ঢাকা, মঙ্গলবার ০৮ জুলাই ২০২৫
২৪ আষাঢ় ১৪৩২, ১২ মহররম ১৪৪৭

ঢাকা, মঙ্গলবার ০৮ জুলাই ২০২৫
২৪ আষাঢ় ১৪৩২, ১২ মহররম ১৪৪৭
সাক্ষাৎকার

মিয়ানমারে সহিংসতা ও বাস্তুচ্যুতি বাড়তে পারে

  • দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় মানবাধিকার নিয়ে কাজ করছে ফোরটিফাই রাইটস। সংস্থাটির পরিচালক তৃতীয় জন কুইনলি মনে করেন, মিয়ানমারে জান্তার বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষ ও সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর লড়াইয়ের প্রভাব পড়তে পারে বাংলাদেশ, ভারত, থাইল্যান্ডসহ প্রতিবেশী দেশগুলোতে। তাঁর সাক্ষাৎকার নিয়েছেন মেহেদী হাসান
শেয়ার
মিয়ানমারে সহিংসতা ও বাস্তুচ্যুতি বাড়তে পারে
জন কুইনলি

কালের কণ্ঠ : মিয়ানমারের পরিস্থিতি এখন কেমন?

জন কুইনলি : অভ্যুত্থানের মাধ্যমে রাষ্ট্রক্ষমতা কেড়ে নেওয়ার দুই বছর পেরিয়ে গেছে। অভ্যুত্থানের পর থেকেই মিয়ানমারে ব্যাপক মানবাধিকার লঙ্ঘন, সহিংসতার তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ ও সংরক্ষণ করছে ফোরটিফাই রাইটস। এ থেকে দেখা যায়, হত্যা, গ্রেপ্তার, নির্যাতন, গুমসহ মানবতাবিরোধী অপরাধও সংঘটিত হচ্ছে সেখানে।

 

কালের কণ্ঠ : বাংলাদেশের সীমান্তের ওপারে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য।

বিশেষ করে সেখানকার পরিস্থিতি সম্পর্কে আপনার কাছে কী তথ্য আছে?

জন কুইনলি : রাখাইন রাজ্য ও রোহিঙ্গাদের পরিস্থিতি তেমন বদলায়নি। রাখাইন রাজ্যের বাইরে যাওয়ার চেষ্টা করলেই রোহিঙ্গাদের গ্রেপ্তার করা হয়। বিদেশি পরিচয়ে নাগরিকত্ব যাচাইকরণ কার্ড (এনভিসি) নিতে তাদের বাধ্য করা হচ্ছে। মানে সেখানে তাদের নাগরিক অধিকারও দেওয়া হচ্ছে না।

 

 

কালের কণ্ঠ : সেখানে সংঘাত, সহিংসতা চলছে বলে খবর আসছে। এই সংঘাত কি মিয়ানমারজুড়ে হচ্ছে?

জন কুইনলি : আমরা যে তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করেছি তাতে দেখা যাচ্ছে, ইয়াঙ্গুন, মান্দালয়, সব মহানগর, শহরসহ নৃগোষ্ঠীগুলো থাকে এমন এলাকাগুলোতেও সংঘাত, সহিংসতা চলছে। মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী তাদের বিরুদ্ধে চলা নীরব ও সশস্ত্রদুই ধরনের প্রতিরোধই থামিয়ে দিতে চায়। এ জন্য সেখানে প্রতিরোধ যোদ্ধাদের বিরুদ্ধে আমরা আর্টিলারি হামলা দেখছি।

আবার সামরিক বিমান থেকে বেসামরিক এলাকাগুলোতে বোমা হামলা হতে দেখছি।

 

কালের কণ্ঠ : যুক্তরাষ্ট্রের বার্মা অ্যাক্টের ফলে বাংলাদেশসহ পুরো অঞ্চলে অস্থিরতা সৃষ্টির আশঙ্কা করা হচ্ছে। আপনার বিশ্লেষণ কী?

জন কুইনলি : প্রথমত, বার্মা অ্যাক্টে মিয়ানমারের জান্তাবিরোধী জাতীয় ঐক্য সরকারের (এনইউজি) জন্য সামরিক সহযোগিতার বিধান নেই। অন্য সব সহযোগিতার কথা আছে। যুক্তরাষ্ট্র সরকার বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের সহায়তায় সবচেয়ে বেশি অর্থ দিচ্ছে।

সংখ্যায় কম হলেও ইউএনএইচসিআরের মাধ্যমে বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডায় রোহিঙ্গাদের যাওয়া শুরু হয়েছে। অন্য দেশগুলোরও এগিয়ে আসা উচিত। রোহিঙ্গাদের বোঝা বহনের দায়িত্ব শুধু বাংলাদেশের নয়।

মিয়ানমারে সামরিক অভ্যুত্থানের পর বাংলাদেশ সরকার বিভিন্ন সময় ইঙ্গিত দিয়েছে, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন পরিকল্পনা এখনো চলছে। কিন্তু তা বাস্তবায়িত হয়নি। কারণ তা বাস্তবসম্মত নয়। আমরা বিশ্বাস করি, জান্তাবিরোধী জাতীয় ঐক্য সরকার মিয়ানমারে পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠায় সক্ষম হবে। তখন রোহিঙ্গারা ফিরতে পারে। এই পরিস্থিতিতে রোহিঙ্গারা ফিরে চাইবে না। তাদের জোর করে পাঠানোও ঠিক হবে না।

কালের কণ্ঠ : জান্তাবিরোধী শক্তিকে বিদেশ থেকে অস্ত্র সহায়তা দিলে তার প্রভাব প্রতিবেশীদের ওপরও পড়তে পারে। এমনকি জান্তাবিরোধী পক্ষ প্রতিবেশীদের সহযোগিতা চাইতে পারেএমন আশঙ্কাও করছেন অনেকে।

জন কুইনলি : এ বিষয়ে আমি ঠিক জানি না। তবে জান্তা দুর্বল হলেও থামার কোনো লক্ষণ নেই। আগামী মাসগুলোতে মিয়ানমারে আরো সহিংসতা, বাস্তুচ্যুতি দেখা যেতে পারে। সে ক্ষেত্রে বাংলাদেশ, থাইল্যান্ড, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, ভারতসহ অন্য প্রতিবেশী দেশগুলোতে আবারও নতুন করে মিয়ানমারের আশ্রয়প্রার্থীদের দেখা যেতে পারে। এটি নতুন আঞ্চলিক সমস্যা হিসেবেও দেখা দিতে পারে।

 

কালের কণ্ঠ : বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তের শূন্য রেখায় গত মাসে রোহিঙ্গা দুটি সশস্ত্র গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘাত হয়েছে। বাংলাদেশ সরকার বলছে, ওই এলাকা নিয়ন্ত্রণ করছে রোহিঙ্গা সলিডারিটি অর্গানাইজেশন (আরএসও)।

জন কুইনলি : আমরাও শুনেছি, শূন্য রেখায় আরএসও-আরসা লড়াই হয়েছে। তবে সংঘাতের সময় সেখানে অবস্থানরত কয়েকজন রোহিঙ্গার সঙ্গে ফোরটিফাই রাইটস কথা বলেছে। তাদের দাবি, তারা সাধারণ রোহিঙ্গা। তারা আরসা, আরএসও বা কোনো সশস্ত্র গোষ্ঠীর নয়। তবে তারা লোকজনকে লড়াই করতে, ঘরে আগুন দিতে দেখেছে। এরপর সেখান থেকে সাধারণ রোহিঙ্গাদের অন্যত্র সরে যেতে হয়েছে। এটি কোনো ভালো খবর নয়।

 

কালের কণ্ঠ : কক্সবাজারে রোহিঙ্গাদের আশ্রয়শিবিরেও আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মির (আরসা) বিরুদ্ধে পোস্টার দেখা গেছে।

জন কুইনলি : বাংলাদেশে রোহিঙ্গা শিবিরে বেশ কিছু নন স্টেট অ্যাক্টর (রাষ্ট্রীয় কোনো বাহিনী নয়) আছে। এর মধ্যে আরসা, আরএসওর মতো রোহিঙ্গাদের রাজনৈতিক, সশস্ত্র গোষ্ঠীও আছে। মাদক চোরাকারবারিও সেখানে সক্রিয়। পাঁচ বছর ধরে এই গোষ্ঠীগুলো রোহিঙ্গাদের অপহরণ, হত্যাসহ নানা ধরনের অপরাধ করছে। ফোরটিফাই রাইটস এসব তথ্য-উপাত্তও সংগ্রহ করছে।

 

কালের কণ্ঠ : অপরাধের জবাবদিহি নিশ্চিত করতে ফোরটিফাই রাইটস কী ধরনের কাজ করে?

জন কুইনলি : ফোরটিফাই রাইটস সম্প্রতি সর্বজনীন বিচারিক এখতিয়ারের আওতায় মিয়ানমারের কিছু ব্যক্তিবিশেষের বিরুদ্ধে জার্মানির আদালতে মামলা করেছে। ওই মামলার শুনানি এখনো শুরু হয়নি। আমরা আশা করছি, জার্মান প্রসিকিউটর ওই মামলা শুরু করবেন। মামলায় কয়েকজন সামরিক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মিয়ানমারে অভ্যুত্থানের আগে ও পরে জেনোসাইড, যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছে।

মিয়ানমারের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচার আদালত (আইসিজে), আন্তর্জাতিক ফৌজদারি আদালতে (আইসিসি) মামলা চলছে। জাতিসংঘের মিয়ানমারবিষয়ক কাঠামো আইআইএমএম মিয়ানমারে অপরাধের তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ, যাচাই ও সংরক্ষণ করছে। আমাদের সহকর্মী তুন খিন আর্জেন্টিনায় মামলা করেছেন। মিয়ানমারে নির্যাতন নিয়ে মামলা চলছে তুরস্কেও।

বাংলাদেশে অবস্থানরত রোহিঙ্গাদের সুরক্ষার জন্য বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষের প্রতি ফোরটিফাই রাইটস আহ্বান জানিয়ে আসছে। কারণ যতক্ষণ তারা বাংলাদেশে আছে ততক্ষণ তাদের সুরক্ষাসহ সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করার দায়িত্ব বাংলাদেশের।

 

কালের কণ্ঠ : মিয়ানমারের গণতন্ত্রপন্থী জাতীয় ঐক্য সরকার এখন দেশটির ৬০ শতাংশ এলাকা নিয়ন্ত্রণ করছেএমন তথ্য বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশ করা হয়েছে।

জন কুইনলি : এনইউজি এখন মিয়ানমার ভূখণ্ডের কতটা নিয়ন্ত্রণ করছে, সে বিষয়ে আমার কাছে তথ্য নেই। তবে এনইউজিই এখন মিয়ানমারের বেশির ভাগ এলাকায় প্রশাসন চালাচ্ছে, স্বাস্থ্যসহ মৌলিক সেবা দিচ্ছে। জান্তা বর্বরতা ছাড়া কিছুই দিতে পারছে না। আমি নিশ্চিতভাবে বিশ্বাস করি, এনইউজিই মিয়ানমারের নির্বাচিত সরকার। বিশ্বজুড়ে সরকারগুলো মিয়ানমারের জান্তার সঙ্গে সম্পৃক্ততা বন্ধ করে দিয়েছে। মিয়ানমারের সরকার হিসেবে তারা এনইউজির সঙ্গে যোগাযোগ করছে। এখন মিয়ানমারের জনগণ, মানবাধিকারকে সম্মান জানিয়ে নীতি গ্রহণ করা উচিত। মিয়ানমারের জান্তার বিরুদ্ধে লড়াই জোরালো হচ্ছে এবং সাফল্যও দেখা যাচ্ছে।

 

কালের কণ্ঠ : জান্তা আগামী নির্বাচন সামনে রেখে নতুন করে বিধি-নিষেধ জারি করছে।

জন কুইনলি : মিয়ানমারের জনগণ অভিন্ন এক শত্রুর বিরুদ্ধে লড়ছে। আর সেই শত্রুটি হলো জান্তা। নির্বাচনের আগে জান্তা পুরো দেশে মার্শাল ল দিচ্ছে। কর্তৃপক্ষ হিসেবে জান্তা নিজেই অবৈধ। তাই মিয়ানমারের নির্বাচনকে কারো সমর্থন করা উচিত নয়।

 

কালের কণ্ঠ : সময় দেওয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।

জন কুইনলি : কালের কণ্ঠকেও ধন্যবাদ।

 

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

স্থায়ীভাবে বহিষ্কারে কারণ দর্শানোর নোটিশ

চট্টগ্রামে বৈষম্যবিরোধী ছাত্রনেতার দুই কোটি টাকা চাঁদা দাবি

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
শেয়ার
চট্টগ্রামে বৈষম্যবিরোধী ছাত্রনেতার দুই কোটি টাকা চাঁদা দাবি

চাঁদাবাজির অভিযোগ ওঠার পর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের চট্টগ্রাম নগর শাখার সদস্যসচিব নিজাম উদ্দিনের পদ সাময়িকভাবে স্থগিত করেছে কেন্দ্রীয় কমিটি। স্থায়ীভাবে কেন বহিষ্কার করা হবে না, ব্যাখ্যা চেয়ে তাঁকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। তিন দিনের মধ্যে নিজাম উদ্দিনকে নোটিশের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

অভিযোগ উঠেছে, চট্টগ্রামে চাঁদা না পেয়ে মব তৈরি করে মেঘনা পেট্রোলিয়ামের কর্মচারী ও জামায়াত নেতা নওশেদ জামালকে মারধর করে পুলিশের হাতে তুলে দেন নিজাম উদ্দিন।

গতকাল শনিবার রাতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মঈনুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক শোকজ নোটিশে এই নির্দেশনা দেওয়া হয়। এতে বলা হয়েছে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সভাপতি রশিদুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক হাসান ইনামের নির্দেশনায় ওই শোকজ নোটিশ দেওয়া হলো।

নোটিশে উল্লেখ করা হয়, আপনার বিরুদ্ধে অভিযোগসংগঠনের নীতিমালা ও শৃঙ্খলা-পরিপন্থী কিছু কার্যকলাপে জড়িত হয়েছেন। একজন দায়িত্বশীল পদধারী সদস্যসচিব হিসেবে এ ধরনের কর্মকাণ্ড সংগঠনের ভাবমূর্তি ও অভ্যন্তরীণ শৃঙ্খলা পরিপন্থী এবং তা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।

এই প্রেক্ষাপটে কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী নিজাম উদ্দিনের সংগঠনের সদস্যসচিব পদ সাময়িকভাবে স্থগিত করার কথা উল্লেখ করা হয়।

নোটিশে একই সঙ্গে নিজাম উদ্দিনকে সংগঠন থেকে স্থায়ীভাবে কেন বহিষ্কার করা হবে নাসে বিষয়ে একটি লিখিত ব্যাখ্যা আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে কেন্দ্রীয় কমিটির কাছে জমা দেওয়ার অনুরোধ করা হয়েছে।

নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সন্তোষজনক ব্যাখ্যা পাওয়া না গেলে সংগঠন নিজাম উদ্দিনের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত গ্রহণে সম্পূর্ণ স্বাধীন থাকবে বলে নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে।

এর আগে নিজামের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ এনে চট্টগ্রাম পুলিশের কাছে আবেদন করেন এক নারী।

আবেদনে ওই নারী উল্লেখ করেন, দুই কোটি টাকা চাঁদা না পেয়ে তাঁর স্বামীকে মিথ্যা মামলায় পুলিশে দিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের চট্টগ্রাম নগরের সদস্যসচিব নিজাম উদ্দিন।

গতকাল সকালে ওই আবেদন করেন রিয়াজুল জান্নাত নামের ওই নারী। তিনি নগরীর বাগমনিরাম দক্ষিণ এলাকার বাসিন্দা নওশেদ জামালের স্ত্রী। গত বৃহস্পতিবার নওশেদ জামালকে গ্রেপ্তার করে কোতোয়ালি থানার পুলিশ।

আবেদনে রিয়াজুল জান্নাত উল্লেখ করেনকিছুদিন ধরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা পরিচয় দিয়ে নিজাম উদ্দিন নামের এক ব্যক্তি তাঁর স্বামীর কাছে দুই কোটি টাকা চাঁদা দাবি করে আসছিলেন।

চাঁদা না পেয়ে তাঁর স্বামীকে ফাঁসানো হয়।

আবেদনের বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর বৈষম্যবিরোধী এই নেতাকে নিয়ে জনমনে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়।

এদিকে সংগঠনের কারণ দর্শানোর নোটিশটি পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রামের বৈষম্যবিরোধী নেতা নিজাম উদ্দিন। তিনি বলেন, যথাসময়ে আমার জবাব কেন্দ্রে পাঠিয়ে দেব।

মন্তব্য
দেশে ফেরত তিনজন কারাগারে

জঙ্গিসংশ্লিষ্টতা তদন্তে মালয়েশিয়াকে সহায়তা করবে বাংলাদেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
জঙ্গিসংশ্লিষ্টতা তদন্তে মালয়েশিয়াকে সহায়তা করবে বাংলাদেশ

উগ্র জঙ্গি আন্দোলনের সঙ্গে সরাসরি জড়িত থাকার অভিযোগে সম্প্রতি মালয়েশিয়ায় ৩৬ বাংলাদেশিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাঁদের বিরুদ্ধে চলমান আইনি প্রক্রিয়া নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে বাংলাদেশ। এ নিয়ে কুয়ালালামপুরের বাংলাদেশ হাইকমিশন মালয়েশিয়া কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে। গতকাল শনিবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, গত সপ্তাহে মালয়েশিয়ার কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, উগ্র জঙ্গি আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে সম্প্রতি ৩৬ বাংলাদেশিকে গ্রেপ্তার করা হয়। বিষয়টি জানার পর কুয়ালালামপুরের বাংলাদেশ হাইকমিশন মালয়েশিয়ার সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। অভিযুক্ত ব্যক্তিদের পরিচয় ও তাঁদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ সম্পর্কিত তথ্য আনুষ্ঠানিকভাবে জানাতে কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করেছে।

এতে বলা হয়েছে, গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের মধ্যে মালয়েশিয়ার আদালতে পাঁচজনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।

অন্যদের তদন্ত প্রক্রিয়াধীন। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে চলমান আইনি প্রক্রিয়া নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে বাংলাদেশ। এ নিয়ে কুয়ালালামপুরের বাংলাদেশ হাইকমিশন মালয়েশিয়া কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে। বাংলাদেশ হাইকমিশন প্রবাসী বাংলাদেশিদের যেখানে প্রয়োজন, সেখানে প্রয়োজনীয় সমর্থন দেবে।

বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, বাংলাদেশ সব ধরনের সন্ত্রাসবাদ, সহিংস উগ্রবাদ এবং জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে দৃঢ় অবস্থান পুনরাবৃত্তি করছে এবং এ বিষয়ে মালয়েশিয়া কর্তৃপক্ষকে সম্পূর্ণ সহযোগিতা দিতে প্রস্তুত।

মালয়েশিয়ায় জঙ্গিসংশ্লিষ্টতায় গ্রেপ্তার তিনজন কারাগারে : মালয়েশিয়ায় জঙ্গিসংশ্লিষ্টতার অভিযোগে আটক হওয়ার পর দেশে ফেরা তিনজনকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত। গত শুক্রবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট এম মিজবাহ উর রহমানের আদালত তাঁদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

গতকাল শনিবার ডিএমপির প্রসিকিউশন বিভাগের (নন জিআর) উপপরিদর্শক মোস্তফা হোসেন কালের কণ্ঠকে এই তথ্য জানিয়েছেন।

আসামিরা হলেন জাহিদ, নজরুল ও রেদোয়ান।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার ফৌজদারি কার্যবিধি আইনের ৫৪ ধারায় তাঁদের আদালতে হাজির করা হয়। এরপর বিমানবন্দর থানা পুলিশ তাঁদের কারাগারে আটক আবেদন করেন। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত তাঁদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

এর আগে শুক্রবার মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুরে সংবাদ সম্মেলনে দেশটির পুলিশপ্রধান খালিদ ইসমাইল জানান, জঙ্গিসংশ্লিষ্টতার অভিযোগে ৩৬ বাংলাদেশিকে আটক করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে মালয়েশিয়ায় জঙ্গিসংশ্লিষ্টতার অভিযোগে গ্রেপ্তার বাংলাদেশিদের মধ্যে তিনজনকে দেশে পাঠানো হয়। তাঁরা সিরিয়া ও বাংলাদেশে ইসলামিক স্টেটস বা আইএসের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট গ্রুপগুলোকে অর্থ পাঠাতেন।

আটক ব্যক্তিদের মধ্যে ১৫ জনকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে এবং বাকি ১৬ জন এখনো পুলিশি হেফাজতে বলেও জানান দেশটির আইজিপি। তাঁর সন্দেহ, পুরো নেটওয়ার্কে ১০০ থেকে ১৫০ জনের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে।

দেশটির আইজিপি বলেন, ‌‌‘তাঁরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও মেসেজিং অ্যাপের মাধ্যমে জঙ্গি মতবাদও প্রচার করতেন এবং আরো বাংলাদেশি শ্রমিকদের এই চক্রে যুক্ত করার চেষ্টা করতেন।

মালয়েশিয়া পুলিশের গোয়েন্দা তথ্য অনুযায়ী, আটক বাংলাদেশিরা আন্তর্জাতিক মানি ট্রান্সফার সার্ভিস ও ই-ওয়ালেটে ব্যবহারের মাধ্যমে অর্থ পাঠাতেন। এই নেটওয়ার্কটি সিরিয়া ও বাংলাদেশে আইএসের সেলগুলোকে নিয়মিতভাবে সহায়তা করত।

এর আগে ২০১৬ সালে মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুরে আইএস সংশ্লিষ্ট এক বিস্ফোরণের পর দেশটির সরকার জঙ্গি তৎপরতা দমনে কঠোর অবস্থান নেয়। এর পর থেকে শত শত সন্দেহভাজনকে আটক করেছে দেশটির নিরাপত্তা বাহিনী।

মন্তব্য

ছুটির ঘোষণা

শেয়ার
ছুটির ঘোষণা

আজ ৬ জুলাই রবিবার পবিত্র আশুরা উপলক্ষে কালের কণ্ঠের সব বিভাগ বন্ধ থাকবে। তাই আগামীকাল সোমবার পত্রিকা প্রকাশিত হবে না। তবে কালের কণ্ঠ অনলাইন ও মাল্টিমিডিয়া চালু থাকবে। সম্পাদক

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য
এআইটি প্রত্যাহার দাবি বিটিএমএর

নীলনকশায় ধ্বংস করা হচ্ছে দেশের বস্ত্রশিল্প

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
নীলনকশায়  ধ্বংস করা হচ্ছে দেশের বস্ত্রশিল্প

প্রতিবেশী দেশের শিল্প ও কর্মসংস্থান শক্তিশালী করতে দেশের শিল্পকে রুগ্ণ করা হচ্ছে। এমন উদ্বেগ তৈরি হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বস্ত্র খাতের সংগঠন বিটিএমএর সভাপতি শওকত আজিজ রাসেল। সরকার সম্প্রতি তুলা আমদানিতে নতুন ২ শতাংশ অগ্রিম আয়কর (এআইটি) আরোপ করার প্রতিবাদে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই মন্তব্য করেন।

এ সময় বক্তারা এটা ভারতের নীলনকশাএমন অভিযোগ তুলে বলেন, আগাম কর বাস্তবায়ন করা হলে দেশের সুতা ও বস্ত্রকল সঙ্গে সঙ্গে ধ্বংস হবে।

দেউলিয়া হবে দেশের বস্ত্র খাত। আর এটা হবে ভারতের খোলাবাজার। এই নীলনকশা বাস্তবায়ন করতে ভারত ও বিগত সরকারের দোসররা বসে আছে। বক্তারা জানান, এই খাতের বিনিয়োগের ২২ বিলিয়ন ডলারের মধ্যে ১৮ বিলিয়নই ব্যাংকঋণ।

গতকাল শনিবার রাজধানীর গুলশান ক্লাবে এই বিশেষ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশন (বিটিএমএ)। এতে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন বিটিএমএর পরিচালক মো. খোরশেদ আলম, রাজিব হায়দার, শহীদ আলম, আবুদুল্লাহ আল মামুন, মো. সালেহউজ্জামান, বাদশা গ্রুপের বাদশা মিয়া, বাংলাদেশ কটন অ্যাসোসিয়েশনের (বিসিএ) উপদেষ্টা আইয়ুব ভূইয়া, বাংলাদেশ টেরিটাওয়েল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি হোসেন মেহমুদ, নিট পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারকদের সংগঠন বিকেএমইএর জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি অমল পোদ্দার।

বিটিএমএ সভাপতি বলেন, ২ শতাংশ কর নির্ধারণ প্রকৃতপক্ষে বছর শেষে ৫০ শতাংশ কর দিতে হয়। একদিকে ১৮ শতাংশ ব্যাংকঋণের সুদ, আবার অন্যদিকে ইনকাম ট্যাক্সের নামে ব্যবসার পুঁজি থেকে ৫০ শতাংশ কেটে নিলে কিভাবে বস্ত্র খাতের উদ্যোক্তা কারখানা চালু রাখবে।

এতে দেশের সুতাকলগুলো তার প্রতিযোগিতার সক্ষমতা হারাচ্ছে। এতে সরকারের কি লাভ?

তিনি বলেন, এত দিন শুনেছি সরকার বড় বড় প্রকল্পে হাত দেবে না; এখন শুনছি ভোলায় ব্রিজসহ বিভিন্ন খাতে বড় বড় প্রকল্প হাতে নেবে। সার্বিকভাবে ভালো নেই দেশের বস্ত্র খাত। এ সময় একতরফা সিদ্ধান্ত না নিয়ে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধানের আশা করেন তিনি। বলেন, আমাদের বিশ্বাস সরকার বিষয়টা আমলে নেবে এবং এই আগাম কর প্রত্যাহার করবে।

রাজিব হায়দার বলেন, ২ শতাংশ আগাম কর আরোপ করে সরকার বস্ত্রশিল্পকে ধ্বংসের জন্য কফিনের শেষ পেরেক ঠুকে দিয়েছে। এর ফলে দেশীয় গণমাধ্যমের চেয়ে প্রতিবেশী দেশের মিডিয়াগুলোতে ব্যাপক প্রচার হচ্ছে। তারা বেশ খুশি। কারণ তারা জানে, এর বাস্তবায়ন হলে বাংলাদেশের শিল্প মুখ থুবড়ে পড়বে।

মো. সালেহউজ্জামান বলেন, বাংলাদেশের সুতাকলগুলো বন্ধের পাঁয়তারা ছলছে। প্রতিবেশী দেশ এই খাতে ৪০ শতাংশ প্রণোদনা দিলেও বাংলাদেশ ২৫ শতাংশ থেকে ১.২ শতাংশে নামিয়ে এনেছে। তিনি বলেন, এই সংকট থেকে বের হওয়া না গেলে সংকটে পড়বে দেশের অর্থনীতি।

বিটিএমএর আরেক পরিচালক মো. খোরশেদ আলম বলেন, দেশের বস্ত্রকল ধ্বংসের পরিকল্পনা নতুন নয়। এটি শুরু হয়েছে কয়েক বছর আগেই। এ ধরনের নানা ষড়যন্ত্র চলছে বলে জানান তিনি।

বিটিএমএ পরিচালক হোসেন মেহমুদ বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের পাল্টা শুল্কের কারণে ব্যবসায়ীরা দেশটি থেকে তুলা আমদানি বাড়ানোর বিষয়ে চিন্তা-ভাবনা করছেন। এমন পরিস্থিতিতে ২ শতাংশ অগ্রিম আয়কর আরোপ করা হলো। ফলে ব্যবসায়ীরা যুক্তরাষ্ট্র থেকে তুলা আমদানি বাড়ানোর পথে যেতে পারবেন না।

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ