তাই ভিড় এড়াতে একটু আগেভাগেই ঢাকা ছাড়ছে।
বনলতা এক্সপ্রেস ট্রেনের যাত্রী জান্নাতুল ফেরদৌস কালের কণ্ঠ’র প্রতিবেদককে বললেন, ‘বাচ্চাদের নিয়ে রাজশাহীর গ্রামের বাড়ি যাচ্ছি। ভেবেছিলাম অনেক ভিড় হবে। কিন্তু এসে দেখলাম ভিড় নেই। বাচ্চাদের নিয়ে ভালোভাবেই ট্রেনে উঠতে পারব বলে মনে হচ্ছে।’
ঢাকা (কমলাপুর) রেলওয়ে স্টেশনের ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ মাসুদ সারওয়ার বলেন, আজ (গতকাল) সকাল থেকে বেশ কয়েকটি ট্রেন বিভিন্ন গন্তব্যে ছেড়ে গেছে। যাত্রীর চাপ কম। অফিস ছুটি হলে বৃহস্পতি-শুক্রবার থেকে বাড়বে চাপ।
কমলাপুরে রেলমন্ত্রীর পরিদর্শন
গতকাল ঢাকা (কমলাপুর) রেলওয়ে স্টেশন পরিদর্শন করেছেন রেলপথমন্ত্রী মো. জিল্লুল হাকিম। এ সময় তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ঈদুল ফিতরে যাত্রীরা ট্রেনে নিরাপদে বাড়ি যেতে পারবে। যারা অনলাইনে টিকিট নিতে পারেনি তাদের জন্য স্ট্যান্ডিং টিকিটের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ট্রেন যাতে সময়মতো চলাচল করে সে জন্য আগে থেকেই নানা উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।’
এ সময় মন্ত্রী আরো বলেন, রেলের যাত্রী পরিবহন সক্ষমতা বৃদ্ধির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ট্রেনের সংখ্যা বৃদ্ধি করার জন্য ২০০ বগি কেনার অনুমোদন পাওয়া গেছে। শিগগিরই এগুলো কেনার ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
চট্টগ্রাম ছাড়বে ১৫ লাখ মানুষ
বন্দরনগরী চট্টগ্রাম থেকে আসন্ন ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ১২ থেকে ১৫ লাখ মানুষ বাড়ি যেতে পারে। কেনাকাটা সেরে লোকজনের বাড়ি যাওয়া শুরু হয়ে গেছে। এ শহর থেকে এবারও বেশির ভাগ মানুষ যাবে সড়কপথে। সংখ্যাটি অন্তত ১২ থেকে ১৩ লাখ হবে। এ ছাড়া রেল, নৌ ও আকাশপথেও বাড়ি ফিরবে অনেকে।
এর মধ্যে রেলপথে এক লাখের কিছু বেশি, নৌপথে ৮ থেকে ১০ হাজার এবং বিমানে হাজারের বেশি মানুষ চট্টগ্রাম ছাড়ছে। এ ছাড়া সড়কপথে ব্যক্তিগত যানবাহনেও লাখো মানুষ বিশেষ করে আশপাশের জেলাগুলোয় বাড়ি যাবে।
চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশন থেকেও গতকাল ঈদ যাত্রা শুরু হয়েছে। এবার বিভিন্ন রুটে ১৪টি আন্ত নগর ট্রেন চলাচল করবে। এর মধ্যে দুটি কক্সবাজার রুটে এবং ১২টি ঢাকা, ময়মনসিংহ, সিলেট ও চাঁদপুর রুটে। এ ছাড়া আছে ঈদ স্পেশাল, মেইল, কমিউটার ও লোকাল ট্রেন। সব মিলিয়ে ঈদে চট্টগ্রাম থেকে ২৩টি ট্রেনে করে মানুষ বাড়ি যাচ্ছে।
আজ থেকে সব ট্রেনের পূর্বনির্ধারিত সাপ্তাহিক বিরতি প্রত্যাহার করা হয়েছে। বিরতিহীন চারটি ট্রেন ছাড়া অন্য ট্রেনগুলোতে স্ট্যান্ডিং (দাঁড়িয়ে) টিকিটের যাত্রী পরিবহন করা হবে। সব মিলিয়ে ঈদ উপলক্ষে প্রতিদিন গড়ে ১৫ থেকে ১৭ হাজার যাত্রী ভ্রমণ করার কথা রয়েছে।
চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশনের ব্যবস্থাপক মো. মুনিরুজ্জামান কালের কণ্ঠকে বলেন, ট্রেনগুলো সময়সূচি অনুযায়ী ছেড়ে যাচ্ছে। প্রথম দিন চাপ কম ছিল। আন্ত নগর ট্রেনগুলোতে টিকিট বিক্রি শেষ।
চট্টগ্রাম নগরের বিভিন্ন বাসস্টপেজ থেকে ঢাকা, নোয়াখালী, কুমিল্লা, চাঁদপুর, উত্তরবঙ্গসহ বিভিন্ন রুটে প্রতিদিন গড়ে এক হাজারের বেশি বাস যাতায়াত করবে। এসব গাড়িতে প্রতিদিন গড়ে ৪০ থেকে ৫০ হাজার যাত্রী যাতায়াত করবে বলে বাস মালিক সমিতির নেতারা জানান। সেই সঙ্গে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার, চট্টগ্রাম-বান্দরবানসহ দক্ষিণাঞ্চলের (কর্ণফুলী নদীর দক্ষিণ দিক) প্রতিদিন হাজারখানেক বাস-মিনিবাসে করে ৩০ থেকে ৪০ হাজার যাত্রী বাড়ি যাবে।
জানতে চাইলে আন্ত জেলা বাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পপাদক কফিলউদ্দিন আহমেদ কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আমাদের হিসাবে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকা-চট্টগ্রাম রুট হয়ে দেশের বিভিন্ন গন্তব্যে যাবে পাঁচ লাখ থেকে ছয় লাখ মানুষ।’
সড়ক ও রেলপথের পাশাপাশি আকাশপথেও বিভিন্ন রুটে চট্টগ্রাম থেকে বাইরে যাচ্ছে অনেকে। প্রতিদিন চট্টগ্রাম থেকে বিভিন্ন এয়ারলাইনে ঢাকা যাবে হাজারখানেক যাত্রী। পাশের দেশ ভারতের কলকাতাও যাচ্ছে অনেকে।
নগরের সদরঘাট এবং জেলার সীতাকুণ্ড-কুমিরা ঘাট থেকে নৌযান ও স্টিমারে ৮ থেকে ১০ হাজার মানুষ সন্দ্বীপসহ বিভিন্ন দ্বীপাঞ্চলে যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।