ঢাকা, শুক্রবার ১১ জুলাই ২০২৫
২৬ আষাঢ় ১৪৩২, ১৫ মহররম ১৪৪৭

ঢাকা, শুক্রবার ১১ জুলাই ২০২৫
২৬ আষাঢ় ১৪৩২, ১৫ মহররম ১৪৪৭

মালয়েশিয়ায় তদবিরে নেমেছে আরো ২৫ রিক্রুটিং এজেন্সি

ফরিদ আহমেদ
ফরিদ আহমেদ
শেয়ার
মালয়েশিয়ায় তদবিরে নেমেছে আরো ২৫ রিক্রুটিং এজেন্সি

অনেক অপেক্ষার পর মালয়েশিয়ায় কর্মী যাওয়া শুরু হয়েছে। এর জন্য সে দেশের সরকার প্রথমে বাংলাদেশের ২৫টি জনশক্তি রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানকে অনুমতি দেয়। নানা আলোচনা, তদবিরের পর এদের অধীনে ২৫০টি প্রতিষ্ঠান কর্মী পাঠানোর অনুমোদন পায়। তারপর শুরু হয় লোক যাওয়া।

এতে সব পক্ষ স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললেও নতুন করে দেখা দিয়েছে শঙ্কা।

মালয়েশিয়া ও ঢাকায় জনশক্তি রপ্তানিকারকদের সূত্র বলছে, আরো ২৫টি রিক্রুটিং এজেন্সি মালয়েশিয়া সরকারের কাছে তাদেরও লোক পাঠানোর অনুমতি দেওয়ার তদবির শুরু করেছে। মালয়েশিয়ার দুজন সংসদ সদস্য ঢাকার নতুন এমন চারটি রিক্রুটিং এজেন্সির পক্ষে দেশটির প্রধানমন্ত্রীর কাছে সুপারিশপত্র পাঠিয়েছে। একই প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে আরো দুটি রিক্রুটিং এজেন্সির মালিক মালয়েশিয়ার জহুর বাহরু প্রদেশের সুলতানের সঙ্গে দেখা করেছেন তাঁদের পক্ষে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে তদবিরের আরজি নিয়ে।

বর্তমানে যে ২৫ এজেন্সি এবং ২৫০টি সহযোগী এজেন্সি মালয়েশিয়ায় লোক পাঠানোর সুযোগ পেয়েছে তাদের নেতৃত্বে আছেন জনশক্তি রপ্তানিকারকদের সংগঠন বায়রার সাবেক মহাসচিব রুহুল আমিন স্বপন, সংসদ সদস্য বেনজীর আহমেদ ও সংসদ সদস্য নিজাম হাজারী। এঁদের অধীনে এরই মধ্যে ৫৩ জন বাংলাদেশি শ্রমিক মালয়েশিয়ায় গেছেন।

২৫ রিক্রুটিং এজেন্সির নতুন গ্রুপ

এখন নতুন আরো ২৫টি রিক্রুটিং এজেন্সি মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠানোর অনুমোদন পেতে একজোট হয়েছে। এই জোটের দুটি রিক্রুটিং এজেন্সির মালিক কালের কণ্ঠকে জানান, এরই মধ্যে ২৫টি রিক্রুটিং এজেন্সির মালিকদের নামের ভিন্ন একটি তালিকা চূড়ান্ত করা হয়েছে।

তালিকাটি মালয়েশিয়া সরকারের গুরুত্বপূর্ণ একাধিক দপ্তরেও পাঠানো হয়েছে। এই জোটের নেতৃত্বে আছেন দেশের একজন শীর্ষ ব্যবসায়ী। তাঁর সঙ্গে আছেন বায়রার সাবেক সভাপতি আবুল বাশার।

মালয়েশিয়ার শ্রমবাজারে ঢুকতে দেশটির প্রধানমন্ত্রী ইসমাইল সাবরি বিন ইয়াকুবের কাছে তদবির করার জন্য সে দেশের সংসদ সদস্যসহ প্রভাবশালী ব্যক্তিদের ব্যবহার করছেন তাঁরা। গত ২ আগস্ট দেশটির প্রধানমন্ত্রী ইসমাইল সাবরি বিন ইয়াকুবকে চিঠি দিয়েছেন মালয়েশিয়ার সংসদ সদস্য মোহাম্মদ নিজার বিন জাকারিয়া ও হাজি মোহাম্মদ সেলিম বিন শরিফ।

মোহাম্মদ নিজার চিঠিতে ঢাকার মাহী ওভারসিজ (আরএল ১২৯৯), সাইফুল এন্টারপ্রাইজ (আরএল-০১৯৮), মোহাম্মদ সেলিম এ-প্লাস ইন্টারন্যাশনাল (আরএল ১০৮২) ও টাওয়ার ট্রেড ইন্টারন্যাশনালকে (আরএল ৪৯৯) মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠানোর অনুমতি দিতে অনুরোধ করেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে টাওয়ার ট্রেড ইন্টারন্যাশনালের মালিক ইশহাক খান কালের কণ্ঠকে বলেন, বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মালয়েশিয়ান নাগরিক দাতো সেরি আবুল কালাম তাঁর ব্যাবসায়িক অংশীদার। তিনিই তদবির করে মালয়েশিয়ান সংসদ সদস্যকে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বরাবর চিঠিটি পাঠিয়েছেন।

এ বিষয়ে অন্য তিনটি প্রতিষ্ঠানের বক্তব্য নিতে যোগাযোগ করা হলে মালিকরা কেউ ফোন ধরেননি।

জহুর বাহরু প্রদেশের সুলতানের সঙ্গে বৈঠক

মালয়েশিয়ার জহুর বাহরু প্রদেশের সুলতান ইব্রাহিম ইসমাইল ইবনে আলমারহুম সুলতান ইস্কান্দারের কাছে তদবির করছে বাংলাদেশের দুই জনশক্তি রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান। আল অর্চার্ড ইন্টারন্যাশনাল মালিক ও বায়রার সাবেক সিনিয়র সহসভাপতি ডা. মোহাম্মদ ফারুক এবং রিয়াজ ওভারসিজের মালিক ও বায়রার সাবেক মহাসচিব রিয়াজুল ইসলাম গত মাসে সুলতানের সঙ্গে দেখা করেন। তাঁরা বাংলাদেশ থেকে কর্মী পাঠানোর অনুমোদন পাওয়া ২৫ এজেন্সির সঙ্গে তাঁদের প্রতিষ্ঠানের নামও যুক্ত করতে সে দেশের প্রধানমন্ত্রী ও মানবসম্পদমন্ত্রীকে বলার জন্য সুলতানকে অনুরোধ করেন।

জানতে চাইলে রিয়াজুল ইসলাম কালের কণ্ঠকে বলেন, গত ১৪ জুলাই তিনি ও ডা. ফারুক জহুর বাহরু প্রদেশের সুলতানের সঙ্গে দেখা করেন। বৈঠকে তাঁদের প্রতিষ্ঠানকে লোক পাঠানোর অনুমতি দিতে অনুরোধের পাশাপাশি বাংলাদেশ-মালয়েশিয়ার সম্পর্ক উন্নয়ন নিয়েও আলাপ করেন তাঁরা।

জানতে চাইলে বায়রার সদস্য ও সংসদ সদস্য লে. জে. (অব.) মাসুদ উদ্দিন চৌধুরী কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়ার সরকারের আন্তরিক প্রষ্টোয় শ্রমবাজারটি খুলেছে। মালয়েশিয়া আমাদের দ্বিতীয় বৃহৎ শ্রমবাজার। সুতরাং এই  বাজার  ধরে রাখতে সব পক্ষকে আন্তরিক থাকতে হবে এবং সতর্কতার সঙ্গে চলতে হবে।’ তিনি আরো বলেন, ‘নতুন করে ২৫টি এজেন্সি কর্মী পাঠানোর অনুমতি পাওয়ার তদবরি করছে বলে বাজারে গুজব আছে। এর সত্যতা কতটুকু তা জানি না।’

স্বাস্থ্য পরীক্ষার কাজ চেয়ে চিঠি

মালয়েশিয়াগামী কর্মীদের নির্ধারিত প্রতিষ্ঠান থেকে স্বাস্থ্য পরীক্ষার সনদ নিতে হয়। সেই কাজ পাওয়ার জন্য বায়রার সাবেক সভাপতি আবুল বাশার, সাবেক মহাসচিব শামীম আহমেদ চৌধুরী নোমান, সাবেক অর্থসচিব মো. ফখরুল ইসলাম, মিজানুর রহমানসহ পাঁচজন দেশটির মানবসম্পদমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছেন। গত ২৭ জুলাই এই চিঠি দেওয়া হয়। বর্তমানে অন্য প্রতিষ্ঠান এই কাজ করছে। 

এসব তৎপরতা জনশক্তি রপ্তানির জন্য কতটুকু সহায়ক বা ক্ষতিকর, তা জানতে চাইলে বায়রার (সম্মিলিত সমন্বয় ফ্রন্ট) মহাসচিব মোস্তফা মাহবুব কালের কণ্ঠকে বলেন, বাংলাদেশ থেকে এক হাজার ৫২০টি এজেন্সির তালিকা মালয়েশিয়া সরকারকে পাঠানো হয়েছিল। সেখান থেকে দেশটির সরকার ২৫টি এজেন্সিকে কর্মী পাঠানোর অনুমতি দিয়েছে। তিনি বলেন, বর্তমানে বিভিন্ন সিন্ডিকেট যেসব তদবির ও তৎপরতা চালাচ্ছে এর কারণে মালয়েশিয়ার শ্রমবাজারে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।

প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদ কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আমরা মালয়েশিয়ান সরকারকে সব রিক্রুটিং এজেন্সির তালিকা দিয়েছি। কারা কাজ পাবে তা সেই দেশের সরকারই ঠিক করে। আমাদের হস্তক্ষেপ করার সুযোগ নেই।’ তিনি আরো বলেন, ‘এখন যদি সে দেশের কেউ এই প্রক্রিয়ায় হস্তক্ষেপ করেও থাকে তা আমাদের দেখার কথা নয়, সেটা তাদের বিষয়।’

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠক

ঢাকায় জাতিসংঘের মানবাধিকার অফিস স্থাপনের খসড়া অনুমোদন

বিশেষ প্রতিনিধি
বিশেষ প্রতিনিধি
শেয়ার
ঢাকায় জাতিসংঘের মানবাধিকার অফিস স্থাপনের খসড়া অনুমোদন

ঢাকায় তিন বছরের জন্য জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের কার্যালয়ের একটি মিশন স্থাপনের বিষয়ে চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে উপদেষ্টা পরিষদ। গতকাল বৃহস্পতিবার প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে উপদেষ্টা পরিষদের ৩৩তম বৈঠকে এ অনুমোদন দেওয়া হয়। জানা গেছে, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবের ভিত্তিতে বাংলাদেশে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের কার্যালয়-এর মিশন স্থাপনসংক্রান্ত সমঝোতা স্মারকের খসড়ায় চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

এর আগে গত ২৯ জুন ওই খসড়া উপদেষ্টা পরিষদে তোলা হলে তাতে নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়েছিল।

ওই দিন এক সংবাদ সম্মেলনে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেছিলেন, জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক যে অফিস ওএইচসিএইচআর, সে অফিসের একটা মিশন শাখা বাংলাদেশে ওনারা খুলতে চাইছিলেন। এ লক্ষ্যে ওনারা আলোচনা করছিলেন। এ আলোচনার একটা উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে। এর সমঝোতা স্মারক, সেটা উপদেষ্টা পরিষদের সভায় নীতিগতভাবে অনুমোদিত হয়েছে।
উল্লেখ্য, বিষয়টি নিয়ে হেফাজতে ইসলামসহ একাধিক সংগঠন উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।

 

এদিকে অতিবৃষ্টির কারণে সম্প্রতি ফেনী ও নোয়াখালী জেলায় সৃষ্ট বন্যা ও জলাবদ্ধতা পরিস্থিতি নিয়ে উপদেষ্টা পরিষদের সভায় আলোচনা হয়েছে। সভায় সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টারা বন্যা ও তদ-পরবর্তী গৃহীত ব্যবস্থা নিয়ে তাঁদের মতামত ও করণীয় তুলে ধরেন।

বৈঠকে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় থেকে মুসাপুর রেগুলেটর ও বামনি ক্লোজারের নকশা চূড়ান্তকরণ, ফেনীতে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ প্রকল্প চূড়ান্তকরণ এবং নোয়াখালীর খাল ও ড্রেনেজ অবমুক্ত করার প্রয়োজনীয়তা বিষয়ে আলোচনা হয়।

এর পাশাপাশি, দুর্যোগ মোকাবেলায় বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে এই দুই জেলার ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধ মেরামত, তীর প্রতিরক্ষা ও পানি নিয়ন্ত্রণ অবকাঠামো মেরামতের কাজ চলমান রয়েছে বলেও উপদেষ্টামণ্ডলীকে জানানো হয়। সভায় দুই জেলায় চলমান বন্যা ও জলাবদ্ধতা পরিস্থিতিতে ত্রাণ ও পুনর্বাসন মন্ত্রণালয় এবং স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত কী কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে তা তুলে ধরা হয়।

বৈঠকে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ ও মহেশখালী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের নতুন অধ্যাদেশ অনুমোদনের পাশাপাশি বেশ কয়েকটি প্রস্তাব পাস হয়।

বৈঠকে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫-এর খসড়া নীতিগত ও চূড়ান্তভাবে অনুমোদন করা হয়, যা লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগের ভেটিংয়ের পর কার্যকর হবে।

আন্তর্জাতিক পরিসরে গুরুত্বপূর্ণ এক পদক্ষেপ হিসেবে বাংলাদেশ জাতিসংঘের অপশনাল প্রোটোকল টু দ্য কনভেনশন অ্যাগেইনস্ট টর্চারে (ওপি-ক্যাট) পক্ষভুক্ত হওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।

প্রটোকলটি ২০০২ সালে গৃহীত হয়, যার লক্ষ্য হলো নির্যাতন এবং অন্যান্য নিষ্ঠুর, অমানবিক অথবা মর্যাদা হানিকর আচরণ বা শাস্তির বিরুদ্ধে সুরক্ষা জোরদার করা। বাংলাদেশ ১৯৯৮ সালেই মূল কনভেনশনের পক্ষভুক্ত হয়েছিল। এবার প্রোটোকলে অন্তর্ভুক্তির মাধ্যমে সেই প্রতিশ্রুতি আরো শক্তিশালী করা হলো।

মালয়েশিয়ার জোহর বাহরুতে বাংলাদেশের একটি নতুন কনস্যুলেট জেনারেল স্থাপনের প্রস্তাব অনুমোদিত হয়। বৈঠকে মহেশখালীকে পরিকল্পিতভাবে উন্নয়নের আওতায় আনতে মহেশখালী সমন্বিত উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ অধ্যাদেশ, ২০২৫-এর খসড়া অনুমোদন দেওয়া হয়। অতিবৃষ্টির কারণে সৃষ্ট জলাবদ্ধতা ও বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলায় ব্যাপক ভূমিকা রাখবে।

মন্তব্য
মির্জা ফখরুল

দেশের মানুষ নির্বাচন চায়, তাহলে কেন হবে না?

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
দেশের মানুষ নির্বাচন চায়, তাহলে কেন হবে না?

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, দেশে কেন নির্বাচন হবে না? দেশের মানুষ নির্বাচন চায়। নির্বাচিত প্রতিনিধি চায়। এ জন্য তারা জীবন দিয়েছে। আমরা বিশ্বাস করি, নির্বাচনের মাধ্যমেই ক্ষমতার পরিবর্তন হবে।

গতকাল বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে আয়োজিত আলোচনাসভায় তিনি এসব কথা বলেন। ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানে সাংবাদিকদের ভূমিকা শীর্ষক আলোচনাসভাটি যৌথভাবে আয়োজন করেছে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে) ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে)।

অনুষ্ঠানে গত ১৬ বছরের ফ্যাসিবাদবিরোধীসহ জুলাই আন্দোলনে শহীদ ৬৪ জন সাংবাদিকের ওপর শোক প্রস্তাব উত্থাপন করেন ডিইউজের সহসভাপতি রাশেদুল হক। বিএফইউজের প্রয়াত সভাপতি রুহুল আমিন গাজীর পরিবার এবং জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদ ছয় সাংবাদিকের পরিবারের হাতে সম্মাননা তুলে দেন বিএনপি মহাসচিব।

আলোচনাসভায় নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, বেশির ভাগ মানুষ মনে করেন নির্বাচন হবে না।

তাঁর এই বক্তব্যের জবাবে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আমি খুব আশাবাদী মানুষ। অনেকে বলেছেন যে, হবে না। কেন হবে না? নির্বাচন তো এ দেশের মানুষ চায়, নির্বাচনের জন্য তো এ দেশের মানুষ প্রাণ দিয়েছে।

কারণ মানুষ একটি নির্বাচিত প্রতিনিধিত্ব চায় পার্লামেন্টের মধ্য দিয়ে। এ জিনিসগুলো নিয়ে আমি মনে করি কোনো সমস্যা নেই। সমস্যা হলো, যত দ্রুত সম্ভব আমরা সংস্কারের কাজগুলো শেষ করে নির্বাচিত সরকারের দিকে যাওয়া, গণতন্ত্র উত্তরণের পথে যাওয়া। আমরা সোজা কথায় বিশ্বাস করি লিবারেল ডেমোক্রেসিতে। আমরা বিশ্বাস করি, নির্বাচনের মাধ্যমেই ক্ষমতার পরিবর্তন হবে।
সেই নির্বাচিত সরকারই দেশ চালাবে ও সমস্যাগুলোর সমাধান করবে।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের সব কাজ গুছিয়ে ফেলতে তিনি (প্রধান উপদেষ্টা) নির্দেশ দিয়েছেন। এটা অত্যন্ত ইতিবাচক ব্যাপার। আমরা আশা করব, নির্বাচন কমিশন এই কাজ খুব দ্রুততার সঙ্গে শেষ করে নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করবেন। আমরা দাবি করছি, যেন এই নির্বাচন অবাধ, নিরপেক্ষ ও সবার কাছে গ্রহণযোগ্য হয়।

নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, আপনাদের কি মনে হয় দেশে নির্বাচন হবে? অনেক মানুষ জিজ্ঞেস করে, নির্বাচন কি হবে? গতকাল প্রেস সেক্রেটারি যে বক্তব্য রাখলেন, তাতে কি মনে হয় নির্বাচন হবে? বেশির ভাগ মানুষ মনে করে নির্বাচন হবে না। তাহলে কী হবে? আমাদের ভাবনার দরকার আছে।

জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, আওয়ামী লীগ তো নেই, দুঃশাসন কি বিদায় নিয়েছে? না। আমাদের আত্মতৃপ্তির কিছু নেই। আমাদের সামনে এখনো ফ্যাসিবাদী রাষ্ট্রকাঠামো বিরাজমান। রাষ্ট্রযন্ত্রের সর্বত্র ফ্যাসিবাদের প্রেতাত্মারা, দিল্লির আধিপত্যের কালো থাবা চতুর্দিকে ছেয়ে বসছে। ব্যবসা-বাণিজ্য-রাজনীতি-আন্তর্জাতিক নীতি-কূটনীতি ইভেন সামনের নির্বাচনে জনগণের আকাঙ্ক্ষাকে কিভাবে ধুলায় মিশিয়ে দেওয়া যায় তার চক্রান্ত এখনো বিদ্যমান।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেন, স্বৈরাচার পালিয়েছে। কিন্তু স্বৈরাচারী মানসিকতা বিরাজমান। আজকেও যদি দেখেন, এটা যদি না হতে পারে, ওটা হতে পারবে না। এ রকম বক্তব্য দিচ্ছেন আমাদের তরুণ নেতৃত্বের কতিপয় নেতা। আপনি আপনার চাহিদা বলতেই পারেন, এটা আপনার স্বাধীনতা। কিন্তু আপনি এটা বলতে পারেন না যে, এটা না হলে, ওইটাও হবে না। এই অধিকার আপনার নেই। এই মানসিকতা আর স্বৈরাচারের মানসিকতা একই।

তিনি বলেন, ৬৪ জন সাংবাদিক শহীদ হয়েছেন। মাহমুদুর রহমান, শফিক রেহমানের মতো বয়োজ্যেষ্ঠ সাংবাদিকরা নিগৃহীত হয়েছেন। সংগ্রামের সম্পাদক আসাদ ভাই নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। শুধু লেখনীর কারণে। এখনো তো আপনাদের কণ্ঠে একই ধরনের প্রতিধ্বনি শোনা যাচ্ছে। এটি কি ঠিক?

বিএফইউজের মহাসচিব কাদের গণি চৌধুরী বলেন, গত ১৭ বছরে সাংবাদিকদের ভূমিকা বর্তমান সরকার স্বীকার করতে চায় না। এই সরকারের যারা সুবিধাভোগী, তারা এক-দেড় মাস লড়াই করেছেন। আমরা সাংবাদিকরা ১৭টি বছর ঢাকার রাজপথে আন্দোলন-সংগ্রাম করেছি, অনেকে খুন হয়েছেন। তারপর স্বৈরাচারী সরকারের চূড়ান্ত পতনের জুলাই বিপ্লব এসেছে। সেখানে শুধু পেশাজীবী নয়, সাংবাদিকদেরও অবদান রয়েছে। আজকে মাঝে মাঝে কিছু শিশুকে দেখি সাংবাদিকদের হুমকি দিতে। তোমরা দেড় মাসের নেতা। আমরা ১৭ বছর লড়াই করে ফ্যাসিবাদের তক্ততাউস কাঁপিয়ে তুলেছিলাম। দেড় মাস নেতৃত্ব দিয়ে, ১৭ বছরের সংগ্রামকে অস্বীকার করার সুযোগ নেই। তোমরা সাংবাদিকদের হুমকি দাও, এটা মেনে নেব না।

অনুষ্ঠানে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি ও কালের কণ্ঠ সম্পাদক কবি হাসান হাফিজ বলেন, একটা ফ্যাসিবাদের ভাষা আমরা দেখতে পাচ্ছি। এটার নিন্দা করছি। মিডিয়াকে নিয়ন্ত্রণ, হুমকি দেওয়ার প্রবণতা লক্ষ করছি, সেটা খুবই অমঙ্গলসূচক। এটা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। এটা খুবই অনাকাঙ্ক্ষিত। কোনোভাবে মিডিয়াকে নিয়ন্ত্রণ করে, হুমকি দিয়ে গণতান্ত্রিক পরিবেশ তৈরি করা যায় না।

ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি শহীদুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক খুরশীদ আলমের সঞ্চালনায় সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আবদুস সালাম, জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি এহসানুল মাহবুব জুবায়ের, বিএফইউজের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ওবায়দুর রহমান শাহীন, দৈনিক যুগান্তরের সম্পাদক আবদুল হাই শিকদার, জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক সৈয়দ আবদাল আহমেদ, ইলিয়াস খান, এ কে এম মহসিন, ইরফানুল হক জাহিদ, সাঈদ খান, দিদারুল আলম, খন্দকার আলমগীর হোসেন ও প্রবাসী সাংবাদিক ইমরান আনসারী প্রমুখ।

 

মন্তব্য

‘ক্ষমা’ পেতে পারেন সাবেক আইজিপি

মেহেদী হাসান পিয়াস
মেহেদী হাসান পিয়াস
শেয়ার
‘ক্ষমা’ পেতে পারেন সাবেক আইজিপি

মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও সাবেক পুলিশ প্রধান চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনের বিচার শুরু হয়েছে। এ মামলায় অ্যাপ্রুভার (রাজসাক্ষী) হতে আবেদন করেন সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন।

গতকাল বৃহস্পতিবার চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ আবেদনটি মঞ্জুর করে তাঁকে সাক্ষী হিসেবে গণ্য করে সাক্ষ্য উপস্থাপনের অনুমতি দেন। এর পরই প্রশ্ন উঠেছে, মামুন কি রাজসাক্ষী হয়েছেন? হয়ে থাকলে তিনি ট্রাইব্যুনালের কাছ থেকে কী প্রতিকার পাবেন বা পেতে পারেন?

 

মামুনের দোষ স্বীকার

রাষ্ট্রের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ প্রধানমন্ত্রী পদে থেকে অপরাধ করায় শেখ হাসিনাকে এই মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে।

প্রসিকিউশনের দাবি, শেখ হাসিনা ছিলেন জুলাই অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মাস্টারমাইন্ড। ফলে অপরাধের সর্বোচ্চ দায় শেখ হাসিনারই। এ মামলায় সহ-আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন। অপরাধ সংঘটনের সময় তিনি রাষ্ট্রীয় শৃঙ্খলা বাহিনী পুলিশের সর্বোচ্চ পদে ছিলেন।
তিন আসামির মধ্যে মামুনই একমাত্র গ্রেপ্তারকৃত আসামি। গতকাল মামলার অভিযোগ গঠনের আদেশের আগে তাঁকে ট্রাইব্যুনালের কাঠগড়ায় তোলা হয়। এরপর বিচারিক কাজ শুরু হলে ট্রাইব্যুনালের সদস্য বিচারক মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী আমলে নেওয়া পাঁচ অভিযোগ পড়ে শোনান। অভিযোগ পড়া শেষ হলে বিচারক মোহিতুল আসামি মামুনকে সরাসরি জিজ্ঞেস করেন, উত্থাপিত অভিযোগের ভিত্তিতে তিনি নিজেকে দোষী না নির্দোষ মনে করেন।
তখন সাবেক আইজিপি মামুন দাঁড়িয়ে বলেন, আমি দোষ স্বীকার করছি। এই মামলাসংশ্লিষ্ট প্রকৃত সত্য ও সমস্ত পরিস্থিতি স্বেচ্ছায় সম্পূর্ণ প্রকাশ করতে চাই। এরপর এই আসামিকে মামলার সাক্ষী এবং তাঁর বক্তব্য সাক্ষ্য হিসেবে গণ্য করার অনুমতি চেয়ে আবেদন করেন তাঁর আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ। একই সঙ্গে আরজি জানান, আবেদনটি মঞ্জুর করা হলে চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে ট্রাইব্যুনাল যেন তাঁকে কারাগারে আলাদা রাখার ব্যবস্থা করার নির্দেশ দেন। ট্রাইব্যুনাল তখন আবেদনটি মঞ্জুর করে সাবেক আইজিপি মামুনকে সাক্ষী হিসেবে তাঁর বক্তব্য উপস্থাপনের অনুমতি দেন।

 

রাজসাক্ষী নিয়ে যা বলা আছে ট্রাইব্যুনাল আইনে? 

এই মামলায় তিন আসামির বিরুদ্ধে সুপিরিয়র কমান্ড রেসপন্সিবিলিটি বা ঊর্ধ্বতনের নির্দেশনার দায়সহ হত্যা, হত্যা চেষ্টা, ব্যাপক মাত্রায় পদ্ধতিগত হত্যা, প্ররোচনা, উসকানি, সহায়তা, সম্পৃক্ততা, ষড়যন্ত্রসহ অন্যান্য অমানবিক আচরণ, সংঘটিত অপরাধ প্রতিরোধ না করার মতো মানবতাবিরোধী অপরাধের পাঁচটি অভিযোগ গঠন করা হয়েছে। এসব অপরাধের বিচার হচ্ছে ১৯৭৩ সালের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইনে। আইনটির ১৫ ধারায় একজন রাজসাক্ষীর ক্ষমা বিষয়ে বলা আছে। ধারার ১ উপধারায় বলা হয়েছে, বিচারের যেকোনো পর্যায়ে, ধারা ৩-এ উল্লিখিত যেকোনো অপরাধের সাথে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িত বা গোপনে জড়িত বলে মনে করা হয় এমন যেকোনো ব্যক্তির সাক্ষ্য গ্রহণের উদ্দেশ্যে ট্রাইব্যুনাল, অপরাধের সাথে সম্পর্কিত তার জ্ঞানের মধ্যে থাকা সম্পূর্ণ পরিস্থিতি এবং সংশ্লিষ্ট অন্য সকল ব্যক্তির কাছে, প্রধান বা সহায়তাকারী হিসেবে সম্পূর্ণ এবং সত্য প্রকাশ করার শর্তে, এই ক্ষমা প্রদান করতে পারে।

২ উপধারায় বলা আছে, এই ধারার অধীনে অভিযোগ গ্রহণকারী প্রত্যেক ব্যক্তিকে বিচারে সাক্ষী হিসেবে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। আর ৩ উপধারায় বিচার শেষ না হওয়া পর্যন্ত এই ব্যক্তিকে হেফাজতে আটক রাখা হবে বলা আছে।

 

রাজসাক্ষী হলে আইনের শর্ত পূরণ করতে হবে : রাজসাক্ষী হতে চাওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে মামুনের আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ কালের কণ্ঠকে বলেন, এই মামলায় আদালত তাঁকে সাক্ষী হিসেবে সাক্ষ্য দেওয়ার সুযোগ দিয়েছেন। সাক্ষ্য-জেরার পর আদালত যদি এই মর্মে সন্তুষ্ট হন যে তিনি সব সত্যি বলেছেন, কোনো কিছু গোপন করেননি বা তাঁর সাক্ষ্যের পর প্রকৃত সত্য উদঘাটন হয়েছে, তখন আদালত তাঁকে রাজসাক্ষী হিসেবে স্বীকৃতি দেবেন। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইনের ১৫ ধারায় যেসব শর্তের কথা বলা আছে, সেই সব শর্ত তাঁকে পূরণ করতে হবে। শর্ত পূরণ করতে পারলে ট্রাইব্যুনাল তাঁকে রাজসাক্ষী হিসেবে ঘোষণা করবেন। রাজসাক্ষী হতে পারলে ট্রাইব্যুনালের এখতিয়ার আছে তাঁর অপরাধ ক্ষমা করার।

প্রসিকিউটর গাজী মনোয়ার হোসেন তামিম বলেন, আসামি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন দোষ স্বীকার করেছেন ট্রাইব্যুনালের কাছে। তিনি বলেছেন, এই মামলার সম্পূর্ণ সত্যি এবং সব পরিস্থিতি তুলে ধরতে চান। এই মর্মে একটি আবেদনও দিয়েছেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদনটি মঞ্জুর করেছেন এবং মামলার সাক্ষী হিসেবে তাঁর বক্তব্য উপস্থাপনের অনুমতি দিয়েছেন।

 

ট্রাইব্যুনালে রাজসাক্ষী হওয়ার এটিই প্রথম নজির : প্রসিকিউটর গাজী মনোয়ার হোসেন তামিম বলেন, ফৌজদারি অপরাধের মামলায় রাজসাক্ষী হওয়ার অসংখ্য উদাহরণ থাকলেও আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালের ইতিহাসে আর কোনো আসামি রাজসাক্ষী হওয়ার আবেদন করেননি। মামুনকে কারাগারে আলাদা সেলে রাখা হবে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, যেহেতু তিনি অপরাধ স্বীকার করে ক্ষমা প্রার্থনা করে রাজসাক্ষী হতে চেয়েছেন এবং যেসব আসামির বিরুদ্ধে তিনি বলতে পারেন বা তাঁর বক্তব্যে যেসব আসামির সংশ্লিষ্টতা থাকতে পারে, সেসব আসামি তাঁকে বায়াস (পক্ষে আনার) করার চেষ্টা করতে পারেন, তাঁর নিরাপত্তার ঘাটতি হতে পারে, এই জন্য কারাগারে তিনি যেন আইসোলেটেড (বিচ্ছিন্ন) থাকেন অর্থাৎ আলাদা সেলে রাখা হয়, সেই আবেদন করেছেন। আবেদনটি মঞ্জুর করা হয়েছে। কারাগারে আলাদা সেলে থাকলেও সাবেক আইজিপি হিসেবে মামুন যে ডিভিশন সুবিধা পেয়ে আসছিলেন, তার বাইরে বাড়তি কোনো সুবিধা তিনি পাবেন না বলেও জানান প্রসিকিউটর তামিম।

 

মন্তব্য

প্রতীক বাড়ছে ৪৬টি

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
প্রতীক বাড়ছে ৪৬টি

সংসদ নির্বাচনে দলীয় ও  স্বতন্ত্র প্রার্থীদের জন্য নির্বাচন কমিশনের (ইসি) তফসিলে নতুন করে যুক্ত হচ্ছে আরো ৪৬টি প্রতীক। বর্তমানে ইসির তফসিলে ৬৯টি প্রতীক রয়েছে। নতুন ৪৬টি প্রতীক যুক্ত হলে সংখ্যা দাঁড়াবে ১১৫। প্রতীকের এই তালিকা আইন মন্ত্রণালয়ের  ভেটিংয়ের জন্য পাঠিয়েছে নির্বাচন কমিশন।

নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, নির্বাচন কমিশনের তফসিলে প্রতীক যুক্ত করতে সংশ্লিষ্ট  কমিটি মোট ১৫০টি প্রতীক চূড়ান্ত করে। কিন্তু কমিশন এই ১৫০টির মধ্যে কাটছাঁট করে ১১৫টি প্রতীক তফসিলে যুক্ত করার সিদ্ধান্ত দেয়। কমিশনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ১১৫টি প্রতীক আইন মন্ত্রণালয়ের ভেটিংয়ের জন্য পাঠানো হয়েছে।

 আইন মন্ত্রণালয় চাইলে এ তালিকা  থেকে কোনো প্রতীক বাতিল বা নতুন প্রতীক অন্তর্ভুক্ত করতে ইসিকে সুপারিশ জানাতে পারে।

যে ১১৫ প্রতীকের তালিকা করেছে নির্বাচন কমিশন, সেগুলো হচ্ছে আপেল, আনারস, আম, আলমারি, ঈগল, উটপাখি, উদীয়মান সূর্য, একতারা, কাঁচি, কবুতর, কলম, কলস, কলার ছড়ি, কাঁঠাল, কাপ-পিরিচ, কাস্তে, কেটলি, কুমির, কম্পিউটার, কলা, কুড়াল, কুলা, কুঁড়েঘর, কোদাল, খাট, খেজুরগাছ, গরুর গাড়ি, গাভী, গামছা, গোলাপ ফুল, ঘণ্টা, ঘুড়ি, ঘোড়া, চাকা, চার্জার লাইট, চাবি, চিংড়ি, চেয়ার, চশমা, ছড়ি, ছাতা, জগ, জাহাজ, টিউবওয়েল, টিফিন ক্যারিয়ার, টেবিল, টেবিল ঘড়ি, ট্রাক, টেলিফোন ও টেলিভিশন রয়েছে প্রতীকের তালিকায়।

তালিকায় আরো আছে ডাব, ঢেঁকি, তবলা, তরমুজ, তারা, থালা, দাঁড়িপাল্লা, দালান, দেয়াল ঘড়ি, দোয়াত-কলম, দোলনা, ধানের শীষ, নোঙ্গর, নৌকা, প্রজাপতি, ফুটবল, ফুলকপি, ফুলের টব, ফুলের মালা, ফ্রিজ, বক, বাঘ, বই, বটগাছ, বাঁশি, বেঞ্চ, বেগুন, বাইসাইকেল, বালতি, বেলুন, বৈদ্যুতিক পাখা, মই, মগ, মাইক, মোটরগাড়ি (কার), মশাল, ময়ূর, মাছ, মাথাল, মিনার, মোমবাতি, মোবাইল ফোন, মোড়া, মোরগ, রকেট, রিকশা, লাউ, লিচু, লাঙল, শঙ্খ, সোনালি আঁশ, সেলাই মেশিন, সোফা, সিংহ, স্যুটকেস, হরিণ, হাত (পাঞ্জা), হাতঘড়ি, হাতপাখা, হাঁস, হাতি, হাতুড়ি, হারিকেন, হুক্কা ও  হেলিকপ্টার।

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ