ঢাকা, সোমবার ১৪ জুলাই ২০২৫
৩০ আষাঢ় ১৪৩২, ১৮ মহররম ১৪৪৭

ঢাকা, সোমবার ১৪ জুলাই ২০২৫
৩০ আষাঢ় ১৪৩২, ১৮ মহররম ১৪৪৭
প্রতীক নিয়ে আজ মাঠে নামছেন প্রার্থীরা

বিনা ভোটে চেয়ারম্যান ৮১ জন, সদস্য ২৭৯

কাজী হাফিজ
কাজী হাফিজ
শেয়ার
বিনা ভোটে চেয়ারম্যান ৮১ জন, সদস্য ২৭৯

দ্বিতীয় ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে বিনা ভোটে জয়ী হওয়া চেয়ারম্যানের সংখ্যা ৮১ জন। এ ছাড়া সাধারণ ওয়ার্ডে ২০৩ জন এবং নারীদের জন্য সংরক্ষিত ওয়ার্ডে ৭৬ জন সদস্য ভোট ছাড়াই জনপ্রতিনিধি হলেন। নির্বাচন কমিশন গতরাতে এ তথ্য জানিয়েছে।

গতকাল মঙ্গলবার এই নির্বাচনে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের প্রতিদ্বন্দ্বীদের অনেকে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের মাধ্যমে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ান।

ফলে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ীদের সংখ্যা বাড়ে।

বরিশালের আগৈলঝাড়ায় প্রতিপক্ষরা প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নেওয়ার পর এ উপজেলার পাঁচটি ইউপিতে চেয়ারম্যান পদে ভোটের প্রয়োজন হচ্ছে না। সাধারণ ওয়ার্ড সদস্য এবং সংরক্ষিত ওয়ার্ডের সদস্য পদেও একই ধরনের ঘটনা ঘটেছে। লাকসামের কিছু ক্ষেত্রে অভিযোগ—প্রার্থিতা প্রত্যাহারে অনেককে বাধ্য করা হয়েছে।

এ নির্বাচনে মনোনয়ন বাণিজ্যের সঙ্গে প্রত্যাহার বাণিজ্যও যোগ হয়েছে বলে বিশেষজ্ঞদর মত। তবে প্রথম ধাপের নির্বাচনে বিনা ভোটে জয়ীদের তুলনায় দ্বিতীয় ধাপে তা কম।

আজ বুধবার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের প্রতীক বরাদ্দ দেবেন সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং অফিসাররা। একই সঙ্গে এ নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক প্রচারও শুরু হবে আজ।

নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের হিসাব অনুসারে এ দফার নির্বাচনে ৩২টি ইউপিতে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ছাড়া অন্য কোনো দলের বা স্বতন্ত্র প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দেননি। মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাইয়ে একক প্রার্থী আরো একজন বাড়ে। চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলার ৩ নম্বর জোরারগঞ্জ ইউপি চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল হওয়ায় সেখানে আওয়ামী লীগের একক প্রার্থী। এর ফলে চেয়ারম্যান পদে একক প্রার্থী রয়েছেন—এমন ইউপির সংখ্যা ৩৩-এ পৌঁছে যায়।

গতকাল প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিনে একক প্রার্থীর সংখ্যা আরো বেড়ে যায়।

চেয়ারম্যান পদে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেন মোট ৫৭২ জন। সংরক্ষিত ওয়ার্ডের সদস্য পদে ১৯৩ জন এবং সাধারণ ওয়ার্ডের সদস্য পদে এক হাজার ৬৬৪ প্রার্থী তাঁদের প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেন। এ অবস্থায় ৮৪৬ ইউপিতে বিনা ভোটে জয়ীরা বাদে চূড়ান্ত প্রার্থী হিসেবে চেয়ারম্যান পদে তিন হাজার ৩১০, সংরক্ষিত ওয়ার্ডে ৯ হাজার ১৬১ এবং সাধারণ ওয়ার্ডে ২৮ হাজার ৭৭৪ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতায় থাকলেন।

যে ৮১ টি ইউপি বিনা ভোটের চেয়ারম্যান পেতে যাচ্ছে তার মধ্যে রয়েছে —সিরাজগঞ্জ সদরের সয়দাবাদ, ছোনগাছা ও সয়দাবাদ, রায়গঞ্জ উপজেলার ধানগড়া, ধমাইনগর ও ব্রহ্মগাছা; যশোর চৌগাছার ফুলসারা; মাগুরা সদরের হাজরাপুর; বাগেরহাট সদরের গোটাপাড়া, যাত্রাপুর, ষাটগুম্বজ এবং মোল্লাহাটের গাংনী; জামালপুর সদরের রশিদপুর; শেরপুর সদরের কামারেরচর, গাজীর খামার ও পাকুড়িয়া; কিশোরগঞ্জের বাজিতপুরের বলিয়ারদি, হালিমপুর ও মাইজচর; মানিকগঞ্জের সিংগাইরের বায়রা; নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের মুড়াপাড়া, গোলাকান্দাইল ও ভুলতা; চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের সৈয়দপুর, মুরাদপুর, কুমিরা, সোনাইছড়ি ও ভাটিয়ারী, মিরসরাইয়ের করেরহাট, ধুম, ওসমানপুর, কাটাছাড়া, মঘাদিয়া, মায়ানী, হাইতকান্দি, ইছাখালী ও ৩ নম্বর জোরারগঞ্জ; কুমিল্লার লাকসামের কান্দিরপাড়, গোবিন্দপুর, উত্তরদা, আজগরা ও লাকসাম পূর্ব; ফেনীর ফুলগাজীর ফুলগাজী, মুন্সিরহাট ও আনন্দপুর; বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার রাজিহার, বাকাল, বাগধা, গৈলা ও রত্নপুর; ভোলার দৌলতখান উপজেলার চরখলিফা; মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার রমজানপুর; শরীয়তপুরের সদর উপজেলার চন্দ্রপুর, চিতলিয়া ও বিনোদপুর এবং লক্ষ্মীপুরের কমলনগরের চরলরেন্স।

বরিশালের আগৈলঝাড়ায় দ্বিতীয় ধাপের জন্য নির্ধারিত পাঁচটি ইউপির সব কটিতেই আওয়ামী লীগের প্রার্থী ছাড়া অন্যরা সবাই তাঁদের প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নিয়েছেন।

এর আগে এ ধাপে কুমিল্লার লাকসাম উপজেলার পাঁচটি ইউপির কোনোটিতেই চেয়ারম্যান পদে ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থীরা ছাড়া আর কোনো প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দেননি। শুধু চেয়ারম্যান পদেই নয়, ওই পাঁচটি ইউনিয়নের সাধারণ সদস্যের ৪৫টি পদের মধ্যে ৪৪টিতে এবং সংরক্ষিত ওয়ার্ডের নারী সদস্যের ১৫টি পদের সব কটিতে একজনের বেশি প্রার্থী ছিলেন না। গতকাল সাধারণ সদস্য পদের বাকি একটি—উত্তরদা ইউনিয়নের ১ নম্বর সাধারণ ওয়ার্ডে দুজন প্রার্থীর মধ্যে একজন প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। এর ফলে লাকসাম উপজেলার ওই পাঁচটি ইউপিতে কোনো পদের জন্যই ভোটের প্রয়োজন হচ্ছে না।

অভিযোগ রয়েছে, ক্ষমতাসীন দলের বাইরের প্রার্থীদের অনেকে নানা ধরনের হুমকির কারণে রিটার্নিং অফিসারের কাছে মনোনয়নপত্র জমা দেননি বা জমা দিলেও পরে প্রত্যাহার করে নিতে বাধ্য হয়েছেন। প্রত্যাহার বাণিজ্যও চলেছে।

গাজীপুরের কাপাসিয়ায় দুটি ইউপির দুই চেয়ারম্যান প্রার্থীকে নির্বাচন থেকে সরে না দাঁড়ালে হত্যার হুমকি দেওয়া হয় বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ওই দুই চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী হলেন রায়েদ ইউনিয়নের আমিনা মুনমুন ও দুর্গাপুর ইউনিয়নের এম এ ওহাব খান খোকা। গত সোমবার রাতে পৃথক দুই জনাকীর্ণ এলাকায় তাঁদের হুমকি দেওয়া হয় মর্মে তাঁরা গতকাল দুপুরে থানায় অভিযোগ করেন।

কাপাসিয়া থানার ওসি এ এফ এম নাসিম এ বিষয়ে বলেন, ‘আলাদা দুটি অভিযোগই পেয়েছি। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

হুমকি দিয়ে প্রার্থিতা প্রত্যাহারে বাধ্য করা হচ্ছে বলে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের পক্ষেও অভিযোগ রয়েছে। দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব ও মুখপাত্র মাওলানা গাজী আতাউর রহমান গত রাতে কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আমাদের প্রার্থীদের বিভিন্নভাবে হুমকি-ধমকি দিয়ে, উঠিয়ে নিয়ে গিয়ে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করানো হচ্ছে। সারা দেশে এ নিয়ে আমরা এক ধরনের দস্যুতার শিকার। প্রার্থীদের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানেও নানা ধরনের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা হচ্ছে।’

এ বিষয়ে কোথাও কোনো লিখিত অভিযোগ করেছেন কি না—এ প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘কার কাছে অভিযোগ করব? যাদের কাছে অভিযোগ করার কথা, তারাই তো ওদের পক্ষে।’

অভিযোগের বিষয়ে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, এ ধরনের ঢালাও মৌখিক অভিযোগ যারা করে, তাদের উচিত নির্বাচন কমিশনের কাছে লিখিত অভিযোগ দেওয়া। এ বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণের দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের। কোনো অভিযোগের সত্যতা পেলে নির্বাচন কমিশন নিশ্চয় ব্যবস্থা নেবে।

স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. তোফায়েল আহমেদ এ পরিস্থিতি সম্পর্কে বলেন, এ ধরনের নির্বাচন অর্থহীন। নির্বাচনে কে জিতবেন তা আগে থেকেই নির্ধারিত হয়ে যাচ্ছে। এখানে ভোটারদের পছন্দ- অপছন্দের কোনো সুযোগ থাকছে না। সরকারি দলের প্রার্থীদের বাইরে অন্যরা ভাবছেন, কনটেস্ট করে কী লাভ? নির্বাচনের যে চরিত্র থাকা দরকার, তা এখন নেই। বাংলাদেশ এখন সে অবস্থানে নেই।

এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের পথ কী—এ প্রশ্নে তিনি বলেন, আপাতত কোনো পথ নেই। অদূর ভবিষ্যতে পরিস্থিতির উন্নতি হবে সে ধরনের কোনো লক্ষণও দেখা যাচ্ছে না।

নাগরিক সংগঠন ‘সুজন’ সম্পাদক অধ্যাপক ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, ‘আমরা চরম অরাজকতার দিকে যাচ্ছি। নির্বাচনে ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থীর প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে দাঁড়াতে অনেকে সাহস পাচ্ছেন না। কেউ দাঁড়ালে নানা ধরনের অত্যাচার-নির্যাতনের শিকার হতে হচ্ছে। কোনো সভ্য সমাজে এ ধরনের ঘটনা ঘটতে পারে না।’

এর আগে প্রথম ধাপে গত ২১ জুন ও ২০ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত ৩৬৪টি ইউপির মধ্যে ৭২ জন চেয়ারম্যান একক প্রার্থী হিসেবেই জনগণের ভোট ছাড়াই নির্বাচিত হয়েছেন।

এ ধাপে ৮৪৬ ইউপির মধ্যে আওয়ামী লীগ চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী দেয় ৮৩৮ ইউপিতে, গোপালগঞ্জের কাশিয়ানির সাতটি এবং রাঙামাটির বরকল ইউপির বড়হরিণা ইউপিতে আওয়ামী লীগ কোনো প্রার্থী দেয়নি। এই আটটি ইউপিতে আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন। এ ছাড়া মনোনয়নপত্র বাছাইয়ে আওয়ামী লীগের ৮৩৮ জন প্রার্থীর মধ্যে বাদ পড়েন ১১ জন। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ প্রার্থী দেয় ৩৬৮ ইউপিতে, বাছাইয়ে বাদ পড়ে ১০ ইউপি থেকে। জাতীয় পার্টি (জাপা) প্রার্থী দেয় ১০৭ ইউপিতে, বাদ পড়েছে দুই ইউপিতে। জাকের পার্টি প্রার্থী দিয়েছে ৪৯ ইউপিতে, বাদ পড়ে দুই ইউপি থেকে। চেয়ারম্যান পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী ছিলেন দুই হাজার ৬৫৫ জন, বাছাইয়ে বাদ পড়েন ৯৯ জন।

[প্রতিবেদনটি তৈরিতে স্থানীয় নিজস্ব প্রতিবেদক ও প্রতিনিধিরা তথ্য দিয়েছেন]

 

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

আজ রাজপথে নামছে বিএনপি

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
আজ রাজপথে নামছে বিএনপি

পুরান ঢাকার মিটফোর্ড হাসপাতালের সামনে ব্যবসায়ী লাল চাঁদ ওরফে মো. সোহাগ হত্যাকাণ্ডের অপপ্রচার ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে শান্তিপূর্ণভাবে আজ থেকে রাজপথে থাকবে বিএনপি। বিএনপি মনে করছে, এই হত্যাকাণ্ড নিয়ে জামায়াতে ইসলাম, ইসলামী আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) রাজপথ দখল করার চেষ্টা করছে বলে মনে করছে বিএনপি। এ জন্য রাজপথে বিএনপিও শক্তি ও জনসমর্থন দেখাবে।

এখন পর্যন্ত এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত কাউকে ছাড় দিচ্ছে না দলটি।

এমনকি এ ধরনের ঘটনা যাতে আর না ঘটে সে জন্য দলে শুদ্ধি অভিযান চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন দলের শীর্ষ নেতা। দলের নেতারা বলছেন, হত্যার সঙ্গে সরাসরি জড়িত দুজনকে চিহ্নিত করতে পারেনি আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী। কিন্তু বিরোধী পক্ষ একতরফাভাবে বিএনপির ওপর দায় চাপাচ্ছে। বিএনপিকে উদ্দেশ্য করে কটূক্তি করছে।
এর জবাব দিতে রাজপথে শক্তি দেখাবে দলটি। এরই অংশ হিসেবে আজ সোমবার ছাত্রদল ও ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপি এবং অন্য অঙ্গসংগঠন পৃথক শোডাউন করবে। বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী কালের কণ্ঠকে বলেন, বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠন প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করবে। জনগণ বিএনপির সঙ্গে আছে।
জনগণকে নিয়ে দেশবিরোধীদের ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করা হবে।

মাঠে নামছে ছাত্রদল : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি জানান, গোপন তৎপরতায় দীর্ঘদিন ধরে অভ্যস্ত গুপ্ত সংগঠন কর্তৃক মব সৃষ্টির অপচেষ্টা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ বিনষ্ট করা এবং সারা দেশে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির প্রতিবাদে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল আজ রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে বিক্ষোভ মিছিল করবে। গুপ্ত সংগঠন বলতে ইসলামী ছাত্রশিবির ও তাদের সহযোগী সংগঠনকে বোঝানো হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির।

ছাত্রদলের ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী, আজ দুপুর ২টায় রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে শাহবাগ পর্যন্ত বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হবে। পাশাপাশি সারা দেশের সব জেলা ও মহানগরে বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হবে।

জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব ও সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির এ কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন।

কর্মসূচির বিষয়ে ঢাবি শাখা ছাত্রদলের সভাপতি গণেশ চন্দ্র রায় সাহস বলেন, গুপ্ত সংগঠন হিসেবে সেসব সংগঠনকেই বোঝানো হয়েছে, যারা প্রকাশ্যে নিজেদের রাজনৈতিক কার্যক্রম পরিচালনার বদলে গোপনে রাজনৈতিক এজেন্ডা বাস্তবায়ন ও সহিংসতা ছড়িয়ে দেওয়ার মাধ্যমে রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে অস্থিরতা ও বিশৃঙ্খলা তৈরি করছে। গত ৫ আগস্টের পর একটি মুক্ত রাজনৈতিক পরিবেশ থাকা সত্ত্বেও তাদের এহেন গুপ্ত কার্যক্রম এ দেশের রাজনৈতিক পরিবেশকে অসহনশীল করে তুলছে এবং রাজনৈতিক বিষয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত করে তুলছে। এ রকম কুচক্রী কার্যক্রমের বিরুদ্ধেই জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল তার কর্মসূচি গ্রহণ করেছে, যেন দেশবাসীকে এসব বিভ্রান্তিকর বিষয়ে সচেতন করে তোলা যায়।

গুপ্ত সংগঠন বলতে কাদের বোঝানো হচ্ছে জানতে চাইলে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির বলেন, ছত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর যারা ক্যাম্পাসগুলোতে মব সৃষ্টি করে সাধারণ শিক্ষার্থী নামে অপ্রীতিকর পরিস্থিতি তৈরি করছে, তারাই গুপ্ত সংগঠন। ছাত্রশিবির এবং গুপ্তভাবে সংগঠন পরিচালনা করতে ছাত্রশিবিরকে যারা পৃষ্ঠপোষকতা করে, আশ্রয়-প্রশ্রয় দেয় তারা।

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

সশস্ত্র বাহিনীর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেসির মেয়াদ আরো দুই মাস বাড়ল

বিশেষ প্রতিনিধি
বিশেষ প্রতিনিধি
শেয়ার
সশস্ত্র বাহিনীর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেসির মেয়াদ আরো দুই মাস বাড়ল

বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীতে কর্মরত সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন ও এর ওপরের সমপদমর্যাদার কর্মকর্তাদের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতার মেয়াদ আরো দুই মাস (৬০ দিন) বাড়ানো হয়েছে। এ বিষয়ে গতকাল রবিবার প্রজ্ঞাপন জারি করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। এর আগে গত ১৩ মে থেকে তাঁদের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেসির ক্ষমতার মেয়াদ দুই মাস বাড়ানো হয়েছিল। সেই মেয়াদ গতকাল শেষ হয় ।

মেয়াদ বাড়ানোর আদেশে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীতে কর্মরত সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন ও এর ওপরের সমপদমর্যাদার কমিশন্ড কর্মকর্তাদের (কোস্ট গার্ড ও বিজিবিতে প্রেষণে নিয়োজিত সমপদমর্যাদার কর্মকর্তারাসহ) ‌‘দ্য কোড অব ক্রিমিনাল প্রসিডিউর, ১৮৯৮-এর ১২(১) ও ১৭ ধারা অনুযায়ী স্পেশাল এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা অর্পণ করা হলো। এর মেয়াদ হবে ১৪ মার্চ থেকে ৬০ দিন পর্যন্ত। সারা দেশে তাঁরা এই ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারবেন বলেও প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে।

প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, সেনাবাহিনীর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা ফৌজদারি কার্যবিধি-১৮৯৮-এর ৬৪, ৬৫, ৮৩, ৮৪, ৮৬, ৯৫(২), ১০০, ১০৫, ১০৭, ১০৯, ১১০, ১২৬, ১২৭, ১২৮, ১৩০, ১৩৩ ও ১৪২ ধারার অপরাধগুলো বিবেচনায় নিতে পারবেন।

প্রথমে গত বছরের ১৭ সেপ্টেম্বর সেনাবাহিনীর কমিশন্ড অফিসারদের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছিল জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। পরে ৩০ সেপ্টেম্বর প্রজ্ঞাপন সংশোধন করে বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর কমিশন্ড অফিসারদের (সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন ও এর ওপরের সমপদমর্যাদার কর্মকর্তা) এই ক্ষমতা দেওয়া হয়। অর্থাৎ শুধু সেনাবাহিনী নয়, বিমান ও নৌবাহিনীর কমিশন্ড অফিসারদেরও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা দেওয়া হয়। তখন ৬০ দিনের জন্য এই ক্ষমতা দেওয়া হয়েছিল।

সেই মেয়াদ নভেম্বরের মাঝামাঝি শেষ হয়েছিল। পরে সেই ক্ষমতার মেয়াদ কয়েক দফায় বাড়ানো হয়।

মন্তব্য

শেখ হাসিনাসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে গুমের অভিযোগ বিএনপির

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
শেখ হাসিনাসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে গুমের অভিযোগ বিএনপির

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক ও সাবেক পুলিশপ্রধান (আইজিপি)  বেনজীর আহমেদসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর কার্যালয়ে গুমের অভিযোগ দিয়েছে বিএনপি।

গতকাল রবিবার দুপুরে ভুক্তভোগীদের সঙ্গে নিয়ে এই অভিযোগ দেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির নির্বাহী সদস্য এবং তথ্য সেলের সমন্বয়ক সালাহউদ্দিন খান।

অভিযোগ তদন্ত করে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম।

২০১৯ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত গুমের ঘটনায় ১১ জন ভুক্তভোগীর নাম উল্লেখ করা হয়েছে লিখিত অভিযোগে।

তাঁরা হলেনঝালকাঠির নলছিটির মোহাম্মদ আলী খান, সাবেক যুবদল নেতা মো. জিল্লুর রহমান, আকিদুল আলী, খোরশেদ আলম, অ্যাডভোকেট আশরাফ আলী, মো. বাবুল, এনামুল, এরশাদ আলী, মো. গিয়াস উদ্দিন খান, মো. কবির উদ্দিন খান ও নজরুল ইসলাম।

অভিযোগে বলা হয়েছে, ২০১৯ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন সময় এসব ভুক্তভোগীকে অপহরণের পর আয়নাঘরে আটকে রেখে নির্যাতন করা হয়। গত বছর ৫ আগস্ট সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পলায়নের পর মোহাম্মদ আলীকে হাত ও চোখ বেঁধে পূর্বাচলের শেষ প্রান্তে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে ফেলে আসা হয়। পাঁচ বছর তিন মাস ১৩ দিন পর তিনি মুক্তি পান।

এ ঘটনায় মোহাম্মদ আলী খান বিএনপি মহাসচিবের মাধ্যমে ন্যায়বিচার চেয়ে আবেদন করেন।

তাঁর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ১১ জন ভুক্তভোগীর নাম উল্লেখ করে আবেদনটি করা হয় বলে জানান সালাহউদ্দিন খান।

সালাহউদ্দিন খান সাংবাদিকদের বলেন, ভুক্তভোগীরা শেখ হাসিনাসহ ১৬ জন এবং অজ্ঞাতপরিচয় আরো ৩০ থেকে ৩৫ জনের নাম উল্লেখ করে ন্যায়বিচারের আশায় আবেদন করেছেন। ভুক্তভোগীরা বলেছেন, শুধু বিএনপি করার অপরাধে বিগত সরকারের নির্মম নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে তাঁদের।

মন্তব্য

সোহাগের পরিবারের পাশে তারেক রহমান

বরগুনা প্রতিনিধি
বরগুনা প্রতিনিধি
শেয়ার
সোহাগের পরিবারের পাশে তারেক রহমান

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে পুরান ঢাকায় নিহত ব্যবসায়ী লাল চাঁদ ওরফে সোহাগের পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছেন দলটির ভাইস চেয়ারম্যান নূরুল ইসলাম মনি। গতকাল রবিবার বিকেলে তিনি বরগুনা জেলার পাথরঘাটা উপজেলার কাকচিড়া ইউনিয়নের সোহাগের গ্রামের বাড়িতে যান। তিনি স্থানীয় কাকচিড়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে আয়োজিত সভায় বক্তব্য দেন।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে তিনি নিহত সোহাগের পরিবারকে ৫০ হাজার টাকা আর্থিক সহায়তা প্রদান করেন।

সোহাগের পরিবারের যেকোনো প্রয়োজনে পাশে থাকারও আশ্বাস দেন। এ ছাড়া হত্যাকাণ্ডের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে বিএনপির পক্ষ থেকে সব ধরনের সহায়তার আশ্বাস দেন। স্বামীর হত্যার বিচার চেয়ে তখন সোহাগের স্ত্রী লাকি আক্তার বলেন, আমি আমার স্বামীর হত্যাকারীদের ফাঁসি চাই। আমার পরিবারের নিরাপত্তা চাই।
সভায় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান নূরুল ইসলাম মনি বলেন, এই এলাকার সন্তান ঢাকার মিটফোর্ডের ব্যবসায়ী সোহাগকে তাঁর ব্যাবসায়িক পার্টনার ও তাদের ভাড়াটেরা নৃশংসভাবে হত্যা করেছে। বিএনপি ঘটনার সঙ্গে সঙ্গে তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। দলের পক্ষ থেকে এর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করা হয়েছে। সম্পৃক্তদের দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
বিএনপি কোনো অপকর্মকে প্রশ্রয় দেয় না। পাথরঘাটা উপজেলা বিএনপির আহবায়ক চৌধুরী মো. ফারুকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় বক্তব্য দেন বরগুনা জেলা বিএনপির সাবেক সহসভাপতি ফজলুল হক মাস্টার, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক কে এম সফিকুজ্জামান মাহফুজ, জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক জাবেদুল ইসলাম জুয়েল, জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম নাভিল প্রমুখ।

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ