<p><span style="font-size:11pt"><span style="text-autospace:none"><span style="vertical-align:middle"><span style="line-height:115%"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">গতকাল রবিবার দুপুর দেড়টা। নিজের গাড়ি নিয়ে আবদুস সোবহান রাহাত আলী উচ্চ বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে আসেন চট্টগ্রাম-১২ (পটিয়া) আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী হুইপ সামশুল হক চৌধুরী। কিন্তু বুথে প্রবেশ করতে পারেননি। গাড়ি থেকে নামার সঙ্গে সঙ্গে স্থানীয় আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতাকর্মীদের তোপের মুখে পড়েন। সঙ্গে বিক্ষুব্ধ জনতাও তাঁকে দুয়ো দেয়। অবস্থা বেগতিক দেখে তিনি ফিরে যান।</span></span></span></span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="text-autospace:none"><span style="vertical-align:middle"><span style="line-height:115%"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">একই সময় নৌকার প্রার্থী মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরী চট্টগ্রাম নগরীর প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলন করেন। সেখানে তিনি বলেন, পটিয়ার জনগণের বিশাল অংশ স্বতন্ত্র প্রার্থীর ওপর ক্ষুব্ধ। এবার দলীয় মনোনয়ন না পাওয়ায় স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে বিভিন্ন জায়গায় ভোট চাইতে গিয়ে সাধারণ মানুষের তোপের মুখে পড়েন তিনি। সাধারণ মানুষ বিভিন্নভাবে ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়েছে। মূলত কর্মী ও সমর্থকদের ওপর যা হয়েছে, তা স্বতন্ত্র প্রার্থীর কর্মের ফল।</span></span></span></span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="text-autospace:none"><span style="vertical-align:middle"><span style="line-height:115%"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">হুইপের ওপর সর্বশেষ গত শনিবার হামলার ঘটনাকে সাজানো বলে দাবি করেন মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরী। তিনি বলেন, চট্টগ্রাম-কক্সবাজার সড়ক সম্প্রসারণের সময় শান্তিরহাটের ব্যবসায়ীদের ক্ষতিপূরণের টাকা আত্মসাৎ করায় ক্ষুব্ধ হয়েছে এলাকাবাসী। এ কারণে স্বতন্ত্র প্রার্থীর গাড়িবহর আটকে রাখা হয়। এখানে গাড়ি ভাঙচুর বা গুলিবিদ্ধ হওয়ার কোনো ঘটনা ঘটেনি। নিজেরাই নিজেদের গাড়ি ভাঙচুর করে আওয়ামী লীগ ও নৌকার সমর্থকদের মামলায় জড়ানোর অপচেষ্টা চালানো হচ্ছে। স্বতন্ত্র প্রার্থীর বোনের ওপর আক্রমণের ঘটনাটিও সাজানো।</span></span></span></span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="text-autospace:none"><span style="vertical-align:middle"><span style="line-height:115%"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">এর আগে সকাল ১০টার দিকে পশ্চিম পটিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভোট দিয়ে সাংবাদিকদের মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, </span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">‘</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">নির্বাচন সুষ্ঠু হচ্ছে। কোথাও কোনো সমস্যা নেই। উনার (হুইপ সামশুল) এজেন্টকে বের করে দেওয়ার কিছুই নেই। মূলত এজেন্ট দেওয়ার মতো লোক ছিল না। আর এখন বলছে, আমরা তাদের এজেন্ট বের করে দিয়েছি। বিষয়টি মিথ্যা।</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">’</span></span></span></span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="text-autospace:none"><span style="vertical-align:middle"><span style="line-height:115%"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">উল্লেখ্য, সামশুল তাঁর নির্বাচনী এলাকায় প্রচার-প্রচারণার সময় বেশ কয়েকটি স্থানে জনরোষের শিকার হন। এমনকি তাঁর বিরুদ্ধে ঝাড়ু মিছিল, জুতা নিক্ষেপ, কান ধরে উঠবসসহ নানান ঘটনা দেখে জনতা। কচুয়াই ইউনিয়নে তিনি প্রচারণায় গেলে নারীরা ঝাড়ু মিছিল করে তাড়িয়ে দেন। এর আগে কাশিয়াইশ ইউনিয়নে প্রচারণায় গেলে সেখানেও লোকজনের তোপের মুখে পড়েন হুইপ সামশুল।</span></span></span></span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="text-autospace:none"><span style="vertical-align:middle"><span style="line-height:115%"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">গতকাল বিভিন্ন কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, পশ্চিম পটিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, আবদুস সোবহান রাহাত আলী উচ্চ বিদ্যালয়, পাইকপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, উত্তর হরিণখাইন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, নোমানিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, আশিয়া ফারুক রিজিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রগুলোতে ভোটারের উপস্থিতি ছিল তুলনামূলক বেশি। </span></span></span></span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="text-autospace:none"><span style="vertical-align:middle"><span style="line-height:115%"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে শোভনদণ্ডী ইউনিয়নের রশিদাবাদ এলাকার আরফা করিম উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্র দখলে রাখার অভিযোগ ওঠে হুইপপুত্র নাজমুল করিম চৌধুরী শারুনের বিরুদ্ধে। সেখানে নৌকার লোকজন ভোট দিতে পারেনি। ৭০ বছরের নাজমা বেগম অভিযোগ করে বলেন, </span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">‘</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">আমি বয়স্ক মানুষ। আমাকে সামশুলের লোকজন ভোট দিতে দেয়নি। আমার ভোট তারা দিয়ে দিছে। আমার ভোট তারা কিভাবে দিল? আমি ভোট না দিয়ে চলে এসেছি।</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">’</span></span></span></span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="text-autospace:none"><span style="vertical-align:middle"><span style="line-height:115%"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">ছনহরা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতা মামুনুর রশিদ রাসেল কালের কণ্ঠকে বলেন, দুপুরের দিকে সামশুল হক চৌধুরীর অনুসারী ওসমান আলমদার ছনহরা চাটরা নোমানিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বহিরাগতদের নিয়ে কেন্দ্র দখল করার চেষ্টা করেন। তখন খবর দেওয়া হলে ওসি জসিম উদ্দিন পুলিশ নিয়ে কেন্দ্রে আসেন। এ সময় ওসির ওপর হামলার চেষ্টা করেন ওসমান। পুলিশ তখনই তাঁকে আটক করে।</span></span></span></span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="text-autospace:none"><span style="vertical-align:middle"><span style="line-height:115%"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের অভিযোগ, ২০০৮ সালের নির্বাচনে পটিয়ার রাজনীতির মাঠে বিএনপিকে ঠেকাতে যুবদল, জাতীয় পার্টি হয়ে আওয়ামী লীগে যোগ দেওয়া সামশুল হক চৌধুরীকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন দেওয়া হয়। এরপর ২০১৪ সালের দশম ও ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনসহ পর পর তিনবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন তিনি।</span></span></span></span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="text-autospace:none"><span style="vertical-align:middle"><span style="line-height:115%"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">তাঁরা আরো অভিযোগ করেন, গত ১৫ বছরে সামশুল পটিয়ায় আওয়ামী লীগের সবচেয়ে বেশি ক্ষতি করেছেন। দলের ভেতর ও বাইরে বিভাজন সৃষ্টি করে পটিয়ায় আওয়ামী লীগকে সুসংগঠিত হতে দেননি। এত দিন তিনি সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা দিয়েছেন বিএনপি-জামায়াত থেকে আসা দলছুট নেতাদের। সামশুল হক দলের মনোনয়ন না পাওয়ায় পটিয়ার মানুষ খুশি হয়েছে।</span></span></span></span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="text-autospace:none"><span style="vertical-align:middle"><span style="line-height:115%"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">নেতাকর্মীদের আরো অভিযোগ, টানা তিনবারের সংসদ সদস্য এবার আওয়ামী লীগের মনোনয়নবঞ্চিত সামশুল হক চৌধুরী স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ায় তাঁর সঙ্গে দলের নেতাকর্মীরা ছিলেন না। তাই তিনি নির্বাচনী বৈতরণী পার হতে বিএনপি-জামায়াতের নেতা ও দলছুট নেতাকর্মীদের ওপর ভর করছিলেন। ভোটগ্রহণের দিন পর্যন্ত তারাও ছিল না নির্বাচনের মাঠে।</span></span></span></span></span></span></span></span></p> <p> </p>