বদিউল আলম মজুমদার
প্রথমেই আমি নারায়ণগঞ্জ সিটি নির্বাচনে বিজয়ের জন্য সেলিনা হায়াত আইভীকে অভিনন্দন জানাচ্ছি। একই সঙ্গে একটি সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য সংশ্লিষ্ট সব কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানাতে চাই।
একটি নির্বাচন অনুষ্ঠানে অনেকগুলো সংশ্লিষ্ট পক্ষ থাকে। এর মধ্যে নির্বাচন কমিশন, সরকার তথা প্রশাসন ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।
বিজ্ঞাপন
এই নির্বাচন সুষ্ঠু করার ক্ষেত্রে সরকারের তেমন ঝুঁকি ছিল না, বরং সুবিধা ছিল। এই নির্বাচনে ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থী হারলেও তাতে সরকার পতনের সামন্যতম আশঙ্কা ছিল না। তাদের প্রার্থী ছিলেন তারকা প্রার্থী। এই প্রার্থী অতীতে অনেক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করেছেন। নিজের জনপ্রিয়তা প্রতিষ্ঠা করেছেন। সুষ্ঠু নির্বাচনে এই প্রার্থীর জয়ের সম্ভাবনাই বেশি ছিল। সে কারণে মনে হয়, এই নির্বাচনকে কোনোভাবে প্রভাবিত না করে সরকার সুষ্ঠু নির্বাচনের পথ সুগম করেছে। কিন্তু এটাই শেষ কথা নয়।
এই সুষ্ঠু নির্বাচন আমাদের ২০১৩ সালের সিটি করপোরেশন নির্বাচন স্মরণ করিয়ে দেয়। সে সময় আজকের ক্ষমতাসীন দলই ক্ষমতায় ছিল এবং সব সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিরোধী পক্ষ জয়ী হয়। ওই নির্বাচন হয়েছিল তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিলের প্রেক্ষাপটে এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকার পুনঃপ্রতিষ্ঠার দাবিতে আন্দোলনের সময়। সরকার সে সময়ও প্রমাণ করতে চেয়েছিল যে দলীয় সরকারের অধীনেও সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব। আমরা তাতে আস্থা রেখেছিলাম। আমরা ওই আস্থার মাসুল দিয়েছি ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি সংসদ নির্বাচনে।
তাই এবার নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচন ভালো হয়েছে, এতে আমরা এই প্রত্যাশা করতে পারি না যে আগামী দিনে সব নির্বাচন ভালো হবে।
নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনের দুর্বল দিক হচ্ছে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন বা ইভিএম ব্যবহার। এতে ভোটারদের ভোট দিতে অসুবিধা হয়েছে। ইভিএম হচ্ছে একটি সাধারণ মানের যন্ত্র। প্রকৌশলী, গবেষক, শিক্ষাবিদ, বিজ্ঞানী ও তথ্য-প্রযুক্তিবিদ প্রয়াত জামিলুর রেজা চৌধুরীকে নির্বাচন কমিশনের ইভিএমবিষয়ক কারিগরি কমিটির প্রধান হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। তিনি এই ইভিএমের পক্ষে সুপারিশ করেননি। এর বিপক্ষে অবস্থান নেন তিনি। এ বিষয়গুলো আমাদের মনে রাখতে হবে।
বদিউল আলম মজুমদার, সম্পাদক, সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন)