ঢাকা, রবিবার ১৩ জুলাই ২০২৫
২৮ আষাঢ় ১৪৩২, ১৭ মহররম ১৪৪৭

ঢাকা, রবিবার ১৩ জুলাই ২০২৫
২৮ আষাঢ় ১৪৩২, ১৭ মহররম ১৪৪৭

গাংনীতে দুই ভাইকে কুপিয়ে হত্যা

  • ► কক্সবাজারে সদস্য পদপ্রার্থী গুলিবিদ্ধ
    ► পটুয়াখালীতে জখম স্বতন্ত্রপ্রার্থী
    ► যশোরে সংঘর্ষ আহত ১২
কালের কণ্ঠ ডেস্ক
কালের কণ্ঠ ডেস্ক
শেয়ার
গাংনীতে দুই ভাইকে কুপিয়ে হত্যা
দুই ছেলেকে হারিয়ে আহাজারি করছেন মা হাজেরা খাতুন। গতকাল মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার লক্ষ্মীনারায়ণপুর ধলা গ্রামে। ছবি : কালের কণ্ঠ

ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচন ঘিরে মেহেরপুরের গাংনীর কাথুলীতে দুই ভাইকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। কাথুলী ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার (ইউপি সদস্য) পদপ্রার্থী আতিয়ার রহমানের নেতৃত্বে তাঁর কর্মীরা লক্ষ্মীনারায়ণপুর ধলা গ্রামে গতকাল সোমবার সকাল ৯টার দিকে এ ঘটনা ঘটান।

নিহত ব্যক্তিরা হলেন জাহারুল ইসলাম (৫৭) ও সাহাদুল ইসলাম (৫৫)। তাঁরা মৃত সুলতান ফকিরের ছেলে এবং বর্তমান মেম্বার ও প্রার্থী আজমাইন হোসেন টুটুলের মামাতো ভাই।

ওই সংঘর্ষে উভয় পক্ষের আরো ১০ জন আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে মেম্বার আজমাইন হোসেন, জাহারুলের স্ত্রী শেফালি খাতুন, মেয়ে চম্পা খাতুন, সাহাদুলের মেয়ে সুবর্ণা খাতুন রয়েছেন। তাঁদের গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও কুষ্টিয়া মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। গত রাতে এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত থানায় মামলা করা হয়নি।
আগামী বৃহস্পতিবার কাথুলী ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের ভোটগ্রহণ হওয়ার কথা রয়েছে।

পুলিশ জানিয়েছে, লাশ দুটি ময়নাতদন্তের জন্য মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। এলাকার পরিস্থিতি এখনো থমথমে।

এ ঘটনায় আতিয়ারের ভাই মহাব্বত হোসেনসহ ১২ জনকে থানায় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। কারো সম্পৃক্ততা পাওয়া গেলে তাদের আটক দেখানো হবে। সংঘর্ষের পর র‌্যাবের একটি দল আতিয়ারের ভাইয়ের বাড়ি থেকে ১১টি ধারালো অস্ত্র, দুটি টেঁটা, একটি বল্লম ও তিনটি মাথাল উদ্ধার করেছে।

হামলায় নেতৃত্ব দেওয়া আতিয়ার রহমান গাংনী উপজেলা কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সাবেক মেম্বার। তিনি আজমাইন হোসেনের ভাই এনামুল হক নইলু হত্যা মামলার প্রধান আসামিও।

এ ঘটনার ব্যাপারে জানতে আতিয়ার রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তাঁর মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, আতিয়ারের নেতৃত্বে মাঝপাড়ার তামাল, জামাল, কামাল, জালাল, মানা, হানা, মহাব্বতসহ ১৫ থেকে ১৬ জনের একটি দল দেশি অস্ত্র নিয়ে জাহারুল ও সাহাদুলের ওপর হামলা চালায়। ঘটনাস্থলেই তাঁরা মারা যান। এ সময় উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। নিহত সাহাদুলের মেয়ে সুবর্ণা খাতুন জানান, আজমাইনের সমর্থকরা সকালে ভোট চাইতে গেলে আতিয়ারের লোকজন অতর্কিত হামলা করেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বর্তমান ইউপি সদস্য আজমাইন হোসেন ও কৃষক লীগ নেতা আতিয়ার রহমানের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে দ্বন্দ্ব চলছিল। এবার তাঁরা দুজনই নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। ২০১৭ সালে দ্বন্দ্বের জেরে আজমাইনের ভাই এনামুল হক নইলুকে আতিয়ারের লোকজন কুপিয়ে হত্যা করে। সেই মামলার প্রধান আসামি আতিয়ার। এর আগে ২০০৯ সালে আজমাইনের ভাই সেন্টুকেও আতিয়ারের লোকজন হত্যা করেছিল।

ঘটনার পর গতকাল সরেজমিনে লক্ষ্মীনারায়ণ ধলা গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, আটক এড়াতে গ্রামটি প্রায় পুরুষশূন্য। আতিয়ার গ্রুপের কোনো নারী-পুরুষকে বাড়িতে পাওয়া যায়নি। ঘটনার পরপরই তারা বিভিন্ন স্থানে আত্মগোপনে চলে গেছে। দেয়ালে আজমাইন হোসেনের নির্বাচনী পোস্টারগুলো ছেঁড়া দেখা গেছে। তবে আতিয়ার রহমানের পোস্টারগুলো ছিল অক্ষত।

আজমাইন হোসেনের ভাবি বিলকিছ আরা জানান, আজমাইনের সঙ্গে ভোটে জিততে না পেরে তাঁর সঙ্গে দ্বন্দ্বে জড়িয়েছেন আতিয়ার। এ কারণে ২০১৭ সালে তাঁর স্বামী এনামুলকেও হত্যা করেন আতিয়ার। এবারও ভোটে জিততে পারবে না ভেবে আজমাইনসহ তাঁর পুরো বংশকে খুন করার জন্য আজ এই হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে।

মেহেরপুরের পুলিশ সুপার রাফিউল আলম বলেন, ঘটনা তদন্তে পুলিশের বিভিন্ন ইউনিট কাজ শুরু করেছে।

কক্সবাজারে আরেক মেম্বার প্রার্থী গুলিবিদ্ধ : ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে কক্সবাজারে আরেকজন মেম্বার প্রার্থী গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। রেজাউর রহমান নামের ওই মেম্বার প্রার্থীকে জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। 

পুলিশ ও এলাকাবাসী জানায়, গতকাল রাত সাড়ে ৯টার দিকে পিএমখালী ইউনিয়নের তুতকখালী এলাকার বটতলী স্টেশনের একটি চায়ের দোকানের বাইরে ১০-১২ জন লোক নিয়ে তিনি নির্বাচনী প্রচারণা চালাচ্ছিলেন। এ সময় মোটরসাইকেলে এসে দুর্বৃত্তরা তাঁকে গুলি করে দ্রুত পালিয়ে যায়। গুলিবিদ্ধ মিজানুর কক্সবাজার সদর উপজেলার পিএমখালী ইউনিয়ন পরিষদের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার প্রার্থী।

গত শুক্রবার রাতে ঝিলংজা ইউনিয়নের মেম্বারপ্রার্থী কুদরত উল্লাহ সিকদার ও তাঁর ভাই জহিরুল ইসলাম সিকদার গুলিবিদ্ধ হন।

শার্শায় স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকদের হামলায় নৌকা প্রার্থীর ১২ কর্মী আহত : যশোরের শার্শার বাগআঁচড়ার সোনাতনকাটি বামুনিয়া বাজারে গত রবিবার রাতে স্বতন্ত্র প্রার্থী আব্দুল খালেক সমর্থকদের হামলায় নৌকার প্রার্থী ইলিয়াছ কবির বকুলের ১২ কর্মী আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় রাতেই আব্দুল খালেকসহ ২০ জনের নামে অভিযোগ করা হয়েছে। প্রতিবাদে বাগআঁচড়া বাজারে বিক্ষোভ করেছেন আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা।

বাউফলে স্বতন্ত্র প্রার্থীকে কুপিয়ে জখম : পটুয়াখালীর বাউফলের নওমালা ইউনিয়নে গত রবিবার রাতে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী আরিফুল ইসলামকে (৩৫) নৌকার প্রার্থী কামাল হোসেন বিশ্বাসের কর্মীরা কুপিয়ে আহত করেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। তাঁকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ খবর তাঁর (আরিফুল) কর্মীদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়লে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে ১০ জন আহত হয়।   

এদিকে বাউফলে এমপি আ স ম ফিরোজের সফর বাতিল চেয়ে গতকাল নির্বাচন কমিশনের সচিব এবং পটুয়াখালী জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত আবেদন করেছেন নওমালা ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান ও স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী শাহজাদা হাওলাদার।

দুর্গাপুরে স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থককে মারধর : নেত্রকোনার দুর্গাপুরের কুল্লাগড়া ইউনিয়নে স্বতন্ত্র প্রার্থী আবদুল আউয়ালের সমর্থক রুবেল পাঠানকে রবিবার রাতে পিটিয়ে আহত করার অভিযোগ উঠেছে আওয়ামী লীগ প্রার্থী সুব্রত সাংমার সমর্থকদের বিরুদ্ধে। এদিকে সদর উপজেলার বাংলাবাজারে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর পোস্টার আগুনে পুড়িয়েছে দুর্বৃত্তরা।

সালথায় দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার : ইউপি নির্বাচন সামনে রেখে ফরিদপুরের সালথার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করেছে পুলিশ। নির্বাচনে সহিংসতা রোধে পুলিশের বিশেষ অভিযানে এসব দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় আটজনকে আটক করেছে পুলিশ।

[প্রতিবেদনে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন সংশ্লিষ্ট এলাকার প্রতিনিধিরা।]

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

বিবিসি বাংলার দাবি

শেখ হাসিনা প্রশ্নে ভারতের অবস্থান বদলাচ্ছে না

কালের কণ্ঠ ডেস্ক
কালের কণ্ঠ ডেস্ক
শেয়ার
শেখ হাসিনা প্রশ্নে ভারতের অবস্থান বদলাচ্ছে না

ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গুলি চালানোর নির্দেশ দিয়ে শেখ হাসিনার অডিও ফাঁস কিংবা মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় তাঁর বিরুদ্ধে প্রথম অভিযোগ গঠনযত যাই হোক, বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে ভারতের অবস্থানে এখনো কোনো পরিবর্তনের লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। বাংলাদেশের অনুরোধ মেনে তাঁকে বিচারের জন্য প্রত্যর্পণ করার যে কোনো সম্ভাবনা নেই, দিল্লিতে ওয়াকিবহাল মহল সেটাও এখনো জোর দিয়েই বলছে। শেখ হাসিনা নিজেও এই দুটি বিষয়ের কোনোটি নিয়েই এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো প্রতিক্রিয়া জানাননি।

গত এগারো মাসেরও বেশি সময় ধরে ভারতের আশ্রয়ে থাকাকালে তিনি নিয়মিতই দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাষণ দিচ্ছেন বা নানাভাবে ইন্টার‌্যাক্ট করছেন।

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ফেসবুক পেজে ও ইউটিউব চ্যানেলে তিনি শেষ লাইভ ইন্টারঅ্যাকশন করেছেন গত মঙ্গলবার (৮ জুলাই) সন্ধ্যায়। কিন্তু সেখানে এই প্রসঙ্গগুলোর কোনোটিই আসেনি।

তবে বিবিসির যে তথ্যচিত্রে শেখ হাসিনার প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহারের নির্দেশের অডিও ফাঁস করা হয়েছে, তাঁর পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয় এক ফেসবুক পোস্টে সেটিকে অপসাংবাদিকতার নির্লজ্জ নজির বলে দাবি করেছেন।

এই মুহূর্তে আওয়ামী লীগের যে শত শত নেতাকর্মী ভারতে অবস্থান করছেন, তাঁদেরও অনেকেই তাঁদের নেত্রীর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগগুলো খণ্ডন করার চেষ্টায় সামাজিক মাধ্যমে সক্রিয় হয়ে উঠেছেন।

বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম এরই মধ্যে এক্স হ্যান্ডলে পোস্ট দিয়ে দাবি করেছেন, রাষ্ট্রীয় অনুমোদনপ্রাপ্ত হত্যাকাণ্ডে শেখ হাসিনা যে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত ছিলেন, সেটা বিবিসির তদন্তে প্রমাণিত। এই পরিস্থিতিতে ভারতের যে আর টালবাহানা না করে এবং শেখ হাসিনাকে আড়াল না করে তাঁকে বাংলাদেশের হাতে তুলে দেওয়া উচিতশফিকুল আলম সেই দাবিও জানিয়েছেন।

তবে ভারত সরকারের নীতিনির্ধারক ও শীর্ষ সরকারি কর্মকর্তারা একান্ত আলোচনায় পরিষ্কার বলছেন, এই দাবি মেনে নেওয়ার কোনো প্রশ্নই ওঠে না। কারণ শেখ হাসিনাকে যে পরিস্থিতিতে ও ভারতের যে নীতির ভিত্তিতে এ দেশে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে, তাতে কোনো মৌলিক পরিবর্তন ঘটেনি।

তাঁরা যুক্তি দিচ্ছেন, প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে তাঁর যদি কোনো অডিও কেউ গোপনে রেকর্ড করে সেটা ফাঁসও করে দেয়; ভারতের সেটা দেখার বিষয় নয়, আর তাঁকে এ দেশে আতিথেয়তা বা রাজনৈতিক আশ্রয় দেওয়ার সিদ্ধান্তের সঙ্গে সেই অডিওর কোনো সম্পর্ক থাকতে পারে না।  

দ্বিতীয়ত, বাংলাদেশে যে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনাসহ অন্য অভিযুক্তদের বিচারপ্রক্রিয়া শুরু হয়েছে, সেটা আদৌ কতটা সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হচ্ছে, তা নিয়েও ভারত সন্দিহান। এই পরিস্থিতিতে সেই ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে চার্জ গঠিত হলেও ভারত যে সেটাকে গুরুত্ব দেবে না, সে ইঙ্গিতও পরিষ্কার।

অবশ্য ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এখনো এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো বিবৃতি দেয়নি, বা মন্তব্যও করেনি।

প্রত্যর্পণের অনুরোধে যে কারণে সাড়া নেই : বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে যাতে বিচারের জন্য তাদের হাতে তুলে দেওয়া হয়, সেই অনুরোধ জানিয়ে সে দেশের অন্তর্বর্তী সরকার নয়াদিল্লিকে কূটনৈতিক চ্যানেলে একটি নোট ভার্বাল পাঠিয়েছিল গত ডিসেম্বর মাসেই।

ভারত সেই চিঠির প্রাপ্তি স্বীকার করে প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই, কিন্তু তার পর প্রায় সাত মাস হতে চললেও সে ব্যাপারে আর কোনো সাড়াশব্দ করেনি। বাংলাদেশের ওই প্রত্যর্পণের অনুরোধকে ভারত যে খুব একটা গুরুত্ব দিচ্ছে না, সেটাও আকারে ইঙ্গিতে একাধিকবার বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে।

ভারত সরকারের একজন শীর্ষ কর্মকর্তা এ প্রসঙ্গে বিবিসিকে বলেছিলেন, আমাদের দুই দেশের মধ্যে প্রত্যর্পণ চুক্তি আছে ঠিকই, কিন্তু কোনো দেশ যদি মনে করে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হলে তিনি রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হবেন, তাহলে প্রত্যর্পণের অনুরোধ নাকচ করার অধিকারও তাদের আছে।

তাঁর যুক্তি ছিল, বাংলাদেশে যেভাবে শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে ঢালাওভাবে হত্যা মামলা আনা হচ্ছে, অভিযুক্তদের আইনজীবীরা পর্যন্ত আদালতে হাজির হতে পারছেন না কিংবা সালমান এফ রহমান, আনিসুল হক বা দীপু মনির মতো সাবেক নেতা-মন্ত্রীদের আদালত প্রাঙ্গণেই শারীরিকভাবে হেনস্তা করা হচ্ছে, তাতে এই বিচারপ্রক্রিয়া নিয়ে হাজারটা প্রশ্ন উঠতে বাধ্য।

এখন শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে সেই ট্রাইব্যুনালে মানবতাবিরোধী অপরাধে আনুষ্ঠানিক চার্জ গঠন সম্পন্ন হলেও তাতে বিচারপ্রক্রিয়ার গুণগত মানে কোনো পরিবর্তন হয়েছেএমনটা ভারত মনে করছে না। আর সে কারণেই চার্জ গঠন হলেও শেখ হাসিনাকে বিচারের জন্য ভারত বাংলাদেশের হাতে তুলে দেবেএই সম্ভাবনা নেই বললেই চলে।

তবে এগুলো সবই মূলত ঘোষিত যুক্তি। ভারতের একাধিক সাবেক কূটনীতিবিদ বিবিসিকে বলেছেন, শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণের অনুরোধ নাকচ করার আসল কারণটা হলো রাজনৈতিক। তাঁদের বক্তব্য হলো, দক্ষিণ এশিয়ার কোনো দেশে সবচেয়ে বেশি দিন ধরে যিনি ভারতের আস্থাভাজন ও পরীক্ষিত বন্ধুর ভূমিকায় ছিলেন, তিনি শেখ হাসিনা। ঢাকায় নিযুক্ত ভারতের এক সাবেক হাইকমিশনার বিবিসিকে বলেছেন, আজ সংকটের মুহূর্তে ভারত যদি তাঁর পাশে না দাঁড়ায়, ভবিষ্যতে প্রতিবেশী দেশের কোনো নেতা-নেত্রীই ভারতকে আর কখনো বিশ্বাস করতে পারবেন না। আর এটাই সেই প্রকৃত কারণচার্জশিট পেশ হোক বা না হোক, অডিও লিক হোক বা না হোকভারত যে জন্য কখনোই শেখ হাসিনাকে বিচারের জন্য বাংলাদেশের হাতে তুলে দেবে না।

শেখ হাসিনা নিজেই যা বলার বলবেন : গত বাহাত্তর ঘণ্টায় শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে নতুন করে মানবতাবিরোধী অপরাধে সম্পৃক্ত থাকার যেসব অভিযোগ উঠেছে বা আদালতে যে চার্জশিট পেশ হয়েছে, তা নিয়ে ভারত অবশ্য প্রকাশ্যে কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি।

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র এ প্রসঙ্গে বিবিসিকে বলেন, আমরা শেখ হাসিনার মুখপাত্র নই। তিনি যেসব বক্তব্য দেন তার সঙ্গে ভারত সরকারের যে কোনো সম্পর্ক নেই, সেটা অনেক আগেই আমরা স্পষ্ট করে দিয়েছি।

ওই কর্মকর্তার বক্তব্য ছিল, শেখ হাসিনা ভারতের একজন অতিথি, কোনো রাজনৈতিক বন্দি নন। কাজেই ভারত তাঁর মুখে লাগাম পরানোর কোনো প্রয়োজন বোধ করেনি কখনোই! সূত্র : বিবিসি বাংলা

মন্তব্য

হত্যার ঘটনায় কঠোর বিএনপি

    এক বছরে হাজারের বেশি নেতাকর্মী বহিষ্কার : যুবদল
নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
হত্যার ঘটনায় কঠোর বিএনপি

পুরান ঢাকার মিটফোর্ড হাসপাতালের সামনে প্রকাশ্যে মাথা থেঁতলে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় কঠোর অবস্থান নিয়েছে বিএনপি এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনগুলো। মামলার আসামি পাঁচজনকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করেছে জাতীয়তাবাদী যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদল।

যুবদল বলেছে, গত এক বছরে অপকর্মের অভিযোগে এক হাজারের বেশি নেতাকর্মীকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী সম্প্রতি বলেন, দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে বিএনপি, এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের প্রায় পাঁচ হাজার নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে বহিষ্কারসহ বিভিন্ন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

রিজভী গতকাল ঢাকায় এক অনুষ্ঠানে বলেন, মিটফোর্ডের ঘটনায় বিএনপি বা বিএনপির অঙ্গসংগঠনের নামে যাদের নাম পাওয়া গেছে, তাদের রাতেই আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে। বিএনপি একটা বৃহৎ পরিবার। কোনো ছিদ্রপথে দু-একজন দুষ্কৃতকারী ঢুকে পড়ে, সেটা সব সময় হয়তো খোঁজ রাখা যায় না। এত বড় একটা পরিবার।

কিন্তু কোনোভাবে যদি দুষ্কৃতকারীকে চিহ্নিত করা যায়, তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে দল কখনোই কার্পণ্য করেনি।

 

মূল আসামিদের এজাহার থেকে বাদ দেওয়া রহস্যজনক : বিএনপির তিন সংগঠন

পুরান ঢাকার মিটফোর্ড হাসপাতালের সামনে প্রকাশ্যে মাথা থেঁতলে হত্যাকাণ্ডের ঘটনার মূল আসামিদের এখনো গ্রেপ্তার না করা এবং মামলার এজাহার থেকে তাদের বাদ দেওয়া রহস্যজনক বলে দাবি করেছে বিএনপির তিন সংগঠন। গতকাল সকালে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জাতীয়তাবাদী যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদল যৌথ সংবাদ সম্মেলন করে। তিন সংগঠনের পক্ষে যুবদলের সভাপতি এম মোনায়েম মুন্না বক্তব্য দেন।

তিনি বলেন, এই ঘটনায় যারা সরাসরি সংশ্লিষ্ট, ভিডিও ফুটেজ ও সিসি ক্যামেরায় যাদের দেখা গেছে, আশ্চর্যজনকভাবে তাদের মামলার প্রধান আসামি করা হয়নি। যারা প্রাণঘাতী আঘাতগুলো করেছে, তারা অদ্যাবধি গ্রেপ্তারও হয়নি। এর কারণ আমাদের বোধগম্য নয়। বাদীর মেয়ে বলেছেন, মামলার এজাহারে খুনের সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত তিনজন খুনিকে পুলিশ কৌশলে বাদ দিয়ে নিরপরাধ তিনজনকে আসামি করেছে। ঘটনার ৬০ ঘণ্টার বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও খুনের প্রমাণাদি হাতে থাকা সত্ত্বেও অদ্যাবধি মূল আসামিদের গ্রেপ্তার করা গেল না! এটা একটা বিরাট প্রশ্ন ও রহস্য।

মুন্না বলেন, আমরা জানতে চাই, কারা কেন এই তিন আসামিকে বাদ দিয়ে নতুন করে অন্যজনকে আসামি করল, এটা আমরা জানতে চাই। আর ঘটনাটি বুধবারের। গতকাল শনিবার এই ঘটনা ব্যাপকভাবে প্রচারিত হয়েছে। দুই দিন আগের ঘটনা কেন দুই দিন পর প্রচার করা হলো? এর পেছনে কারা জড়িত, সেটাও খুঁজে দেখা উচিত। আপনাদের মাধ্যমে দেশের আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কাছে এই প্রশ্নটি রেখে এর যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানাচ্ছি।

এম মোনায়েম মুন্না বলেন, আমরা এক তীব্র মানসিক যাতনা নিয়ে এই সংবাদ সম্মেলন করছি। দেশের সার্বিক আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতিতে আমরা অত্যন্ত উদ্বিগ্ন। এই নৃশংস বর্বরতা প্রত্যক্ষ করে পুরো জাতি স্তম্ভিত। আমি এই নৃশংসতার তীব্র নিন্দা, প্রতিবাদ ও ধিক্কার জানাচ্ছি। সভ্যতার এই যুগে এমন আদিম বর্বরতা আমরা কোনোভাবে মেনে নিতে পারি না। এই ঘটনায় সংশ্লিষ্ট ইন্ধনদাতা হিসেবে যাদের নাম এসেছে, মামলায় যাদের আসামি করা হয়েছে, তার মধ্যে আমাদের তিন সংগঠনের পাঁচজনকে গতকাল আজীবনের জন্য বহিষ্কার করেছি। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর প্রতি আহবান জানিয়েছি অতি দ্রুত তাদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার জন্য। সাংগঠনিক দায়বদ্ধতা ও জবাবদিহির জায়গা থেকে যা কিছু প্রয়োজন, আমরা সেই ব্যবস্থাগুলো নিয়েছি। অভিযোগ পেলে কাউকে ছাড় দিচ্ছি না।

তিনি বলেন, বিদ্যমান পরিস্থিতিতে সরকার ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর কঠোর হওয়ার কোনো বিকল্প নেই। আপনারা আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতিকল্পে কার্যকর পদক্ষেপ নিন। এখানে আমাদের যদি কোনো ধরনের সহযোগিতার প্রয়োজন হয়, আমরা তা করতে সর্বদা প্রস্তুত আছি।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এস এম জিলানী, সাধারণ সম্পাদক রাজীব আহসান, যুবদলের সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম নয়ন, সিনিয়র সহসভাপতি রেজাউল করীম পল, ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব, সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির প্রমুখ।

মন্তব্য

খুলনায় সাবেক যুবদল নেতা হত্যাকাণ্ডে জড়িতরা শনাক্ত

    ১১ মাসে ২৭ হত্যা
খুলনা অফিস
খুলনা অফিস
শেয়ার
খুলনায় সাবেক যুবদল নেতা হত্যাকাণ্ডে জড়িতরা শনাক্ত

খুলনা মহানগরে ১১ মাসে ২৭টি হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। সেই সঙ্গে প্রতিনিয়ত ঘটছে চুরি, ছিনতাই, হামলার মতো ঘটনা। এ অবস্থায় আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন খুলনার বিভিন্ন মহলের প্রতিনিধিরা। সর্বশেষ গত শুক্রবার দুপুরে সন্ত্রাসীরা গুলি করে এবং পরে রগ কেটে নিজ বাড়ির সামনে হত্যা করে যুবদলের সাবেক নেতা মাহবুবুর রহমান মোল্লাকে।

তাঁর হত্যাকারীদের শনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে বলে পুলিশ দাবি করেছে। তবে গতকাল শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত জড়িত কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।

খুলনার পুলিশ দাবি করছে, ১১ মাসে সংঘটিত হত্যাকাণ্ডের মধ্যে বেশির ভাগের কারণ চিহ্নিত করা হয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে জড়িতদের গ্রেপ্তারও করা হয়েছে।

পুলিশ চেষ্টা করছে আইন-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে আনতে। খুলনা মহানগর পুলিশের (কেএমপি) তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট থেকে চলতি বছরের ১১ জুলাই পর্যন্ত খুলনা মহানগরীতে ২৭টি হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। এই সময়ে মামলা করা হয় ২০টি।

খুলনা মহানগরের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতিতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন খুলনা বিএনপির নেতারা।

মহানগর বিএনপি সভাপতি অ্যাডভোকেট শফিকুল আলম মনা, জেলা বিএনপির আহবায়ক মনিরুজ্জামান মন্টুসহ পদস্থ নেতারা গত শুক্রবার রাতে যুক্ত বিবৃতিতে বলেছেন, খুন, অস্ত্রের মহড়া, চুরি, ডাকাতি ও লুটপাটের মতো ঘটনা খুলনায় নিত্যদিন ঘটছে। প্রায় প্রতিদিনই কোথাও না কোথাও ঘটছে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া, গোলাগুলি, খুনসহ সন্ত্রাসী ঘটনা। তাঁরা বলেন, মহানগরীর আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির দায়ভার আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারীরা কোনোভাবেই এড়াতে পারেন না। তাই দ্রুত আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার উদ্যোগ নিতে হবে।

খুলনার নাগরিক সমাজের সদস্যসচিব অ্যাডভোকেট বাবুল হাওলাদার বলেন, সন্ধ্যা নামলেই খুলনাবাসীর মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করে।

এখন আবার শুরু হয়েছে প্রকাশ্য দিবালোকে খুনের ঘটনা। খুলনার পুলিশ প্রশাসন আইন-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে আনতে চরমভাবে ব্যর্থ হচ্ছে।

কেএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) মোহাম্মদ রাশিদুল ইসলাম খান কালের কণ্ঠকে বলেন, আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। তবে সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলো বিভিন্নভাবে বিভক্ত হয়ে তাদের আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টা করছে। যার ফলে অপরাধগুলো ঘটছে। খুলনা মহানগরের দৌলতপুর থানা যুবদলের সাবেক সহসভাপতি মো. মাহবুবুর রহমান মোল্লা হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত তিন ব্যক্তিকে শনাক্ত করেছে পুলিশ। তাঁদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে জানিয়ে মোহাম্মদ রাশিদুল ইসলাম খান জানান, গতকাল শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত কোনো আসামিকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি।

নিহত মাহবুবুরের বাবা মো. আ. করিম মোল্লা বাদী হয়ে গতকাল দুপুরে দৌলতপুর থানায় হত্যা মামলা করেছেন। মামলার আসামিদের সবাই অজ্ঞাতপরিচয়। মামলা তদন্ত করছেন দৌলতপুর থানার ওসি মীর আতাহার আলী। তিনি জানিয়েছেন, আপাতত হত্যার কারণ বলা যাচ্ছে না। পুলিশের দুটি এবং ডিবির একটি মিলে মোট তিনটি দল রহস্য উদঘাটনের চেষ্টা করছে। তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে খুলনা পুলিশের এক কর্মকর্তা জানান, ৫ আগস্ট-পরবর্তী দুটি মামলার জের, দলীয় কোন্দল, স্থানীয় প্রভাব-প্রতিপত্তি, মাদক ও চরমপন্থী সংযোগ, খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুয়েট) হামলাসহ সাতটি বিষয় সামনে রেখে পুলিশ তদন্ত করছে।

গত শুক্রবার দুপুর দেড়টায় দৌলতপুর থানার মহেশ্বরপাশা পশ্চিমপাড়ার নিজ বাড়ির সামনে মোটরসাইকেলযোগে আসা তিন অস্ত্রধারী মাহবুবুরকে (৪০) প্রথমে গুলি করে এবং পরে দুই পায়ের রগ কেটে হত্যা করে। ওই দিন বিকেলে খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে ময়নাতদন্ত শেষে রাতেই পারিবারিক কবরস্থানে তাঁকে দাফন করা হয়।

গতকাল সকালে নিহতের বাড়িতে গেলে মাহবুবুরের স্ত্রী এ্যারিন সুলতানা বলেন, আমার স্বামী সবাইকে বিশ্বাস করতেন। ঘটনার কিছুদিন আগে থেকেই তাঁকে বিভিন্নভাবে হুমকি দেওয়া হচ্ছিল। সম্প্রতি বাড়ি এসেও একটা গ্রুপ হুমকি দিয়ে গেছে। নিহত মাহবুবুরের দুটি মেয়ে রয়েছে। বড় মেয়ে জান্নাতুল (১১) চতুর্থ শ্রেণির এবং ছোট মেয়ে মাওয়া (৯) দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্রী।

নিহত মাহবুবুরের এক আত্মীয় বলেন, মূলত দুটি মামলাকে কেন্দ্র করেই তার সঙ্গে স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাদের বিরোধ হয়। একটি মামলার বাদী মাহবুব নিজে এবং অন্যটির বাদী মো. জাকির হোসেন। ওই দুটি মামলার আসামিরা মাহবুবকে কয়েকবার হুমকি দিয়েছিল।

মন্তব্য
আইন উপদেষ্টা

হত্যার বিচার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
হত্যার বিচার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে

আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেছেন, রাজধানীর পুরান ঢাকার স্যার সলিমুল্লাহ মেডিক্যাল কলেজ (মিটফোর্ড) হাসপাতালের সামনে ভাঙারি ব্যবসায়ী সোহাগকে নৃশংসভাবে হত্যার বিচার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের অধীনে করা হবে।

গতকাল শনিবার নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে তিনি এসব কথা বলেন।

স্ট্যাটাসে ড. আসিফ নজরুল লেখেন, মিটফোর্ডের নারকীয় হত্যাকাণ্ডের দ্রুত বিচার নিশ্চিত করতে সরকার বদ্ধপরিকর। এরই মধ্যে এই ঘটনায় জড়িত পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

 

তিনি জানান, পুলিশ সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত শুরু করেছে। এই পাশবিক হত্যাকাণ্ডের দ্রুত বিচার করে দায়ীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হবে। দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল আইন, ২০০২-এর ধারা ১০ অনুযায়ী এই মামলাটি দ্রুততম সময়ের মধ্যে নিষ্পত্তির জন্য ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তর করা হবে বলে জানান তিনি।

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ