পদ্মা নদীর লৌহজং চ্যানেল বেঁকে ঢুকেছে মাদারীপুরের শিবচরে। ইলিয়াস আহম্মেদ চৌধুরী (কাঁঠালবাড়ী) বাংলাবাজার ফেরিঘাটের পাশে সরু হয়ে বয়ে গেছে চিরযৌবনা এই নদী। স্থানীয় লোকজন এই চ্যানেলকে বলে ‘বিলপদ্মা’। এই নদীর পারে এখন উৎসবের মহাযজ্ঞ।
পদ্মা সেতু উদ্বোধন
মাওয়া-জাজিরায় উৎসবের রং
এস এম আজাদ, শিবচর (মাদারীপুর) থেকে

ফেরিঘাটের কাছে দেখা গেল নিরাপত্তাবলয়ের মধ্যেও স্থানীয় উত্সুক মানুষ ভিড় করেছে।
হাকিমের মতো অনেকেই উৎসবের চূড়ান্ত সময়ের অপেক্ষায়। তাঁদের আশা, ১০ লাখের বেশি মানুষ উপস্থিত হবে বিলপদ্মার পারে। আজ শনিবার এখানেই দেশের সবচেয়ে বড় জনসভা করার লক্ষ্য ঠিক করেছেন আয়োজকরা।
গতকাল সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় পরিসরে নিরাপত্তার আয়োজন করা হয়েছে পদ্মা সেতুকে ঘিরে। সেতুর মাওয়া প্রান্ত থেকে জাজিরা, শিবচরের প্রতিটি জায়গায় রাস্তার মোড়ে মোড়ে অবস্থান নিয়েছেন আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর সদস্যরা। আজকের জনসভায় যোগ দিতে তৈরি আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী, স্থানীয় সব প্রশাসন ও সাধারণ জনগণও। আজ উদ্বোধনের পরই আলোকবাতি প্রদর্শন, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, মিষ্টি বিতরণসহ বেশ কিছু অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে পদ্মার দুই পারের বাসিন্দারা। গতকাল থেকেই এসব উৎসবের রং ছড়িয়ে পড়েছে সবখানে। সন্ধ্যায় পদ্মার দুই ধারে বাতি জ্বলে ওঠে। উজ্জ্বল আলোয় রঙিন হয়ে ওঠে পদ্মার পার।
গতকাল বিকেলে মাদারীপুরের বাংলাবাজার ঘাটসংলগ্ন জনসভাস্থল পরিদর্শন শেষে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, ‘আমাদের নিরাপত্তা বাহিনী এখন যেকোনো চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে পারে। আমাদের গোয়েন্দারা কাজ করছেন, সব নিরাপত্তা বাহিনী তাদের দায়িত্ব পালনের জন্য তৈরি হয়ে আছে। পুরো এলাকা সিসিটিভির আওতায় আসছে। আমাদের নৌ পুলিশ, পুলিশ ও র্যাব প্রয়োজন বোধে আমাদের বিজিবিও আসবে। এখানে যথেষ্ট পরিমাণ স্বেচ্ছাসেবক রয়েছেন, দলীয় স্বেচ্ছাসেবকরাও রয়েছেন। তাঁরাও নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে একসঙ্গে কাজ করবেন।’
১০ লাখ মানুষের জমায়েত হওয়ার আশা করছে আওয়ামী লীগ। এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘যদি বৃষ্টি না হয় তাহলে সমাবেশে জমায়েত ১০ লাখ ছাড়িয়ে যাবে। সারা বাংলাদেশে জনতার যে উৎসব দেখছি, যে আনন্দ দেখছি, তারা সেতু দেখার জন্য উদগ্রীব হয়ে আছে।’
পদ্মা সেতুর আদলে তৈরি মঞ্চটি ১১টি পিলারের ওপরে দাঁড়িয়ে আছে। মঞ্চ থেকে প্রায় ২০ ফুট দূরে নৌকা দিয়ে একটি নদীর আদল তৈরি করা হয়েছে। মঞ্চের চারপাশ ঘিরে রয়েছেন পোশাকধারী ও সাদা পোশাকের প্রশাসনের লোকজন। বাঁশ দিয়ে পুরো এলাকায় বেষ্টনী তৈরি করা হয়েছে। সভার প্রথম স্তরে বিশেষ ব্যক্তিরা ছাড়া কেউ যেতে পারবেন না। মাঠজুড়ে বসানো হয়েছে মনিটর। এলাকাজুড়ে মাইক। গতকাল বিকেলে মঞ্চের মাইক পরীক্ষা করা হয়। পুরো এলাকা রেকি করেছেন পুলিশ, সেনা বাহিনীর সদস্য, র্যাব, নৌ পুলিশসহ বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা।
গতকাল নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, উদ্বোধন ও সমাবেশকে ঘিরে সব ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে। দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ যারা লঞ্চে আসবে, তাদের লঞ্চ ভেড়ানোর সুবিধার জন্য ২০টির মতো পন্টুনের ব্যবস্থা, চলাচলের পথ এবং অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা বিআইডাব্লিউটিএর পক্ষ থেকে করা হয়েছে।
সকালে সভাস্থল পরিদর্শন করে পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদ বলেন, ‘পদ্মা সেতু শুধু আমাদের দেশের ইস্যু নয়, এটা আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলেও আলোচনায় রয়েছে। তাই যেকোনো হুমকি গোয়েন্দা সংস্থার সঙ্গে সমন্বয় করে মোকাবেলা করা হবে।’
সকালে পানিসম্পদ উপমন্ত্রী এনামুল হক শামীম, চিফ হুইপ নুর-ই-আলম চৌধুরী, সাবেক নৌপবিহনমন্ত্রী শাজাহান খান, আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য আব্দুর রহমান, জাহাঙ্গীর কবির নানক ও প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তারা সভাস্থল পরিদর্শন করেন।
জানতে চাইলে মাদারীপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শাহাবুদ্দিন আহমেদ মোল্লা কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘সব মানুষ প্রাণের টানে এই জনসভায় উপস্থিত হতে চায়। আমরা সব ধরনের ব্যবস্থা নিয়েছি। জেলার পাঁচ উপজেলায় দুই হাজারের বেশি বাস এবং নৌপথে কিছু লঞ্চে লোকজন জনসভায় যাবে। তবে গাড়ির অভাবে অনেকে হয়তো যেতে পারবে না।’
মাদারীপুরের জেলা প্রশাসক রহিমা খাতুন বলেন, ‘উদ্বোধনের দিন থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত প্রতিদিন সন্ধ্যা ৭টা থেকে রাত সাড়ে ৯টা পর্যন্ত জেলা প্রশাসনের আয়োজনে জনসভাস্থলে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হবে। এতে অংশ নেবেন দেশের খ্যাতিমান শিল্পীরা। জেলা প্রশাসনের এই উদ্যোগে আনন্দ ছড়িয়ে পড়বে সারা দেশে।’
পদ্মায় ভাসবে ৫০টি সুসজ্জিত নৌকা
প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানাতে রং-বেরঙের বেলুন আর লাল-সবুজের জাতীয় পতাকা দিয়ে সাজানো ৫০টি নৌকা আজ সকাল থেকেই পদ্মা সেতুর নিচে ভাসতে থাকবে। নৌকায় মাঝি ছাড়া থাকবে না কেউ। নৌকাগুলোর মাস্তুলে রয়েছে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, জাতীয় সংসদের চিফ হুইপ নুর-ই-আলম চৌধুরী ও তাঁর বাবা ইলিয়াস আহম্মেদ চৌধুরীর ছবি। পদ্মার পারের জেলেদের নিয়ে এই আয়োজন করেছে শিবচর পৌরসভা। নৌকাগুলো সাজিয়ে মাদারীপুরের কাঁঠালবাড়ী ঘাট এলাকার চরচান্দায় পদ্মার পারে রাখা হয়েছে। দৃষ্টিনন্দন নৌকাগুলো দেখতে গতকাল দর্শনার্থীরা ভিড় করছে পদ্মার পারে।
নৌকার মাঝি আয়নাল হাওলাদার বললেন, ‘কাল (আজ) সকালে এই ৫০টি নৌকা নিয়ে একযোগে পদ্মার বুকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে স্বাগত জানাব। প্রধানমন্ত্রীর আগমনে আমরা ভীষণ খুশি। তাঁর এই আগমন আমাদের পদ্মা পারের জেলেদের কাছে স্মরণীয় হয়ে থাকবে।’
বিমানবাহিনীর ফ্লাইং ডিসপ্লে
পদ্মা সেতুর উদ্বোধন উপলক্ষে আজ শনিবার বাংলাদেশ বিমানবাহিনী এক মনোজ্ঞ ফ্লাইং ডিসপ্লের আয়োজন করেছে। আইএসপিআর জানায়, ৩১টি বিমান এবং হেলিকপ্টারের সমন্বয়ে এই ফ্লাইং ডিসপ্লে অনুষ্ঠিত হবে।
মাওয়ায় উত্সুক জনতা আর পর্যটকদের ভিড়
মাওয়ায় পদ্মা সেতু দেখতে গতকাল স্থানীয় ও দূর-দূরান্তের পর্যটকরা এখানে ভিড় করে। বাড়ি-ঘরের ফাঁকফোকর দিয়ে যতটুকু দেখা যায়, তাতেই আনন্দ তাদের। ঢাকার দোহারের আবু বকর সিদ্দিক। পেশায় শিক্ষক। টিভিতে সেতুর সাজসজ্জা দেখে তিনি আর নিজেকে ধরে রাখতে পারেননি। গতকাল বিকেলে হাজির হন পদ্মার পারে।
গতকাল বিকেলে রুফটপ রেস্টুরেন্টগুলোতেও পর্যটকদের ভিড় দেখা যায়। ছাদে দাঁড়িয়ে সেতুকে পেছনে রেখে অনেককে ছবি তুলতে দেখা যায়। এদের একজন গাজীপুরের মনির হোসেন। উদ্বোধনের দিন প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তার কারণে ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ে বন্ধ হয়ে যেতে পারে। তাই তিনি এক দিন আগেই চলে এসেছেন।
মনির হোসেন বলেন, ‘আমাদের প্রধানমন্ত্রী যে দৃঢ় মনোবল নিয়ে পদ্মা সেতু তৈরি করেছেন, তা অন্য কারো পক্ষে সম্ভব হতো না। তিনি বঙ্গবন্ধুর কন্যা বলেই তা সম্ভব হয়েছে। নিজেদের টাকায় সেতু নির্মাণ করে তিনি বিশ্বের কাছে বাংলাদেশিদের সম্মানের জায়গায় নিয়ে গেছেন।’
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন মুন্সীগঞ্জ ও মাদারীপুর প্রতিনিধি]
পদ্মা সেতু উদ্বোধন উপলক্ষে নৌকার আদলে সাজানো হয়েছে গাড়ি। গতকাল মুন্সীগঞ্জের মাওয়া থেকে তোলা। ছবি : কালের কণ্ঠ
সম্পর্কিত খবর

আজ রাজপথে নামছে বিএনপি
নিজস্ব প্রতিবেদক

পুরান ঢাকার মিটফোর্ড হাসপাতালের সামনে ব্যবসায়ী লাল চাঁদ ওরফে মো. সোহাগ হত্যাকাণ্ডের ‘অপপ্রচার ষড়যন্ত্রের’ প্রতিবাদে শান্তিপূর্ণভাবে আজ থেকে রাজপথে থাকবে বিএনপি। বিএনপি মনে করছে, এই হত্যাকাণ্ড নিয়ে জামায়াতে ইসলাম, ইসলামী আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) রাজপথ দখল করার চেষ্টা করছে বলে মনে করছে বিএনপি। এ জন্য রাজপথে বিএনপিও শক্তি ও জনসমর্থন দেখাবে।
এখন পর্যন্ত এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত কাউকে ছাড় দিচ্ছে না দলটি।
মাঠে নামছে ছাত্রদল : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি জানান, গোপন তৎপরতায় দীর্ঘদিন ধরে অভ্যস্ত গুপ্ত সংগঠন কর্তৃক মব সৃষ্টির অপচেষ্টা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ বিনষ্ট করা এবং সারা দেশে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির প্রতিবাদে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল আজ রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে বিক্ষোভ মিছিল করবে। গুপ্ত সংগঠন বলতে ইসলামী ছাত্রশিবির ও তাদের সহযোগী সংগঠনকে বোঝানো হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির।
ছাত্রদলের ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী, আজ দুপুর ২টায় রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে শাহবাগ পর্যন্ত বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হবে। পাশাপাশি সারা দেশের সব জেলা ও মহানগরে বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হবে।
কর্মসূচির বিষয়ে ঢাবি শাখা ছাত্রদলের সভাপতি গণেশ চন্দ্র রায় সাহস বলেন, ‘গুপ্ত সংগঠন হিসেবে সেসব সংগঠনকেই বোঝানো হয়েছে, যারা প্রকাশ্যে নিজেদের রাজনৈতিক কার্যক্রম পরিচালনার বদলে গোপনে রাজনৈতিক এজেন্ডা বাস্তবায়ন ও সহিংসতা ছড়িয়ে দেওয়ার মাধ্যমে রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে অস্থিরতা ও বিশৃঙ্খলা তৈরি করছে। গত ৫ আগস্টের পর একটি মুক্ত রাজনৈতিক পরিবেশ থাকা সত্ত্বেও তাদের এহেন গুপ্ত কার্যক্রম এ দেশের রাজনৈতিক পরিবেশকে অসহনশীল করে তুলছে এবং রাজনৈতিক বিষয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত করে তুলছে। এ রকম কুচক্রী কার্যক্রমের বিরুদ্ধেই জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল তার কর্মসূচি গ্রহণ করেছে, যেন দেশবাসীকে এসব বিভ্রান্তিকর বিষয়ে সচেতন করে তোলা যায়।’
গুপ্ত সংগঠন বলতে কাদের বোঝানো হচ্ছে জানতে চাইলে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির বলেন, ‘ছত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর যারা ক্যাম্পাসগুলোতে মব সৃষ্টি করে ‘সাধারণ শিক্ষার্থী’ নামে অপ্রীতিকর পরিস্থিতি তৈরি করছে, তারাই গুপ্ত সংগঠন। ছাত্রশিবির এবং গুপ্তভাবে সংগঠন পরিচালনা করতে ছাত্রশিবিরকে যারা পৃষ্ঠপোষকতা করে, আশ্রয়-প্রশ্রয় দেয় তারা।’

সশস্ত্র বাহিনীর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেসির মেয়াদ আরো দুই মাস বাড়ল
বিশেষ প্রতিনিধি

বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীতে কর্মরত সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন ও এর ওপরের সমপদমর্যাদার কর্মকর্তাদের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতার মেয়াদ আরো দুই মাস (৬০ দিন) বাড়ানো হয়েছে। এ বিষয়ে গতকাল রবিবার প্রজ্ঞাপন জারি করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। এর আগে গত ১৩ মে থেকে তাঁদের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেসির ক্ষমতার মেয়াদ দুই মাস বাড়ানো হয়েছিল। সেই মেয়াদ গতকাল শেষ হয় ।
মেয়াদ বাড়ানোর আদেশে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীতে কর্মরত সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন ও এর ওপরের সমপদমর্যাদার কমিশন্ড কর্মকর্তাদের (কোস্ট গার্ড ও বিজিবিতে প্রেষণে নিয়োজিত সমপদমর্যাদার কর্মকর্তারাসহ) ‘দ্য কোড অব ক্রিমিনাল প্রসিডিউর, ১৮৯৮’-এর ১২(১) ও ১৭ ধারা অনুযায়ী স্পেশাল এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা অর্পণ করা হলো। এর মেয়াদ হবে ১৪ মার্চ থেকে ৬০ দিন পর্যন্ত। সারা দেশে তাঁরা এই ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারবেন বলেও প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে।
প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, সেনাবাহিনীর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা ‘ফৌজদারি কার্যবিধি-১৮৯৮’-এর ৬৪, ৬৫, ৮৩, ৮৪, ৮৬, ৯৫(২), ১০০, ১০৫, ১০৭, ১০৯, ১১০, ১২৬, ১২৭, ১২৮, ১৩০, ১৩৩ ও ১৪২ ধারার অপরাধগুলো বিবেচনায় নিতে পারবেন।
প্রথমে গত বছরের ১৭ সেপ্টেম্বর সেনাবাহিনীর কমিশন্ড অফিসারদের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছিল জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। পরে ৩০ সেপ্টেম্বর প্রজ্ঞাপন সংশোধন করে বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর কমিশন্ড অফিসারদের (সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন ও এর ওপরের সমপদমর্যাদার কর্মকর্তা) এই ক্ষমতা দেওয়া হয়। অর্থাৎ শুধু সেনাবাহিনী নয়, বিমান ও নৌবাহিনীর কমিশন্ড অফিসারদেরও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা দেওয়া হয়। তখন ৬০ দিনের জন্য এই ক্ষমতা দেওয়া হয়েছিল।

শেখ হাসিনাসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে গুমের অভিযোগ বিএনপির
নিজস্ব প্রতিবেদক

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক ও সাবেক পুলিশপ্রধান (আইজিপি) বেনজীর আহমেদসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর কার্যালয়ে গুমের অভিযোগ দিয়েছে বিএনপি।
গতকাল রবিবার দুপুরে ভুক্তভোগীদের সঙ্গে নিয়ে এই অভিযোগ দেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির নির্বাহী সদস্য এবং তথ্য সেলের সমন্বয়ক সালাহউদ্দিন খান।
অভিযোগ তদন্ত করে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম।
২০১৯ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত গুমের ঘটনায় ১১ জন ভুক্তভোগীর নাম উল্লেখ করা হয়েছে লিখিত অভিযোগে।
অভিযোগে বলা হয়েছে, ২০১৯ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন সময় এসব ভুক্তভোগীকে অপহরণের পর আয়নাঘরে আটকে রেখে নির্যাতন করা হয়। গত বছর ৫ আগস্ট সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পলায়নের পর মোহাম্মদ আলীকে হাত ও চোখ বেঁধে পূর্বাচলের শেষ প্রান্তে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে ফেলে আসা হয়। পাঁচ বছর তিন মাস ১৩ দিন পর তিনি মুক্তি পান।
তাঁর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ১১ জন ভুক্তভোগীর নাম উল্লেখ করে আবেদনটি করা হয় বলে জানান সালাহউদ্দিন খান।
সালাহউদ্দিন খান সাংবাদিকদের বলেন, ‘ভুক্তভোগীরা শেখ হাসিনাসহ ১৬ জন এবং অজ্ঞাতপরিচয় আরো ৩০ থেকে ৩৫ জনের নাম উল্লেখ করে ন্যায়বিচারের আশায় আবেদন করেছেন। ভুক্তভোগীরা বলেছেন, শুধু বিএনপি করার অপরাধে বিগত সরকারের নির্মম নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে তাঁদের।

সোহাগের পরিবারের পাশে তারেক রহমান
বরগুনা প্রতিনিধি

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে পুরান ঢাকায় নিহত ব্যবসায়ী লাল চাঁদ ওরফে সোহাগের পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছেন দলটির ভাইস চেয়ারম্যান নূরুল ইসলাম মনি। গতকাল রবিবার বিকেলে তিনি বরগুনা জেলার পাথরঘাটা উপজেলার কাকচিড়া ইউনিয়নের সোহাগের গ্রামের বাড়িতে যান। তিনি স্থানীয় কাকচিড়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে আয়োজিত সভায় বক্তব্য দেন।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে তিনি নিহত সোহাগের পরিবারকে ৫০ হাজার টাকা আর্থিক সহায়তা প্রদান করেন।