ঢাকা, সোমবার ১৪ জুলাই ২০২৫
৩০ আষাঢ় ১৪৩২, ১৮ মহররম ১৪৪৭

ঢাকা, সোমবার ১৪ জুলাই ২০২৫
৩০ আষাঢ় ১৪৩২, ১৮ মহররম ১৪৪৭

ইসি গঠনে আইনের পথে পা রাখল সরকার

বিশেষ প্রতিনিধি
বিশেষ প্রতিনিধি
শেয়ার

ইসি গঠনে আইনের পথে পা রাখল সরকার
বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের সঙ্গে গতকাল সংলাপে অংশ নেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ নেতারা। এক পর্যায়ে নির্বাচন কমিশন গঠনের সুপারিশ রাষ্ট্রপতির হাতে তুলে দেন আওয়ামী লীগ সভাপতি। ছবি : পিআইডি

অবশেষে নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠনে সংবিধানের ১১৮ অনুচ্ছেদ অনুসারে আইন প্রণয়নের পথেই পা রাখল সরকার। গতকাল সোমবার নির্বাচন কমিশন গঠন নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপের শেষ দিনে আইনের একটি খসড়া মন্ত্রিসভায় অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। সংলাপে অংশ নেওয়া দলগুলো প্রায় সবাই আইন প্রণয়নের প্রস্তাব রেখেছিল। 

তবে এবারই আইন পাস করে তার মাধ্যমে, নাকি আগের দুইবারের মতো রাষ্ট্রপতি গঠিত সার্চ কমিটির মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন গঠন করা হবে, সে বিষয়ে সরকারের পক্ষ থেকে এখনো স্পষ্ট কিছু বলা হয়নি।

 

সরকারি বার্তা সংস্থা বাসস রাষ্ট্রপতির প্রেসসচিব মো. জয়নাল আবেদীনকে উদ্ধৃত করে জানায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গতকাল সংলাপে অংশ নিয়ে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদকে জানিয়েছেন, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সব প্রক্রিয়া শেষ করে আইনটি কার্যকর করা হবে।

রাষ্ট্রপ্রতিও যত দ্রুত সম্ভব এ আইন জাতীয় সংসদে পাস হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, ‘এই আইনেই জনমতের প্রতিফলন ঘটবে।’

প্রসঙ্গত, প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নুরুল হুদার নেতৃত্বাধীন বর্তমান নির্বাচন কমিশনের মেয়াদ শেষ হচ্ছে আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি।

তার আগেই নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনের প্রক্রিয়া সম্পন্ন হতে হবে।

মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদসচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম গতকাল সাংবাদিকদের বলেন, ‘আইনটি চূড়ান্ত করতে আমরা আশা করছি খুব বেশি সময় লাগার কথা নয়, ছোট আইন।’

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এ বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে গতকাল আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সাংবাদিকদের বলেন, ‘আইন পাসের বিষয়ে ম্যাজিক তাস নেই। যে প্রক্রিয়ায় আইন প্রণয়ন হয়, সেভাবেই হবে।

’ অল্প সময়ে আইন প্রণয়ন করা সম্ভব কি না, জানতে চাইলে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘কোনো কিছুই অসম্ভব নয়, অপেক্ষা করুন।’

গত ১৮ নভেম্বর নাগরিক সংগঠন ‘সুজন’-এর নেতারা আইনমন্ত্রীর কাছে নির্বাচন কমিশনারদের নিয়োগ আইনের একটি খসড়া জমা দিলে আইনমন্ত্রী তাঁদের জানান, তাঁর মন্ত্রণালয় থেকেও একটি খসড়া আইন প্রস্তুত করা হচ্ছে। তবে এবার সময়ের সংকটের কারণে এ আইন প্রণয়ন সম্ভব হবে না। আগেরবারের মতো রাষ্ট্রপতি গঠিত সার্চ কমিটির মাধ্যমেই এবার নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন করা হবে।

গতকাল এ আইনের খসড়া মন্ত্রিসভায় অনুমোদনের বিষয়ে ‘সুজন’ সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘এবার এই আইন প্রণয়ন সম্ভব নয় জানিয়েও হঠাৎ এর খসড়া মন্ত্রিসভায় অনুমোদনের বিষয়টি আমাদের কাছে বিস্ময়ের।

খসড়া আইনটি সম্পর্কে যতটা জেনেছি, তাতে আগের নির্বাচন কমিশনগুলোকে দায়মুক্তি দেওয়া হয়েছে। অথচ বর্তমান নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে।’ তিনি আরো বলেন, ‘আমাদের প্রস্তাব ছিল, যাঁদের নির্বাচন কমিশনে নিয়োগ দেওয়া হবে তাঁদের নাম-পরিচয়ের প্রাথমিক তালিকা আগে প্রকাশ করতে হবে। এতে তাঁরা নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব নেওয়ার যোগ্য কি না, তা যাচাই করা সম্ভব হবে। কিন্তু মন্ত্রিসভায় অনুমোদন পাওয়া খসড়া আইনে এ বিষয়ে কিছুই বলা নেই।’

আইনের খসড়ায় যা বলা হয়েছে : আইনটি সম্পর্কে মন্ত্রিপরিষদসচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও কমিশনার নিয়োগের জন্য একটি অনুসন্ধান কমিটি গঠন করা হবে। ছয় সদস্যের এই অনুসন্ধান কমিটির প্রধান থাকবেন প্রধান বিচারপতি মনোনীত আপিল বিভাগের একজন বিচারপতি। সদস্য থাকবেন হাইকোর্টের একজন বিচারপতি, মহাহিসাবনিরীক্ষক, সরকারি কর্মকমিশনের চেয়ারম্যান ও রাষ্ট্রপতি মনোনীত দুজন বিশিষ্ট ব্যক্তি। কমিটিকে সাচিবিক সহায়তা দেবে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। কমিটি যোগ্য ব্যক্তিদের নাম প্রস্তাব করবে। সেখান থেকে রাষ্ট্রপতি নিয়োগ দেবেন।

মন্ত্রিপরিষদসচিব জানান, প্রধান নির্বাচন কমিশনার বা নির্বাচন কমিশনার হতে হলে তাঁকে বাংলাদেশের নাগরিক হতে হবে। বয়স সর্বনিম্ন ৫০ বছর হতে হবে। গুরুত্বপূর্ণ সরকারি, আধাসরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে বা বিচার বিভাগীয় পদে কমপক্ষে ২০ বছরের কাজের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।

কারা অযোগ্য হবেন, সে বিষয়েও উল্লেখ করা হয়েছে খসড়া আইনে। অযোগ্যতার ক্ষেত্রে বলা হয়েছে : আদালতের মাধ্যমে কেউ অপ্রকৃতিস্থ হিসেবে ঘোষিত হন, দেউলিয়া ঘোষণার পর দেউলিয়া অবস্থা থেকে মুক্ত না হন, অন্য কোনো দেশের নাগরিকত্ব অর্জন করেন বা কোনো বিদেশি রাষ্ট্রের প্রতি আনুগত্য ঘোষণা করেন, নৈতিক স্খলন এবং সে ক্ষেত্রে যদি ফৌজদারি অপরাধে কমপক্ষে দুই বছর কারাদণ্ডে দণ্ডিত হন, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের রায়ে দণ্ডিত হন। আর রাষ্ট্রীয় পদে থাকলে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও কমিশনার হতে পারবেন না।

আগামী নির্বাচন কমিশন গঠন কি এ আইনের অধীনে হবে, জানতে চাইলে খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, যদি এর মধ্যে আইন পাস হয়ে যায় তাহলে হবে। আজ অনুমোদন দেওয়া হলো, হয়তো কাল-পরশু দুই দিন লাগবে আইন মন্ত্রণালয়ের। তারপর যদি উনারা সংসদে পাঠান, সংসদেও তো কয়েক দিন লাগবে। স্ট্যান্ডিং কমিটিতে যাবে, উনারা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করবেন। যদি হয় তো হয়ে যাবে। তিনি আরো বলেন, ‘আইনটি চূড়ান্ত করতে আমরা আশা করছি খুব বেশি সময় লাগার কথা নয়, ছোট আইন।’

মন্ত্রিপরিষদসচিব বলেন, এর আগে যেসব নির্বাচন কমিশন হয়েছে, সেগুলোকে ‘হেফাজত’ দেওয়া হয়েছে এ আইনে। যেহেতু এর আগে আইন ছিল না, রাষ্ট্রপতি যেসব নির্বাচন কমিশন গঠন করেছেন, তা এ আইনের অধীনে করেছেন বলে ধরে সেগুলোকে হেফাজত করা হয়েছে। 

আইন ভাঙলে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশনারদের অপসারণ কিভাবে হবে, জানতে চাইলে সচিব বলেন, ‘আমার যত দূর মনে পড়ে, যেভাবে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিরা অপসারণ হন, একই পদ্ধতি প্রযোজ্য হবে। বাকিগুলো হয়তো বিধিতে উল্লেখ করে দেওয়া হবে।’

আগে যা হয়েছে : এর আগে আইন না করেই রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপের পর রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনের লক্ষ্যে আপিল বিভাগের বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বে ছয় সদস্যের সার্চ কমিটি করে দেন। ২০১৭ সালের ২৫ জানুয়ারি এসংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। ওই সার্চ কমিটির প্রস্তাব অনুসারেই বর্তমান নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়।

তার আগে ২০১২ সালের ২২ জানুয়ারি তৎকালীন রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের উদ্যোগে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বে কমিশনারদের নিয়োগের জন্য চার সদস্যের সার্চ কমিটি গঠন করা হয়। 

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

আজ রাজপথে নামছে বিএনপি

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
আজ রাজপথে নামছে বিএনপি

পুরান ঢাকার মিটফোর্ড হাসপাতালের সামনে ব্যবসায়ী লাল চাঁদ ওরফে মো. সোহাগ হত্যাকাণ্ডের অপপ্রচার ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে শান্তিপূর্ণভাবে আজ থেকে রাজপথে থাকবে বিএনপি। বিএনপি মনে করছে, এই হত্যাকাণ্ড নিয়ে জামায়াতে ইসলাম, ইসলামী আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) রাজপথ দখল করার চেষ্টা করছে বলে মনে করছে বিএনপি। এ জন্য রাজপথে বিএনপিও শক্তি ও জনসমর্থন দেখাবে।

এখন পর্যন্ত এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত কাউকে ছাড় দিচ্ছে না দলটি।

এমনকি এ ধরনের ঘটনা যাতে আর না ঘটে সে জন্য দলে শুদ্ধি অভিযান চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন দলের শীর্ষ নেতা। দলের নেতারা বলছেন, হত্যার সঙ্গে সরাসরি জড়িত দুজনকে চিহ্নিত করতে পারেনি আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী। কিন্তু বিরোধী পক্ষ একতরফাভাবে বিএনপির ওপর দায় চাপাচ্ছে। বিএনপিকে উদ্দেশ্য করে কটূক্তি করছে।
এর জবাব দিতে রাজপথে শক্তি দেখাবে দলটি। এরই অংশ হিসেবে আজ সোমবার ছাত্রদল ও ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপি এবং অন্য অঙ্গসংগঠন পৃথক শোডাউন করবে। বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী কালের কণ্ঠকে বলেন, বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠন প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করবে। জনগণ বিএনপির সঙ্গে আছে।
জনগণকে নিয়ে দেশবিরোধীদের ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করা হবে।

মাঠে নামছে ছাত্রদল : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি জানান, গোপন তৎপরতায় দীর্ঘদিন ধরে অভ্যস্ত গুপ্ত সংগঠন কর্তৃক মব সৃষ্টির অপচেষ্টা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ বিনষ্ট করা এবং সারা দেশে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির প্রতিবাদে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল আজ রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে বিক্ষোভ মিছিল করবে। গুপ্ত সংগঠন বলতে ইসলামী ছাত্রশিবির ও তাদের সহযোগী সংগঠনকে বোঝানো হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির।

ছাত্রদলের ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী, আজ দুপুর ২টায় রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে শাহবাগ পর্যন্ত বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হবে। পাশাপাশি সারা দেশের সব জেলা ও মহানগরে বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হবে।

জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব ও সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির এ কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন।

কর্মসূচির বিষয়ে ঢাবি শাখা ছাত্রদলের সভাপতি গণেশ চন্দ্র রায় সাহস বলেন, গুপ্ত সংগঠন হিসেবে সেসব সংগঠনকেই বোঝানো হয়েছে, যারা প্রকাশ্যে নিজেদের রাজনৈতিক কার্যক্রম পরিচালনার বদলে গোপনে রাজনৈতিক এজেন্ডা বাস্তবায়ন ও সহিংসতা ছড়িয়ে দেওয়ার মাধ্যমে রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে অস্থিরতা ও বিশৃঙ্খলা তৈরি করছে। গত ৫ আগস্টের পর একটি মুক্ত রাজনৈতিক পরিবেশ থাকা সত্ত্বেও তাদের এহেন গুপ্ত কার্যক্রম এ দেশের রাজনৈতিক পরিবেশকে অসহনশীল করে তুলছে এবং রাজনৈতিক বিষয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত করে তুলছে। এ রকম কুচক্রী কার্যক্রমের বিরুদ্ধেই জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল তার কর্মসূচি গ্রহণ করেছে, যেন দেশবাসীকে এসব বিভ্রান্তিকর বিষয়ে সচেতন করে তোলা যায়।

গুপ্ত সংগঠন বলতে কাদের বোঝানো হচ্ছে জানতে চাইলে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির বলেন, ছত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর যারা ক্যাম্পাসগুলোতে মব সৃষ্টি করে সাধারণ শিক্ষার্থী নামে অপ্রীতিকর পরিস্থিতি তৈরি করছে, তারাই গুপ্ত সংগঠন। ছাত্রশিবির এবং গুপ্তভাবে সংগঠন পরিচালনা করতে ছাত্রশিবিরকে যারা পৃষ্ঠপোষকতা করে, আশ্রয়-প্রশ্রয় দেয় তারা।

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

সশস্ত্র বাহিনীর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেসির মেয়াদ আরো দুই মাস বাড়ল

বিশেষ প্রতিনিধি
বিশেষ প্রতিনিধি
শেয়ার
সশস্ত্র বাহিনীর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেসির মেয়াদ আরো দুই মাস বাড়ল

বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীতে কর্মরত সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন ও এর ওপরের সমপদমর্যাদার কর্মকর্তাদের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতার মেয়াদ আরো দুই মাস (৬০ দিন) বাড়ানো হয়েছে। এ বিষয়ে গতকাল রবিবার প্রজ্ঞাপন জারি করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। এর আগে গত ১৩ মে থেকে তাঁদের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেসির ক্ষমতার মেয়াদ দুই মাস বাড়ানো হয়েছিল। সেই মেয়াদ গতকাল শেষ হয় ।

মেয়াদ বাড়ানোর আদেশে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীতে কর্মরত সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন ও এর ওপরের সমপদমর্যাদার কমিশন্ড কর্মকর্তাদের (কোস্ট গার্ড ও বিজিবিতে প্রেষণে নিয়োজিত সমপদমর্যাদার কর্মকর্তারাসহ) ‌‘দ্য কোড অব ক্রিমিনাল প্রসিডিউর, ১৮৯৮-এর ১২(১) ও ১৭ ধারা অনুযায়ী স্পেশাল এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা অর্পণ করা হলো। এর মেয়াদ হবে ১৪ মার্চ থেকে ৬০ দিন পর্যন্ত। সারা দেশে তাঁরা এই ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারবেন বলেও প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে।

প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, সেনাবাহিনীর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা ফৌজদারি কার্যবিধি-১৮৯৮-এর ৬৪, ৬৫, ৮৩, ৮৪, ৮৬, ৯৫(২), ১০০, ১০৫, ১০৭, ১০৯, ১১০, ১২৬, ১২৭, ১২৮, ১৩০, ১৩৩ ও ১৪২ ধারার অপরাধগুলো বিবেচনায় নিতে পারবেন।

প্রথমে গত বছরের ১৭ সেপ্টেম্বর সেনাবাহিনীর কমিশন্ড অফিসারদের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছিল জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। পরে ৩০ সেপ্টেম্বর প্রজ্ঞাপন সংশোধন করে বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর কমিশন্ড অফিসারদের (সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন ও এর ওপরের সমপদমর্যাদার কর্মকর্তা) এই ক্ষমতা দেওয়া হয়। অর্থাৎ শুধু সেনাবাহিনী নয়, বিমান ও নৌবাহিনীর কমিশন্ড অফিসারদেরও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা দেওয়া হয়। তখন ৬০ দিনের জন্য এই ক্ষমতা দেওয়া হয়েছিল।

সেই মেয়াদ নভেম্বরের মাঝামাঝি শেষ হয়েছিল। পরে সেই ক্ষমতার মেয়াদ কয়েক দফায় বাড়ানো হয়।

মন্তব্য

শেখ হাসিনাসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে গুমের অভিযোগ বিএনপির

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
শেখ হাসিনাসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে গুমের অভিযোগ বিএনপির

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক ও সাবেক পুলিশপ্রধান (আইজিপি)  বেনজীর আহমেদসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর কার্যালয়ে গুমের অভিযোগ দিয়েছে বিএনপি।

গতকাল রবিবার দুপুরে ভুক্তভোগীদের সঙ্গে নিয়ে এই অভিযোগ দেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির নির্বাহী সদস্য এবং তথ্য সেলের সমন্বয়ক সালাহউদ্দিন খান।

অভিযোগ তদন্ত করে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম।

২০১৯ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত গুমের ঘটনায় ১১ জন ভুক্তভোগীর নাম উল্লেখ করা হয়েছে লিখিত অভিযোগে।

তাঁরা হলেনঝালকাঠির নলছিটির মোহাম্মদ আলী খান, সাবেক যুবদল নেতা মো. জিল্লুর রহমান, আকিদুল আলী, খোরশেদ আলম, অ্যাডভোকেট আশরাফ আলী, মো. বাবুল, এনামুল, এরশাদ আলী, মো. গিয়াস উদ্দিন খান, মো. কবির উদ্দিন খান ও নজরুল ইসলাম।

অভিযোগে বলা হয়েছে, ২০১৯ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন সময় এসব ভুক্তভোগীকে অপহরণের পর আয়নাঘরে আটকে রেখে নির্যাতন করা হয়। গত বছর ৫ আগস্ট সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পলায়নের পর মোহাম্মদ আলীকে হাত ও চোখ বেঁধে পূর্বাচলের শেষ প্রান্তে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে ফেলে আসা হয়। পাঁচ বছর তিন মাস ১৩ দিন পর তিনি মুক্তি পান।

এ ঘটনায় মোহাম্মদ আলী খান বিএনপি মহাসচিবের মাধ্যমে ন্যায়বিচার চেয়ে আবেদন করেন।

তাঁর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ১১ জন ভুক্তভোগীর নাম উল্লেখ করে আবেদনটি করা হয় বলে জানান সালাহউদ্দিন খান।

সালাহউদ্দিন খান সাংবাদিকদের বলেন, ভুক্তভোগীরা শেখ হাসিনাসহ ১৬ জন এবং অজ্ঞাতপরিচয় আরো ৩০ থেকে ৩৫ জনের নাম উল্লেখ করে ন্যায়বিচারের আশায় আবেদন করেছেন। ভুক্তভোগীরা বলেছেন, শুধু বিএনপি করার অপরাধে বিগত সরকারের নির্মম নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে তাঁদের।

মন্তব্য

সোহাগের পরিবারের পাশে তারেক রহমান

বরগুনা প্রতিনিধি
বরগুনা প্রতিনিধি
শেয়ার
সোহাগের পরিবারের পাশে তারেক রহমান

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে পুরান ঢাকায় নিহত ব্যবসায়ী লাল চাঁদ ওরফে সোহাগের পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছেন দলটির ভাইস চেয়ারম্যান নূরুল ইসলাম মনি। গতকাল রবিবার বিকেলে তিনি বরগুনা জেলার পাথরঘাটা উপজেলার কাকচিড়া ইউনিয়নের সোহাগের গ্রামের বাড়িতে যান। তিনি স্থানীয় কাকচিড়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে আয়োজিত সভায় বক্তব্য দেন।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে তিনি নিহত সোহাগের পরিবারকে ৫০ হাজার টাকা আর্থিক সহায়তা প্রদান করেন।

সোহাগের পরিবারের যেকোনো প্রয়োজনে পাশে থাকারও আশ্বাস দেন। এ ছাড়া হত্যাকাণ্ডের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে বিএনপির পক্ষ থেকে সব ধরনের সহায়তার আশ্বাস দেন। স্বামীর হত্যার বিচার চেয়ে তখন সোহাগের স্ত্রী লাকি আক্তার বলেন, আমি আমার স্বামীর হত্যাকারীদের ফাঁসি চাই। আমার পরিবারের নিরাপত্তা চাই।
সভায় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান নূরুল ইসলাম মনি বলেন, এই এলাকার সন্তান ঢাকার মিটফোর্ডের ব্যবসায়ী সোহাগকে তাঁর ব্যাবসায়িক পার্টনার ও তাদের ভাড়াটেরা নৃশংসভাবে হত্যা করেছে। বিএনপি ঘটনার সঙ্গে সঙ্গে তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। দলের পক্ষ থেকে এর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করা হয়েছে। সম্পৃক্তদের দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
বিএনপি কোনো অপকর্মকে প্রশ্রয় দেয় না। পাথরঘাটা উপজেলা বিএনপির আহবায়ক চৌধুরী মো. ফারুকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় বক্তব্য দেন বরগুনা জেলা বিএনপির সাবেক সহসভাপতি ফজলুল হক মাস্টার, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক কে এম সফিকুজ্জামান মাহফুজ, জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক জাবেদুল ইসলাম জুয়েল, জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম নাভিল প্রমুখ।

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ