ঢাকা, শনিবার ১২ জুলাই ২০২৫
২৮ আষাঢ় ১৪৩২, ১৬ মহররম ১৪৪৭

ঢাকা, শনিবার ১২ জুলাই ২০২৫
২৮ আষাঢ় ১৪৩২, ১৬ মহররম ১৪৪৭

১০ ধরনের বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে বাংলাদেশে

  • আ ন ম মুনীরুজ্জামান
অন্যান্য
অন্যান্য
শেয়ার
১০ ধরনের বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে বাংলাদেশে

বর্তমান আন্ত সংযুক্ত বিশ্বে ইউক্রেন খুব দূরের জায়গা নয়। পৃথিবীতে এখন যে ধরনের আন্তঃরাষ্ট্রীয় যোগাযোগ আছে, সেখানে যেকোনো রাষ্ট্রে অস্থিতিশীলতা বা সংঘাত হলে তার সরাসরি প্রভাব অন্যান্য দেশেও এসে পড়ে। বাংলাদেশও এর বাইরে নয়। এ কারণে আমাদেরও পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করে ভবিষ্যতের পরিকল্পনা করতে হবে।

ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযানের কারণে এই মুহূর্তে অন্তত ১০ ধরনের বিরূপ প্রভাব বাংলাদেশের ওপর পড়তে যাচ্ছে বলে আমরা ধারণা করতে পারি।

এক. জ্বালানির ক্ষেত্রে বাংলাদেশ একটি আমদানিনির্ভর দেশ। এই সংঘাতের কারণে তেলের বাজার সম্পূর্ণভাবে অস্থিতিশীল হয়ে গেছে। দ্রুতই দাম বাড়ছে।

গতকালই প্রতি ব্যারেল ১০০ ডলারে পৌঁছেছে। এই দাম আরো বাড়ার আশঙ্কা আছে। এর বিরূপ প্রতিক্রিয়া ও চাপ বাংলাদেশের অর্থনীতির ওপর পড়বে।

দুই. পাবনার ঈশ্বরদীর রূপপুরে পারমাণবিক বিদ্যুেকন্দ্র বাস্তবায়িত হচ্ছে।

যদি রাশিয়া ও রাশিয়ার বিভিন্ন সংস্থা পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার আওতায় চলে আসে তাহলে আমাদের পারমাণবিক বিদ্যুেকন্দ্র বাস্তবায়ন অনিশ্চিত হয়ে পড়তে পারে।

তিন. বিশ্বের সরবরাহব্যবস্থা বিনষ্ট হয়ে যাবে বলে আমরা আশঙ্কা করছি। আমরা জানি, আমাদের তৈরি পোশাক খাত রপ্তানির ওপর নির্ভর করে। এটি খুব টাইম সেনসেটিভ (সময়নির্ভর)। অর্থাৎ কোথাও পণ্য পাঠাতে এক সপ্তাহ দেরি হলে তারা বাজার ধরতে পারে না।

সে ক্ষেত্রে সরবরাহব্যবস্থায় প্রভাব বা ভেঙে পড়ার কারণে আমাদের তৈরি পোশাক রপ্তানির ক্ষেত্রে বড় ধরনের সমস্যায় পড়ার আশঙ্কা আছে।

চার. বিশ্বের গম রপ্তানির বড় অংশই আসে রাশিয়া, ইউক্রেন ও বেলারুশ অঞ্চল থেকে। ফলে গমের রপ্তানি বাজার পুরোপুরি বিঘ্নিত হবে। সাময়িকভাবে রপ্তানি বন্ধও হয়ে যেতে পারে। তার কারণে খাদ্যদ্রব্যের সরবরাহ কমে গেলে খাদ্যের দাম বাড়বে। এ কারণে আমরা আশঙ্কা করছি, খাদ্য নিরাপত্তার ওপর বড় ধরনের চাপ সৃষ্টি হবে।

বাংলাদেশ গম আমদানিকারক শীর্ষ দেশগুলোর অন্যতম না হলেও আমদানি করে। খাদ্যমূল্যের ওপর চাপ এলে এর প্রভাব অন্য পণ্যের ওপরও পড়বে। গমের দাম বাড়লে চালের দামও বেড়ে যাবে।

পাঁচ. আন্তর্জাতিক মুদ্রাবাজার পুরোপুরি অস্থির হয়ে গেছে। মুদ্রা বিনিময়ের হার বেড়ে যাচ্ছে। এর যে অর্থনৈতিক চাপ, তা আমাদের ওপর পড়া শুরু করবে। একই সঙ্গে আমরা দেখতে পাব, আন্তর্জাতিক চলাচল, পণ্য স্থানান্তর, আমদানি-রপ্তানি—সব কিছুর সঙ্গে বীমা অনেক গুণ বেড়ে যাবে। এর ফলে পণ্যের দামের ওপর বড় ধরনের চাপ সৃষ্টি হবে। অর্থনীতি, বিশেষ করে ভোগ্যপণ্যের ওপর চাপ বেশি হবে। একই সঙ্গে মূল্যস্ফীতির প্রবণতা বেড়ে যাবে।

ছয়. ক্ষুদ্র রাষ্ট্রের নিরাপত্তার বর্তমান যে বৈশ্বিক ধারা, তা সম্পূর্ণভাবে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ে গেল। অর্থাৎ বৃহৎ রাষ্ট্র দ্বারা পরিবেষ্টিত ক্ষুদ্র রাষ্ট্রগুলো কিভাবে তাদের নিরাপত্তা বজায় রাখবে, সেটি এখন বড় প্রশ্ন হয়ে দেখা দেবে। ছোট রাষ্ট্রের জন্য অনিশ্চয়তার পরিবেশ তৈরি হলো। এটি শুধু ইউক্রেনের জন্য নয়, বিশ্বের যেকোনো জায়গায় যে কারো বেলায় এটা ঘটার পথ তৈরি হলো।

সাত. এবার আমরা প্রচলিত যুদ্ধ ছাড়াও বিভিন্ন পন্থা দেখতে পাচ্ছি, যা বিশ্বের নিরাপত্তার জন্য নতুন চ্যালেঞ্জ এবং একই সঙ্গে শিক্ষণীয়। অভিযান শুরুর আগে ও সঙ্গে সঙ্গে সাইবার হামলা চালিয়ে ইউক্রেনের সব সাইবারব্যবস্থাকে অকার্যকর করে দেওয়া হয়েছে। একইভাবে অভিযানের আগে রাশিয়ার পক্ষ থেকে বড় ধরনের ডিজ-ইনফরমেশন ক্যাম্পেইন বা কুতথ্যের প্রচারণা দেখতে পেয়েছি। এগুলো থেকে আমাদের শিক্ষা নিতে হবে।

আট. কূটনৈতিকভাবে বর্তমান বিশ্বে যে বিভাজন আছে, তা আরো প্রকট আকার ধারণ করবে। সেখানে দুই দিক থেকেই আমাদের ওপর চাপ আসতে পারে। এই চাপ পক্ষে কথা বলার জন্য। কূটনৈতিক মন্তব্য করার ক্ষেত্রেও এই চাপ বোধ হতে পারে। জাতিসংঘে ভোটের ক্ষেত্রেও হতে পারে। অর্থাৎ কূটনৈতিক চাপের চ্যালেঞ্জের মুখে আমরা পড়তে যাচ্ছি।

নয়. বাংলাদেশের সশস্ত্র বাহিনী, বিশেষ করে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর কাছে রাশিয়ার তৈরি সামরিক সরঞ্জাম আছে। যেমন আমাদের মিগগুলো রাশিয়ার তৈরি। আমাদের হেলিকপ্টারবহরের অনেকগুলোই রাশিয়ার তৈরি। সাম্প্রতিক সময়ে আমরা আটটি ‘অ্যাটাক হেলিকপ্টার’ কিনেছি রাশিয়ার কাছ থেকে। এগুলোর রক্ষণাবেক্ষণ এবং এগুলোকে ভবিষ্যতে চলমান রাখাও চ্যালেঞ্জের মুখে, অনিশ্চয়তার মুখে পড়ে যেতে পারে, যদি রাশিয়ার ওপর ব্যাপক আকারে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়।

দশ. আশঙ্কা করছি, আরেকটি নতুন ধারার। একটি দেশের বা একটি অঞ্চলের সংখ্যালঘু গোষ্ঠীকে বাইরের কোনো দেশ থেকে এমনভাবে অস্ত্রশস্ত্র দেওয়া, যাতে তারা দেশটির সার্বভৌমত্বের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে যায়। আর তাদের মাধ্যমে অনেক ধরনের বহিরাক্রমণ শুরু হয়। এটি রাশিয়া-ইউক্রেনের ঘটনায় আমরা পরিষ্কারভাবে দেখতে পাচ্ছি।

আমাদের করণীয় কী

যুদ্ধের দুই পক্ষ থেকেই সমর্থন চেয়ে আমাদের ওপর চাপ সৃষ্টি হবে। এখানে আমাদের খুব সতর্কভাবে এগোতে হবে, যাতে আমরা কোনোভাবেই কোনো পক্ষের সঙ্গে না মিলে যাই। আমাদের যে কৌশলগত নিরপেক্ষতা আছে বা আমরা রাখছি, তাকে যেকোনো মূল্যে বজায় রাখতে হবে। আমরা কোনো সংঘাতের পক্ষ নিতে চাই না। আমরা বিশ্বাস করি, একটি দেশ যত ক্ষুদ্রই হোক না কেন, তার সার্বভৌমত্ব কোনোভাবেই অন্য দেশের ক্ষুণ্ন করা উচিত নয়।

লেখক : মেজর জেনারেল (অব.) আ ন ম মুনীরুজ্জামান, প্রেসিডেন্ট, বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব পিস অ্যান্ড সিকিউরিটি স্টাডিজ

 

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

শিরোপা ধরে রাখার লক্ষ্য বাংলাদেশের

শেয়ার
শিরোপা ধরে রাখার লক্ষ্য বাংলাদেশের

মেয়েদের সাফ অনূর্ধ্ব-২০ ফুটবলে শিরোপা ধরে রাখার লক্ষ্য বাংলাদেশের। গতকাল বসুন্ধরা স্পোর্টস সিটি মাঠে সেই উদ্দেশ্যে খেলতে নেমে টুর্নামেন্টের শুরুর ম্যাচে শ্রীলঙ্কাকে ৯-১ গোলের বিশাল ব্যবধানে হারানোর পর উৎসব করেন আফঈদা খন্দকার-মুনকি আক্তাররা, যেখানে মোসাম্মৎ সাগরিকা একাই তিন গোল করেন। জোড়া গোল করেন মুনকি। ছবি : বাফুফে

মন্তব্য
তিন দিনের আলোচনা শেষ

৩৫% মার্কিন শুল্ক হ্রাসের ব্যাপারে আশাবাদী ঢাকা

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
৩৫% মার্কিন শুল্ক হ্রাসের ব্যাপারে আশাবাদী ঢাকা

তিন দিনের বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র শুল্ক আলোচনার দ্বিতীয় দিন শেষ হয়েছে। স্থানীয় সময় (১০ জুলাই) বৃহস্পতিবার দুই দেশের মধ্যে বর্তমান ও ভবিষ্যৎ বাণিজ্যের গতি-প্রকৃতি কেমন হবে, সেসব বিষয় উপস্থাপন ও যুক্তি-তর্ক হয়েছে। বেশ কিছু বিষয়ে দুই দেশ মোটামুটিভাবে একমত হয়েছে। কিছু বিষয় অমীমাংসিত রয়ে গেছে।

স্থানীয় সময় শুক্রবার সকাল ৯টায় ওয়াশিংটনে তৃতীয় দিনের আলোচনা শুরু হয়েছে। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব কথা জানানো হয়েছে।

এতে বলা হয়, দ্বিতীয় দিনের আলোচনার একটি তাৎপর্যপূর্ণ দিক ছিল বাণিজ্য উপদেষ্টা সেখ বশির উদ্দিনের সঙ্গে ইউএস ট্রেড রিপ্রেজেন্টেটিভ অ্যাম্বাসাডর জেমিসন গ্রিয়ারের সঙ্গে একান্ত বৈঠক। ট্রাম্প প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ এই কর্মকর্তার সঙ্গে সেখ বশির উদ্দিন শুল্ক ইস্যুর পাশাপাশি পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট নানা বিষয়ে আন্তরিক পরিবেশে আলোচনা করেন।

বৈঠকে বাণিজ্য উপদেষ্টা বাংলাদেশের সামগ্রিক অর্থনৈতিক অবস্থা এবং রপ্তানি পরিস্থিতি তুলে ধরেন। তিনি জানান, বাংলাদেশ শুধু যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি নয়, আমদানির পরিমাণও বাড়ানোর পথে এগোচ্ছে। শুল্ক ক্ষেত্রে বাংলাদেশের ন্যায্য প্রত্যাশার বিষয়টি জোর দিয়ে উপস্থাপন করেন। এ ছাড়া প্রতিযোগিতার পরিবেশ বজায় রাখার ওপর গুরুত্ব দেন তিনি।

জেমিসন গ্রিয়ার বাংলাদেশের অবস্থান মনোযোগসহকারে শোনেন এবং সহযোগিতার আশ্বাস দেন।

আলোচনায় বাংলাদেশের পক্ষ থেকে নেতৃত্ব দেন বাণিজ্য উপদেষ্টা সেখ বশির উদ্দিন। ঢাকা থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান। সরাসরি উপস্থিত ছিলেন বাণিজ্যসচিব মাহবুবুর রহমান ও অতিরিক্ত সচিব ড. নাজনীন কাওসার চৌধুরী। ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন সরকারের বিভিন্ন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা ও বিশেষজ্ঞরা।

বাংলাদেশ আমদানিতে আমেরিকা থেকে তুলা, সয়াবিন, বোয়িং বিমানসহ বিভিন্ন পণ্য নিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে, পাশাপাশি আমদানির নির্দিষ্ট পরিমাণ বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছে। 

তৃতীয় (শেষ) দিনের আলোচনায় এখনো রিবেট, শুল্ক ছাড় বা কিছু পরিমাণ কমানোর সম্ভাবনা রয়েছে।

এই উচ্চপর্যায়ের আলোচনার মাধ্যমে দুই দেশের মধ্যে নতুন বাণিজ্য সম্পর্কের দ্বার উন্মোচিত হতে পারে বলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা আশাবাদী।

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

ফরিদা পারভীনের উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করার আহবান খালেদা জিয়ার

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
ফরিদা পারভীনের উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করার আহবান খালেদা জিয়ার

লালনসংগীতের বরেণ্য শিল্পী ফরিদা পারভীনের উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহবান জানিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। বিএনপির মিডিয়া সেল গতকাল শুক্রবার সাংবাদিকদের জানায়, রাজধানীর আয়শা মেমোরিয়াল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বরেণ্য শিল্পী ফরিদা পারভীনের খোঁজখবর নিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। গত বৃহস্পতিবার রাতে দলের যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্সকে হাসপাতালে পাঠিয়ে তিনি ফরিদা পারভীনের শারীরিক অবস্থার খোঁজখবর নেন।

বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান জানান, খালেদা জিয়া অসুস্থ ফরিদা পারভীনের আরোগ্য কামনা করেন।

একজন গুণী শিল্পীর জন্য সরকারের পক্ষ থেকে দ্রুত উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করার আহবান জানিয়েছেন তিনি।

এর আগে গত বুধবার বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরও হাসপাতালে যান। সেখানে তিনি উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা নিতে সরকারের দুই উপদেষ্টাকে ফোন করে অনুরোধ জানান। ওই সময় তিনি আর্থিক সহযোগিতাও করেন।

এদিকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ গতকাল জানায়, গত দুই দিন ফরিদা পারভীনের শারীরিক অবস্থার কোনো অবনতি হয়নি। বরং তাঁর অবস্থার কিছুটা উন্নতি হয়েছে। তবে ঝুঁকি রয়েছে। হাসপাতালটির ব্যবস্থাপনা ও জনসংযোগ শাখা জানিয়েছে, ফরিদা পারভীনের চিকিৎসার জন্য গত ৯ জুলাই বিকেল ও ১০ জুলাই সকালে দুই দফা মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করা হয়।

চিকিৎসকরা আন্তরিকভাবে তাঁর সুস্থতার জন্য কাজ করে যাচ্ছেন।

হাসপাতালটির একজন পরিচালক বলেন, ফরিদা পারভীনের শারীরিক অবস্থার উন্নতি হচ্ছে খুব ধীরে। আমরা আশাবাদী, তবে চিন্তাও রয়ে যাচ্ছে। তাঁর বর্তমান শারীরিক অবস্থা যেকোনো সময় জটিল আকারে রূপ নিতে পারে। তাঁকে দ্রুত পুরোপুরি সুস্থ করে তুলতে আমরা আন্তরিকভাবে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।

মন্তব্য

এবার বর্ষায় স্বাভাবিক বৃষ্টি হবে তাপমাত্রা বেশি থাকার আভাস

খায়রুল কবির চৌধুরী
খায়রুল কবির চৌধুরী
শেয়ার
এবার বর্ষায় স্বাভাবিক বৃষ্টি হবে তাপমাত্রা বেশি থাকার আভাস

চলতি বর্ষা মৌসুমে (জুন-সেপ্টেম্বর) দক্ষিণ এশিয়ার বেশির ভাগ অঞ্চলে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। তবে দক্ষিণ এশিয়ার উত্তর-পূর্বে অবস্থিত বাংলাদেশের কিছু এলাকায় বৃষ্টি স্বাভাবিক এবং কিছু এলাকায় স্বাভাবিকের চেয়ে কম হতে পারে। এ ছাড়া এবারের বর্ষা মৌসুমে দিন ও রাতের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি থাকতে পারে সারা দেশেই।  

চলতি বছরের ২৮ থেকে ৩০ এপ্রিল ভারতের পুনেতে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর আবহাওয়াবিদ ও জলবায়ু বিশেষজ্ঞদের নিয়ে অনুষ্ঠিত সাউথ এশিয়ান ক্লাইমেট আউটলুক ফোরামের ৩১তম অধিবেশনে বর্ষা মৌসুমের এই জলবায়ু পূর্বাভাস তুলে ধরা হয়।

অন্যদিকে গত ২ জুলাই বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরে অনুষ্ঠিত দেশের আবহাওয়া ও জলবায়ু বিশেষজ্ঞদের বৈঠকেও বর্ষাকাল সম্পর্কে একই পর্যবেক্ষণ উঠে আসে। 

এ বিষয়ে আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ মুহাম্মদ আবুল কালাম মল্লিক কালের কণ্ঠকে বলেন, সাউথ এশিয়ান ক্লাইমেট আউটলুক ফোরামে দক্ষিণ এশিয়ার সব দেশের আঞ্চলিক আবহাওয়া ও জলবায়ু তথ্যের ভিত্তিতে ঐকমত্য প্রতিবেদন দেওয়া হয়। ওই প্রতিবেদন অনুযায়ী, বাংলাদেশে এবার বর্ষায় স্বাভাবিক বৃষ্টি হতে পারে। এ ছাড়া আমাদের বিশেষজ্ঞ কমিটিও বলেছে, এবার জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর এই তিন মাসে স্বাভাবিক বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।

প্রসঙ্গত বাংলা ঋতুচক্র অনুযায়ী, আষাঢ়-শ্রাবণ (মধ্য জুন থেকে মধ্য আগস্ট) এই দুই মাস বর্ষাকাল হলেও আবহাওয়া অধিদপ্তরের হিসাবে জুন থেকে সেপ্টেম্বর এই চার মাস বর্ষা মৌসুম। সে হিসাবেই আবহাওয়া অধিদপ্তর আবহাওয়া ও জলবায়ুর পূর্বাভাস দিয়ে থাকে।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের হিসাবে দেশে বছরে গড়ে ২৪২৭.৭ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়। এর মধ্যে জুন থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বর্ষার এই চার মাসেই দেশে গড়ে ১৭২১ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়।

অর্থাৎ মোট বৃষ্টির প্রায় ৭১ শতাংশই হয় বর্ষাকালে। বছরের বাকি আট মাসে হয় ২৯ শতাংশ বৃষ্টি।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ মো. শাহীনুল ইসলাম বলেন, এবার সিলেট ও রংপুরে তুলনামূলক কম বৃষ্টি হতে পারে। আবহাওয়ার বেশির ভাগ মডেলই উত্তরের সিলেট ও রংপুরে বৃষ্টি অনেকটাই কম দেখায়। এরই মধ্যে আমরা সিলেটে বৃষ্টি অনেকটা কম দেখেছি।

অন্যদিকে দক্ষিণাঞ্চলে বৃষ্টি স্বাভাবিক দেখাচ্ছে এবার। এ ছাড়া এবার বর্ষায় সারা দেশেই তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি থাকতে পারে।

তবে এবার বর্ষার প্রথম মাসে স্বাভাবিকের চেয়ে কম বৃষ্টি হয়েছে। এ মাসে তিনটি লঘুচাপ হলেও তা অনেক বেশি বৃষ্টিপাত ঘটায়নি দেশে। চলতি মাসে এখনো বঙ্গোপসাগরে কোনো লঘুচাপ তৈরি হয়নি।

আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বঙ্গোপসাগরে চার থেকে ছয়টি লঘুচাপ সৃষ্টি হতে পারে। এর মধ্যে এক থেকে তিনটি মৌসুমি নিম্নচাপে পরিণত হতে পারে।

এদিকে ৮ ও ৯ জুলাই ব্যাপক বৃষ্টিপাতের পর গত ১০ জুলাই থেকে বৃষ্টি কমতে শুরু করেছে। গতকাল শুক্রবার দেশে বৃষ্টি অনেকাংশেই কমে গেছে। আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, এই প্রবণতা থাকতে পারে অন্তত ১৫ জুলাই পর্যন্ত। এ প্রসঙ্গে আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ কাজী জেবুন্নেছা কালের কণ্ঠকে বলেন, বৃষ্টি কমেছে অনেকটাই। আগামী অন্তত ১৫ জুলাই পর্যন্ত বৃষ্টি কম থাকবে। তবে বর্ষাকাল হওয়ায় কোথাও না কোথাও বৃষ্টি থাকবেই। ১৬ জুলাই থেকে আবার বৃষ্টি বাড়তে পারে।

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ