ঢাকা, সোমবার ১৪ জুলাই ২০২৫
৩০ আষাঢ় ১৪৩২, ১৮ মহররম ১৪৪৭

ঢাকা, সোমবার ১৪ জুলাই ২০২৫
৩০ আষাঢ় ১৪৩২, ১৮ মহররম ১৪৪৭
বিশেষ সাক্ষাৎকার

‘বসন্ত বিপ্লব’ রোহিঙ্গাদের জন্যও সুযোগ সৃষ্টি করেছে

শেয়ার
‘বসন্ত বিপ্লব’ রোহিঙ্গাদের জন্যও সুযোগ সৃষ্টি করেছে
অং কিয়াউ মো

মিয়ানমারের জান্তাবিরোধী জাতীয় ঐক্য সরকারের (এনইউজি) মন্ত্রিসভায় রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধি হিসেবে আছেন অং কিয়াউ মো। মানবাধিকারবিষয়ক উপমন্ত্রী হিসেবে তিনি এনইউজির নীতিনির্ধারণ প্রক্রিয়ায় রোহিঙ্গাদের অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করার চেষ্টা চালাচ্ছেন। কালের কণ্ঠকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি মিয়ানমার পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করেছেন। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন মেহেদী হাসান

 

কালের কণ্ঠ : বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তে কী হচ্ছে?

অং কিয়াউ মো : আমরা শুনেছি এবং স্থানীয় গণমাধ্যমের প্রতিবেদনেও বলা হচ্ছে, মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী পুলিশ ও কিছু সামরিক সদস্য সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছেন।

আরাকান আর্মি তাঁদের আক্রমণ করেছিল। প্রাণ বাঁচাতে তাঁরা মিয়ানমার থেকে পালাচ্ছেন।

 

কালের কণ্ঠ : কয়েক মাস ধরেই তো রাখাইন রাজ্যে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী ও আরাকান আর্মির মধ্যে সংঘাতের খবর পাওয়া যাচ্ছে। আরাকান আর্মির প্রতি আপনাদের জাতীয় ঐক্য সরকারের সমর্থন আছে?

অং কিয়াউ মো : আরাকান আর্মি একা নয়, মিয়ানমারজুড়েই বিভিন্ন স্থানে জান্তার বিরুদ্ধে সশস্ত্র বিপ্লব, লড়াই হচ্ছে।

আরাকান আর্মি এবং এর মিত্ররা, যাকে বলা হয় নর্দান ব্রাদারহুড অ্যালায়েন্স, তারা শক্তিশালী সম্মিলিত বিপ্লবী সমন্বিত জোট। স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে তারা সারা দেশে লড়াই করছে। আর জান্তা ভেঙে পড়ছে। জান্তার অনুগত বাহিনী প্রাণ বাঁচাতে ভারতে, বাংলাদেশে আশ্রয় নিচ্ছে।
অনেক স্থানেই তারা আত্মসমর্পণ করছে। সাদা পতাকা ওড়াচ্ছে। জান্তার অনুগত ব্যাটালিয়নগুলো পক্ষত্যাগ করছে। এটি এখন পুরো মিয়ানমারের চিত্র।

কালের কণ্ঠ : জানতে চাচ্ছিলাম, আপনারা এনইউজি এই সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোকে সমর্থন ও সহযোগিতা দিচ্ছেন কি না?

অং কিয়াউ মো : সমর্থন বলতে আপনি ঠিক কী বোঝাতে চাচ্ছেন?

 

কালের কণ্ঠ : সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো জান্তার পতন চাচ্ছে।

আপনারা, এনইউজিও চান জান্তার পতন হোক। আরাকান আর্মির মতো সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর যুদ্ধে আপনারা প্রত্যক্ষভাবে সহযোগিতা দিচ্ছেন কি না?

অং কিয়াউ মো : সমন্বিত আক্রমণ বা যুদ্ধ কিন্তু মিয়ানমারজুড়েই চলছে। জান্তার বিরুদ্ধে সবাই লড়ছে। এখানে আমরা বাইরে থেকে বিশেষ কোনো সমর্থন বা সহযোগিতা দিচ্ছি না। বিদ্রোহী বা বিপ্লবী শক্তিগুলোর পাশাপাশি বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর সংগঠনগুলো জনগণকে সঙ্গে নিয়ে নিজস্ব সম্পদ দিয়েই লড়াই চালাচ্ছে। দৃশ্যত তাদের অস্ত্রসহ সামরিক সরঞ্জামের বড় অংশই এসেছে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর কাছ থেকে। সামরিক বাহিনীর ব্যাটালিয়নগুলোর একের পর এক পতন ঘটছে। সেই অস্ত্র যাচ্ছে প্রতিপক্ষের কাছে। কৌশলগতভাবে জান্তা হেরে যাচ্ছে। তাই এখানে সশস্ত্র লড়াইয়ে বাইরের সমর্থন বা সহযোগিতার প্রয়োজন হচ্ছে না।

 

কালের কণ্ঠ : আপনি সম্প্রতি বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের সঙ্গেও আলোচনায় অংশ নিয়েছেন। বাংলাদেশের আশ্রিত রোহিঙ্গাদের সঙ্গে কি এনইউজির আনুষ্ঠানিক যোগাযোগ শুরু হয়েছে?

অং কিয়াউ মো : আমরা জাতীয় ঐক্য সরকারের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রীসহ বিভিন্ন পরামর্শমূলক বৈঠক করেছি। রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর সঙ্গেও আমরা কয়েকটি বৈঠক করেছি। রোহিঙ্গা ইস্যু জাতীয় ঐক্য সরকারের অগ্রাধিকারমূলক এজেন্ডা। জাতীয় ঐক্য সরকারের মন্ত্রিসভার সদস্য হিসেবে রোহিঙ্গা ইস্যুটি তদারকি করার দায়িত্ব আমার। সুতরাং রোহিঙ্গা ইস্যুতে আমরা একটি প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়েই এগোচ্ছি।

 

কালের কণ্ঠ : বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে কি এনইউজির যোগাযোগ হচ্ছে?

অং কিয়াউ মো : বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে আমাদের কোনো আনুষ্ঠানিক সম্পর্ক নেই। কিন্তু আমরা বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে যুক্ত বিভিন্ন লোকের সঙ্গে বিভিন্ন মাধ্যমে কথা বলছি। আমি বলব, আমাদের চূড়ান্ত লক্ষ্য রোহিঙ্গা জনগণের জন্য ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা। আর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো অনুকূল পরিস্থিতিতে রোহিঙ্গাদের নিরাপদ, মর্যাদাপূর্ণ ও স্বেচ্ছায় প্রত্যাবর্তন। মিয়ানমারে গণতন্ত্র থাকলেই শুধু এটি সম্ভব।

সামরিক বাহিনী নিয়ন্ত্রিত এলাকায় রোহিঙ্গারা ফিরে গেলে তাদের প্রত্যাবাসন টেকসই হবে না। এই সামরিক বাহিনীই রোহিঙ্গাদের ওপর আন্তর্জাতিক অপরাধ করেছে। অপরাধগুলোতে জেনোসাইডের আলামত আছে বলে দাবি করা হয়।

 

কালের কণ্ঠ : আপনাদের জাতীয় ঐক্য সরকারের অভ্যন্তরীণ ও বৈশ্বিক স্বীকৃতি কত দূর?

অং কিয়াউ মো : আন্তর্জাতিক অঙ্গনে কূটনীতির ক্ষেত্রে আমরা ক্রমবর্ধমান সাড়া পাচ্ছি। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে আমাদের বিভিন্ন দ্বিপক্ষীয় ও বহুপক্ষীয় সম্পর্ক আছে। মিয়ানমারের অনেক অঞ্চল এখন আমাদের নিয়ন্ত্রণে। জাতীয় ঐক্য সরকারের মন্ত্রিসভার বেশির ভাগ সদস্য এখন মিয়ানমারেই আছেন। যাঁদের বিদেশ সফরের প্রয়োজন তাঁরা বিদেশ সফর করছেন। আমি বলতে চাই, আমরা আমাদের নিয়ন্ত্রিত এলাকায় নিজস্ব শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করেছি। আমরা খুব দ্রুতই মিয়ানমার জান্তার সামরিক বাহিনীকে বিভিন্ন এলাকা থেকে উত্খাত করছি।

 

কালের কণ্ঠ : আপনি বলছিলেন, মিয়ানমারের অনেক এলাকা এখন আপনাদের অর্থাৎ জান্তাবিরোধীদের নিয়ন্ত্রণে।

অং কিয়াউ মো : হ্যাঁ। মিয়ানমারের মোট ভূখণ্ডের অন্তত ৬০ শতাংশ এখন এনইউজি ও জাতিগত প্রতিরোধ গোষ্ঠীগুলোর নিয়ন্ত্রণে। সেখানে জান্তার নিয়ন্ত্রণ নেই। জান্তা এখনো বড় বড় শহর নিয়ন্ত্রণ করছে। আমরা আমাদের নিয়ন্ত্রিত এলাকায় নিজস্ব সরকারব্যবস্থা ও সেবা চালু করেছি।

 

কালের কণ্ঠ : গত ১ ফেব্রুয়ারি মিয়ানমারের জান্তার অভ্যুত্থান প্রচেষ্টার তৃতীয় বার্ষিকী ছিল। এবার বিশ্বসম্প্রদায়ের কাছে আপনাদের কী আহ্বান ছিল?

অং কিয়াউ মো : আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় মিয়ানমারের জান্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। জান্তা এখনো কোনো সরকার নয়, বরং সামরিক কর্তৃপক্ষ হিসেবে পরিচিত। তবে আমরা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে আরো জোরালো ভূমিকা প্রত্যাশা করি। মিয়ানমারে চলমান বিপ্লব সংঘটিত হচ্ছে দেশে-বিদেশে মিয়ানমারের জনগণের সমর্থন নিয়ে। আমরা অবশ্যই এভাবে জান্তার অভ্যুত্থান প্রচেষ্টার চতুর্থ বার্ষিকী পালন করতে চাই না। আমাদের প্রত্যাশা, ২০২৫ সালের ১ ফেব্রুয়ারির আগেই মিয়ানমারে জান্তা কর্তৃপক্ষের পতন ঘটবে।

 

কালের কণ্ঠ : চীনের সমর্থন কতটা গুরুত্বপূর্ণ?

অং কিয়াউ মো : চীন মিয়ানমারের জান্তাকে সমর্থন করছেএমনটি আমরা মনে করি না। আর মিয়ানমারে গণতন্ত্রীকরণ প্রক্রিয়ায় চীনের ভূমিকা ভূ-রাজনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ। আমরা চীনের একটি ভালো প্রতিবেশী হতে চাই। আমরা আশা করি, চীন সমৃদ্ধি অব্যাহত থাকবে। আমরা আমাদের দেশে গণতন্ত্র, আইনের শাসন, সাম্য, ন্যায়বিচার ও সমৃদ্ধি কামনা করি। এটি মূলত আমাদের অবস্থান এবং আমরা চীনের ক্ষেত্রেও নীতিটি প্রকাশ করেছি।

 

কালের কণ্ঠ : বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের সঙ্গে যোগাযোগ, আলাপ-আলোচনায় আপনারা কী বার্তা দিচ্ছেন?

অং কিয়াউ মো : বসন্ত বিপ্লব এখন বাস্তব। মিয়ানমার রাষ্ট্র গঠন প্রক্রিয়ার এই উপলক্ষ রোহিঙ্গাদের মতো দীর্ঘদিন ধরে প্রান্তিক, বৈষম্য ও নিপীড়নের শিকার হওয়া জনগোষ্ঠীগুলোর জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অন্তর্ভুক্তিমূলক ফেডারেল গণতন্ত্র গড়তে মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের অন্তর্ভুক্তি খুবই প্রয়োজন। রাষ্ট্র গঠনে অবদান রাখার পাশাপাশি অধিকার আদায়েও রোহিঙ্গারা বড় ভূমিকা রাখতে পারে।

সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে মিয়ানমারে সামরিক বাহিনীকে পরাজিত করতে হবে। রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকেও এখানে অবদান রাখতে হবে। তবে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর বেশির ভাগই এখন মিয়ানমারের বাইরে। আমাদের পরিকল্পনা হলো তাদের প্রাপ্য অধিকার দিয়ে যত দ্রুত সম্ভব মিয়ানমারে ফিরিয়ে নেওয়া। অন্য জাতিগোষ্ঠীর পাশাপাশি রোহিঙ্গারাও যাতে সমান সুযোগ পায় তা নিশ্চিত করার সুবর্ণ মুহূর্ত এটি।

মিয়ানমার যখন স্বাধীন হয়েছিল তখন রোহিঙ্গারা মিয়ানমারের সমাজের অংশ ছিল। রোহিঙ্গাদের অবশ্যই আবারও মিয়ানমার সমাজের অংশ হওয়া উচিত। রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে মনে রাখতে হবে, বসন্ত বিপ্লবের ফলে সৃষ্ট এই সুযোগ যেন রোহিঙ্গাদের হাতছাড়া না হয়।

 

কালের কণ্ঠ : সময় দেওয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।

অং কিয়াউ মো : কালের কণ্ঠকেও ধন্যবাদ।

 

 

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

আজ রাজপথে নামছে বিএনপি

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
আজ রাজপথে নামছে বিএনপি

পুরান ঢাকার মিটফোর্ড হাসপাতালের সামনে ব্যবসায়ী লাল চাঁদ ওরফে মো. সোহাগ হত্যাকাণ্ডের অপপ্রচার ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে শান্তিপূর্ণভাবে আজ থেকে রাজপথে থাকবে বিএনপি। বিএনপি মনে করছে, এই হত্যাকাণ্ড নিয়ে জামায়াতে ইসলাম, ইসলামী আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) রাজপথ দখল করার চেষ্টা করছে বলে মনে করছে বিএনপি। এ জন্য রাজপথে বিএনপিও শক্তি ও জনসমর্থন দেখাবে।

এখন পর্যন্ত এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত কাউকে ছাড় দিচ্ছে না দলটি।

এমনকি এ ধরনের ঘটনা যাতে আর না ঘটে সে জন্য দলে শুদ্ধি অভিযান চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন দলের শীর্ষ নেতা। দলের নেতারা বলছেন, হত্যার সঙ্গে সরাসরি জড়িত দুজনকে চিহ্নিত করতে পারেনি আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী। কিন্তু বিরোধী পক্ষ একতরফাভাবে বিএনপির ওপর দায় চাপাচ্ছে। বিএনপিকে উদ্দেশ্য করে কটূক্তি করছে।
এর জবাব দিতে রাজপথে শক্তি দেখাবে দলটি। এরই অংশ হিসেবে আজ সোমবার ছাত্রদল ও ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপি এবং অন্য অঙ্গসংগঠন পৃথক শোডাউন করবে। বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী কালের কণ্ঠকে বলেন, বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠন প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করবে। জনগণ বিএনপির সঙ্গে আছে।
জনগণকে নিয়ে দেশবিরোধীদের ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করা হবে।

মাঠে নামছে ছাত্রদল : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি জানান, গোপন তৎপরতায় দীর্ঘদিন ধরে অভ্যস্ত গুপ্ত সংগঠন কর্তৃক মব সৃষ্টির অপচেষ্টা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ বিনষ্ট করা এবং সারা দেশে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির প্রতিবাদে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল আজ রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে বিক্ষোভ মিছিল করবে। গুপ্ত সংগঠন বলতে ইসলামী ছাত্রশিবির ও তাদের সহযোগী সংগঠনকে বোঝানো হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির।

ছাত্রদলের ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী, আজ দুপুর ২টায় রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে শাহবাগ পর্যন্ত বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হবে। পাশাপাশি সারা দেশের সব জেলা ও মহানগরে বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হবে।

জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব ও সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির এ কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন।

কর্মসূচির বিষয়ে ঢাবি শাখা ছাত্রদলের সভাপতি গণেশ চন্দ্র রায় সাহস বলেন, গুপ্ত সংগঠন হিসেবে সেসব সংগঠনকেই বোঝানো হয়েছে, যারা প্রকাশ্যে নিজেদের রাজনৈতিক কার্যক্রম পরিচালনার বদলে গোপনে রাজনৈতিক এজেন্ডা বাস্তবায়ন ও সহিংসতা ছড়িয়ে দেওয়ার মাধ্যমে রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে অস্থিরতা ও বিশৃঙ্খলা তৈরি করছে। গত ৫ আগস্টের পর একটি মুক্ত রাজনৈতিক পরিবেশ থাকা সত্ত্বেও তাদের এহেন গুপ্ত কার্যক্রম এ দেশের রাজনৈতিক পরিবেশকে অসহনশীল করে তুলছে এবং রাজনৈতিক বিষয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত করে তুলছে। এ রকম কুচক্রী কার্যক্রমের বিরুদ্ধেই জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল তার কর্মসূচি গ্রহণ করেছে, যেন দেশবাসীকে এসব বিভ্রান্তিকর বিষয়ে সচেতন করে তোলা যায়।

গুপ্ত সংগঠন বলতে কাদের বোঝানো হচ্ছে জানতে চাইলে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির বলেন, ছত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর যারা ক্যাম্পাসগুলোতে মব সৃষ্টি করে সাধারণ শিক্ষার্থী নামে অপ্রীতিকর পরিস্থিতি তৈরি করছে, তারাই গুপ্ত সংগঠন। ছাত্রশিবির এবং গুপ্তভাবে সংগঠন পরিচালনা করতে ছাত্রশিবিরকে যারা পৃষ্ঠপোষকতা করে, আশ্রয়-প্রশ্রয় দেয় তারা।

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

সশস্ত্র বাহিনীর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেসির মেয়াদ আরো দুই মাস বাড়ল

বিশেষ প্রতিনিধি
বিশেষ প্রতিনিধি
শেয়ার
সশস্ত্র বাহিনীর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেসির মেয়াদ আরো দুই মাস বাড়ল

বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীতে কর্মরত সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন ও এর ওপরের সমপদমর্যাদার কর্মকর্তাদের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতার মেয়াদ আরো দুই মাস (৬০ দিন) বাড়ানো হয়েছে। এ বিষয়ে গতকাল রবিবার প্রজ্ঞাপন জারি করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। এর আগে গত ১৩ মে থেকে তাঁদের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেসির ক্ষমতার মেয়াদ দুই মাস বাড়ানো হয়েছিল। সেই মেয়াদ গতকাল শেষ হয় ।

মেয়াদ বাড়ানোর আদেশে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীতে কর্মরত সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন ও এর ওপরের সমপদমর্যাদার কমিশন্ড কর্মকর্তাদের (কোস্ট গার্ড ও বিজিবিতে প্রেষণে নিয়োজিত সমপদমর্যাদার কর্মকর্তারাসহ) ‌‘দ্য কোড অব ক্রিমিনাল প্রসিডিউর, ১৮৯৮-এর ১২(১) ও ১৭ ধারা অনুযায়ী স্পেশাল এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা অর্পণ করা হলো। এর মেয়াদ হবে ১৪ মার্চ থেকে ৬০ দিন পর্যন্ত। সারা দেশে তাঁরা এই ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারবেন বলেও প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে।

প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, সেনাবাহিনীর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা ফৌজদারি কার্যবিধি-১৮৯৮-এর ৬৪, ৬৫, ৮৩, ৮৪, ৮৬, ৯৫(২), ১০০, ১০৫, ১০৭, ১০৯, ১১০, ১২৬, ১২৭, ১২৮, ১৩০, ১৩৩ ও ১৪২ ধারার অপরাধগুলো বিবেচনায় নিতে পারবেন।

প্রথমে গত বছরের ১৭ সেপ্টেম্বর সেনাবাহিনীর কমিশন্ড অফিসারদের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছিল জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। পরে ৩০ সেপ্টেম্বর প্রজ্ঞাপন সংশোধন করে বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর কমিশন্ড অফিসারদের (সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন ও এর ওপরের সমপদমর্যাদার কর্মকর্তা) এই ক্ষমতা দেওয়া হয়। অর্থাৎ শুধু সেনাবাহিনী নয়, বিমান ও নৌবাহিনীর কমিশন্ড অফিসারদেরও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা দেওয়া হয়। তখন ৬০ দিনের জন্য এই ক্ষমতা দেওয়া হয়েছিল।

সেই মেয়াদ নভেম্বরের মাঝামাঝি শেষ হয়েছিল। পরে সেই ক্ষমতার মেয়াদ কয়েক দফায় বাড়ানো হয়।

মন্তব্য

শেখ হাসিনাসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে গুমের অভিযোগ বিএনপির

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
শেখ হাসিনাসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে গুমের অভিযোগ বিএনপির

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক ও সাবেক পুলিশপ্রধান (আইজিপি)  বেনজীর আহমেদসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর কার্যালয়ে গুমের অভিযোগ দিয়েছে বিএনপি।

গতকাল রবিবার দুপুরে ভুক্তভোগীদের সঙ্গে নিয়ে এই অভিযোগ দেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির নির্বাহী সদস্য এবং তথ্য সেলের সমন্বয়ক সালাহউদ্দিন খান।

অভিযোগ তদন্ত করে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম।

২০১৯ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত গুমের ঘটনায় ১১ জন ভুক্তভোগীর নাম উল্লেখ করা হয়েছে লিখিত অভিযোগে।

তাঁরা হলেনঝালকাঠির নলছিটির মোহাম্মদ আলী খান, সাবেক যুবদল নেতা মো. জিল্লুর রহমান, আকিদুল আলী, খোরশেদ আলম, অ্যাডভোকেট আশরাফ আলী, মো. বাবুল, এনামুল, এরশাদ আলী, মো. গিয়াস উদ্দিন খান, মো. কবির উদ্দিন খান ও নজরুল ইসলাম।

অভিযোগে বলা হয়েছে, ২০১৯ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন সময় এসব ভুক্তভোগীকে অপহরণের পর আয়নাঘরে আটকে রেখে নির্যাতন করা হয়। গত বছর ৫ আগস্ট সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পলায়নের পর মোহাম্মদ আলীকে হাত ও চোখ বেঁধে পূর্বাচলের শেষ প্রান্তে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে ফেলে আসা হয়। পাঁচ বছর তিন মাস ১৩ দিন পর তিনি মুক্তি পান।

এ ঘটনায় মোহাম্মদ আলী খান বিএনপি মহাসচিবের মাধ্যমে ন্যায়বিচার চেয়ে আবেদন করেন।

তাঁর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ১১ জন ভুক্তভোগীর নাম উল্লেখ করে আবেদনটি করা হয় বলে জানান সালাহউদ্দিন খান।

সালাহউদ্দিন খান সাংবাদিকদের বলেন, ভুক্তভোগীরা শেখ হাসিনাসহ ১৬ জন এবং অজ্ঞাতপরিচয় আরো ৩০ থেকে ৩৫ জনের নাম উল্লেখ করে ন্যায়বিচারের আশায় আবেদন করেছেন। ভুক্তভোগীরা বলেছেন, শুধু বিএনপি করার অপরাধে বিগত সরকারের নির্মম নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে তাঁদের।

মন্তব্য

সোহাগের পরিবারের পাশে তারেক রহমান

বরগুনা প্রতিনিধি
বরগুনা প্রতিনিধি
শেয়ার
সোহাগের পরিবারের পাশে তারেক রহমান

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে পুরান ঢাকায় নিহত ব্যবসায়ী লাল চাঁদ ওরফে সোহাগের পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছেন দলটির ভাইস চেয়ারম্যান নূরুল ইসলাম মনি। গতকাল রবিবার বিকেলে তিনি বরগুনা জেলার পাথরঘাটা উপজেলার কাকচিড়া ইউনিয়নের সোহাগের গ্রামের বাড়িতে যান। তিনি স্থানীয় কাকচিড়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে আয়োজিত সভায় বক্তব্য দেন।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে তিনি নিহত সোহাগের পরিবারকে ৫০ হাজার টাকা আর্থিক সহায়তা প্রদান করেন।

সোহাগের পরিবারের যেকোনো প্রয়োজনে পাশে থাকারও আশ্বাস দেন। এ ছাড়া হত্যাকাণ্ডের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে বিএনপির পক্ষ থেকে সব ধরনের সহায়তার আশ্বাস দেন। স্বামীর হত্যার বিচার চেয়ে তখন সোহাগের স্ত্রী লাকি আক্তার বলেন, আমি আমার স্বামীর হত্যাকারীদের ফাঁসি চাই। আমার পরিবারের নিরাপত্তা চাই।
সভায় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান নূরুল ইসলাম মনি বলেন, এই এলাকার সন্তান ঢাকার মিটফোর্ডের ব্যবসায়ী সোহাগকে তাঁর ব্যাবসায়িক পার্টনার ও তাদের ভাড়াটেরা নৃশংসভাবে হত্যা করেছে। বিএনপি ঘটনার সঙ্গে সঙ্গে তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। দলের পক্ষ থেকে এর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করা হয়েছে। সম্পৃক্তদের দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
বিএনপি কোনো অপকর্মকে প্রশ্রয় দেয় না। পাথরঘাটা উপজেলা বিএনপির আহবায়ক চৌধুরী মো. ফারুকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় বক্তব্য দেন বরগুনা জেলা বিএনপির সাবেক সহসভাপতি ফজলুল হক মাস্টার, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক কে এম সফিকুজ্জামান মাহফুজ, জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক জাবেদুল ইসলাম জুয়েল, জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম নাভিল প্রমুখ।

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ