রাজধানীর সায়েন্স ল্যাব এলাকায় গতকাল রবিবার সকালে ‘শিরিন ম্যানশন’ নামের একটি বাণিজ্যিক ভবনে বিস্ফোরণে লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে। এই ঘটনায় তিনজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছে অন্তত ৫০ জন। আহতদের মধ্যে কয়েকজন শিক্ষার্থীও রয়েছে।
জমে থাকা গ্যাসে ভবনে বিস্ফোরণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) বলছে, ভবনটিতে জমে থাকা গ্যাস থেকেই এই বিস্ফোরণ ঘটেছে। সিটিটিসির বম্ব ডিসপোজাল ইউনিটের প্রধান অতিরিক্ত উপ পুলিশ কমিশনার মো. রহমত উল্লাহ চৌধুরী গণমাধ্যমকে বলেন, পরীক্ষা করে ওই ভবনে মিথেন গ্যাস পাওয়া গেছে। মিথেন গ্যাস বাতাসে মিশে বিস্ফোরকে রূপ নিতে পারে।
বিস্ফোরণে পাশের ১৪ তলা ভবনসহ আশপাশের এলাকা কেঁপে ওঠে।
ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা গেছে, ভবনটির তিনতলা বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ভবন থেকে ইট ও জানালার কাচ উড়ে গিয়ে রাস্তা ও আশপাশের এলাকায় পড়েছে।
বিস্ফোরণে ভবনটির একাংশ ধসে পড়ে। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন ভবনটিকে ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করেছে। বিস্ফোরণের পর দুই দিকে রাস্তা বন্ধ করে দিয়ে আগুন নেভানের কাজে সহযোগিতা করে পুলিশ; কিন্তু এরপর আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে জড়ায় ঢাকা কলেজ ও আইডিয়াল কলেজের শিক্ষার্থীরা। এতে আবারও বন্ধ হয়ে যায় সড়ক। সব মিলিয়ে সাড়ে তিন ঘণ্টার মতো সায়েন্স ল্যাব এলাকায় মিরপুর রোডটি বন্ধ থাকে। এতে দুই দিকে তীব্র যানজট দেখা দেয়। বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে রাস্তা খুলে দেওয়া হয়। নিউ মার্কেট থানার ওসি শফিকুল গনি সাবু বলেন, বিস্ফোরণের পর সড়ক দিয়ে যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। তিন ঘণ্টা পর সড়ক স্বাভাবিক হলেও শিক্ষার্থীদের ধাওয়াধাওয়ির ঘটনায় আবারও সড়ক বন্ধ হয়ে যায়। এখন সড়ক স্বাভাবিক রয়েছে।
বিকেল ৩টার দিকে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সিডিআরটি ও বোম ডিসপোজাল ইউনিট যায় ঘটনাস্থলে। এর আগে ঘটনাস্থলে একে একে আসে সিটিটিসির বোম ডিসপোজাল ইউনিট, সিআইডির ক্রাইম সিন, পিবিআই, থানা পুলিশসহ আরো কয়েকটি সংস্থার লোকজন। তারা প্রাথমিকভাবে বিস্ফোরণের কারণ জানার জন্য চেষ্টা করে। তদন্তকারী দলগুলো বলছে বিস্ফোরণের তীব্রতা অনেক ছিল। তবে নাশকতার কোনো আলামত পাওয়া যায়নি।
বিস্ফোরণের পর ঘটনাস্থল পরিদর্শনে আসেন ডিএমপি কমিশনারসহ ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তারা। ডিএমপি কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক সাংবাদিকদের বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে, এটি নিছক একটি দুর্ঘটনা। এই বিস্ফোরণ বিভিন্ন কারণেই ঘটতে পারে, সেটি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।’ ঘটনাস্থলে স্প্লিন্টার, বিস্ফোরক কিংবা নাশকতার কোনো আলামত মেলেনি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘বিস্ফোরক বিশেষজ্ঞরা কাজ করছেন। তদন্ত শেষে সুস্পষ্টভাবে এ বিষয়ে বলা যাবে।’ এ ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘কমিটি ফায়ার সার্ভিস এবং ঘটনাস্থলে কাজ করা অন্য এক্সপার্টদের মতামত নিয়ে প্রতিবেদন দেবে।’
ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশন) ড. খন্দকার মহিদ উদ্দিন বলেন, ‘ভবনটির অবস্থা এখন পর্যন্ত খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। তিনতলায় ছোট ছোট অফিস ও একটি ইনস্যুরেন্স কম্পানির অফিস রয়েছে। যে পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, আমি মনে করি, এই মুহূর্তে ভবনটিতে কারো প্রবেশ করা উচিত হবে না। আমরা ঝুঁকি নিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি।’ তিনি বলেন, প্রাথমিকভাবে বিস্ফোরণের কারণ বলা যাচ্ছে না। চারটি কারণে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটতে পারে। একটি হলো শর্ট সার্কিট, জমে থাকা গ্যাস বিস্ফোরণ, গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণ ও এসি বিস্ফোরণ। তবে এই মুহূর্তে সঠিক কারণ বলা যাচ্ছে না। তদন্ত শেষে সঠিক কারণ জানা যাবে।
ভবনটির তিনতলায় থাকা ফিনিক্স ইনস্যুরেন্স কম্পানির জনসংযোগ কর্মকর্তা মাহাবুব ই সোবহান সাংবাদিকদের জানান, তাঁদের শাখায় দুই নারীসহ ছয়জন কাজ করছিলেন। তাঁরা সবাই আহত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে অফিসের ইনচার্জ আকবর, আশরাফ, আশা, স্বপ্না ও জোহুর হাফিজকে শেখ হাসিনা বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়েছে। আরেকজনকে ভর্তি করা হয়েছে ধানমন্ডি পপুলার হাসপাতালে। জহুর ও হাফিজ বাদে বাকি সবাই গুরুতর আহত হয়েছে বলে জানান তিনি। মাহাবুব বলেন, ‘আমাদের অফিসে তেমন দাহ্য পদার্থ ছিল না। দুই টন করে চার টনের দুটি এসি ছিল। এ ছাড়া আমরা এখন পর্যন্ত আর কিছু জানতে পারিনি।’
ফায়ার সার্ভিসের উপসহকারী পরিচালক ফজলুর রহমান কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আমরা জানতে পেরেছি ভবনটিতে তিতাস গ্যাসের লাইন ছিল। ভবনের নিচে রাইজার পাওয়া গেছে। আমাদের প্রাথমিক ধারণা, তিতাস গ্যাস জমে এই বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে।’
ভবনটিতে বিস্ফোরণের ঘটনা নিয়ে ঘটনার পর থেকে একেক সংস্থার কাছ থেকে একেক ধরনের তথ্য পাওয়া যায়। ঘটনাস্থলে পুলিশের এক কর্মকর্তা সাংবাদিকদের জানান, স্যুয়ারেজ লাইনে জমে থাকা গ্যাস থেকে ভবনে বিস্ফোরণ হয়েছে। এর আগে ফায়ার সার্ভিস বলে, তাদের প্রাথমিক ধারণা, শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্রের (এসি) বিস্ফোরণ থেকে আগুন লাগতে পারে। তবে ঘটনাস্থলে পুলিশের এক কর্মকর্তা ধারণা দেন ভবনের একটি টয়লেট দীর্ঘদিন আটকা ছিল। সেটিতে গ্যাস হয়েও এ ঘটনা ঘটতে পারে।
তবে সিটিটিসি কর্মকর্তা রহমত উল্লাহ বলেন, ‘আমাদের কাছে প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে, সায়েন্স ল্যাবের বিস্ফোরণের ঘটনাটি ২০২১ সালে ঘটে যাওয়া মগবাজারের বিস্ফোরণের মতো গ্যাস থেকে সৃষ্ট বিস্ফোরণ।’
২০২১ সালের ২৭ জুন সন্ধ্যায় রাজধানীর মগবাজারে একটি তিনতলা ভবনে ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় ১২ জন নিহত ও দুই শতাধিক আহত হয়।
সিটিটিসি কর্মকর্তা জানান, সায়েন্স ল্যাব এলাকার ভবনটিতে কোনো না কোনোভাবে গ্যাস জমে ছিল। জমে থাকা গ্যাসের মাত্রা যদি ৫ থেকে ১১ ঘনফুট হয়, এটা যদি ট্রিগার হয়, তাহলে এ ধরনের বিস্ফোরণ হতে পারে। এটি ট্রিগার সুইচ, ফ্যানের সুইচ বা এসির সুইচের মাধ্যমেও হতে পারে। তিনি আরো বলেন, ‘আমাদের নগরবাসীকে সচেতন থাকতে হবে, বৈদ্যুতিক সুইচ টেপা ও গ্যাসের চুলা জ্বালানোর আগে দরজা-জানালা খুলে নিতে হবে।’
আশপাশের ভবন কেঁপে ওঠে : ভবনটির পাশেই প্রিয়াঙ্গন শপিং সেন্টার। সেখানের দোকানি অলিউল্লাহ বলেন, মার্কেটে বসে এক বন্ধুর সঙ্গে গল্প করছিলাম। হঠাৎ বিকট শব্দে চারদিকে কেঁপে ওঠে। মার্কেটের বাইরে গিয়ে দেখি শিরিন ম্যানশনের তিনতলা উড়ে গেছে। নিচে চার থেকে পাঁচজন মানুষ পড়ে আছে।
রাজধানীর সায়েন্স ল্যাবরেটরি এলাকার তিনতলা ভবনে বিস্ফোরণের পর গতকাল ঘটনাস্থলে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সিডিআরটি ও বম্ব ডিসপোজাল ইউনিটের তল্লাশি। ছবি : কালের কণ্ঠ
সম্পর্কিত খবর

মূল্যস্ফীতি কমে ৮.৪৮%, বেড়েছে জিডিপি প্রবৃদ্ধি
নিজস্ব প্রতিবেদক

বহুদিন ধরে বাংলাদেশের অর্থনীতির সবচেয়ে বড় সংকট হিসেবে চিহ্নিত হয়ে আসছিল উচ্চ মূল্যস্ফীতি ও দ্রব্যমূল্যের অস্থিরতা। প্রায় তিন বছর ধরে মূল্যস্ফীতির লাগামহীন ঊর্ধ্বগতিতে মানুষের জীবনযাত্রা ব্যয় বেড়ে যায় ব্যাপকভাবে। তবে অবশেষে আশার আলো দেখা যাচ্ছে। সদ্য শেষ হওয়া ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জুন মাসে সার্বিক মূল্যস্ফীতি কমে এসেছে ৮.৪৮ শতাংশে, যা গত ৩৩ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন।
গতকাল সোমবার বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) প্রকাশিত হালনাগাদ তথ্যে এই চিত্র উঠে এসেছে। ভোক্তা মূল্য সূচকের (সিপিআই) তথ্য অনুযায়ী, মে মাসে যেখানে মূল্যস্ফীতি ছিল ৯.০৫ শতাংশ, জুনে তা উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে।
মূল্যস্ফীতির এই পতন দেশের অর্থনীতিতে স্বস্তির বার্তা বয়ে আনলেও বাজারের বাস্তব চিত্র ভিন্ন।
খাদ্যমূল্য কিছুটা নিয়ন্ত্রণে
বিবিএসের ভোক্তা মূল্যসূচক অনুযায়ী, খাদ্য মূল্যস্ফীতি জুনে নেমে এসেছে ৭.৩৯ শতাংশে, যা মে মাসে ছিল ৮.৫৯ শতাংশ।
তবে বাজারের চিত্র বলছে ভিন্ন কথা। ঢাকার খুচরা বাজারে মিনিকেট চালের দাম বেড়ে ৮৫ থেকে ৯০ টাকা/কেজিতে পৌঁছেছে, যেখানে ঈদের আগে তা ছিল ৭২ থেকে ৮২ টাকা। মাঝারি মানের চাল ব্রি‑২৮ এখন বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৬৪ টাকা কেজি দরে, যা আগের তুলনায় তিন থেকে পাঁচ টাকা বেশি। এ ছাড়া বিভিন্ন সবজির দাম ৭০ থেকে ১৫০ টাকার মধ্যে ওঠানামা করছে।
আয় বেড়েছে কম, ব্যয় বেড়েছে বেশি
মূল্যস্ফীতি সাধারণ মানুষের জীবনে এক ধরনের ‘অদৃশ্য কর’-এর মতো। বিশেষ করে মজুরিনির্ভর মানুষের ওপর এর প্রভাব সবচেয়ে বেশি পড়ে। বিবিএসের তথ্য মতে, জুনে জাতীয় মজুরি হার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮.১৮ শতাংশে, কিন্তু একই সময়ে মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৮.৪৮ শতাংশ। অর্থাৎ আয় বৃদ্ধির চেয়ে ব্যয় বৃদ্ধির হার বেশি হওয়ায় প্রকৃত আয় কমেছে।
প্রবৃদ্ধিতে ফিরছে গতি
মূল্যস্ফীতির পাশাপাশি জিডিপি প্রবৃদ্ধির ক্ষেত্রেও কিছুটা ইতিবাচক পরিবর্তনের আভাস মিলেছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর প্রাথমিক প্রাক্কলন অনুযায়ী, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের তৃতীয় প্রান্তিকে (জানুয়ারি-মার্চ) স্থির মূল্যে জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার দাঁড়িয়েছে ৪.৮৬ শতাংশ, যা আগের প্রান্তিকে ছিল ৪.৪৮ শতাংশ।
তবে পুরো অর্থবছরের (জুলাই-মার্চ) প্রথম তিন প্রান্তিক মিলিয়ে গড় প্রবৃদ্ধি মাত্র ৩.৮১ শতাংশ। এই ধীরগতির প্রবৃদ্ধির বিষয়ে সতর্কবার্তা আগেই দিয়েছিল বিশ্বব্যাংক ও এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)। বিশ্বব্যাংক ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রবৃদ্ধি হবে ৩.৩ শতাংশ, আর এডিবির পূর্বাভাস অনুযায়ী এটি ৩.৯ শতাংশ।
প্রবৃদ্ধির খাতভিত্তিক বিশ্লেষণে দেখা যাচ্ছে, তৃতীয় প্রান্তিকে কৃষি খাত কিছুটা উন্নতি করলেও গতি কমেছে শিল্প খাতে। কৃষি খাতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ২.৪২ শতাংশ, যা গত বছর একই সময়ে ছিল ৪ শতাংশ। শিল্প খাতে প্রবৃদ্ধি দাঁড়িয়েছে ৬.৯১ শতাংশে, যা আগের প্রান্তিকে ছিল ৭.১০ শতাংশ। সেবা খাতের প্রবৃদ্ধি তুলনামূলক ভালো—৫.৮৮ শতাংশ, যা গত বছর ছিল ৪.৩১ শতাংশ। চলতি মূল্যে এই প্রান্তিকে জিডিপির আকার দাঁড়িয়েছে ১৪ লাখ ১৯ হাজার ৭১৮ কোটি টাকা, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ১২ লাখ ৬৬ হাজার ৯৮৫ কোটি টাকা।
বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, সরকারি পরিসংখ্যান বলছে মূল্যস্ফীতি কমেছে, প্রবৃদ্ধিও কিছুটা বাড়ছে। তবে বাজারে এর প্রতিফলন নেই। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম এখনো ঊর্ধ্বমুখী, মজুরি বৃদ্ধির হার মূল্যস্ফীতির নিচে, ফলে মানুষের বাস্তব আয়ে ঘাটতি রয়ে গেছে।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল
শেখ হাসিনা-কামালকে অব্যাহতির আরজি মামুনের বক্তব্য নেই
নিজস্ব প্রতিবেদক

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের প্রাথমিক উপাদান (প্রাইমা ফেসিয়া) পাওয়া যায়নি বলে দাবি করেছেন রাষ্ট্র নিযু্ক্ত আইনজীবী মো. আমির হোসেন। মামলার অভিযোগ থেকে তাঁদের অব্যাহতি দেওয়ার আরজি জানান তিনি।
এ সময় আদালতে উপস্থিত আরেক আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনের আইনজীবী শুনানিতে অংশ নেননি এবং অভিযোগ থেকে তাঁর অব্যাহতিও চাওয়া হয়নি।
গতকাল সোমবার চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ অভিযোগ গঠনের শুনানি চলাকালে আমির হোসেন ওই আরজি তুলে ধরেন।
শুনানির পর ট্রাইব্যুনাল আগামী ১০ জুলাই আদেশের তারিখ ধার্য করেন। এর আগে গত ১ জুলাই মামলার ‘আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠনের’ ওপর শুনানি শেষ করে প্রসিকিউশন।
শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে অভিযোগ ভিত্তিহীন : দাবি আইনজীবীর
অব্যাহতির আবেদনের শুনানিতে আমির হোসেন প্রসিকিউশনের অভিযোগ খণ্ডন করে বলেন, গত বছর ১৪ জুলাই গণভবনে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে সাবেক প্রধানমন্ত্রী আন্দোলনকারীদের রাজাকারের বাচ্চা বা রাজাকারের নাতি-পুতি বলে উসকানিমূলক কোনো বক্তব্য দেননি। মুক্তিযোদ্ধা কোটা নিয়ে তিনি এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাব দিয়েছিলেন। সেই জবাবেও তিনি আন্দোলনকারীদের রাজাকারের বাচ্চা বা রাজাকারের নাতি-পুতি বলেননি।
আন্দোলনে নিহতদের মৃত্যু সনদে মৃত্যুর সঠিক কারণ লিখতে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি, মৃতদেহ হস্তান্তর না করে বেওয়ারিশ লাশ হিসেবে গণদাফন, লাশ গুম করে ফেলার নির্দেশদাতা হিসেবে শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ ভিত্তিহীন ও মনগড়া বলে উল্লেখ করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী। তিনি বলেন, এসব অভিযোগের দালিলিক কোনো প্রমাণ নেই। রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে এসব অভিযোগ আনা হয়েছে তাঁদের হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য।
আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠনের শুনানিতে প্রসিকিউশন বলেছিল, জুলাই গণ-আন্দোলন চলার সময় বিটিভি ভবন, মেট্রো রেলসহ কেপিআইভুক্ত (কি পয়েন্ট ইনস্টলেশন) স্থাপনায় হামলা চালিয়ে তার দায় আন্দোলনকারীদের ওপর চাপানো হয়েছে। এই অভিযোগও অস্বীকার করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমির হোসেন।
কোটা সংস্কার আন্দোলন চলার সময় গত বছর ১৬ জুলাই রংপুরে গুলিতে শহীদ হন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ। এই হত্যাকাণ্ডে শেখ হাসিনাসহ আসামিদের বিরুদ্ধ প্ররোচনা, সহায়তা ও ষড়যন্ত্রের যে অভিযোগ আনা হয়েছে, তা অস্বীকার করে আইনজীবী আমির হোসেন বলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শহীদ আবু সাঈদের মা-বাবা, ভাই-বোনদের গণভবনে এনে সহমর্মিতা প্রকাশ করেছেন। আর্থিক সহযোগিতা দিয়েছেন। ফলে শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ ভিত্তিহীন।
গণ-অভ্যুত্থানে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে এই আইনজীবী বলেন, আন্দোলনের সময় পুলিশ মানুষের জানমাল রক্ষার স্বার্থে দায়িত্ব পালন করেছে। তিনি বলেন, দেশে-বিদেশে বিভিন্ন আন্দোলনে বহু মানুষ হতাহত হওয়ার নজির আছে। কিন্তু এর জন্য মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ এনে কোনো দেশ বিচার করেছে—এমন নজিরও নেই।
জুলাই গণ-আন্দোলনে আসামিদের বিরুদ্ধে পদ্ধতিগত হত্যাকাণ্ডের যে অভিযোগ আনা হয়েছে, সেটিকে মিথ্যা দাবি করে আমির হোসেন বলেন, গণ-আন্দোলনের সময় এবং সরকার পতনের পরে দেশের বিভিন্ন থানায় হামলা চালানো হয়েছে, থানা লুট করা হয়েছে। এমনকি পুলিশ হত্যা করা হয়েছে। ফলে পদ্ধতিগত হত্যাকাণ্ডের অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও মনগড়া। পরে তিনি অভিযোগ থেকে তাঁদের (শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামাল) অব্যাহতি দেওয়ার আরজি জানান।
ছাত্র-জনতার গণ-আন্দোলনে গত বছর ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতন ঘটে। ১৪ আগস্ট সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ দাখিল করা হয়। তদন্ত শুরু হয় গত বছর ১৪ অক্টোবর। ছয় মাস ২৮ দিনে তদন্ত শেষে গত ১২ মে শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন দেয় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা। আসামিদের বিরুদ্ধে সুপিরিয়র কমান্ড রেসপন্সিবিলিটি বা ঊর্ধ্বতনের নির্দেশনার দায়সহ হত্যা, হত্যাচেষ্টা, ব্যপক মাত্রায় পদ্ধতিগত হত্যা, প্ররোচনা, উসকানি, সহায়তা, সম্পৃক্ততা, ষড়যন্ত্রসহ অন্যান্য অমানবিক আচরণ, সংঘটিত অপরাধ প্রতিরোধ না করার মতো মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ আনা হয়। গত ১ জুন প্রসিকিউশন ‘আনুষ্ঠানিক অভিযোগ’ দাখিল করলে তা আমলে নেন ট্রাইব্যুনাল।

মানবতাবিরোধী অপরাধ
চলতি বছর শেষ হতে পারে ৪ মামলার বিচার
মেহেদী হাসান পিয়াস

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে যেসব মামলা হয়েছে, এর মধ্যে অন্তত চারটি মামলার বিচারকাজ চলতি বছর শেষ হতে পারে বলে মনে করছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর কার্যালয়। চারটি মামলার অভিযোগই আমলে নিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল। এখন আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠনের পর্যায়ে রয়েছে। তবে মামলার তদন্ত ও বিচারে সময় নিয়ে হতাশা ও ক্ষোভ রয়েছে ভুক্তভোগী এবং শহীদ পরিবারের সদস্যদের।
চার মামলায়ই সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আসামি করা হয়েছে। তিনিসহ এই চার মামলায় মোট আসামি ৫৭ জন। তাঁদের মধ্যে পলাতক ৪১ জন। গ্রেপ্তার করে কারাগারে রাখা হয়েছে ১৬ জনকে।
এ ব্যাপারে প্রসিকিউটর গাজী মনোয়ার হোসেন তামিম কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘চারটি মামলা আনুষ্ঠনিক অভিযোগ গঠনের পর্যায়ে রয়েছে। তার মধ্যে দুটি মামলার অভিযোগ গঠনের শুনানি শেষ হয়েছে। ট্রাইব্যুনাল অভিযোগ গঠন করলে বিচার হবে। অভিযোগ থেকে আসামিদের অব্যাহতি দিলে মামলা ওইখানেই শেষ।
বিচারিক প্রক্রিয়া নিয়ে আইনি বিধান তুলে ধরে এই প্রসিকিউটর বলেন, ‘আইনে আছে, অভিযোগ গঠনের পর বিচার শুরু হলে তা চলবে বিরতিহীনভাবে। কোনো পক্ষ মুলতবির আবেদন করতে পারবে না।
নিয়ম অনুযায়ী, প্রথমে ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটরের কার্যালয় বা তদন্ত সংস্থায় লিখিত অভিযোগ দিতে হয়। অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পেলে মামলা হিসেবে তা নথিভুক্ত করে তদন্ত সংস্থা। এরপর অভিযোগের তদন্ত শুরু হয়। তদন্ত শেষে চিফ প্রসিকিউটর কার্যালয়ে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয় তদন্ত সংস্থা। চিফ প্রসিকিউটর সেই তদন্ত প্রতিবেদন যাচাই-বাছাই, পর্যালোচনা করে ফরমাল চার্জ বা আনুষ্ঠানিক অভিযোগ হিসেবে তা ট্রাইব্যুনালে দাখিল করেন। পরে এই আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গ্রহণ করে তা আমলে নিতে ট্রাইব্যুনালের কাছে আবেদন করেন চিফ প্রসিকিউটর। অভিযোগ আমলে নেওয়া হলে আসামিদের বিরুদ্ধে ‘আনুষ্ঠানিক অভিযোগ’ গঠনের প্রক্রিয়া শুরু হয়। যে চার মামলার অভিযোগ আমলে নিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল মানবতাবিরোধী অন্যান্য অপরাধের পাশাপাশি গণ-অভ্যুত্থান চলার সময় পরিকল্পিতভাবে ড্রোন, হেলিকপ্টার, প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার করে আন্দোলনকারীদের পদ্ধতিগতভাবে নির্মূলের অভিযোগ রয়েছে একটি মামলায়। মামলাটি ঊর্ধ্বতনের নির্দেশে দায় বা ‘সুপিরিয়র কমান্ড রেসপন্সিবিলিটির মামলা হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন এই মামলার আসামি। তাঁদের মধ্যে আবদুল্লাহ আল মামুনকে গ্রেপ্তারের পর আদালতের নির্দেশে কারাগারে রাখা হয়েছে। অন্য দুজন পলাতক। এ মামলায় আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠনের ওপর উভয় পক্ষের শুনানি শেষ হয়েছে। আগামী ১০ জুলাই আদেশের দিন ধার্য করেছেন ট্রাইব্যুনাল। ঘটনা ও অপরাধের গুরুত্ব বিবেচনায় বাকি তিনটি মামলাও বেশ আলোচিত।
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আবু সাঈদকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় মামলাটিকে ‘আবু সাঈদ হত্যা মামলা’ হিসেবে উল্লেখ করা হচ্ছে। গত ৩০ জুন এই মামলার আনুষ্ঠানিক অভিযোগ আমলে নিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল। আগামী ১০ জুলাই এ মামলায় পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে। এ মামলার ৩০ জন আসামির মধ্যে গ্রেপ্তার চারজন। বাকি ২৬ আসামির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে।
রাজধানীর চানখাঁরপুলে ছয় আন্দোলনকারীকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় মামলাটিকে বলা হচ্ছে ‘চানখাঁরপুল হত্যাকাণ্ড’ মামলা। সরকার পতনের আন্দোলন ‘মার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচিতে অংশ নিতে ঢাকায় এসেছিলেন ছয় তরুণ। গত বছর ৫ আগস্ট সরকার পতনের দিন রাজধানীর চানখাঁরপুল এলাকায় পুলিশ তাঁদের গুলি করে হত্যা করে। সেদিন শহীদ হন শাহরিয়ার খান আনাস, শহীদ শেখ মাহদি হাসান জুনায়েদ, শহীদ মো. ইয়াকুব, শহীদ মো. রাকিব হাওলাদার, শহীদ মো. ইসমামুল হক ও শহীদ মানিক মিয়া। এ ঘটনায় মামলা দায়েরের পর ছয় মাস ১৩ দিনে তদন্ত শেষ করে গত ২০ এপ্রিল প্রতিবেদন দেয় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা। এটিই ছিল জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার প্রথম তদন্ত প্রতিবেদন। গত ২৫ মে এই মামলার আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করা হলে ট্রাইব্যুনাল তা আমলে নেন। গত ৩ জুলাই এ মামলায় আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠনের ওপর শুনানি শেষ হয়। আগামী ১৪ জুলাই এ বিষয়ে শুনানির তারিখ ধার্য করা রয়েছে। মামলার আট আসামির মধ্যে গ্রেপ্তার করে কারাগারে রাখা হয়েছে চারজনকে।
আশুলিয়ায় মৃতপ্রায় একজন ও পাঁচজনের লাশ পোড়ানোর মামলাটি ‘লাশ পোড়ানোর’ মামলা হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। গত ১৯ জুন চিফ প্রসিকিউটরের কার্যালয়ে এ মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দেয় তদন্ত সংস্থা। গত ২ জুলাই আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করা হলে সেদিনই তা আমলে নেন ট্রাইব্যুনাল। এ মামলার ১৬ জন আসামির মধ্যে ট্রাইব্যুনালে ১১ জনের নাম প্রকাশ করে প্রসিকিউশন। এই ১১ জনের মধ্যে আটজনকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে রাখা হয়েছে।
প্রত্যাশার সঙ্গে আছে হতাশা
মামলার তদন্তকাজ নিয়ে হতাশা ব্যক্ত করলেও বিচার নিয়ে আশাবাদী শহীদ আবু সাঈদের বড় ভাই আবু হোসেন। কালের কণ্ঠকে তিনি বলেন, ‘আমাদের প্রত্যাশা ছিল যে দ্রুত সময়ের মধ্যে আমরা এই বিচারটা দেখতে পাব এবং ন্যায়বিচার পাব। কিন্তু তদন্তেই দীর্ঘ সময় লাগল। তার পরও বলতে চাই, যারা আবু সাঈদ হত্যার সঙ্গে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িত, তাদের সবার বিচার চাই। রাজনৈতিক প্রতিহিংসার বশবর্তী হয়ে কাউকে যেন এ মামলায় যুক্ত না করা হয়।’
শেখ হাসিনার পতনের আগের দিন রাজধানীর মিরপুর-১০ নম্বরে গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যু হয় দেশ পলিটেকনিক কলেজের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী শাহরিয়ার হাসান আলভীর। পরে ১৯ আগস্ট ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর কার্যালয়ে শেখ হাসিনাসহ ২৭ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দেন শহীদ আলভীর বাবা মো. আবুল হাসান। কালের কণ্ঠকে তিনি বলেন, ‘অভিযোগটি কী পর্যায়ে আছে, জানি না। গত সপ্তাহেও আমি প্রসিকিউশনে গিয়েছিলাম। গেলে শুধু একটা কথাই বলে, কাজ করছি, বিচার হবে। কিন্তু আদৌ বিচার হবে কি না—জানি না। আসামিরা এলাকায় ঘুরে বেড়াচ্ছে। এতে আমরা হতাশায় ভুগছি।’
মামলার বাদী এবং শহীদ পরিবারগুলোর জন্যও বিশেষ নিরাপত্তার দাবি জানান আবুল হাসান।
প্রসিকিউশনের তথ্য অনুযায়ী, এই অভ্যুত্থানের সময় দেশজুড়ে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের ঘটনায় ট্রাইব্যুনালে ২৭টি পর্যন্ত মামলা হয়েছে। এসব মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ২০৬ জনকে আসামি করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার এসএসসির ফল প্রকাশের প্রস্তাব
নিজস্ব প্রতিবেদক

আগামী ১০ জুলাই বৃহস্পতিবার এ বছরের এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল প্রকাশের প্রস্তাব করেছে আন্ত শিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটি। এরই মধ্যে এই প্রস্তাব শিক্ষা মন্ত্রণালয় হয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে। সেখান থেকে সম্মতি পেলে ফল প্রকাশ করা হবে।
আন্ত শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক কমিটির আহবায়ক ও ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক এস এম কামাল উদ্দিন হায়দার কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আগামী ১০ জুলাই এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল প্রকাশের প্রস্তাব করা হয়েছে।
সূত্র জানায়, সাধারণত পরীক্ষা শেষ হওয়ার ৬০ দিনের মধ্যে ফলাফল প্রকাশ করা হয়ে থাকে। গত ১০ এপ্রিল সারা দেশে একযোগে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা শুরু হয়।
জানা গেছে, এ বছর এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় মোট শিক্ষার্থী ছিল ১৯ লাখ ২৮ হাজার ১৮১ জন। এর মধ্যে সাধারণ ৯টি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে ১৪ লাখ ৯০ হাজার ১৪২ জন। অন্যদিকে মাদরাসা বোর্ডের অধীন দাখিল পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে দুই লাখ ৯৪ হাজার ৭২৬ জন। আর কারিগরি বোর্ডের অধীনে পরীক্ষার্থী ছিল এক লাখ ৪৩ হাজার ৩১৩ জন।