ঢাকা, সোমবার ১৪ জুলাই ২০২৫
৩০ আষাঢ় ১৪৩২, ১৮ মহররম ১৪৪৭

ঢাকা, সোমবার ১৪ জুলাই ২০২৫
৩০ আষাঢ় ১৪৩২, ১৮ মহররম ১৪৪৭
জামালপুরের ডিসি

ব্যবস্থা নিতে ইসির চিঠি, শোকজ জনপ্রশাসনের

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
ব্যবস্থা নিতে ইসির চিঠি, শোকজ জনপ্রশাসনের
ইমরান আহমেদ

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের পক্ষে ভোট চেয়ে বিপাকে জামালপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. ইমরান আহমেদ। তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে মন্ত্রিপরিষদসচিবকে চিঠি দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। পাশাপাশি আগামী নির্বাচনে তাঁকে জেলা প্রশাসকের দায়িত্ব থেকে প্রত্যাহার করে নেওয়া এবং সংসদ নির্বাচনে কোনোরূপ নির্বাচনী দায়িত্ব প্রদান করা থেকে বিরত রাখার কথা জানিয়েছে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানটি। একই সঙ্গে জেলা প্রশাসকদের এ ধরনের আচরণ থেকে বিরত থাকতে সতর্কবার্তা দেওয়া প্রয়োজন মর্মে চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে।

গতকাল বুধবার বিকেলে নির্বাচন কমিশনের জনসংযোগ শাখার সহকারী পরিচালক মো. আশাদুল হকের সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়। এ ছাড়া জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকেও সরকারকে আবার নির্বাচিত করার বক্তব্যের কারণ জানতে চেয়ে জামালপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. ইমরান আহমেদকে নোটিশ দেওয়া হয়েছে।

এর আগে গতকাল সকালে নির্বাচন ভবনে অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন : প্রত্যাশা ও বাস্তবতা শীর্ষক কর্মশালায় সাবেক নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন নির্বাচন কমিশনারদের উদ্দেশে বলেন, জামালপুরের ডিসির মতো কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আপনাদের সিদ্ধান্ত নিতে হবে। জামালপুরের ডিসি বলেছেন আওয়ামী লীগ সরকারকে ক্ষমতায় আনতে হবে।

এ খবর সব পেপারে দেখলাম। এঁদের দিয়ে ক্রেডিবল (বিশ্বাসযোগ্য) নির্বাচন হবে না।

 

মন্ত্রিপরিষদসচিবকে ইসির চিঠি

ঘটনার সত্যতা যাচাই সাপেক্ষে জামালপুরের জেলা প্রশাসক মো. ইমরান আহমেদ সম্পর্কে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে মন্ত্রিপরিষদসচিবকে চিঠি দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। এ বিষয়ে কমিশনের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়সম্প্রতি বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে যে জামালপুরের জেলা প্রশাসক মো. ইমরান আহমেদ স্থানীয় সংসদ সদস্য মির্জা আজমের উপস্থিতিতে জনবহুল এক সভায় বক্তব্য দিয়েছেন।

বক্তব্যে তিনি উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে আওয়ামী লীগ সরকারকে পুনরায় নির্বাচিত করে ক্ষমতায় আনার আহ্বান জানিয়েছেন। একই সঙ্গে তিনি স্থানীয় সংসদ সদস্য মির্জা আজমকে আগামী নির্বাচনের পর মন্ত্রী হিসেবে দেখার আশা প্রকাশ করেছেন। তাঁর বক্তব্যের ভিডিও ক্লিপ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আসন্ন। জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রশাসনের কর্মকর্তাদের পক্ষপাতহীন আচরণ করতে হবে।

এটি সংবিধান ও সংশ্লিষ্ট সব আইনের অর্থ ও অন্তর্নিহিত চেতনা। সংবিধানের ১২০ ও ১২৬ নম্বর অনুচ্ছেদ এবং গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের ৫ ও ৯১ (গ) নম্বর অনুচ্ছেদসহ আরো বিভিন্ন আইন ও ধারায় এ বিষয়টি সুস্পষ্ট। নির্বাচন বিষয়ে কমিশনের এখতিয়ার কেবল তফসিল ঘোষণার পর নয়, সব সময় বিদ্যমান থাকে। জেলা প্রশাসকরা সাধারণত রিটার্নিং অফিসার হিসেবে নির্বাচনে দায়িত্ব পালন করে থাকেন এবং নির্বাচনের সময় জেলা ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বও পালন করে থাকেন। বর্ণিত অবস্থায় সরকার, গণতন্ত্র, নির্বাচনব্যবস্থা এবং নির্বাচন কমিশনের ওপর জনমানুষের আস্থা অক্ষুণ্ন রাখার স্বার্থে মো. ইমরান আহমেদকে ওই ঘটনার সত্যতা যাচাই সাপেক্ষে জেলা প্রশাসকের দায়িত্ব থেকে প্রত্যাহার করে নেওয়া এবং আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কোনোরূপ নির্বাচনী দায়িত্ব প্রদান করা থেকে বিরত রাখা সমীচীন হবে।

একই সঙ্গে জেলা প্রশাসকদের এ ধরনের আচরণ থেকে বিরত থাকতে সতর্কবার্তা দেওয়া প্রয়োজন মর্মে চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে।

 

কারণ জানতে চেয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের নোটিশ

এদিকে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকেও সরকারকে আবার নির্বাচিত করার বক্তব্যের কারণ জানতে গতকাল ডিসি মো. ইমরান আহমেদকে নোটিশ দেওয়া হয়েছে। মন্ত্রণালয়ের নিয়োগ, পদোন্নতি ও প্রেষণ অনুবিভাগ (এপিডি) থেকে এই নোটিশ দেওয়া হয়।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, মন্ত্রিপরিষদসচিব মাহবুব হোসেন গত ৭ সেপ্টেম্বর থেকে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত। এ জন্য তিনি অফিস আসছেন না। তাই জামালপুরের ডিসির ঘটনার সত্যতা যাচাই-বাছাইয়ের কাজ করছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।

মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্তি সচিব (জেলা ও মাঠ প্রশাসন অনুবিভাগ) আমিন উল আহসান কালের কণ্ঠকে বলেন, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় জামালপুরের ডিসির ঘটনার সত্যতা যাচাই-বাছাইয়ের কাজ করছে। এ জন্য ডিসিকে কারণ দর্শাণোর নোটিশও দিয়েছে। জনপ্রশাসনের প্রতিবেদনের পরিপ্রক্ষিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এপিডি অনুবিভাগের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলেন, জামালপুরের ডিসির নির্বাচনসংক্রান্ত বক্তব্য আমরা পত্রিকা ও টেলিভিশনের মাধ্যমে জেনেছি। সরকার ডিসির বক্তব্যকে স্বাগত জানায়নি। কারণ কোনো রাজনৈতিক দলের পক্ষে বক্তব্য দেওয়ার জন্য তাঁকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়নি। ঘটনাস্থলে প্রকৃতপক্ষে কী ঘটেছে তা যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। আত্মপক্ষ সর্মথনের সুযোগ হিসেবে ডিসিকে কারণ দর্শাণোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। জামালপুরের ডিসির উত্তরের পরিপ্রেক্ষিতে শিগগির ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

প্রসঙ্গত, গত সোমবার বিকেলে জেলার মাদারগঞ্জ পৌরসভার নবনির্মিত ভবনের উদ্বোধন উপলক্ষে আয়োজিত সুধী সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে জামালপুরের ডিসি মো. ইমরান আহমেদ এই বিতর্কিত বক্তব্য দেন।

গত মঙ্গলবার বিকেলে জেলা প্রশাসকের এই বক্তব্যের বিষয়ে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেনের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি বলেন, নির্বাচন সামনে রেখে একজন ডিসি এমন কথা বলতে পারেন না। তাঁদের নানা ধরনের প্রশিক্ষণ দিয়ে মাঠে পাঠানো হয়। নির্বাচন নিয়ে ডিসি যা বলেছেন তা খতিয়ে দেখা হবে।

 

স্থানীয়দের প্রতিক্রিয়া

জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বিজন কুমার চন্দ কালের কণ্ঠকে বলেন, ডিসি মুক্তিযুদ্ধের চেতনা লালন করেন এটা বিশ্বাস করি। আমার যেটা মনে হয়েছে, এটা তাঁর স্লিপ অব টাং। ওই মিটিংয়ে জেলা আওয়ামী লীগের অনেক নেতাই বত্তৃদ্ধতা করেছেন। ডিসি যখন বক্তব্য দেওয়ার জন্য দাঁড়ান, আমার দৃষ্টিতে যেটা মনে হয়েছে, ডিসিও সেই রেশেই একই কথা বলেছেন। তা না হলে রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ একটি পদে থেকে উনি যে এভাবে বলবেন তা ভাবতে পারিনি।

বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির ময়মনসিংহ বিভাগীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক ও জামালপুর জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শাহ মো. ওয়ারেছ আলী মামুন বলেন, দলীয় সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। এই ডিসির বক্তব্য সেটাই প্রমাণ করে।

সুশাসনের জন্য নাগিরকের (সুজন) জামালপুর জেলা শাখার সভাপতি অধ্যাপক তারিকুল ফেরদৌস বলেন, ডিসির ওভাবে বক্তব্য দেওয়া মোটেই ঠিক হয়নি। সরকারি উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা ওভাবে বক্তব্য দিলে প্রশাসনের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। তিনি চাকরিবিধি লঙ্ঘন করেছেন। সরকারের উচিত বিষয়টি খতিয়ে দেখে তাঁর বিরুদ্ধে বিভাগীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া।

 

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

আজ রাজপথে নামছে বিএনপি

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
আজ রাজপথে নামছে বিএনপি

পুরান ঢাকার মিটফোর্ড হাসপাতালের সামনে ব্যবসায়ী লাল চাঁদ ওরফে মো. সোহাগ হত্যাকাণ্ডের অপপ্রচার ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে শান্তিপূর্ণভাবে আজ থেকে রাজপথে থাকবে বিএনপি। বিএনপি মনে করছে, এই হত্যাকাণ্ড নিয়ে জামায়াতে ইসলাম, ইসলামী আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) রাজপথ দখল করার চেষ্টা করছে বলে মনে করছে বিএনপি। এ জন্য রাজপথে বিএনপিও শক্তি ও জনসমর্থন দেখাবে।

এখন পর্যন্ত এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত কাউকে ছাড় দিচ্ছে না দলটি।

এমনকি এ ধরনের ঘটনা যাতে আর না ঘটে সে জন্য দলে শুদ্ধি অভিযান চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন দলের শীর্ষ নেতা। দলের নেতারা বলছেন, হত্যার সঙ্গে সরাসরি জড়িত দুজনকে চিহ্নিত করতে পারেনি আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী। কিন্তু বিরোধী পক্ষ একতরফাভাবে বিএনপির ওপর দায় চাপাচ্ছে। বিএনপিকে উদ্দেশ্য করে কটূক্তি করছে।
এর জবাব দিতে রাজপথে শক্তি দেখাবে দলটি। এরই অংশ হিসেবে আজ সোমবার ছাত্রদল ও ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপি এবং অন্য অঙ্গসংগঠন পৃথক শোডাউন করবে। বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী কালের কণ্ঠকে বলেন, বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠন প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করবে। জনগণ বিএনপির সঙ্গে আছে।
জনগণকে নিয়ে দেশবিরোধীদের ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করা হবে।

মাঠে নামছে ছাত্রদল : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি জানান, গোপন তৎপরতায় দীর্ঘদিন ধরে অভ্যস্ত গুপ্ত সংগঠন কর্তৃক মব সৃষ্টির অপচেষ্টা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ বিনষ্ট করা এবং সারা দেশে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির প্রতিবাদে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল আজ রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে বিক্ষোভ মিছিল করবে। গুপ্ত সংগঠন বলতে ইসলামী ছাত্রশিবির ও তাদের সহযোগী সংগঠনকে বোঝানো হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির।

ছাত্রদলের ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী, আজ দুপুর ২টায় রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে শাহবাগ পর্যন্ত বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হবে। পাশাপাশি সারা দেশের সব জেলা ও মহানগরে বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হবে।

জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব ও সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির এ কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন।

কর্মসূচির বিষয়ে ঢাবি শাখা ছাত্রদলের সভাপতি গণেশ চন্দ্র রায় সাহস বলেন, গুপ্ত সংগঠন হিসেবে সেসব সংগঠনকেই বোঝানো হয়েছে, যারা প্রকাশ্যে নিজেদের রাজনৈতিক কার্যক্রম পরিচালনার বদলে গোপনে রাজনৈতিক এজেন্ডা বাস্তবায়ন ও সহিংসতা ছড়িয়ে দেওয়ার মাধ্যমে রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে অস্থিরতা ও বিশৃঙ্খলা তৈরি করছে। গত ৫ আগস্টের পর একটি মুক্ত রাজনৈতিক পরিবেশ থাকা সত্ত্বেও তাদের এহেন গুপ্ত কার্যক্রম এ দেশের রাজনৈতিক পরিবেশকে অসহনশীল করে তুলছে এবং রাজনৈতিক বিষয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত করে তুলছে। এ রকম কুচক্রী কার্যক্রমের বিরুদ্ধেই জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল তার কর্মসূচি গ্রহণ করেছে, যেন দেশবাসীকে এসব বিভ্রান্তিকর বিষয়ে সচেতন করে তোলা যায়।

গুপ্ত সংগঠন বলতে কাদের বোঝানো হচ্ছে জানতে চাইলে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির বলেন, ছত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর যারা ক্যাম্পাসগুলোতে মব সৃষ্টি করে সাধারণ শিক্ষার্থী নামে অপ্রীতিকর পরিস্থিতি তৈরি করছে, তারাই গুপ্ত সংগঠন। ছাত্রশিবির এবং গুপ্তভাবে সংগঠন পরিচালনা করতে ছাত্রশিবিরকে যারা পৃষ্ঠপোষকতা করে, আশ্রয়-প্রশ্রয় দেয় তারা।

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

সশস্ত্র বাহিনীর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেসির মেয়াদ আরো দুই মাস বাড়ল

বিশেষ প্রতিনিধি
বিশেষ প্রতিনিধি
শেয়ার
সশস্ত্র বাহিনীর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেসির মেয়াদ আরো দুই মাস বাড়ল

বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীতে কর্মরত সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন ও এর ওপরের সমপদমর্যাদার কর্মকর্তাদের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতার মেয়াদ আরো দুই মাস (৬০ দিন) বাড়ানো হয়েছে। এ বিষয়ে গতকাল রবিবার প্রজ্ঞাপন জারি করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। এর আগে গত ১৩ মে থেকে তাঁদের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেসির ক্ষমতার মেয়াদ দুই মাস বাড়ানো হয়েছিল। সেই মেয়াদ গতকাল শেষ হয় ।

মেয়াদ বাড়ানোর আদেশে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীতে কর্মরত সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন ও এর ওপরের সমপদমর্যাদার কমিশন্ড কর্মকর্তাদের (কোস্ট গার্ড ও বিজিবিতে প্রেষণে নিয়োজিত সমপদমর্যাদার কর্মকর্তারাসহ) ‌‘দ্য কোড অব ক্রিমিনাল প্রসিডিউর, ১৮৯৮-এর ১২(১) ও ১৭ ধারা অনুযায়ী স্পেশাল এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা অর্পণ করা হলো। এর মেয়াদ হবে ১৪ মার্চ থেকে ৬০ দিন পর্যন্ত। সারা দেশে তাঁরা এই ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারবেন বলেও প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে।

প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, সেনাবাহিনীর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা ফৌজদারি কার্যবিধি-১৮৯৮-এর ৬৪, ৬৫, ৮৩, ৮৪, ৮৬, ৯৫(২), ১০০, ১০৫, ১০৭, ১০৯, ১১০, ১২৬, ১২৭, ১২৮, ১৩০, ১৩৩ ও ১৪২ ধারার অপরাধগুলো বিবেচনায় নিতে পারবেন।

প্রথমে গত বছরের ১৭ সেপ্টেম্বর সেনাবাহিনীর কমিশন্ড অফিসারদের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছিল জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। পরে ৩০ সেপ্টেম্বর প্রজ্ঞাপন সংশোধন করে বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর কমিশন্ড অফিসারদের (সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন ও এর ওপরের সমপদমর্যাদার কর্মকর্তা) এই ক্ষমতা দেওয়া হয়। অর্থাৎ শুধু সেনাবাহিনী নয়, বিমান ও নৌবাহিনীর কমিশন্ড অফিসারদেরও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা দেওয়া হয়। তখন ৬০ দিনের জন্য এই ক্ষমতা দেওয়া হয়েছিল।

সেই মেয়াদ নভেম্বরের মাঝামাঝি শেষ হয়েছিল। পরে সেই ক্ষমতার মেয়াদ কয়েক দফায় বাড়ানো হয়।

মন্তব্য

শেখ হাসিনাসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে গুমের অভিযোগ বিএনপির

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
শেখ হাসিনাসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে গুমের অভিযোগ বিএনপির

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক ও সাবেক পুলিশপ্রধান (আইজিপি)  বেনজীর আহমেদসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর কার্যালয়ে গুমের অভিযোগ দিয়েছে বিএনপি।

গতকাল রবিবার দুপুরে ভুক্তভোগীদের সঙ্গে নিয়ে এই অভিযোগ দেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির নির্বাহী সদস্য এবং তথ্য সেলের সমন্বয়ক সালাহউদ্দিন খান।

অভিযোগ তদন্ত করে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম।

২০১৯ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত গুমের ঘটনায় ১১ জন ভুক্তভোগীর নাম উল্লেখ করা হয়েছে লিখিত অভিযোগে।

তাঁরা হলেনঝালকাঠির নলছিটির মোহাম্মদ আলী খান, সাবেক যুবদল নেতা মো. জিল্লুর রহমান, আকিদুল আলী, খোরশেদ আলম, অ্যাডভোকেট আশরাফ আলী, মো. বাবুল, এনামুল, এরশাদ আলী, মো. গিয়াস উদ্দিন খান, মো. কবির উদ্দিন খান ও নজরুল ইসলাম।

অভিযোগে বলা হয়েছে, ২০১৯ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন সময় এসব ভুক্তভোগীকে অপহরণের পর আয়নাঘরে আটকে রেখে নির্যাতন করা হয়। গত বছর ৫ আগস্ট সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পলায়নের পর মোহাম্মদ আলীকে হাত ও চোখ বেঁধে পূর্বাচলের শেষ প্রান্তে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে ফেলে আসা হয়। পাঁচ বছর তিন মাস ১৩ দিন পর তিনি মুক্তি পান।

এ ঘটনায় মোহাম্মদ আলী খান বিএনপি মহাসচিবের মাধ্যমে ন্যায়বিচার চেয়ে আবেদন করেন।

তাঁর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ১১ জন ভুক্তভোগীর নাম উল্লেখ করে আবেদনটি করা হয় বলে জানান সালাহউদ্দিন খান।

সালাহউদ্দিন খান সাংবাদিকদের বলেন, ভুক্তভোগীরা শেখ হাসিনাসহ ১৬ জন এবং অজ্ঞাতপরিচয় আরো ৩০ থেকে ৩৫ জনের নাম উল্লেখ করে ন্যায়বিচারের আশায় আবেদন করেছেন। ভুক্তভোগীরা বলেছেন, শুধু বিএনপি করার অপরাধে বিগত সরকারের নির্মম নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে তাঁদের।

মন্তব্য

সোহাগের পরিবারের পাশে তারেক রহমান

বরগুনা প্রতিনিধি
বরগুনা প্রতিনিধি
শেয়ার
সোহাগের পরিবারের পাশে তারেক রহমান

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে পুরান ঢাকায় নিহত ব্যবসায়ী লাল চাঁদ ওরফে সোহাগের পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছেন দলটির ভাইস চেয়ারম্যান নূরুল ইসলাম মনি। গতকাল রবিবার বিকেলে তিনি বরগুনা জেলার পাথরঘাটা উপজেলার কাকচিড়া ইউনিয়নের সোহাগের গ্রামের বাড়িতে যান। তিনি স্থানীয় কাকচিড়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে আয়োজিত সভায় বক্তব্য দেন।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে তিনি নিহত সোহাগের পরিবারকে ৫০ হাজার টাকা আর্থিক সহায়তা প্রদান করেন।

সোহাগের পরিবারের যেকোনো প্রয়োজনে পাশে থাকারও আশ্বাস দেন। এ ছাড়া হত্যাকাণ্ডের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে বিএনপির পক্ষ থেকে সব ধরনের সহায়তার আশ্বাস দেন। স্বামীর হত্যার বিচার চেয়ে তখন সোহাগের স্ত্রী লাকি আক্তার বলেন, আমি আমার স্বামীর হত্যাকারীদের ফাঁসি চাই। আমার পরিবারের নিরাপত্তা চাই।
সভায় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান নূরুল ইসলাম মনি বলেন, এই এলাকার সন্তান ঢাকার মিটফোর্ডের ব্যবসায়ী সোহাগকে তাঁর ব্যাবসায়িক পার্টনার ও তাদের ভাড়াটেরা নৃশংসভাবে হত্যা করেছে। বিএনপি ঘটনার সঙ্গে সঙ্গে তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। দলের পক্ষ থেকে এর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করা হয়েছে। সম্পৃক্তদের দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
বিএনপি কোনো অপকর্মকে প্রশ্রয় দেয় না। পাথরঘাটা উপজেলা বিএনপির আহবায়ক চৌধুরী মো. ফারুকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় বক্তব্য দেন বরগুনা জেলা বিএনপির সাবেক সহসভাপতি ফজলুল হক মাস্টার, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক কে এম সফিকুজ্জামান মাহফুজ, জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক জাবেদুল ইসলাম জুয়েল, জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম নাভিল প্রমুখ।

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ