেতা মো. জিল্লুর রহমান, আকিদুল আলী, খোরশেদ আলম, অ্যাডভোকেট আশরাফ আলী, মো. বাবুল, এনামুল, এরশাদ আলী, মো. গিয়াস উদ্দিন খান, মো. কবির উদ্দিন খান ও নজরুল ইসলাম।

অভিযোগে বলা হয়েছে, ২০১৯ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন সময় এসব ভুক্তভোগীকে অপহরণের পর আয়নাঘরে আটকে রেখে নির্যাতন করা হয়। গত বছর ৫ আগস্ট সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পলায়নের পর মোহাম্মদ আলীকে হাত ও চোখ বেঁধে পূর্বাচলের শেষ প্রান্তে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে ফেলে আসা হয়। পাঁচ বছর তিন মাস ১৩ দিন পর তিনি মুক্তি পান।

এ ঘটনায় মোহাম্মদ আলী খান বিএনপি মহাসচিবের মাধ্যমে ন্যায়বিচার চেয়ে আবেদন করেন।

তাঁর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ১১ জন ভুক্তভোগীর নাম উল্লেখ করে আবেদনটি করা হয় বলে জানান সালাহউদ্দিন খান।

সালাহউদ্দিন খান সাংবাদিকদের বলেন, ভুক্তভোগীরা শেখ হাসিনাসহ ১৬ জন এবং অজ্ঞাতপরিচয় আরো ৩০ থেকে ৩৫ জনের নাম উল্লেখ করে ন্যায়বিচারের আশায় আবেদন করেছেন। ভুক্তভোগীরা বলেছেন, শুধু বিএনপি করার অপরাধে বিগত সরকারের নির্মম নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে তাঁদের।

মন্তব্য

সোহাগের পরিবারের পাশে তারেক রহমান

বরগুনা প্রতিনিধি
বরগুনা প্রতিনিধি
শেয়ার
সোহাগের পরিবারের পাশে তারেক রহমান

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে পুরান ঢাকায় নিহত ব্যবসায়ী লাল চাঁদ ওরফে সোহাগের পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছেন দলটির ভাইস চেয়ারম্যান নূরুল ইসলাম মনি। গতকাল রবিবার বিকেলে তিনি বরগুনা জেলার পাথরঘাটা উপজেলার কাকচিড়া ইউনিয়নের সোহাগের গ্রামের বাড়িতে যান। তিনি স্থানীয় কাকচিড়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে আয়োজিত সভায় বক্তব্য দেন।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে তিনি নিহত সোহাগের পরিবারকে ৫০ হাজার টাকা আর্থিক সহায়তা প্রদান করেন।

সোহাগের পরিবারের যেকোনো প্রয়োজনে পাশে থাকারও আশ্বাস দেন। এ ছাড়া হত্যাকাণ্ডের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে বিএনপির পক্ষ থেকে সব ধরনের সহায়তার আশ্বাস দেন। স্বামীর হত্যার বিচার চেয়ে তখন সোহাগের স্ত্রী লাকি আক্তার বলেন, আমি আমার স্বামীর হত্যাকারীদের ফাঁসি চাই। আমার পরিবারের নিরাপত্তা চাই।
সভায় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান নূরুল ইসলাম মনি বলেন, এই এলাকার সন্তান ঢাকার মিটফোর্ডের ব্যবসায়ী সোহাগকে তাঁর ব্যাবসায়িক পার্টনার ও তাদের ভাড়াটেরা নৃশংসভাবে হত্যা করেছে। বিএনপি ঘটনার সঙ্গে সঙ্গে তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। দলের পক্ষ থেকে এর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করা হয়েছে। সম্পৃক্তদের দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
বিএনপি কোনো অপকর্মকে প্রশ্রয় দেয় না। পাথরঘাটা উপজেলা বিএনপির আহবায়ক চৌধুরী মো. ফারুকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় বক্তব্য দেন বরগুনা জেলা বিএনপির সাবেক সহসভাপতি ফজলুল হক মাস্টার, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক কে এম সফিকুজ্জামান মাহফুজ, জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক জাবেদুল ইসলাম জুয়েল, জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম নাভিল প্রমুখ।

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ