<p>কালের কণ্ঠ : ভোটের মাঠের পরিবেশ কেমন দেখছেন?</p> <p>মনিরুল হক সাক্কু : নির্বাচন কমিশনের প্রথম দিকের তৎপরতায় মানুষ ভেবেছিল নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হবে। তবে নির্বাচন কমিশন লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করতে পারেনি। কুমিল্লা সদর আসনের সদস্য নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করে নৌকার প্রার্থীর জন্য কাজ করছেন। ইসি থেকে এমপিকে এলাকা ছাড়তে বলা হয়েছে। পাত্তা না দিয়ে তিনি নিজের কাজ করে যাচ্ছেন। সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য কমিশনকে আরো তৎপর হতে হবে।</p> <p> </p> <p>কালের কণ্ঠ : ভোটারদের কেমন সাড়া পাচ্ছেন?</p> <p>মনিরুল হক সাক্কু : আমি দুইবারের সিটি মেয়র। এর আগে পৌরসভার চেয়ারম্যান ও মেয়র ছিলাম। গত ১৬ বছর জনপ্রতিনিধি হিসেবে সাধারণ মানুষের সঙ্গে আছি। মানুষ আমাকে আপন করে নিয়েছে। আমিও মানুষকে আপন করে নিয়েছি।</p> <p> </p> <p>কালের কণ্ঠ : কোথাও আপনার নেতাকর্মী বা সমর্থকদের হয়রানি করা হচ্ছে কি?</p> <p>মনিরুল হক সাক্কু : আমি যে ওয়ার্ডেই প্রচারণায় গেছি, আমার দায়িত্বশীল নেতাকর্মীদের বিভিন্নভাবে হুমকি দেওয়া হচ্ছে। ভোটের মাঠ থেকে সরে দাঁড়াতে বলা হয়েছে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে হুমকি দেওয়া হচ্ছে অজ্ঞাতনামা মোবাইল ফোন থেকে। তবে আমার নেতাকর্মীরা এসবে পাত্তা দেয়নি।</p> <p>কালের কণ্ঠ : ভোট নিয়ে ভোটারদের মধ্যে উৎকণ্ঠা কাজ করছে। আপনার মতামত বলুন।</p> <p>মনিরুল হক সাক্কু : ভোটারদের মতো আমিও উৎকণ্ঠায় আছি। কারণ ভোটারদের হুমকি দেওয়া হচ্ছে কেন্দ্রে যেতে দেওয়া হবে না বলে। নৌকার লোকজন নিজেদের কর্মীদের ভোট দিয়ে বিজয়ী হবে। তবে আমি মনে করি, ভোটাররা ভয়কে জয় করে কেন্দ্রে গেলে দুর্বৃত্তরা পালাবে।</p> <p> </p> <p>কালের কণ্ঠ : ভোট সুষ্ঠু হলে ফলাফল যা-ই হোক, মেনে নেবেন?</p> <p>মনিরুল হক সাক্কু : আমি ৪২ বছর রাজনীতি করি। আমার সেই সৎ মানসিকতা আছে। যদি ভোট সুষ্ঠু হয়, আমি ফেল করলেও ফলাফল মেনে নেব।</p> <p> </p> <p>কালের কণ্ঠ : আপনার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী রিফাত বলেছেন, আপনি দুর্নীতির টাকায় স্ত্রীর নামে কানাডায় বাড়ি করেছেন। এর প্রমাণও আছে তাঁর কাছে। কিছু বলুন।</p> <p>মনিরুল হক সাক্কু : এসব বানোয়াট কথায় কুমিল্লার মানুষকে বোকা বানানো যাবে না। কুমিল্লার ভোটাররা অনেক সচেতন। আমি তো বলেছি কানাডায় কোথায় আমার বাড়ি সেই প্রমাণ দিতে, কই তিনি তো প্রমাণ দিতে পারলেন না!</p> <p> </p> <p>কালের কণ্ঠ : এবার তো আপনার দল থেকেই দুজন প্রার্থী। এতে অপনার দলীয় ভোট ব্যাংকে কোনো প্রভাব পড়বে কি?</p> <p>মনিরুল হক সাক্কু : নির্বাচন আর সাংগঠনিক বিষয় এক নয়। ভোটের বিষয় আলাদা। ভোট দেবে জনগণ আর রাজনীতি করবে কর্মীরা। তিনি হঠাৎ এসে প্রার্থী হয়ে গেছেন। এখন ভোট পেতে বেগম জিয়ার নাম বিক্রি করছেন, আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছেন। আমি দুইবারের মেয়র, মানুষ আমাকে চেনে। আশা করছি আমার ভোট ব্যাংকে কোনো প্রভাব পড়বে না।</p> <p> </p> <p>কালের কণ্ঠ : আপনি বলেছেন এটাই আপনার শেষ নির্বাচন। আপনার প্রতিপক্ষরা বলছে, এটা আপনি নির্বাচনী বৈতরণী পার হতে বলছেন।</p> <p>মনিরুল হক সাক্কু : আমার বয়স হয়ে গেছে। সামনেরবার হয়তো শরীর সুস্থ না-ও থাকতে পারে। আর আমি বিগত দিনে বরাদ্দের কারণে নগরীর অনেক উন্নয়ন করতে পারিনি। এবার আমার শেষ সময়ে এসে সরকার থেকে প্রায় দুই হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ পেয়েছি। এই টাকার কাজ আগামী তিন বছরে বাস্তবায়ন হবে। যেভাবেই হোক আমি বরাদ্দ এনেছি। তাই শেষবারের মতো নির্বাচিত হয়ে অসমাপ্ত কাজগুলো নিজের হাতে শেষ করতে চাই।</p> <p> </p> <p>কালের কণ্ঠ : আপনার নির্বাচনী প্রচারে দলের নেতাকর্মীদের অংশগ্রহণে মানা ছিল। নেতাকর্মীরা তো সেটি মানেননি, আপনার প্রচারে অংশ নিয়েছেন। তাহলে এটা কি শুধু ‘লোক-দেখানো’ যে বিএনপি নির্বাচনে আসেনি?</p> <p>মনিরুল হক সাক্কু : আমার সব নির্বাচনেই কর্মীরা ছিল বিজয়ের চাবিকাঠি। এবারও কর্মীরা আমার জন্য কাজ করছে। আর এটা স্থানীয় সরকার নির্বাচন, বিএনপি এই সরকারের অধীনে নির্বাচনে যাবে না। এই নির্বাচন আমার ব্যক্তিগত, এখানে দলের লোক-দেখানোর মতো কিছু নেই।</p> <p> </p> <p>কালের কণ্ঠ : সময় দেওয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।</p> <p>মনিরুল হক সাক্কু : আপনাদেরও ধন্যবাদ।</p> <p> </p>