ঢাকা, সোমবার ১৪ জুলাই ২০২৫
৩০ আষাঢ় ১৪৩২, ১৮ মহররম ১৪৪৭

ঢাকা, সোমবার ১৪ জুলাই ২০২৫
৩০ আষাঢ় ১৪৩২, ১৮ মহররম ১৪৪৭

করোনায় জয়, ডেঙ্গুতে ভয়

শিমুল মাহমুদ
শিমুল মাহমুদ
শেয়ার
করোনায় জয়, ডেঙ্গুতে ভয়

করোনা মহামারির মধ্যে শুরু ২০২২। শেষ হচ্ছে ডেঙ্গুর ভয় দিয়ে। মশাবাহিত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে রেকর্ডসংখ্যক ২৭৬ জন মারা গেছে, যা দেশের ইতিহাসে সর্বাধিক। এ ছাড়া বছরটি ছিল ডায়রিয়া ও চোখ ওঠা রোগে আলোচিত।

ওষুধের মূল্যবৃদ্ধি, অবৈধ ক্লিনিক-হাসপাতালে অভিযান, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে (বিএসএমএমইউ) আধুনিক চিকিৎসায় সুপার স্পেশালাইজড হসপিটালের সংযুক্তি, করোনার চতুর্থ ডোজের টিকা ও পাঁচ থেকে ১১ বছর বয়সী শিশুদের করোনার টিকা।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাংলাদেশে ৬৭ শতাংশ মানুষ মারা যায় অসংক্রামক রোগব্যাধিতে। দরিদ্র জনগোষ্ঠীর মধ্যে অসংক্রামক ব্যাধির প্রকোপ বেড়েই চলেছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার সাবেক পরিচালক ও জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক বে-নজির আহমেদ বলেন, আমাদের বড় চ্যালেঞ্জ সর্বজনীন সেবা নিশ্চিত করা।

এখানে বড় একটা ঘাটতি রয়ে গেছে। দরিদ্র জনগোষ্ঠীর অনেক মানুষ এখনো চিকিৎসাসেবা পায় না। অসংক্রামক ব্যাধিতে আক্রান্তদের দীর্ঘদিন ওষুধ খেতে হয়। ওষুধের সঙ্গে জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় সামগ্রিকভাবে বহু মানুষ ওষুধ কিনতে পারছে না।
এতে স্বাস্থ্য সমস্যা বাড়ছে।

করোনা শনাক্ত কমেছে ৫৮ শতাংশ, মৃত্যু ৯৩ শতাংশ : ২০২২ সালে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয় চার লাখ ৫১ হাজার ৪৭২ জনের। আক্রান্তদের মধ্যে মারা যায় এক হাজার ৩৬৬ জন। এর আগের বছর শনাক্ত হয়েছিল ১০ লাখ ৭২ হাজার ২৯ জন। মারা যায় ২০ হাজার ৫১৩ জন।

২০২১ সালের তুলনায় ২০২২ সালে করোনা শনাক্তের হার কমে ৫৭.৮৮ শতাংশ আর মৃত্যুর হার কমেছে ৯৩ শতাংশ।

আইইডিসিআর-এর সাবেক প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডা. মোশতাক হোসেন বলেন, ব্যাপক হারে টিকা প্রয়োগের ফলে চার মাস ধরে দেশে করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতি নিম্ন পর্যায়ে। তিনি বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এখনো করোনা মহামারি সমাপ্ত ঘোষণা করেনি। আগামী বছর থেকে হয়তো জনস্বাস্থ্যবিষয়ক জরুরি অবস্থা থাকবে না। তবে করোনাভাইরাস থাকবে। বর্তমানে সারা বিশ্বে করোনা সংক্রমণের ৯৯.৯৯ শতাংশ সংক্রমণ হচ্ছে ওমিক্রনের বিভিন্ন উপধরন দ্বারা।

ডেঙ্গু রোগী বেড়েছে ১১৮ শতাংশ, মৃত্যু ১৬১ শতাংশ : ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ২০২২ সালে এ পর্যন্ত রেকর্ড ২৭৬ রোগীর মৃত্যু হয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য মতে, ২০২২ সালে (২৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত) ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয় ৬২ হাজার ২১ জন। এর আগের বছর ডেঙ্গুতে আক্রান্ত ২৮ হাজার ৪২৯ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিল। সে বছর মারা গেছে ১০৫ জন। সেই হিসাবে গত বছরের তুলনায় ডেঙ্গু রোগী বেড়েছে ১১৭.৬৭ শতাংশ আর মৃত্যু বেড়েছে ১৬০.৮১ শতাংশ।

আইইডিসিআরের পরিচালক অধ্যাপক তাহমিনা শিরীন বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে আবহাওয়া এডিস মশার প্রজনন উপযোগী হওয়ায় ২০২২ সালে ডেঙ্গুতে আক্রান্তের হার বেড়েছে। ডেঙ্গুর একাধিক ধরন সক্রিয় ছিল।

হঠাৎ বাড়ে চোখ ওঠা রোগের প্রকোপ : ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর থেকে দেশজুড়ে বাড়তে থাকে চোখ ওঠা রোগের প্রকোপ। ওই সময় সংকট তৈরি হয় চোখের ওষুধের। যদিও দেড় মাসের মাথায় সারা দেশে রোগের প্রকোপ কমে আসে। জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের কর্নিয়া বিভাগের চিকিৎসক অধ্যাপক আব্দুল কাদের বলেন, বর্ষা শেষে শীতের শুরুতে প্রতিবছর চোখ ওঠা রোগের প্রকোপ বাড়ে। তবে এ বছর চোখ ওঠা রোগী ছিল অন্য বছরের তুলনায় কয়েক গুণ বেশি। ভাইরাস ছড়ানোর জন্য যে তাপমাত্রা প্রয়োজন, সেটি এ বছর ছিল।

প্রতিদিন হাজারের বেশি ডায়রিয়া রোগী : ২০২২ সালের মার্চ-এপ্রিলে এবং বছর শেষে নভেম্বরে বাড়ে ডায়রিয়ার প্রকোপ। ফলে মহাখালীর আইসিডিডিআরবিসহ অন্য হাসপাতালে ডায়রিয়া রোগীর চাপ বাড়ে। গড়ে প্রতিদিন হাসপাতালে ভর্তি হতে দেখা যায় হাজারের বেশি রোগীকে। রোগী সামাল দিতে এই হাসপাতালে স্থায়ী ক্যাম্পের পাশাপাশি দুটি অস্থায়ী তাঁবু প্রস্তুত করা হয়। সার্বিক অবস্থা মোকাবেলায় হিমশিম খেতে হয় চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের।

দুই দফায় ওষুধের মূল্যবৃদ্ধি : দেশের মানুষের প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবার জন্য তালিকাভুক্ত ১১৭টি ওষুধের দাম বাড়াতে পারে সরকার। বিশ্ববাজারে ওষুধের কাঁচামালের মূল্যবৃদ্ধির কারণ দেখিয়ে ২০২২ সালে দুই দফায় ওষুধের দাম বাড়িয়েছে সরকার। এর পর থেকে অনেকটা নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে পড়ে ওষুধের বাজার। ঔষধ প্রশাসনের দোহাই দিয়ে প্রায় সব ওষুদের দাম বাড়িয়ে দিয়ে বর্তমানে বিক্রি করা হচ্ছে।

হাসপাতাল ও ক্লিনিক বন্ধ : ২০২২ সালে স্বাস্থ্য খাতের অন্যতম আলোচিত বিষয় ছিল অবৈধ ও অনিবন্ধিত হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের বিরুদ্ধে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের চিরুনি অভিযান। ২৬ মে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর প্রথম দেশজুড়ে অভিযান শুরু করে। অভিযানে রাজধানীর খিলগাঁও জেনারেল হাসপাতাল, সেন্ট্রাল বাসাবো জেনারেল হাসপাতাল, মাতুয়াইলের কনক জেনারেল হাসপাতাল, শনির আখড়ার সালমান হাসপাতাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার, বকশীবাজার এলাকার খিদমাহ লাইফ কেয়ার ডায়াগনস্টিক সেন্টার, চানখাঁরপুল এলাকার ঢাকা জেনারেল হাসপাতাল, বনানীর হেয়ার ট্রান্সপ্লান্ট কসমেটিক সার্জারি কনসালটেন্সি অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারসহ দেশের দুই হাজারের বেশি হাসপাতাল বন্ধ করে দেওয়া হয়।

করোনার চতুর্থ ডোজের টিকা : করোনাভাইরাস প্রতিরোধে ২০২২ সালের আগস্ট মাস থেকে শুরু হয় পাঁচ থেকে ১১ বছর বয়সী শিশুদের টিকা দেওয়া। এ ছাড়া ২০ ডিসেম্বর থেকে দেশজুড়ে চতুর্থ ডোজের টিকা কার্যক্রম শুরু করে সরকার। প্রাথমিকভাবে এ টিকা ৬০ বছর এবং এর বেশি বয়সী ব্যক্তি, দীর্ঘমেয়াদি রোগে আক্রান্ত ১৮ বছর এবং এর বেশি বয়সী জনগোষ্ঠী, স্বল্প রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাসম্পন্ন জনগোষ্ঠী, গর্ভবতী নারী এবং দুগ্ধদানকারী মাকে দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া সম্মুখসারির ব্যক্তিরাও এই টিকায় আওতায় আছেন।

সম্প্রসারিত টিকা কর্মসূচি-ইপিআইর প্রগ্রাম ম্যানেজার ডা. এস এস আবদুল্লাহ আল মুরাদ জানান, এ পর্যন্ত ৩৫ কোটি ৫৯ লাখ ৮৩ হাজার ৭৫০ ডোজ টিকা বাংলাদেশে আনা হয়েছে। আর গত ১৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত মজুদ ছিল এক কোটি ৬৭ লাখ সাত হাজার ৪৫২ ডোজ টিকা।

প্রথম সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতাল : দেশের প্রথম সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালের যাত্রা শুরু হয় ২০২২ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর। বিএসএমএমইউ সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এক হাজার ৩০০ কোটি টাকা ব্যয়ে বিএসএমএমইউর অধীন ৭৫০ বেডের এ হাসপাতালটি নির্মিত। এই হাসপাতালে মিলবে বিশ্বমানের চিকিৎসাসেবা।

 

 

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

আজ রাজপথে নামছে বিএনপি

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
আজ রাজপথে নামছে বিএনপি

পুরান ঢাকার মিটফোর্ড হাসপাতালের সামনে ব্যবসায়ী লাল চাঁদ ওরফে মো. সোহাগ হত্যাকাণ্ডের অপপ্রচার ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে শান্তিপূর্ণভাবে আজ থেকে রাজপথে থাকবে বিএনপি। বিএনপি মনে করছে, এই হত্যাকাণ্ড নিয়ে জামায়াতে ইসলাম, ইসলামী আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) রাজপথ দখল করার চেষ্টা করছে বলে মনে করছে বিএনপি। এ জন্য রাজপথে বিএনপিও শক্তি ও জনসমর্থন দেখাবে।

এখন পর্যন্ত এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত কাউকে ছাড় দিচ্ছে না দলটি।

এমনকি এ ধরনের ঘটনা যাতে আর না ঘটে সে জন্য দলে শুদ্ধি অভিযান চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন দলের শীর্ষ নেতা। দলের নেতারা বলছেন, হত্যার সঙ্গে সরাসরি জড়িত দুজনকে চিহ্নিত করতে পারেনি আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী। কিন্তু বিরোধী পক্ষ একতরফাভাবে বিএনপির ওপর দায় চাপাচ্ছে। বিএনপিকে উদ্দেশ্য করে কটূক্তি করছে।
এর জবাব দিতে রাজপথে শক্তি দেখাবে দলটি। এরই অংশ হিসেবে আজ সোমবার ছাত্রদল ও ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপি এবং অন্য অঙ্গসংগঠন পৃথক শোডাউন করবে। বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী কালের কণ্ঠকে বলেন, বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠন প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করবে। জনগণ বিএনপির সঙ্গে আছে।
জনগণকে নিয়ে দেশবিরোধীদের ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করা হবে।

মাঠে নামছে ছাত্রদল : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি জানান, গোপন তৎপরতায় দীর্ঘদিন ধরে অভ্যস্ত গুপ্ত সংগঠন কর্তৃক মব সৃষ্টির অপচেষ্টা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ বিনষ্ট করা এবং সারা দেশে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির প্রতিবাদে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল আজ রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে বিক্ষোভ মিছিল করবে। গুপ্ত সংগঠন বলতে ইসলামী ছাত্রশিবির ও তাদের সহযোগী সংগঠনকে বোঝানো হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির।

ছাত্রদলের ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী, আজ দুপুর ২টায় রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে শাহবাগ পর্যন্ত বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হবে। পাশাপাশি সারা দেশের সব জেলা ও মহানগরে বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হবে।

জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব ও সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির এ কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন।

কর্মসূচির বিষয়ে ঢাবি শাখা ছাত্রদলের সভাপতি গণেশ চন্দ্র রায় সাহস বলেন, গুপ্ত সংগঠন হিসেবে সেসব সংগঠনকেই বোঝানো হয়েছে, যারা প্রকাশ্যে নিজেদের রাজনৈতিক কার্যক্রম পরিচালনার বদলে গোপনে রাজনৈতিক এজেন্ডা বাস্তবায়ন ও সহিংসতা ছড়িয়ে দেওয়ার মাধ্যমে রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে অস্থিরতা ও বিশৃঙ্খলা তৈরি করছে। গত ৫ আগস্টের পর একটি মুক্ত রাজনৈতিক পরিবেশ থাকা সত্ত্বেও তাদের এহেন গুপ্ত কার্যক্রম এ দেশের রাজনৈতিক পরিবেশকে অসহনশীল করে তুলছে এবং রাজনৈতিক বিষয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত করে তুলছে। এ রকম কুচক্রী কার্যক্রমের বিরুদ্ধেই জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল তার কর্মসূচি গ্রহণ করেছে, যেন দেশবাসীকে এসব বিভ্রান্তিকর বিষয়ে সচেতন করে তোলা যায়।

গুপ্ত সংগঠন বলতে কাদের বোঝানো হচ্ছে জানতে চাইলে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির বলেন, ছত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর যারা ক্যাম্পাসগুলোতে মব সৃষ্টি করে সাধারণ শিক্ষার্থী নামে অপ্রীতিকর পরিস্থিতি তৈরি করছে, তারাই গুপ্ত সংগঠন। ছাত্রশিবির এবং গুপ্তভাবে সংগঠন পরিচালনা করতে ছাত্রশিবিরকে যারা পৃষ্ঠপোষকতা করে, আশ্রয়-প্রশ্রয় দেয় তারা।

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

সশস্ত্র বাহিনীর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেসির মেয়াদ আরো দুই মাস বাড়ল

বিশেষ প্রতিনিধি
বিশেষ প্রতিনিধি
শেয়ার
সশস্ত্র বাহিনীর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেসির মেয়াদ আরো দুই মাস বাড়ল

বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীতে কর্মরত সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন ও এর ওপরের সমপদমর্যাদার কর্মকর্তাদের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতার মেয়াদ আরো দুই মাস (৬০ দিন) বাড়ানো হয়েছে। এ বিষয়ে গতকাল রবিবার প্রজ্ঞাপন জারি করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। এর আগে গত ১৩ মে থেকে তাঁদের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেসির ক্ষমতার মেয়াদ দুই মাস বাড়ানো হয়েছিল। সেই মেয়াদ গতকাল শেষ হয় ।

মেয়াদ বাড়ানোর আদেশে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীতে কর্মরত সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন ও এর ওপরের সমপদমর্যাদার কমিশন্ড কর্মকর্তাদের (কোস্ট গার্ড ও বিজিবিতে প্রেষণে নিয়োজিত সমপদমর্যাদার কর্মকর্তারাসহ) ‌‘দ্য কোড অব ক্রিমিনাল প্রসিডিউর, ১৮৯৮-এর ১২(১) ও ১৭ ধারা অনুযায়ী স্পেশাল এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা অর্পণ করা হলো। এর মেয়াদ হবে ১৪ মার্চ থেকে ৬০ দিন পর্যন্ত। সারা দেশে তাঁরা এই ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারবেন বলেও প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে।

প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, সেনাবাহিনীর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা ফৌজদারি কার্যবিধি-১৮৯৮-এর ৬৪, ৬৫, ৮৩, ৮৪, ৮৬, ৯৫(২), ১০০, ১০৫, ১০৭, ১০৯, ১১০, ১২৬, ১২৭, ১২৮, ১৩০, ১৩৩ ও ১৪২ ধারার অপরাধগুলো বিবেচনায় নিতে পারবেন।

প্রথমে গত বছরের ১৭ সেপ্টেম্বর সেনাবাহিনীর কমিশন্ড অফিসারদের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছিল জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। পরে ৩০ সেপ্টেম্বর প্রজ্ঞাপন সংশোধন করে বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর কমিশন্ড অফিসারদের (সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন ও এর ওপরের সমপদমর্যাদার কর্মকর্তা) এই ক্ষমতা দেওয়া হয়। অর্থাৎ শুধু সেনাবাহিনী নয়, বিমান ও নৌবাহিনীর কমিশন্ড অফিসারদেরও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা দেওয়া হয়। তখন ৬০ দিনের জন্য এই ক্ষমতা দেওয়া হয়েছিল।

সেই মেয়াদ নভেম্বরের মাঝামাঝি শেষ হয়েছিল। পরে সেই ক্ষমতার মেয়াদ কয়েক দফায় বাড়ানো হয়।

মন্তব্য

শেখ হাসিনাসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে গুমের অভিযোগ বিএনপির

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
শেখ হাসিনাসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে গুমের অভিযোগ বিএনপির

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক ও সাবেক পুলিশপ্রধান (আইজিপি)  বেনজীর আহমেদসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর কার্যালয়ে গুমের অভিযোগ দিয়েছে বিএনপি।

গতকাল রবিবার দুপুরে ভুক্তভোগীদের সঙ্গে নিয়ে এই অভিযোগ দেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির নির্বাহী সদস্য এবং তথ্য সেলের সমন্বয়ক সালাহউদ্দিন খান।

অভিযোগ তদন্ত করে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম।

২০১৯ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত গুমের ঘটনায় ১১ জন ভুক্তভোগীর নাম উল্লেখ করা হয়েছে লিখিত অভিযোগে।

তাঁরা হলেনঝালকাঠির নলছিটির মোহাম্মদ আলী খান, সাবেক যুবদল নেতা মো. জিল্লুর রহমান, আকিদুল আলী, খোরশেদ আলম, অ্যাডভোকেট আশরাফ আলী, মো. বাবুল, এনামুল, এরশাদ আলী, মো. গিয়াস উদ্দিন খান, মো. কবির উদ্দিন খান ও নজরুল ইসলাম।

অভিযোগে বলা হয়েছে, ২০১৯ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন সময় এসব ভুক্তভোগীকে অপহরণের পর আয়নাঘরে আটকে রেখে নির্যাতন করা হয়। গত বছর ৫ আগস্ট সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পলায়নের পর মোহাম্মদ আলীকে হাত ও চোখ বেঁধে পূর্বাচলের শেষ প্রান্তে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে ফেলে আসা হয়। পাঁচ বছর তিন মাস ১৩ দিন পর তিনি মুক্তি পান।

এ ঘটনায় মোহাম্মদ আলী খান বিএনপি মহাসচিবের মাধ্যমে ন্যায়বিচার চেয়ে আবেদন করেন।

তাঁর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ১১ জন ভুক্তভোগীর নাম উল্লেখ করে আবেদনটি করা হয় বলে জানান সালাহউদ্দিন খান।

সালাহউদ্দিন খান সাংবাদিকদের বলেন, ভুক্তভোগীরা শেখ হাসিনাসহ ১৬ জন এবং অজ্ঞাতপরিচয় আরো ৩০ থেকে ৩৫ জনের নাম উল্লেখ করে ন্যায়বিচারের আশায় আবেদন করেছেন। ভুক্তভোগীরা বলেছেন, শুধু বিএনপি করার অপরাধে বিগত সরকারের নির্মম নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে তাঁদের।

মন্তব্য

সোহাগের পরিবারের পাশে তারেক রহমান

বরগুনা প্রতিনিধি
বরগুনা প্রতিনিধি
শেয়ার
সোহাগের পরিবারের পাশে তারেক রহমান

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে পুরান ঢাকায় নিহত ব্যবসায়ী লাল চাঁদ ওরফে সোহাগের পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছেন দলটির ভাইস চেয়ারম্যান নূরুল ইসলাম মনি। গতকাল রবিবার বিকেলে তিনি বরগুনা জেলার পাথরঘাটা উপজেলার কাকচিড়া ইউনিয়নের সোহাগের গ্রামের বাড়িতে যান। তিনি স্থানীয় কাকচিড়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে আয়োজিত সভায় বক্তব্য দেন।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে তিনি নিহত সোহাগের পরিবারকে ৫০ হাজার টাকা আর্থিক সহায়তা প্রদান করেন।

সোহাগের পরিবারের যেকোনো প্রয়োজনে পাশে থাকারও আশ্বাস দেন। এ ছাড়া হত্যাকাণ্ডের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে বিএনপির পক্ষ থেকে সব ধরনের সহায়তার আশ্বাস দেন। স্বামীর হত্যার বিচার চেয়ে তখন সোহাগের স্ত্রী লাকি আক্তার বলেন, আমি আমার স্বামীর হত্যাকারীদের ফাঁসি চাই। আমার পরিবারের নিরাপত্তা চাই।
সভায় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান নূরুল ইসলাম মনি বলেন, এই এলাকার সন্তান ঢাকার মিটফোর্ডের ব্যবসায়ী সোহাগকে তাঁর ব্যাবসায়িক পার্টনার ও তাদের ভাড়াটেরা নৃশংসভাবে হত্যা করেছে। বিএনপি ঘটনার সঙ্গে সঙ্গে তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। দলের পক্ষ থেকে এর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করা হয়েছে। সম্পৃক্তদের দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
বিএনপি কোনো অপকর্মকে প্রশ্রয় দেয় না। পাথরঘাটা উপজেলা বিএনপির আহবায়ক চৌধুরী মো. ফারুকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় বক্তব্য দেন বরগুনা জেলা বিএনপির সাবেক সহসভাপতি ফজলুল হক মাস্টার, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক কে এম সফিকুজ্জামান মাহফুজ, জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক জাবেদুল ইসলাম জুয়েল, জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম নাভিল প্রমুখ।

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ