নদীমাতৃক দেশে শুধু রাজধানী ঢাকাকে কেন্দ্র করেই রয়েছে পাঁচটি বড় নদী। বুড়িগঙ্গা, তুরাগ, ধলেশ্বরী, শীতলক্ষ্যা ও বালু—এই পাঁচটি নদীর সঙ্গে ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ ও টঙ্গী নদীবন্দরকে যুক্ত করতে চায় সরকার। এর জন্য ২০১৫ সালে তিন পর্যায়ের একটি প্রকল্প নেওয়া হয়। কিন্তু পাঁচ নদী ও তিন নদীবন্দরকে এক নৌপথে এখনো আনা যায়নি।
বৃত্তাকার নৌপথ প্রকল্প
পাঁচ নদী এক পথে আনতে শত বাধা
সজিব ঘোষ

মূলত স্থানীয় রাজনৈতিক বাধা, মামলা জটিলতা, বিভিন্ন জায়গায় নিচু সেতু ও অর্থায়ন সংকটে প্রকল্পের কাজ গতি পাচ্ছে না। এ অবস্থায় আজ পালিত হচ্ছে আন্তর্জাতিক নৌ দিবস। দিনটির এবারের প্রতিপাদ্য—‘নদীর পরিবেশ দূষণমুক্ত রাখা’। বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডাব্লিউটিএ) সূত্র বলেছে, নদীর জায়গায় যাঁদের স্থাপনা আছে, স্থানীয় পর্যায়ে রাজনৈতিকভাবে তাঁরা সবাই প্রভাবশালী।
টঙ্গী এলাকায় একটি বড় প্রতিষ্ঠানের মামলার কারণে তুরাগ নদের প্রায় এক কিলোমিটার পথ এখনো বুঝে পাওয়া যাচ্ছে না। তবে বেশির ভাগ বাধা দূর করা গেছে।
এ অবস্থায় ঢাকাকে ঘিরে থাকা নদীগুলোয় নৌযান চলাচলের উপযোগিতা কমছে। ব্যাপক হারে কমেছে পণ্যবাহী নৌযান। কাছাকাছি দূরত্বে যাত্রীবাহী নৌযান চলাচল হয় না বললেই চলে।
পাঁচ নদীর মিলিত দৈর্ঘ্য ১১০ কিলোমিটার
ঢাকার পাশের এই পাঁচ নদীর মিলিত দৈর্ঘ্য ১১০ কিলোমিটার।
পাঁচ নদীর মধ্যে আমিনবাজার সেতু থেকে ত্রিমুখ সেতু পর্যন্ত তুরাগ নদের দৈর্ঘ্য ৩৮ কিলোমিটার, ত্রিমুখ সেতু থেকে সুলতানা কামাল সেতু পর্যন্ত বালু নদের দৈর্ঘ্য ২১ কিলোমিটার, সুলতানা কামাল সেতু থেকে মুক্তারপুর সেতু পর্যন্ত শীতলক্ষ্যার দৈর্ঘ্য ২২ কিলোমিটার, মুক্তারপুর থেকে বক্তাবলী পর্যন্ত ধলেশ্বরীর দৈর্ঘ্য ১২ কিলোমিটার এবং বক্তাবলী থেকে আমিনবাজার পর্যন্ত বুড়িগঙ্গা নদীর দৈর্ঘ্য ১৭ কিলোমিটার। এই পাঁচ নদী একটার সঙ্গে আরেকটা ঢাকাকে ঘিরে রাখায় রাজধানীর চারপাশে বৃত্তাকার নদীপথ তৈরি হয়েছে। কিন্তু প্রাকৃতিক এই ঐশ্বর্যকে কাজে লাগানো যাচ্ছে না।
প্রকল্পের উপপরিচালক মতিউল ইসলাম কালের কণ্ঠকে বলেন, অনেক মামলা আদালতে বিচারাধীন। তবে ধীরে ধীরে শংকট কাটছে। অনেক জায়গা বুঝে নেওয়ার আশ্বাস পাওয়া গেছে। আগামী শুষ্ক মৌসুম থেকে আটকে থাকা জায়গায় পুরোদমে কাজ শুরু করা যাবে।
তবে রাজনৈতিক বাধার কথা মেনে নিতে রাজি হননি নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। তিনি কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘রাজনৈতিক বাধার কোনো অভিযোগ আমার কাছে আসেনি। আমার জানাও নেই। কোনো ঠিকাদারও বলেননি তাঁরা কাজ করতে পারছেন না। করোনাসহ অন্য কিছু কারণে কাজের গতি কিছুটা কমেছে, এটা ঠিক। হয়তো প্রকল্পের সময়ও বাড়বে। কিন্তু কাজ চলমান আছে এবং এটা শেষ হবে।’
কোন নদীর কত পথ
২০১৫ সালে ‘ঢাকা শহরের চারপাশের বুড়িগঙ্গা, তুরাগ, ধলেশ্বরী, শীতলক্ষ্যা ও বালু নদের তীর ভূমিতে তীর রক্ষা, হাঁটার পথ তৈরি ও জেটিসহ আনুষঙ্গিক অবকাঠামো নির্মাণ (প্রথম পর্যায়)’ প্রকল্পটি হাতে নেয় সরকার। এই প্রকল্পটিই বৃত্তাকার নৌপথ নামে পরিচিত। প্রথম পর্যায়ের কাজ শেষ হয়েছে। এখন দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজ চলছে। প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে বিআইডাব্লিউটিএ।
প্রকল্প পরিচালক আবু জাফর মোহাম্মদ শাহনেওয়াজ কবির কালের কণ্ঠকে বলেন, পুরো পথটিকে তিনটি ভাগে বিভক্ত করে তিন প্রকল্পে কাজ করা হচ্ছে। নদীর এলাকা দখলমুক্ত, হাঁটা পথ তৈরির পাশাপাশি নদীর গভীরতা ও প্রশস্ততা বাড়ানোর কাজও করা হচ্ছে। এতে করে পণ্য ও যাত্রীবাহী নৌযান চলাচলের সংখ্যা বাড়বে। যাত্রীবাহী নৌযান চলাচলকে উৎসাহিত করতে নদীর পরিবেশ পরিচ্ছন্ন থাকা খুবই জরুরি। তার ওপরও জোর দেওয়া হচ্ছে।
প্রকল্পের শুরুতে রাজধানীর বছিলা, টঙ্গী ও শ্যামপুরে ১৫ কিলোমিটার ও নারায়ণগঞ্জ সদর এবং সিদ্ধিরগঞ্জের কাঞ্চনপুর ও টানবাজার এলাকায় পাঁচ কিলোমিটার হাঁটা পথ তৈরি করা হয়েছে। ওই অংশে যেসব জায়গায় দখল ছিল সেগুলো উচ্ছেদ করা হয়েছে। পরিকল্পনা অনুযায়ী হাঁটা পথ নির্মাণকাজও শেষ করা হয়েছে।
পরিবহন বিশেষজ্ঞ বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) অধ্যাপক শামছুল হক কালের কণ্ঠকে বলেন, নদীর খারাপ অবস্থার জন্য নদীপথগুলো মরে যাচ্ছে। নৌপথ সচল থাকলে সড়কের ওপর চাপ কমে আসবে। নৌপথে পণ্য পরিবহনের খরচও কম। নৌপথ সচল ও পরিবেশ ভালো থাকলে যাত্রী চলাচলও বাড়বে।
দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজে প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ছে
২০১৮ সালের জুলাইয়ে শুরু হওয়া দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজ চলতি বছরের জুনে শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এই সময়ের মধ্যে কাজ শেষ হয়নি। আরো এক বছর প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। এই অংশের মধ্যে ফতুল্লা, গাবতলী, আমিনবাজার, রায়েরবাজার, কামরাঙ্গীর চর, আশুলিয়া, টঙ্গী ও পাগার মৌজায় ৩৫ কিলোমিটার এলাকায় এবং নারায়ণগঞ্জের বন্দর, মদনগঞ্জ ও সাইদপুর এলাকায় ১৭ কিলোমিটারজুড়ে প্রকল্পের কাজ হচ্ছে।
প্রকল্পের নথির তথ্যানুযায়ী, দ্বিতীয় পর্যায়ে এক হাজার ১৮১ কোটি ১০ লাখ ৩১ হাজার টাকা খরচ করে বুড়িগঙ্গা, তুরাগ, শীতলক্ষ্যা ও বালু নদের তীরভূমি দখলমুক্ত করে সৌন্দর্য বাড়ানো; নদীর দুই তীরের পরিবেশ উন্নয়ন; নদীর দখলমুক্ত তীরভূমিতে অবকাঠামো নির্মাণ করে ব্যবহার; নদীর নাব্যতা, গভীরতা ও প্রশস্ততা বৃদ্ধি করা এবং নদীর পানির দূষণ কমানো হবে।
এই প্রকল্পের অধীনে বুড়িগঙ্গা, তুরাগ, শীতলক্ষ্যা ও বালু নদের তীরভূমিতে ৫২ কিলোমিটার হাঁটার রাস্তা নির্মাণ করা হবে। এই ৫২ কিলোমিটারের মধ্যে ঢাকা নদীবন্দরের অন্তর্ভুক্ত অঞ্চল ২১ কিলোমিটার, টঙ্গী নদীবন্দরের অন্তর্ভুক্ত অঞ্চল ১৪ কিলোমিটার এবং নারায়ণগঞ্জ নদীবন্দরের অন্তর্ভুক্ত ১৭ কিলোমিটার।
প্রকল্পের অগ্রগতি প্রতিবেদনের তথ্য বলছে, গত ২০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সার্বিক কাজের অগ্রগতি হয়েছে ৭০ শতাংশ। আর টাকা খরচ হয়েছে প্রায় ৪০০ কোটি।
তৃতীয় পর্যায়ের কাজ এখনই শুরু হচ্ছে না
বিআইডাব্লিউটিএ সূত্র বলেছে, তৃতীয় পর্যায়ের কাজ দ্রুত শুরু করার কথা থাকলেও প্রকল্পটি এখনই জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটিতে (একনেক) তোলা হয়নি। বৃত্তাকার নৌপথ ঘিরে সরকারের বহু বিভাগ একসঙ্গে কাজ করছে। কাজের সমন্বয়, অগ্রাধিকার এবং অর্থায়নের জন্য সরকার বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে আলোচনা করেছে। এখন বিশ্বব্যাংক পুরো বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করছে।
বিশ্বব্যাংকের মতামত না আসা পর্যন্ত এই নৌপথ ঘিরে নতুন কোনো প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হবে না। তবে তৃতীয় প্রকল্প প্রস্তাব করা রয়েছে। প্রস্তাবে বাকি ১৪৮ কিলোমিটার এলাকায় কাজ শেষ করার জন্য তিন বছর লাগবে বলে জানানো হয়েছে। এই অংশের জন্য খরচ ধরা হয়েছে দুই হাজার ২২৭ কোটি টাকা।
প্রকল্পের পুরো এলাকায় জমি অধিগ্রহণ, ভূমি উন্নয়ন, বিদ্যমান তীর রক্ষা এলাকায় কংক্রিটের হাঁটা পথ, নিচু তীরভূমিতে কলামের ওপর হাঁটা পথ, সীমানাপ্রাচীর, বসার বেঞ্চ, কংক্রিট ও স্টিলের জেটি, পার্কিং ইয়ার্ড নির্মাণ করা হবে। এ ছাড়া ড্রেনেজ ব্যবস্থাপনা, ইকো পার্ক, সবুজ বনায়ন ও জলজ উদ্ভিদ বেষ্টনী গড়ে তোলা হবে।
প্রকল্পসংশ্লিষ্ট সূত্র বলেছে, উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব (ডিপিপি) প্রস্তুত করে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। ২০২০ সালের আগস্টে যাচাই সভা হয়। পরে মহাপরিকল্পনা প্রণয়নসংক্রান্ত কারিগরি কমিটির ২০২১ সালের ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত সভায় প্রকল্পের কাজ আপাতত স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
টঙ্গীর পথে বাধা ১৩ নিচু সেতু
টঙ্গী নদীবন্দরের অন্তর্ভুক্ত ধউর সেতু থেকে ত্রিমুখ সেতু পর্যন্ত মোট ১৩টি নিচু সেতু রয়েছে। ফলে উঁচু নৌযান এই ৩৮ কিলোমিটার নৌপথ পাড়ি দিতে পারে না। তাই এই ১৩টি সেতু ভেঙে ফেলার প্রস্তাব দিয়েছে বিআইডাব্লিউটিএ। এর মধ্যে আশুলিয়া সেতু, ধউর সেতু, টঙ্গী সেতু, ত্রিমুখ সেতু, বালু সেতু, ইছাপুর সেতু ও টঙ্গী রেল সেতু অন্যতম।
প্রকল্প পরিচালক আবু জাফর মোহাম্মদ শাহনেওয়াজ কবির বলেন, ‘সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সঙ্গে এ বিষয়ে আমরা কথা বলেছি। এখন পর্যন্ত কিছু সেতু সরিয়ে নেওয়ার আশ্বাস পাওয়া গেছে। সব সেতু সরানো না হলে এই অংশ সচল হবে না। আর একটি অংশ বাধাপ্রাপ্ত হলে পুরো বৃত্তাকার নৌপথই বাধাপ্রাপ্ত হবে।’
সম্পর্কিত খবর

এসএসসি ও সমমানের ফল প্রকাশ আজ
নিজস্ব প্রতিবেদক

এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হবে আজ বৃহস্পতিবার। দুপুর ২টা থেকে যেকোনো মোবাইলে এসএমএস, শিক্ষা বোর্ডগুলোর ওয়েবসাইট এবং নিজ নিজ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ফল জানতে পারবে শিক্ষার্থীরা। এই ফল প্রকাশের মাধ্যমে এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় অংশ নেওয়া ১৯ লাখ শিক্ষার্থীর অপেক্ষার অবসান হবে।
এ বছর আগের মতো ফলাফল প্রকাশের কোনো আনুষ্ঠানিকতা থাকছে না।
শিক্ষা উপদেষ্টা ড. সি আর আবরার গতকাল বলেছেন, এবারের এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফলাফল হস্তান্তরে আনুষ্ঠানিকতা থাকছে না। দুই মাসের কম সময়ের মধ্যেই সব বোর্ডের ফলাফল প্রকাশিত হচ্ছে। সব বোর্ড নিজেদের মতো করে ফল প্রকাশ করবে।
যেভাবে জানা যাবে ফল : যেকোনো মোবাইলে এসএমএসের মাধ্যমে ফলাফল জানতে মোবাইলের এসএমএস অপশনে গিয়ে ঝঝঈ লিখে স্পেস দিয়ে বোর্ডের নামের প্রথম তিন অক্ষর লিখে স্পেস দিয়ে রোল নম্বর লিখে স্পেস দিয়ে পরীক্ষার বছর লিখে তা ১৬২২২ নম্বরে পাঠাতে হবে। ফিরতি এসএমএসে ফল জানিয়ে দেওয়া হবে।
দাখিলের ফল পেতে উধশযরষ লিখে স্পেস দিয়ে গধফ লিখে স্পেস দিয়ে রোল নম্বর লিখে স্পেস দিয়ে ২০২৫ লিখে ১৬২২২ নম্বরে পাঠাতে হবে। কারিগরি বোর্ডের ক্ষেত্রে ঝঝঈ লিখে স্পেস দিয়ে ঞবপ লিখে স্পেস দিয়ে রোল নম্বর লিখে স্পেস দিয়ে ২০২৫ লিখে ১৬২২২ নম্বরে পাঠাতে হবে।
শিক্ষা বোর্ডগুলোর সমন্বিত ওয়েবসাইট http://www.educationboardresults.gov.bd -এর মাধ্যমে এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফল জানা যাবে। আন্ত শিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটি জানিয়েছে, ওয়েবসাইটে রোল নম্বর, রেজিস্ট্রেশন নম্বর, পরীক্ষার নাম, বছর ইনপুট দিয়ে ও শিক্ষা বোর্ড সিলেক্ট করে ‘সাবমিট’ বাটনে ক্লিক করে ফল জানা যাবে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, এবারের এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় নিয়মিত-অনিয়মিত মিলিয়ে মোট পরীক্ষার্থী ছিল ১৯ লাখ ২৮ হাজার ৯৭০ জন। ৯টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে ১৪ লাখ ৯০ হাজার ১৪২ জন শিক্ষার্থী। দাখিল পরীক্ষায় অংশ নেয় দুই লাখ ৯৪ হাজার ৭২৬ জন এবং কারিগরি বোর্ডের অধীনে পরীক্ষার্থী ছিল এক লাখ ৪৩ হাজার ৩১৩ জন।
ফল প্রকাশের পর তা পুনর্নিরীক্ষণের সময়ও জানিয়েছে আন্ত শিক্ষা বোর্ড। ১১ থেকে ১৭ জুলাই পর্যন্ত আবেদন করা যাবে। আবেদন পদ্ধতি শিক্ষা বোর্ডগুলোর ওয়েবসাইট এবং টেলিটক বাংলাদেশের ওয়েবসাইটে আজ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানিয়ে দেওয়া হবে।

ভারতীয় জেনারেলের দাবি
চীন-পাকিস্তান-বাংলাদেশের জোট ভারতের নিরাপত্তায় প্রভাব ফেলতে পারে
কালের কণ্ঠ ডেস্ক

ভারতের প্রতিরক্ষা সর্বাধিনায়ক (সিডিএস) জেনারেল অনিল চৌহান বলেছেন, চীন, পাকিস্তান ও বাংলাদেশ নিজেদের স্বার্থে একে অন্যের প্রতি ঝুঁকছে। এই ঘনিষ্ঠতা ভারতের নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতার ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলতে পারে। গত মঙ্গলবার ভারতের চিন্তক প্রতিষ্ঠান অবজারভার রিসার্চ ফাউন্ডেশন (ওআরএফ) আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে অনিল চৌহান এ কথাগুলো বলেন।
জেনারেল চৌহান বলেন, ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলের দেশগুলোর অর্থনৈতিক সংকট বহিরাগত শক্তিদের প্রভাব বিস্তারের সুযোগ করে দিচ্ছে।
জেনারেল চৌহান বলেন, এই প্রবণতা ভারতের জন্য বড় এক সমস্যা। সম্প্রতি চীনের কর্মকর্তারা সে দেশে পাকিস্তান ও বাংলাদেশের কর্মকর্তাদের সঙ্গে এক সম্মেলনে মিলিত হয়েছিলেন।
চীন ও পাকিস্তানের ঘনিষ্ঠতা বহু পুরনো। বাংলাদেশে রাজনৈতিক পালাবদল, ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেশত্যাগ এবং তাঁর ভারতে আশ্রয়লাভ ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে।
অনুষ্ঠানে সিডিএস জেনারেল চৌহানকে পাকিস্তান-ভারত সাম্প্রতিক সংঘাতের সময় চীনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন করা হয়। জবাবে তিনি বলেন, ওই সংঘাতে পাকিস্তানকে চীন কতটা ও কিভাবে সমর্থন দিয়েছে, সহায়তা করেছে, তা বলা খুবই কঠিন।
জেনারেল চৌহান বলেন, তবে ঘটনা হলো পাকিস্তান তাদের প্রয়োজনীয় প্রতিরক্ষা সরঞ্জামের বেশির ভাগটাই চীন থেকে নেয়। সে কারণে পাকিস্তানে চীনের উপস্থিতি থাকার কথা। বিশেষ করে সংঘাত ও সংঘর্ষের সময়। সেটা কতটা ছিল এবং সমর্থন বা সহায়তার চরিত্র কেমন ছিল, তা বলা সহজ নয়।
অপারেশন সিন্দূর নাম দিয়ে পাকিস্তানে হামলার প্রসঙ্গে ভারতের উপসেনাপ্রধান লে. জেনারেল রাহুল আর সিং অবশ্য গত শুক্রবার বলেছিলেন, সংঘাতের সময় পাকিস্তানকে চীন শুধু সাহায্যই করেনি, সংক্ষিপ্ত ওই যুদ্ধকে তারা তাদের অস্ত্রের পরীক্ষাগার করে তুলেছিল।
ওই কর্মকর্তার দাবি, ভারতের বিরুদ্ধে পাকিস্তান ওই যুদ্ধে যেসব অস্ত্র ব্যবহার করেছে, সেগুলোর ৮১ শতাংশই চীনের তৈরি। সেসব অস্ত্র প্রকৃত যুদ্ধের সময় কতটা কার্যকর, সে পরীক্ষাও চীন করে ফেলেছে। ওই সংঘাতকে চীন তার অস্ত্রসম্ভারের পরীক্ষাগার হিসেবে ব্যবহার করেছে। সূত্র : ডেকান হেরাল্ড

গণ-অভ্যুত্থানে মানবাধিকার লঙ্ঘন
বিচার আইসিসিতে পাঠানোর অনুরোধ অ্যামনেস্টিরf
কালের কণ্ঠ ডেস্ক

২০২৪ সালের গণ-অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রতিটি ঘটনা আইসিসিতে পাঠানোর বিষয়টি বিবেচনার আহ্বান জানিয়েছে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে এ আহ্বান জানিয়েছে ব্রিটেনভিত্তিক এই মানবাধিকার সংগঠন।
গতকাল বুধবার সংগঠনটির সাউথ এশিয়া বিষয়ক ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এসংক্রান্ত একটি পোস্ট করা হয়েছে। সেখানে বলা হয়, গত বছরের ১ জুলাই থেকে ১৫ আগস্টের মধ্যে সংঘটিত মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রতিটি ঘটনার বিচার রোম সনদের ১৪ অনুচ্ছেদ অনুসারে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে (আইসিসি) পাঠানোর বিষয়টি বিবেচনার জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল।
গতকাল বুধবার ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে আন্দোলনকারীদের ওপর সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরাসরি গুলির নির্দেশের একটি ফোনকল নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করে ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসি। প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হওয়ার পর সহিংসতার সঙ্গে যুক্ত সব অপরাধীকে বিচারের আওতায় আনার আহ্বান জানিয়েছে সংগঠনটি।
এর আগে এ বছরের ফেব্রুয়ারিতে জাতিসংঘের একটি তথ্য-উপাত্তভিত্তিক প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২৪ সালে আন্দোলন চলাকালে দেশের বিভিন্ন স্থানে নিরাপত্তাবাহিনীর গুলিতে প্রায় এক হাজার ৪০০ মানুষ নিহত হন। প্রতিবেদনে বলা হয়, ওই সহিংসতায় নিহতদের মধ্যে বেশির ভাগই আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী কর্তৃক ব্যবহৃত ধাতব পেলেটযুক্ত অস্ত্রের গুলিতে প্রাণ হারিয়েছেন।
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল বলছে, বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষের উচিত অবিলম্বে একটি স্বাধীন, নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছ তদন্তের ব্যবস্থা করা এবং আন্তর্জাতিক মান বজায় রেখে একটি ন্যায্য বিচারপ্রক্রিয়ার মাধ্যমে সব অপরাধীকে জবাবদিহির আওতায় আনা।

সরকারের উদ্যোগেই জুলাই ঘোষণাপত্র, ইতিবাচক বিএনপি
- দায়িত্বে আছেন পরিকল্পনা উপদেষ্টা
দু-এক দিনের মধ্যে মতামত জানাবে বিএনপি
হাসান শিপলু

ঘোষণাপত্রের মাধ্যমে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানকে পূর্ণাঙ্গ রূপ দিতে আবার উদ্যোগ নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। এরই অংশ হিসেবে প্রধান কয়েকটি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র চূড়ান্ত করা হচ্ছে। ধারণা করা হচ্ছে, জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) চাপের মুখে সরকার এই উদ্যোগ নিয়েছে।
এর আগে কয়েক দফা ঘোষণাপত্র দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হলেও রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে কিছু বিষয়ে ঐকমত্য হয়নি।
বিএনপি সূত্রে জানা গেছে, ঘোষণাপত্রের একটি খসড়া সম্প্রতি তাদের দলের একজন শীর্ষ নেতার কাছে পাঠানো হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে গত দুই দিন দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকে আলোচনা করা হয়।
ঘোষণাপত্রে ১৯৭২ সালের সংবিধান উপযুক্ত প্রক্রিয়ায় সংশোধন, পুনর্লিখন বা প্রয়োজনে বাতিল করার অভিপ্রায় ব্যক্ত করার কথা বলা আছে। এ বিষয়ে বিএনপির আপত্তি রয়েছে। দলটি পরবর্তী সংসদের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় সংবিধান সংশোধনের পক্ষে থাকলেও সংবিধান বাতিল করে তা পুনর্লিখনের বিপক্ষে।
সরকারসংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায়, অন্তর্বর্তী সরকারের পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদকে ঘোষণাপত্রের খসড়া প্রণয়নের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে তাঁর সঙ্গে বিএনপির একজন শীর্ষ নেতার কথা হয়েছে।
এ ব্যাপারে ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘এ নিয়ে অগ্রগতি হচ্ছে। খসড়া ঘোষণাপত্র তৈরি হচ্ছে। কিন্তু এ যৌথ প্রচেষ্টার জন্য আরো মতামত দরকার, যাতে এটি ব্যাপকভাবে গ্রহণযোগ্য হয় এবং জন-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটাতে পারে।
সরকারের পক্ষ থেকে একটি খসড়া ঘোষণাপত্র পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ। কালের কণ্ঠকে তিনি বলেন, ‘সরকারের খসড়া ঘোষণাপত্রের ওপর ভিত্তি করে গত ফেব্রুয়ারিতে আমরা মতামত দিয়েছিলাম। এরপর সরকারের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে আর যোগাযোগ করা হয়নি। এখন আবার একটি খসড়া দেওয়া হয়েছে। আমরা দলীয় ফোরামে আলোচনা করে মতামত জানাব।’
গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর গণ-অভ্যুত্থানে আন্দোলনকারী সংগঠন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন হঠাৎ করে এই ঘোষণাপত্রের বিষয়টি সামনে আনে। তখন এর প্রভাব কী হতে পারে, তা বুঝতে চাইছিল বিভিন্ন রাজনৈতিক দল। ঘোষণাপত্রের পক্ষে-বিপক্ষে তর্কবিতর্কের পাশাপাশি বিষয়টি নিয়ে রাজনীতিতে এক ধরনের উত্তাপ তৈরি হয়। এমন পরিস্থিতিতে সরকার থেকে জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে জুলাই ঘোষণাপত্র প্রণয়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ নিয়ে সরকার সর্বদলীয় বৈঠক করে, কিন্তু তাতে ঐকমত্য হয়নি। ওই সময় বিএনপি এত দিন পর ঘোষণাপত্রের যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তোলে। এরপর গত ১৬ জানুয়ারি জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র চূড়ান্ত করার লক্ষ্যে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও অংশীজনের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। কিন্তু পরবর্তী সময়ে এই ইস্যুতে সরকারের কার্যক্রম ধীরগতিতে চলতে থাকে।
সম্প্রতি এনসিপি জুলাই ঘোষণাপত্র নিয়ে আবার সরব হয়ে ওঠে। গত ৪ জুলাই ‘দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রা’ কর্মসূচির অংশ হিসেবে ঠাকুরগাঁওয়ে এক পথসভায় এনসিপি আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম জুলাই-আগস্টের মধ্যে ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ দেওয়ার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি এও বলেন, এই ঘোষণাপত্রের সাংবিধানিক ভিত্তি থাকবে। অন্যথায় তাঁদের পক্ষ থেকে ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র’ দেওয়া হবে বলে সরকারকে সতর্ক করেন নাহিদ।
সরকারসংশ্লিষ্ট একজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি বলেন, ঘোষণাপত্রের মূল অংশীজন হলো বিএনপি ও এনসিপি। তাদের মধ্যে ঐকমত্য হলে দ্রুত ঘোষণাপত্র দেওয়া যাবে।
ঘোষণাপত্রে উল্লেখযোগ্য যা আছে : খসড়া ঘোষণাপত্রে ১৯৪৭ সালে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসন থেকে স্বাধীনতা অর্জন, ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ, ১৯৯০ সালের গণ-অভ্যুত্থান, ওয়ান-ইলেভেনের প্রেক্ষাপট এবং ২০২৪ সালের ছাত্র-জনতার আন্দোলনের বিষয় তুলে ধরা হয়। কোন পরিপ্রেক্ষিতে অন্তর্বর্তী সরকার গঠন হয়, সে বিষয়টিও উঠে আসে।
এতে ১৯৭২ সালের সংবিধানের কাঠামোগত দুর্বলতা ও অপপ্রয়োগের কথাও বলা হয়। স্বাধীনতা-পরবর্তী আওয়ামী লীগ সরকার জন-আকাঙ্ক্ষা পূরণে ‘ব্যর্থতা’ এবং গণতন্ত্র ও রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলো কার্যকারিতা ক্ষুণ্ন করার কথাও তুলে ধরা হয়।
ঘোষণাপত্রে বলা হয়, ‘স্বাধীনতা-পরবর্তী সরকার সাংবিধানিকভাবে একদলীয় শাসন ব্যবস্থা কায়েম করে মত প্রকাশ ও বিচার বিভাগের স্বাধীনতা হরণ করার ফলে ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর সিপাহি-জনতার বিপ্লব সংগঠিত হয় এবং পরবর্তী সময়ে বহুদলীয় গণতন্ত্র, মত প্রকাশ, বিচার বিভাগের স্বাধীনতাা পুনঃপ্রবর্তনের পথ সুগম হয়।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএনপির একজন নীতিনির্ধারক কালের কণ্ঠকে বলেন, স্বাধীনতা-উত্তর সিপাহি-জনতার বিপ্লব বাংলাদেশের ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। আবার ওয়ান-ইলেভেনের ঘটনা বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি কালো অধ্যায়। মূলত তখন থেকে শেখ হাসিনার একচ্ছত্র ক্ষমতা, আধিপত্য ও কর্তৃত্ববাদী ফ্যাসিবাদের পথ সুগম হয়। এই বিষয়গুলো যুক্ত করার ফলে ঘোষণাপত্র বেশ সমৃদ্ধ হয়েছে।
খসড়ায় স্বৈরশাসক এইচ এম এরশাদের বিরুদ্ধে জনতার অবিরাম সংগ্রাম এবং এর মাধ্যমে গণ-অভ্যুত্থান এবং পুনরায় সংসদীয় গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার পথ সৃষ্টির বিষয়টিও উঠে আসে।
ঘোষণাপত্রে বলা হয়, ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের ধারাবাহিক তিনটি প্রহসনের নির্বাচনের মাধ্যমে অবৈধ আওয়ামী লীগ সরকার দেশের মানুষকে ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত করেছে।
তবে বিএনপি নেতাদের কয়েকজন ২০০৮ সালের বিতর্কিত নির্বাচনকেও এর সঙ্গে যুক্ত করার পরামর্শ দেন দলীয় ফোরামে।
অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের বিষয়ে বলা হয়, সংবিধানের ১১৬ অনুচ্ছেদ বলে প্রদত্ত সুপ্রিম কোর্টের মতামত অনুসারে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে ২০২৪ সালের ৮ আগস্ট প্রতিষ্ঠিত অন্তর্বর্তী সরকার অনুমোদিত হয়।
বিএনপির স্থায়ী কমিটিতে আলোচনা : গত মঙ্গলবার এবং গতকাল বুধবার রাতে অনুষ্ঠিত স্থায়ী কমিটির বৈঠকে খসড়া ঘোষণাপত্র পুঙ্খানুপুঙ্খ বিচার-বিশ্লেষণ করে কিছুটা সংযোজন-বিয়োজন করে বিএনপি তাদের মতামত দিয়েছে। আগামী কয়েক দিনের মধ্যে বিএনপি এ বিষয়ে তাদের মতামত সরকারকে জানাবে।
গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠকে লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি সংযুক্ত হয়ে সভাপতিত্ব করেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
আরো যেসব বিষয়ে আলোচনা : মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত স্থায়ী কমিটির বৈঠকে বাংলাদেশি পণ্যের ওপর মার্কিন শুল্ক আরোপ, নারী আসন, নির্বাচনে পিআর পদ্ধতিসহ সংস্কারের বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। বৈঠকে বাংলাদেশ থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর ৩৫ শতাংশ মার্কিন শুল্ক আরোপের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বিএনপি। একই সঙ্গে এই শুল্কনীতি পুনর্বিবেচনার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিও আহ্বান জানিয়েছে দলটি।
জানা গেছে, বৈঠকে সংস্কার ইস্যুতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সংলাপের প্রতিবেদন তুলে ধরেন সালাহউদ্দিন আহমদ। এরপর সংস্কারের বিভিন্ন ইস্যুতে মতামত দেন বিএনপি নেতারা। ঐকমত্য কমিশনের বৈঠকে এর মধ্যে সংসদে নারীদের আসন ৫০ থেকে ১০০-তে উন্নীত করার ব্যাপারে রাজনৈতিক ঐকমত্য হয়েছে। তবে তাঁরা কিভাবে নির্বাচিত হবেন, সে ব্যাপারে এখনো ঐকমত্য হয়নি। বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, তাঁরা প্রচলিত পদ্ধতিতে সংসদে নারী প্রতিনিধিত্ব নির্বাচিত করার পক্ষে অবস্থান নেবেন। পাশাপাশি কোনোভাবেই পিআর পদ্ধতি মানবেন না তাঁরা।