ঢাকা, বুধবার ০৯ জুলাই ২০২৫
২৪ আষাঢ় ১৪৩২, ১৩ মহররম ১৪৪৭

ঢাকা, বুধবার ০৯ জুলাই ২০২৫
২৪ আষাঢ় ১৪৩২, ১৩ মহররম ১৪৪৭
আবহাওয়া

প্রচণ্ড গরমে হাঁসফাঁস দেশ, ৩ মৃত্যু

  • * মৌসুমে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা যশোরে, ৪২.৬ ডিগ্রি * তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে ২-৭ ডিগ্রি সে. বেশি * প্রকৃত তাপমাত্রার চেয়ে গরম অনুভূত হচ্ছে বেশি
নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
প্রচণ্ড গরমে হাঁসফাঁস দেশ, ৩ মৃত্যু
বৈশাখের তাপপ্রবাহে পুড়ছে প্রায় সারা দেশ। জীবিকার প্রয়োজনে কাঠফাটা রোদের মধ্যেও ক্ষেতে ফসল আবাদে নেমেছেন কৃষক। একটু স্বস্তি পেতে গভীর নলকূপ থেকে পানি পান করছেন। গতকাল রাজশাহীর মহিষকুণ্ডি মোহনপুর এলাকা থেকে তোলা। ছবি : সালাহ উদ্দিন

প্রচণ্ড গরমে হাঁসফাঁস করছে দেশবাসী। গতকাল শনিবার দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৪২.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। চলতি মৌসুমে এ পর্যন্ত এটাই দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা। প্রচণ্ড গরম ও হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে চুয়াডাঙ্গা, পাবনা ও গাজীপুরে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে।

দেশের দুটি জেলার ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে অতি তীব্র তাপপ্রবাহ। চট্টগ্রাম ও সিলেট ছাড়া অন্যান্য বিভাগের বেশির ভাগ জেলার ওপর দিয়ে বইছে মৃদু থেকে তীব্র তাপপ্রবাহ।

আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, শিগগিরই এই অসহনীয় গরম থেকে মুক্তি পাওয়ার সম্ভাবনা নেই।

পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, আজ রবিবারও দিনের তাপমাত্রা সামান্য বাড়তে পারে।

বাতাসে জলীয় বাষ্প বেশি থাকায় গরমে বেশি অস্বস্তিকর লাগার অনুভূতিও বহাল থাকবে। বৃষ্টির তেমন সম্ভাবনা না থাকায় মাসের বাকি দিনগুলোতেও তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকতে পারে।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের বিশেষজ্ঞ মো. শাহীনুল ইসলাম গতকাল কালের কণ্ঠকে বলেন, সাধারণত এই সময় গরম বাতাস ভারতের পশ্চিমাঞ্চল অর্থাৎ পশ্চিমবঙ্গ, ওড়িশা হয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে। ভারতের পশ্চিমের রাজ্যগুলো এবং আমাদের এখানে বড় পরিসরে বৃষ্টি না হলে তাপমাত্রার তেমন একটা পরিবর্তন হবে না।

বৃষ্টি স্বাভাবিকের চেয়ে কম হচ্ছে এই মাসে। আগামী এক সপ্তাহ পরিস্থিতি কমবেশি একই রকম থাকতে পারে।

আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, আজ ময়মনসিংহ, সিলেট ও চট্টগ্রাম বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা বা ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। বিক্ষিপ্তভাবে শিলাবৃষ্টিও হতে পারে। আগামী দুই দিন ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের দু-এক জায়গায় ঝড়-বৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে।

 

তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে ২-৭ ডিগ্রি বেশি

গতকাল দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল যশোরে, ৪২.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এটিই এখন পর্যন্ত এই মৌসুমে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা। এর আগে গত শুক্রবার চুয়াডাঙ্গায় মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪১.৫ ডিগ্রি। ঢাকায়ও গতকাল মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা (রাজধানীতে) ৪০.৪ ডিগ্রি রেকর্ড করা হয়।

গতকাল সারা দেশে অঞ্চলভেদে দিনের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে ২ থেকে ৭ ডিগ্রির বেশি ছিল। যশোর ও ঢাকায় তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে ৭ ডিগ্রি বেশি। আগের দিনের তুলনায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ০.৫ থেকে ১ ডিগ্রি বেড়েছে। 

আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, গতকাল যশোর ও চুয়াডাঙ্গা জেলার ওপর দিয়ে অতি তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে গেছে। চুয়াডাঙ্গা টানা কয়েক দিন ধরেই সর্বোচ্চ মাত্রার তাপে ধুঁকছে। রাজশাহী ও পাবনা জেলাসহ খুলনা বিভাগের বাকি জেলা এবং ঢাকা বিভাগের সব জেলার ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে গেছে। ময়মনসিংহ, মৌলভীবাজার, ফেনী, কক্সবাজার, চাঁদপুর ও রাঙামাটি জেলাসহ রাজশাহী বিভাগের বাকি জেলা ও বরিশাল বিভাগের সব জেলার ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি তাপপ্রবাহ বয়ে গেছে। আজ রবিবারও এই তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকতে পারে।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের হিসাবে, তাপমাত্রা ৩৬ ডিগ্রি থেকে ৩৭.৯ ডিগ্রির মধ্যে থাকলে তা মৃদু তাপপ্রবাহ। ৩৮ থেকে ৩৯.৯ ডিগ্রির মধ্যে থাকলে মাঝারি এবং ৪০ থেকে ৪১.৯ ডিগ্রির মধ্যে থাকলে তীব্র তাপপ্রবাহ বলা হয়। ৪২ ডিগ্রি বা এর বেশি তাপমাত্রা হলে তখন তা অতি তীব্র তাপপ্রবাহ হিসেবে বিবেচিত হয়। 

 

প্রকৃত তাপের চেয়ে গরম লাগছে বেশি

আবহাওয়াবিদরা বলছেন, বর্তমানে দিনের তাপমাত্রার চেয়ে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে অনুভূত তাপমাত্রা অন্তত কয়েক ডিগ্রি বেশি। বিষয়টি কালের কণ্ঠের কাছে ব্যাখ্যা করে আবহাওয়াবিদ মুহাম্মদ আবুল কালাম মল্লিক বলেন, মূলত জলীয় বাষ্প ও বাতাসের কম গতিবেগের কারণে গরম বেশি অনুভূত হচ্ছে।

তিনি বলেন, উপকূলীয় এলাকায় জলীয় বাষ্পের পরিমাণ অনেক বেশি। কিন্তু দেশের উত্তরাঞ্চলে তা কিছুটা কম। সে জন্য উপকূলীয় এলাকায় প্রকৃত তাপমাত্রার চেয়ে গরম বেশি অনুভূত হচ্ছে। ঢাকায়ও বিকেল ৩টার পর জলীয় বাষ্পের পরিমাণ ও গরমের অনুভূতি উভয়ই বাড়তে থাকে।

আবুল কালাম মল্লিক বলেন, প্রকৃত তাপমাত্রা বেশি থাকা সত্ত্বেও বাতাসের গতিবেগ বেশি থাকলে অনুভূত তাপমাত্রা অনেকটা কমে যায়। বর্তমানে বাতাসের গতিবেগ খুব কম। সুতরাং গরমের অনুভূতির তীব্রতা দুপুর ১২টার পর থেকে তীব্রতর হচ্ছে।

 

এপ্রিলের এই তাপমাত্রা কতটা অস্বাভাবিক

এপ্রিলের বর্তমান তাপ পরিস্থিতিকে স্বাভাবিক বলছেন দেশের আবহাওয়া ও জলবায়ু বিশেষজ্ঞরা। আবহাওয়াবিদ মুহাম্মদ আবুল কালাম মল্লিক বলেন, এপ্রিল মাস বিবেচনায় এই তাপমাত্রা ও তাপপ্রবাহ স্বাভাবিক। তবে চলমান পরিস্থিতির লক্ষণীয় বৈশিষ্ট্য হলো, তাপপ্রবাহের ব্যাপ্তিকাল ও আওতাধীন এলাকা আগের তুলনায় কিছুটা বেড়েছে। আগে তাপপ্রবাহ মূলত দেশের উত্তর-পশ্চিমাংশে বেশি থাকলেও এখন তা মোটামুটি সারা দেশেই দেখা যাচ্ছে।

জলবায়ু পরিবর্তন বিশেষজ্ঞ ও ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর ক্লাইমেট চেইঞ্জ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট রিসার্চের ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. আইনুন নিশাত বলেন, যা হচ্ছে তা খুবই স্বাভাবিক ঘটনা। চৈত্রের শেষে বা বৈশাখের মাঝামাঝি পর্যন্ত এ রকম গরম বা তাপমাত্রা থাকতে পারে।

তিনি বলেন, বাতাসের দিক পরিবর্তনের কারণে তাপমাত্রা বেশি অনুভূত হচ্ছে। এই বছর গত বছরের মতো মধ্যপ্রাচ্য, পাকিস্তান, ভারতের দক্ষিণ অংশ ও বঙ্গোপসাগর হয়ে বাংলাদেশে গরম বাতাস আসছে। ফলে আমরা এখন বাতাসে আগুনের হল্কা টের পাচ্ছি। আগে এই বাতাসটা ভারত মহাসাগর, বঙ্গোপসাগর হয়ে বাংলাদেশের ওপর দিয়ে যেত।

 

গরমে জীবন অতিষ্ঠ, তিনজনের মৃত্যু

তীব্র গরমে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। চুয়াডাঙ্গা, পাবনা ও গাজীপুরে এসব মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। 

চুয়াডাঙ্গায় মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল গতকাল। গতকাল সকালে দামুড়হুদা উপজেলার সীমান্তবর্তী ঠাকুরপুর গ্রামে জাকির হোসেন নামের এক যুবক মারা গেছেন। ধারণা করা হচ্ছে হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। জেলায় সকাল ৯টার পর থেকেই রোদের তাপ অসহনীয় হয়ে উঠছে।

গতকাল পাবনার ঈশ্বরদীতে ৪১.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে, যা জেলায় চলতি মৌসুমে সর্বোচ্চ। পাবনা শহরে হিট স্ট্রোকে একজন মারা গেছেন। মৃত সুকুমার দাস (৬০) পাবনা শহরের শালগাড়িয়া জাকিরের মোড়ের বাসিন্দা। পাবনা জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার (আরএমও) ডা. জাহিদুল ইসলাম হিট স্ট্রোকে তাঁর মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

গাজীপুর মহানগরীর কোনাবাড়ীতে মানসিক ভারসাম্যহীন এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। কোনাবাড়ী থানার ওসি কে এম আশরাফ উদ্দিন জানান, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে ওই যুবক মানসিক ভারসাম্যহীন ছিলেন। হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে তাঁর মৃত্যু হয়ে থাকতে পারে। শনিবার বিকেলে তাঁর লাশ উদ্ধার করে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ। মৃত সোহেল রানা (৩৫) গাজীপুর মহানগরীর কাশিমপুরের এনায়েতপুর এলাকার আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে।

যশোরেও তীব্র তাপপ্রবাহে স্থবির জনজীবন। বিকেল ৫টার সময়ও দেখা গেছে শহরের ব্যস্ত সড়কে ভিড় বা যানজট নেই। হাসপাতালগুলোতে শিশু রোগীদের চাপ বেড়েছে।

শার্শা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার আব্দুস সালাম জানান, প্রচণ্ড গরমের কারণে হাসপাতালে শিশু ও বয়স্ক রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। বেশির ভাগ শিশু ঠাণ্ডা জ্বর ও কাশিতে আক্রান্ত হচ্ছে। তিনি শিশুদের বেশি করে তরল খাবার ও পানি খাওয়ানোর পরামর্শ দেন।

উপকূলীয় জেলা বাগেরহাটে গতকাল তাপমাত্রা ৪১.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। প্রচণ্ড গরমে জনজীবন বিপর্যস্ত। টানা কয়েক দিনের তাপপ্রবাহে টাঙ্গাইলের ঘাটাইল গ্রামের মানুষের মধ্যে হাঁসফাঁস অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। উপজেলা সদরের ভ্যানচালক মালেক বলেন, রোইদের তেজে থাহা যায় না। এবা গরম জীবনেও দেহি নাই।

 

(প্রতিবেদনে তথ্য দিয়েছেন চুয়াডাঙ্গা, দামুড়হুদা (চুয়াডাঙ্গা), পাবনা, যশোর, বেনাপোল, বাগেরহাট, ঘাটাইল (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি এবং নিজস্ব প্রতিবেদক, গাজীপুর)

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

ঘরে ঘরে জ্বর, আতঙ্ক ডেঙ্গু-চিকুনগুনিয়া নিয়ে

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
ঘরে ঘরে জ্বর, আতঙ্ক ডেঙ্গু-চিকুনগুনিয়া নিয়ে

রাজধানীর পশ্চিম আগারগাঁওয়ের বাসিন্দা ফারুক আহমেদ টানা তিন দিন ধরে জ্বরে ভুগছেন। ফার্মেসির ওষুধে জ্বর না কমায় তিনি শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসেন। ফারুক জানান, প্রথমে তিনি জ্বরে আক্রান্ত হন, পরে তাঁর স্ত্রী ও দুই শিশুসন্তানও জ্বরে ভুগতে শুরু করে।

গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে হাসপাতালের বহির্বিভাগে কথা হয় ফারুক আহমেদের সঙ্গে।

এ সময় সেখানে আরো অন্তত চারজনকে তাদের পরিবারের সদস্যদের জ্বরে আক্রান্ত হওয়ার কথা বলতে শোনা যায়।

চিকিৎসকরা বলছেন, আবহাওয়ার পরিবর্তন ও বাতাসে আর্দ্রতার ওঠানামার কারণে ভাইরাসজনিত জ্বর বাড়ছে। শিশুসহ সব বয়সী মানুষ এতে আক্রান্ত হচ্ছে। ঢাকার বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি হাসপাতাল এবং চিকিৎসকের চেম্বারে জ্বরে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দ্রুত বাড়ছে।

বেশির ভাগ রোগীর শরীরে কাঁপুনি, গায়ে ব্যথা, মাথাব্যথা, বমি, হাত-পায়ের গিরায় ব্যথা, ঠাণ্ডা, সর্দি ও নাক দিয়ে পানি পড়ার মতো উপসর্গ দেখা যাচ্ছে।

সোমবার ও মঙ্গলবার রাজধানীর ডিএনসিসি হাসপাতাল, শিশু হাসপাতাল, সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালসহ বিভিন্ন হাসপাতালে ঘুরে দেখা গেছে, স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় অনেক বেশি শিশু এখন জ্বর নিয়ে চিকিৎসা নিতে আসছে।

এ বিষয়ে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. লেলিন চৌধুরী বলেন, একসঙ্গে বিভিন্ন ভাইরাসের সংক্রমণ বাড়ছে। সাধারণ ভাইরাল জ্বরের পাশাপাশি ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়া ও রোটা ভাইরাসও বাড়ছে।

উপসর্গে মিল থাকায় অনেকেই বুঝে উঠতে পারে না যে আসলে কোনটিতে আক্রান্ত হয়েছে। এ ক্ষেত্রে আতঙ্কিত না হয়ে সচেতন হওয়া জরুরি। জ্বর, বমি বা পাতলা পায়খানার মতো উপসর্গ দেখা দিলে দেরি না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। প্রয়োজনে ডেঙ্গু ও কভিড পরীক্ষাও করাতে হবে। সময়মতো রোগ নির্ণয় হলে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই তা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।

রাজধানীর শিশু হাসপাতালে জ্বরে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা এখন আগের তুলনায় অনেক বেশি বলে জানান হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) ডা. এ বি এম মাহফুজ হাসান আল মামুন। তিনি বলেন, এখন ভাইরাল জ্বরের মৌসুম চলছে। পাশাপাশি চলছে ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়ার মৌসুমও। বেশির ভাগ রোগী তীব্র জ্বর, মাথাব্যথা, শরীর ব্যথা, চোখ লাল হওয়া, চোখ দিয়ে পানি পড়া, শরীরে র‌্যাশএসব উপসর্গ নিয়ে আসছে। অনেকের ডেঙ্গুর উপসর্গ থাকলেও পরীক্ষায় ধরা পড়ছে না।

 

জ্বর কেন হয়?

চিকিৎসকরা বলছেন, জ্বর নিজে কোনো রোগ নয়, এটি একটি উপসর্গ বা সতর্কবার্তা। সাধারণ ঠাণ্ডা বা সর্দিকাশির পাশাপাশি ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়াজনিত সংক্রমণে জ্বর হতে পারে। করোনাভাইরাস, ডেঙ্গু, টাইফয়েড, ম্যালেরিয়াএসব রোগের প্রাথমিক লক্ষণ জ্বর। টিকা নেওয়া, টিউমার, ফোড়া, রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস, প্রস্রাবের সংক্রমণ, পিরিয়ড বা মানসিক চাপ থেকেও জ্বর হতে পারে।

ডা. লেলিন চৌধুরী বলেন, বাইরের প্রচণ্ড গরম থেকে ফিরে অনেকেই এসির নিচে চলে যায় বা ঠাণ্ডা পানি পান করে। এই গরম-ঠাণ্ডার তারতম্য থেকেই জ্বর-সর্দি হতে পারে। প্রতিটি পরিবারেই এখন মৌসুমি জ্বরের প্রাদুর্ভাব দেখা দিচ্ছে। এ ছাড়া বন্যাকবলিত এলাকায় টাইফয়েড ও পানিবাহিত রোগও বেড়েছে।

ডা. লেলিন আরো বলেন, এসব জ্বর সাধারণত প্যারাসিটামল খেলেই সেরে যায়। অ্যান্টিবায়োটিকের দরকার পড়ে না। তবে জ্বর যদি সপ্তাহখানেকের বেশি স্থায়ী হয়, তাহলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

 

সাধারণ জ্বর কিভাবে বুঝব?

বাংলাদেশ মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্টারনাল মেডিসিন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. ফজলে রাব্বি চৌধুরী কালের কণ্ঠকে বলেন, আগে কভিড-১৯ রোগীদের ক্ষেত্রে জ্বরের সঙ্গে কাশি, গন্ধ না পাওয়া, শ্বাসকষ্ট দেখা যেত। এখন অনেক কভিড রোগীও গায়ে ব্যথা ও মাথাব্যথার উপসর্গ নিয়ে আসছে। তাই পরীক্ষা ছাড়া রোগ নির্ধারণ করা কঠিন হয়ে পড়েছে।

ডা. ফজলে রাব্বি আরো বলেন, ডেঙ্গুতে সাধারণত মাথাব্যথা, চোখের পেছনে ব্যথা, পেট ব্যথা ও পাতলা পায়খানা হয়। অন্যদিকে চিকুনগুনিয়ায় গায়ে বেশি ব্যথা, বিশেষ করে জয়েন্টে ব্যথা ও দ্রুত র‌্যাশ দেখা দেয়। সাধারণ ভাইরাল জ্বরে হালকা গায়ে ব্যথা ও সর্দিকাশি হয় এবং তা চার দিনের মধ্যে সেরে যায়। চার দিনের বেশি জ্বর থাকলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

মন্তব্য

জুলাই ফাউন্ডেশনের অফিসে ভাঙচুর

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
জুলাই ফাউন্ডেশনের অফিসে ভাঙচুর

রাজধানীর শাহবাগে জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের কার্যালয় ভাঙচুর করা হয়েছে। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে আহতদের কয়েকজন গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর বারডেম হাসপাতালের পাশের ওই কার্যালয়ের কক্ষে ভাঙচুর চালান।

সূত্র জানায়, হামলার শুরুতে তাঁরা প্রথমে ওই কার্যালয়ে তালা লাগান। পরে জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের কর্মচারীদের সঙ্গে তর্কাতর্কির এক পর্যায়ে সেখানে ভাঙচুর করা হয়।

২০ থেকে ২৫ জন জুলাই যোদ্ধা সেখানে উপস্থিত ছিলেন। হামলাকারীদের অভিযোগ, দ্বিতীয় ধাপের টাকা দেওয়ার কথা বলে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে আহতদের কয়েকজনকে তিন-চারবার ঘোরানো হয়েছে। টাকা দেওয়ার তারিখ দিয়েছিল গতকাল। 

তবে রাতে জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) কামাল আকবর জানান, টাকা না পেয়ে আহতরা ক্ষুব্ধ হয়ে অফিসে তালা লাগিয়ে দেন।

ফাউন্ডেশনের একজন কর্মচারী খারাপ আচরণ করলে সেখানে ভাঙচুর করা হয় বলে আহতদের কয়েকজন জানিয়েছেন।

ভাঙচুরের পর ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, অনেক চেয়ার এলোমেলো পড়ে আছে। পানির ফিল্টার ও তিনটি দরজার গ্লাস ভেঙে ফেলা হয়েছে। মেঝেতে কাচের টুকরা ছড়িয়েছিটিয়ে আছে।

গত বছর আন্দোলনে গিয়ে আহত হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত চিকিৎসাধীন জানিয়ে মামুন হোসেন নামের একজন বলেন, আমার মাথার ভেতরে গুলি, ১১ মাস যাবৎ চিকিৎসাধীন। আমাদের জীবনের নিশ্চয়তা কী? তো কিসের জুলাই ফাউন্ডেশন?

সাভার সরকারি কলেজের ব্যবস্থাপনা বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আহত নাজমুল হোসেন বলেন, দ্বিতীয় ধাপের টাকার জন্য সাত মাস ধরে ঘুরছি। টাকা দেওয়া হচ্ছে না। জুলাই ফাউন্ডেশনের সিইও বারবার ডেট দিয়ে আমাদের টাকা দিচ্ছেন না।

জানতে চাইলে জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) কামাল আকবর বলেন, জুলাই আহতদের অনেকে এখনো মানসিক ট্রমার মধ্যে আছেন।

তাঁদের রাগের একটা প্রেক্ষাপট আছে। তাঁদের বিষয়ে কোনো অভিযোগ নেই। তাঁরা ভেঙেছেন, তাঁরা উত্তেজিত, অবসাদগ্রস্ত। তাঁরা ভবিষ্যতে কী করবেন, সেটি নিয়ে হতাশার মধ্যে আছেন। সে কারণে তাঁরা হয়তো ভাঙচুর করেছেন।

এই ফাউন্ডেশনে সাত কোটি টাকা আছে জানিয়ে কামাল আকবর বলেন, ধারাবাহিকভাবে আহত ও শহীদ পরিবারগুলোকে অনুদান দেওয়ার চেষ্টা করছি। তা ছাড়া আহতদের তালিকা থেকে ৩৯ জন ভুয়া আহতকে বাদ দিতে এবং শহীদদের তালিকা থেকে চারজনের নাম বাদ দিতে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছেন বলে জানান তিনি।

মন্তব্য
প্রধান নির্বাচন কমিশনার

নির্বাচনের তারিখ আমি নিজেই জানি না

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
নির্বাচনের তারিখ আমি নিজেই জানি না

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন কবে হবে তা প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন এখনো জানেন না। গতকাল মঙ্গলবার সকালে কানাডার হাইকমিশনার অজিত সিংয়ের সঙ্গে বৈঠকে এ কথা জানিয়েছেন তিনি। পরে বিকেলে রিপোর্টার্স ফোরাম ফর ডেমোক্রেসি (আরএফডি) আয়োজিত ফল উৎসব ও সাংবাদিক অ্যাকসেস কার্ড প্রদান অনুষ্ঠানেও তিনি একই কথা বলেন।

এ ছাড়া সিইসি সাংবাদিকদের জানান, আগামী নির্বাচনে ভোটের প্রচারে এআইয়ের অপব্যবহার রোধ করতে চায় নির্বাচন কমিশন।

এ ছাড়া গত তিনটি বিতর্কিত জাতীয় সংসদ নির্বাচন যেসব বিদেশি পর্যবেক্ষক গ্রহণযোগ্য বলে সাফাই গেয়েছিলেন, সেসব পক্ষপাতদুষ্ট পর্যবেক্ষককে এবার অনুমোদন দেওয়া হবে না। নির্বাচন কমিশন ভোটের প্রচারে এআইয়ের অপব্যবহারও রোধ করতে চায়।

নির্বাচন ভবনে কানাডার হাইকমিশনারের সঙ্গে প্রায় দেড় ঘণ্টার সাক্ষাৎ শেষে সিইসি সাংবাদিকদের বলেন, মিসইউজ অব এআই আমাদের জন্যও হুমকি। এ বিষয়ে সহায়তার আশ্বাস দিয়েছে কানাডা।

কারণ কানাডার গত বছরের নির্বাচনেও তাদের এটা মোকাবেলা করতে হয়েছে। সেই অভিজ্ঞতা থেকে আমরা তাদের পরামর্শ চেয়েছি। এ বিষয়ে আমরাও বেশ গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছি। আশা করি, বিভিন্ন দেশের মতো কানাডার পূর্ণ সহায়তা পাব।
আমরা সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানে কনফিডেন্ট।

এ এম এম নাসির উদ্দিন বলেন, এ পর্যন্ত আমাদের বিভিন্ন সেক্টরে যে প্রস্তুতি নিয়েছি, আগামী নির্বাচনে আমরা ঠিকমতো ডেলিভার করতে পারব কি না সে বিষয়গুলো জানতে চেয়েছেন তাঁরা। আমাদের প্রস্তুতির বিষয়টা বিস্তারিত জানিয়েছি। বিশেষ করে দেশজুড়ে ভোটার সচেতনতামূলক কার্যক্রম শুরু করতে যাওয়ার বিষয়টি জানিয়েছি। ভোটার সচেতনতা ক্যাম্পেইনের পাশাপাশি ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ, পর্যবেক্ষকদের প্রশিক্ষণ, এজেন্টদের প্রশিক্ষণসহ সার্বিক কাজে কানাডা পাশে থাকবে বলে জানিয়েছে।

সিইসি বলেন, কানাডা আমাদের সহায়তার জন্য প্রস্তুত এবং আমাদের আলোচনা অব্যাহত থাকবে। তারা চায় যে ফ্রি, ফেয়ার, ক্রেডিবল ইলেকশন যেন হয়। আমাদের ভোটার নিবন্ধনে নারীদের অন্তর্ভুক্তির বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেছে, পার্বত্য এলাকায় ভোটার সচেতনতামূলক কাজের বিষয়ে জানতে চেয়েছে। আমাদের প্রস্তুতি চলছে বলে জানিয়েছি।

নির্বাচন কবে বা ভোটের সম্ভাব্য সময়সীমা বিষয়ে কানাডার হাইকমিশনার জানতে চেয়েছেন কি নাসাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে সিইসি বলেন, উনি জানতে চেয়েছেন ভোটের স্পেসিফিক ডেট হয়েছে কি না। আমি বলেছি নো। সময়সীমা নিয়ে কোনো আলাপ হয়নি। সময়সীমা সম্পর্কে আপনারা যা জানেন, আমিও তাই জানি। যেদিন ভোট হবে, তার দুই মাস আগে আমি জানিয়ে দেব।

নির্বাচনে বিদেশি পর্যবেক্ষকদের আসার বিষয়ে জানতে চাইলে সিইসি বলেন, এরই মধ্যে ইউরোপীয় ইউনিয়নকে অবজারভার হিসেবে কাজ করার জন্য জিজ্ঞেস করেছি। নীতিমালাও প্রায় চূড়ান্ত করে ফেলেছি। ইইউকে বলা হয়েছে, আগেই যেন জানিয়ে রাখা হয়। তাদের ২৮টি দেশের অবজারভারকে সমন্বয় করে পাঠাতে হবে, এ জন্য আগেভাগে স্বাগত জানিয়েছি।

পক্ষপাতদুষ্ট বিদেশি পর্যবেক্ষকদের অনুমোদন দেওয়া হবে না বলেও জানান সিইসি। তিনি বলেন, গত তিনটি নির্বাচনকে যাঁরা সার্টিফিকেট দিয়েছেন তাঁদের (অনুমোদন) দেব কেন? যেসব পর্যবেক্ষক গত তিনটি বিতর্কিত নির্বাচন খুব সুন্দর হয়েছে বলে সার্টিফিকেট দিয়েছেন, গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হয়েছে বলেছেন, তাঁদের কি আমাদের নেওয়া উচিত? আমরা দেখে-শুনেই নেব। যাঁরা অভিজ্ঞ, ডিপেন্ডেবল, রিলায়েবল এবং বিভিন্ন দেশে নির্বাচন অবজার্ভ করেছেন, তাঁদের নেব। তিনটি নির্বাচনকে যাঁরা সার্টিফিকেট দিয়েছেন, তাঁদের কোনোমতেই নেওয়া হবে না।

বিকেলে আরএফইডির অনুষ্ঠানে সিইসি বলেন, আমরা বারবার প্রমাণ করেছি; ১৯৯১, ১৯৯৬, ২০০১ সালে সুষ্ঠু নির্বাচন দিতে পেরেছিলাম। এবারও পারব ইনশাআল্লাহ। আমাদের প্রশাসন, পুলিশ ও অন্যান্য আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীকে বলব, মানুষের শ্রদ্ধা পুনরুদ্ধারের এটিই সময়। ভাবমূর্তি রক্ষা ও পুনঃপ্রতিষ্ঠার সুযোগ এখন এসেছে।

সিইসি বলেন, ভোটের নির্দিষ্ট তারিখ এখনো নির্ধারিত হয়নি। তবে কমপক্ষে দুই মাস আগেই সব কিছু জানিয়ে দেওয়া হবে, কোন দিন ভোট, কোন দিন মনোনয়নএসবসহ।

গণমাধ্যমের ভূমিকার প্রশংসা করে সিইসি বলেন, আমরা আজকে যা কিছু করছি, তা আপনাদের মাধ্যমেই দেশ-বিদেশে ছড়িয়ে পড়ছে। কানাডার হাইকমিশনারের সঙ্গে আজকে আলাপের সময় দেখি উনি (কানাডার হাইকমিশনার) সব জানেনভোটার রেজিস্ট্রেশন, ইউএনডিপির সহযোগিতা, ক্যামেরা, ল্যাপটপ সব কিছু। তার মানে আমাদের সংবাদগুলো আন্তর্জাতিক পর্যায়ে পৌঁছাচ্ছে। এ জন্য আপনাদের আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই।

সাংবাদিকদের তিনি বলেন, সংবাদ পরিবেশনের সময় একটু সচেতন থাকবেন। দেখেছি অনেক সময় ভেতরে পজিটিভ রিপোর্ট থাকলেও হেডলাইন বা স্ক্রলে নেগেটিভ বার্তা থাকে। এতে সাধারণ মানুষ বিভ্রান্ত হয়, মন খারাপ হয়। দয়া করে শিরোনাম, ক্যাপশন এমন দিন, যাতে মানুষ পজিটিভ বার্তা বুঝতে পারে।

তিনি বলেন, সাংবাদিকদের দাবি বিবেচনায় নিয়ে নির্বাচন কমিশন সাংবাদিকদের সরাসরি অংশগ্রহণে বিভিন্ন ওয়্যারনেস রেইজিং ক্যাম্পেইন চালু করবে। আমরা সাংবাদিকদের পার্টনার করে কাজ করতে চাই। সচেতনতামূলক প্রচারে আপনাদের যুক্ত করব। ২০১৮ সালের মতো অভিযোগ আর যেন না ওঠে। প্রশাসন, পুলিশ, প্রিজাইডিং অফিসার, সব কর্মকর্তাকে বলব, এটা ভাবমূর্তি পুনরুদ্ধারের সময়। আরএফইডির সভাপতি কাজী এমাদ উদ্দীনের (জেবেল) সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী।

মন্তব্য
মিডিয়াকে হুমকি

ক্র্যাব, অনলাইন এডিটরস অ্যালায়েন্সের উদ্বেগ

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
ক্র্যাব, অনলাইন এডিটরস অ্যালায়েন্সের উদ্বেগ

জুলাই আন্দোলনের এক নেতা কর্তৃক মিডিয়াকে হুমকি দেওয়ার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (ক্র্যাব) ও অনলাইন এডিটরস অ্যালায়েন্স।

অনলাইন এডিটরস অ্যালায়েন্সের সভাপতি হাসান শরীফ ও সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান সোহেল গতকাল মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে বলেন, গণমাধ্যম রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ এবং গণতান্ত্রিক কাঠামোর এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। গণমাধ্যমের কোনো প্রতিবেদনে কেউ সংক্ষুব্ধ হলে তার প্রতিকার পাওয়ার জন্য দেশে প্রেস কাউন্সিল ও প্রচলিত আইন অনুযায়ী আদালতের দ্বারস্থ হওয়ার সুযোগ রয়েছে। হুমকি বা ভয়ভীতি প্রদর্শন করে স্বাধীন সাংবাদিকতার পরিসর সংকুচিত করা যাবে না।

অনলাইন এডিটরস অ্যালায়েন্সের বিবৃতিতে আরো বলা হয়, স্বাধীন সাংবাদিকতা ও মুক্ত মত প্রকাশ গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের মূল ভিত্তি। কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর হুমকি কিংবা ভয় দেখানোর চেষ্টা গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ ও সংবিধান প্রদত্ত অধিকার লঙ্ঘনের শামিল, যা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।

এর আগে গত সোমবার ক্র্যাব কার্যনির্বাহী কমিটির পক্ষ থেকে সভাপতি মির্জা মেহেদী তমাল এবং সাধারণ সম্পাদক এম এম বাদশাহ এক বিবৃতিতে বলেন, মিডিয়াকে হুমকি দেওয়ার ঘটনা জুলাইয়ের চেতনার সঙ্গে মানানসই নয়। যেসব কারণে জুলাইয়ের রক্তক্ষয়ী ছাত্র গণ-অভ্যুত্থান সংঘটিত হয়েছিল, তার অন্যতম ছিল মত প্রকাশ ও সংবাদপত্রের স্বাধীনতা নিশ্চিতকরণ।

মিডিয়াকে হুমকি দেওয়া সেই লক্ষ্য অর্জনের পথে সহায়ক নয়।

বিবৃতিতে ক্র্যাব নেতারা বলেন, মিডিয়ার ভূমিকায় কেউ সংক্ষুব্ধ হলে তার প্রতিকারের জন্য প্রেস কাউন্সিল রয়েছে। প্রচলিত আইনের বিধি অনুযায়ী আদালতেও যাওয়া যায়। কিন্তু এই হুমকি দেশে গণতান্ত্রিক সংস্কৃতির চর্চা ও বিকাশের প্রতিবন্ধক বলে আমরা মনে করি।

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ