জানালা দিয়ে দুর্বৃত্তের ছোড়া এসিডে ঘুমন্ত অবস্থায় তিন মাসের শিশুসহ এক পরিবারের তিনজন দগ্ধ হয়েছে। শিশুটির অবস্থা সংকটাপন্ন। গত বৃহস্পতিবার গভীর রাতে বগুড়ার গাবতলী উপজেলার তেলিহাতা গ্রামে এই নৃশংস ঘটনা ঘটে।
দগ্ধরা হলো সূর্য চন্দ্র কর্মকার (তিন মাস), তার মা বীণা রানী ও দাদি দীপালি রানী।
বিজ্ঞাপন
জানতে চাইলে ইনস্টিটিউটের আবাসিক চিকিৎসক পার্থ শঙ্কর পাল বলেন, শিশুটির শরীরের প্রায় ১০ শতাংশ ঝলসে গেছে। অন্যরা কিছুটা শঙ্কামুক্ত। তবে শিশুটির অবস্থা ভালো নয়। তার ওপর বাড়তি নজর রয়েছে।
ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে পুলিশ। জড়িত সন্দেহে প্রতিবেশীদের অনেককে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তবে কেউ এখনো গ্রেপ্তার হয়নি।
দগ্ধ শিশুর বাবা সাগর চন্দ্র কর্মকার কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘এটা আমিও বুঝতে পারছি না। কারো সঙ্গে আমার বা পরিবারের কারো কোনো শত্রুতা নেই। কেন আমার পরিবারের ওপর এমন বর্বর হামলা চালানো হলো? আমি এর বিচার চাই। ’
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মিস্ত্রি (লোহার জিনিস মেরামতকারী) সাগর চন্দ্র দীর্ঘদিন ধরে পরিবার নিয়ে তেলিহাতা গ্রামে বসবাস করেন। বর্তমানে পরিশ্রমের মাধ্যমে আর্থিক অবস্থা কিছুটা ভালো করতে সক্ষম হয়েছেন। সাগর দাবি করেন, ‘কেউ প্রতিহিংসা করে আমার সন্তান, স্ত্রী ও মায়ের ওপর এসিড ছুড়েছে। তবে কে বা কারা ঘটনাটি ঘটিয়েছে এখনো নিশ্চিত হতে পারিনি। ’
সাগর আরো বলেন, কখনো কারো সঙ্গে বড় কোনো বিরোধ হয়নি তাঁর। ঘটনার বর্ণনা দিয়ে তিনি জানান, রাতে ভাপসা গরম ছিল। নিজেদের বাড়িতে জানালা খুলে ঘুমাচ্ছিলেন তাঁরা।
বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে ঘরের জানালা দিয়ে কেউ একজন বাইরে থেকে এসিডজাতীয় পদার্থ ছুড়ে মেরে পালিয়ে যায়। প্রথমে তাদের বগুড়া সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে শুক্রবার সন্ধ্যায় শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের জরুরি বিভাগে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় এখনো মামলা হয়নি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এখান থেকে (এলাকায়) গিয়ে মামলা করব। ’
জানতে চাইলে বগুড়ার গাবতলী মডেল থানার ওসি সিরাজুল ইসলাম বলেন, এ ঘটনার তদন্ত চলছে। তবে কেউ এখনো অভিযোগ করেনি। পুলিশসহ প্রশাসনের কয়েকটি টিম ঘটনা তদন্তের জন্য মাঠে নেমেছে।