ঢাকা, সোমবার ১৪ জুলাই ২০২৫
৩০ আষাঢ় ১৪৩২, ১৮ মহররম ১৪৪৭

ঢাকা, সোমবার ১৪ জুলাই ২০২৫
৩০ আষাঢ় ১৪৩২, ১৮ মহররম ১৪৪৭

‘র আইসের’ রমরমায় ভয়াবহ ক্ষতিতে সেবীরা

  • ♦ এক দিনে ঢাকায় দুই নারীসহ ১০ জন গ্রেপ্তার
  • ♦ টেকনাফ হয়ে চালান ঢুকছে চট্টগ্রাম ও ঢাকায়
  • ♦ পুরনো ইয়াবা কারবারিরাই আইস বিক্রেতা
  • ♦ হাউস পার্টি ও সিসাবার আসক্তি ছড়াচ্ছে
এস এম আজাদ
এস এম আজাদ
শেয়ার
‘র আইসের’ রমরমায় ভয়াবহ ক্ষতিতে সেবীরা

মিয়ানমার থেকে ইয়াবার রুটেই কক্সবাজারের টেকনাফ হয়ে দেশে ঢুকছে ভয়ংকর মাদক ক্রিস্টাল মেথ বা আইস। ইয়াবার ‘র’ বা রাসায়নিক মিশ্রণ ছাড়া কাঁচামাল মেথা-অ্যামফিটামিনই হচ্ছে ক্রিস্টাল মেথ। শুকিয়ে বরফ খণ্ড বা কাচের দানার মতো করে প্রস্তুত করায় এটিকে বলা হয় আইস। সীমান্তে নজরদারি বাড়ায় ইয়াবা কারবারিরা প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিতে সরাসরি এই কাঁচামালের গুঁড়াই বেশি নিয়ে আসছেন দেশে।

ছোট ছোট চালানে এগুলো ঢাকা ও চট্টগ্রামের অভিজাত এলাকায় পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে।

আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর অভিযানসংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানিয়েছে, এখন আইসের নামে বেশি ক্ষতিকর কাঁচামালের সাদা গুঁড়া সেবন শুরু হয়েছে। ঢাকা ও চট্টগ্রামের ধনী শ্রেণির ইয়াবাসেবীরা ‘র আইস’ নামের নতুন ধরনের মাদক সেবন শুরু করেছে। গুলশান, বনানী, ধানমণ্ডি, উত্তরাসহ অভিজাত এলাকায় ফ্ল্যাটে আড্ডার নামে হাউস পার্টিতে তরুণ-তরুণীরা এটি সেবন করছে।

সিসা বারগুলোতে গোপনে সেবন চলছে এই আইসের। গত কয়েক মাসে টেকনাফে দুই কেজি ওজনের দুটি বড় চালানসহ চট্টগ্রাম ও ঢাকায় অন্তত ২০টি আইসের চালান ধরা পড়েছে।

কারবারিদের কাছ থেকে ইয়াবার সঙ্গেও উদ্ধার হচ্ছে আইস। সর্বশেষ গত শুক্রবার বনশ্রী, বারিধারা, উত্তরা থেকে ৫০০ গ্রাম আইস ও পাঁচ হাজার ইয়াবাসহ ১০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর (ডিএনসি)।

তারা হলো রুবায়াত, রোহিত হোসেন, মাসুম হান্নান, আমানুল্লাহ, মোহাইমিনুল ইসলাম ইভান, মুসা উইল বাবর, সৈয়দা আনিকা জামান ওরফে অর্পিতা জামান, লায়লা আফরোজ প্রিয়া, তানজিম আলী শাহ ও হাসিবুল ইসলাম। এর আগে গত মঙ্গলবার ঢাকা থেকেই ৫০০ গ্রাম আইস এবং ৬৩ হাজার পিস ইয়াবাসহ সাতজনকে গ্রেপ্তার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। দুই মাসের ব্যবধানে চট্টগ্রামে চারটি আইসের চালান জব্দ করেছে র‌্যাব ও পুলিশ। আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদে মিলেছে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানিয়েছেন, শুক্রবারের চালানটি ছাড়া সম্প্রতি উদ্ধারকৃত প্রায় সব কটি চালানেই আইসের সাদা গুঁড়ো বা কাঁচামাল পাওয়া গেছে।

ডিএনসির প্রধান রাসায়নিক পরীক্ষক ড. দুলাল কৃষ্ণ সাহা কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘ক্রিস্টাল মেথ বা আইস যেটি এক কথায় বলা যায় সেটি সরাসরি ইয়াবার কাঁচামাল। ইয়াবার চেয়ে শতগুণ বেশি ক্ষতিকর। ইয়াবায় অ্যামফিটামিনের সঙ্গে ক্যাফেইন থাকে। আর ক্রিস্টাল মেথ হচ্ছে সরাসরি অ্যামফিটামিন। এটিকে মেথা-অ্যামফিটামিনও বলা হয়। বিশ্বব্যাপী একই শ্রেণির উচ্চক্ষমতার মাদকের বাজার তৈরির প্রবণতা আছে। এ কারণে ইয়াবাসেবীদের কাছে এই কাঁচামাল পৌঁছে দিচ্ছে কারবারিরা। একই সঙ্গে তারা প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিতে চাইছে।’

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, ক্রিস্টাল মেথ বা মেথা-অ্যামফিটামিন প্রধানত তৈরি হয় থাইল্যান্ডে। পাশাপাশি মালয়েশিয়া ও মিয়ানমারে তৈরি হচ্ছে। মূলত এই তিন দেশ থেকে এটি ইউরোপ, আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া, সিঙ্গাপুরসহ বিভিন্ন দেশে পাচার হয়। বাংলাদেশকে রুট হিসেবে ব্যবহার করছে কারবারিরা। সেই সুযোগে বাজার তৈরির চেষ্টা চলছে। ইয়াবাসেবী সার্কেল ও অনলাইনে ডার্কনেটে বিক্রি শুরু হয়েছে কয়েক বছর।

ঢাকার ডিবি পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার বলেন, কক্সবাজার থেকে চট্টগ্রাম হয়ে ঢাকায় আনা হয়েছে আইস ও ইয়াবার চালান। গুলশান, বনানী, ধানমণ্ডিসহ অভিজাত এলাকায় উঠতি বয়সের বখাটে যুবক-যুবতিদের কাছে এই মাদক বিক্রি করা হয়। মূল কারবারিদের ধরতে নজরদারি অব্যাহত আছে।

ডিএনসির অতিরিক্ত পরিচালক ফজলুর রহমান বলেন, একটি মোবাইল ফোন নম্বরের সূত্র ধরে একটি সিন্ডিকেটের ১০ জনের সন্ধান মেলে। আভিজাত এলাকায় তাদের বিচরণ।

সূত্র জানায়, ২০১৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর ঝিগাতলার ৭/এ রোডের ৬২ নম্বর বাড়িতে হাসিব মুয়াম্মার রশিদ নামে এক যুবকের আইস বানানোর ছোট ল্যাবের সন্ধান পায় ডিএনসি। এটিই দেশে ধরা পড়া প্রথম চালান। ওই বছরের ২৭ জুন ভাটারা থেকে এক নাইজেরীয়কে ৫২২ গ্রাম আইসসহ গ্রেপ্তার করে ডিএনসি। এরপর ডিবি, র‌্যাব, ডিএনসি ঢাকায় আরো ছয়টি চালান ধরেছে। গত ৩ মার্চ কক্সবাজারের টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়নের জাদিমুড়ার গোলাম নবীর বাড়ি থেকে তাঁর ছেলে আব্দুল্লাহকে দুই কেজি আইসসহ গ্রেপ্তার করে ডিএনসি। নবীর আরেক ছেলে আব্দুর রহমান মিয়ানমার থেকে নৌপথে চালানটি আনে, যে এখনো ধরা পড়েনি। গত ২৫ মার্চ টেকনাফের উত্তর বরইতলী থেকে মো. হোসেন নামে এক ব্যক্তিকে দুই কেজি আইসসহ গ্রেপ্তার করে র‌্যাব। গত বছর মেজর (অব.) সিনহা মো. রাশেদ হত্যাকাণ্ডের দিন ট্রলার থেকে আইস উদ্ধারের গুঞ্জন রয়েছে, সেই ট্রলারেরই চালক হোসেন। তবে কারবারের মূল হোতা রশিদ র‌্যাবের হাত ফসকে পালায়। গত ৮ মে হ্নীলার নয়াপাড়ায় প্রায় এক কেজি আইসসহ হামিদ নামে এক রোহিঙ্গাকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব। ১৩ এপ্রিল টেকনাফ শীলখালি চেকপোস্টে বিজিবি সদস্যরা ১৬৭ গ্রাম আইসসহ একজনকে গ্রেপ্তার করেন।

ডিএনসির একজন কর্মকর্তা পরিচয় প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, টেকনাফ থেকে কক্সবাজার হয়ে ইয়াবার মতোই চট্টগ্রাম ও ঢাকায় পাঠানো হচ্ছে অ্যামফিটামিনের পাউডার ও দানা। নজর এড়াতে এবং বাজার তৈরি করতে ইয়াবা কারবারিরা এখন পাউডার বেশি আনছে। প্রথম দিকের চালানগুলো ক্রিস্টাল বা তালমিছরি দানার মতো পাওয়া যায়। এখন ধরা পড়ছে বেশির ভাগ পাউডার। এমন তথ্য পেয়ে সব সংস্থা নজরদারি বাড়িয়েছে।

র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, ‘বিভিন্নভাবে ও কৌশলে ছোট চালানে মিয়ানমার থেকে আইস আসছে বলে তথ্য পাওয়া গেছে। আমরাও গোয়েন্দা তৎপরতা জোরদার করেছি।’

সূত্র জানায়, ২৫ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রামের খুলশী থেকে ১৪০ গ্রাম আইসসহ শফিউল আলম ও ইয়াছিন রানা নামে দুজনকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব। ২ মে চট্টগ্রামের চন্দনাইশ থেকে আতাউল করিম নামে এক ব্যক্তিকে ২০০ গ্রাম আইসসহ গ্রেপ্তার করে ডিএনসি। ৮ মে টেকনাফে উত্তর লম্বরী থেকে ১০০ গ্রাম আইস ও ১৪ হাজার ইয়াবাসহ ওসমান গনি নামে এক যুবককে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। গত ১৬ জুন চট্টগ্রামের কর্ণফুলীর মইজ্জারটেক থেকে পাঁচ গ্রাম আইসসহ সাগর নামে এক যুবককে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ১২ জুলাই নগরীর ফিশারীঘাট থেকে ৯৭৫ গ্রাম আইস গুঁড়োসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব। ১৪ জুলাই ৮০ গ্রাম গুঁড়ো আইস, ইয়াবাসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করে ডিবি পুলিশ। ১১ আগস্ট লালদিঘীর পার থেকে ৪৩০ গ্রাম গুঁড়ো আইসসহ নুরুল আবছার নামে একজনকে গ্রেপ্তার করে ডিবির দল।

ডিএনসির চট্টগ্রামের অতিরিক্ত পরিচালক মজিবুর রহমান পাটোয়ারী বলেন, ‘আমরা আগেই তথ্য পেয়ে নজরদারি বাড়িয়েছি। অন্য সংস্থাগুলোর সঙ্গে তথ্য বিনিময়ে অভিযানে চালান ধরা পড়ছে।’

চট্টগ্রাম ডিবি পুলিশের উপকমিশনার (ডিসি-উত্তর) সালাম কবির বলেন, ধরা পড়া আইসগুলো মেটাফিটামিনযুক্ত পাউডার। চট্টগ্রামকে রুট হিসেবে ব্যবহারের তথ্য পেয়ে নজরদারি করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

আজ রাজপথে নামছে বিএনপি

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
আজ রাজপথে নামছে বিএনপি

পুরান ঢাকার মিটফোর্ড হাসপাতালের সামনে ব্যবসায়ী লাল চাঁদ ওরফে মো. সোহাগ হত্যাকাণ্ডের অপপ্রচার ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে শান্তিপূর্ণভাবে আজ থেকে রাজপথে থাকবে বিএনপি। বিএনপি মনে করছে, এই হত্যাকাণ্ড নিয়ে জামায়াতে ইসলাম, ইসলামী আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) রাজপথ দখল করার চেষ্টা করছে বলে মনে করছে বিএনপি। এ জন্য রাজপথে বিএনপিও শক্তি ও জনসমর্থন দেখাবে।

এখন পর্যন্ত এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত কাউকে ছাড় দিচ্ছে না দলটি।

এমনকি এ ধরনের ঘটনা যাতে আর না ঘটে সে জন্য দলে শুদ্ধি অভিযান চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন দলের শীর্ষ নেতা। দলের নেতারা বলছেন, হত্যার সঙ্গে সরাসরি জড়িত দুজনকে চিহ্নিত করতে পারেনি আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী। কিন্তু বিরোধী পক্ষ একতরফাভাবে বিএনপির ওপর দায় চাপাচ্ছে। বিএনপিকে উদ্দেশ্য করে কটূক্তি করছে।
এর জবাব দিতে রাজপথে শক্তি দেখাবে দলটি। এরই অংশ হিসেবে আজ সোমবার ছাত্রদল ও ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপি এবং অন্য অঙ্গসংগঠন পৃথক শোডাউন করবে। বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী কালের কণ্ঠকে বলেন, বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠন প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করবে। জনগণ বিএনপির সঙ্গে আছে।
জনগণকে নিয়ে দেশবিরোধীদের ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করা হবে।

মাঠে নামছে ছাত্রদল : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি জানান, গোপন তৎপরতায় দীর্ঘদিন ধরে অভ্যস্ত গুপ্ত সংগঠন কর্তৃক মব সৃষ্টির অপচেষ্টা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ বিনষ্ট করা এবং সারা দেশে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির প্রতিবাদে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল আজ রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে বিক্ষোভ মিছিল করবে। গুপ্ত সংগঠন বলতে ইসলামী ছাত্রশিবির ও তাদের সহযোগী সংগঠনকে বোঝানো হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির।

ছাত্রদলের ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী, আজ দুপুর ২টায় রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে শাহবাগ পর্যন্ত বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হবে। পাশাপাশি সারা দেশের সব জেলা ও মহানগরে বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হবে।

জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব ও সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির এ কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন।

কর্মসূচির বিষয়ে ঢাবি শাখা ছাত্রদলের সভাপতি গণেশ চন্দ্র রায় সাহস বলেন, গুপ্ত সংগঠন হিসেবে সেসব সংগঠনকেই বোঝানো হয়েছে, যারা প্রকাশ্যে নিজেদের রাজনৈতিক কার্যক্রম পরিচালনার বদলে গোপনে রাজনৈতিক এজেন্ডা বাস্তবায়ন ও সহিংসতা ছড়িয়ে দেওয়ার মাধ্যমে রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে অস্থিরতা ও বিশৃঙ্খলা তৈরি করছে। গত ৫ আগস্টের পর একটি মুক্ত রাজনৈতিক পরিবেশ থাকা সত্ত্বেও তাদের এহেন গুপ্ত কার্যক্রম এ দেশের রাজনৈতিক পরিবেশকে অসহনশীল করে তুলছে এবং রাজনৈতিক বিষয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত করে তুলছে। এ রকম কুচক্রী কার্যক্রমের বিরুদ্ধেই জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল তার কর্মসূচি গ্রহণ করেছে, যেন দেশবাসীকে এসব বিভ্রান্তিকর বিষয়ে সচেতন করে তোলা যায়।

গুপ্ত সংগঠন বলতে কাদের বোঝানো হচ্ছে জানতে চাইলে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির বলেন, ছত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর যারা ক্যাম্পাসগুলোতে মব সৃষ্টি করে সাধারণ শিক্ষার্থী নামে অপ্রীতিকর পরিস্থিতি তৈরি করছে, তারাই গুপ্ত সংগঠন। ছাত্রশিবির এবং গুপ্তভাবে সংগঠন পরিচালনা করতে ছাত্রশিবিরকে যারা পৃষ্ঠপোষকতা করে, আশ্রয়-প্রশ্রয় দেয় তারা।

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

সশস্ত্র বাহিনীর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেসির মেয়াদ আরো দুই মাস বাড়ল

বিশেষ প্রতিনিধি
বিশেষ প্রতিনিধি
শেয়ার
সশস্ত্র বাহিনীর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেসির মেয়াদ আরো দুই মাস বাড়ল

বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীতে কর্মরত সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন ও এর ওপরের সমপদমর্যাদার কর্মকর্তাদের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতার মেয়াদ আরো দুই মাস (৬০ দিন) বাড়ানো হয়েছে। এ বিষয়ে গতকাল রবিবার প্রজ্ঞাপন জারি করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। এর আগে গত ১৩ মে থেকে তাঁদের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেসির ক্ষমতার মেয়াদ দুই মাস বাড়ানো হয়েছিল। সেই মেয়াদ গতকাল শেষ হয় ।

মেয়াদ বাড়ানোর আদেশে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীতে কর্মরত সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন ও এর ওপরের সমপদমর্যাদার কমিশন্ড কর্মকর্তাদের (কোস্ট গার্ড ও বিজিবিতে প্রেষণে নিয়োজিত সমপদমর্যাদার কর্মকর্তারাসহ) ‌‘দ্য কোড অব ক্রিমিনাল প্রসিডিউর, ১৮৯৮-এর ১২(১) ও ১৭ ধারা অনুযায়ী স্পেশাল এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা অর্পণ করা হলো। এর মেয়াদ হবে ১৪ মার্চ থেকে ৬০ দিন পর্যন্ত। সারা দেশে তাঁরা এই ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারবেন বলেও প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে।

প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, সেনাবাহিনীর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা ফৌজদারি কার্যবিধি-১৮৯৮-এর ৬৪, ৬৫, ৮৩, ৮৪, ৮৬, ৯৫(২), ১০০, ১০৫, ১০৭, ১০৯, ১১০, ১২৬, ১২৭, ১২৮, ১৩০, ১৩৩ ও ১৪২ ধারার অপরাধগুলো বিবেচনায় নিতে পারবেন।

প্রথমে গত বছরের ১৭ সেপ্টেম্বর সেনাবাহিনীর কমিশন্ড অফিসারদের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছিল জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। পরে ৩০ সেপ্টেম্বর প্রজ্ঞাপন সংশোধন করে বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর কমিশন্ড অফিসারদের (সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন ও এর ওপরের সমপদমর্যাদার কর্মকর্তা) এই ক্ষমতা দেওয়া হয়। অর্থাৎ শুধু সেনাবাহিনী নয়, বিমান ও নৌবাহিনীর কমিশন্ড অফিসারদেরও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা দেওয়া হয়। তখন ৬০ দিনের জন্য এই ক্ষমতা দেওয়া হয়েছিল।

সেই মেয়াদ নভেম্বরের মাঝামাঝি শেষ হয়েছিল। পরে সেই ক্ষমতার মেয়াদ কয়েক দফায় বাড়ানো হয়।

মন্তব্য

শেখ হাসিনাসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে গুমের অভিযোগ বিএনপির

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
শেখ হাসিনাসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে গুমের অভিযোগ বিএনপির

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক ও সাবেক পুলিশপ্রধান (আইজিপি)  বেনজীর আহমেদসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর কার্যালয়ে গুমের অভিযোগ দিয়েছে বিএনপি।

গতকাল রবিবার দুপুরে ভুক্তভোগীদের সঙ্গে নিয়ে এই অভিযোগ দেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির নির্বাহী সদস্য এবং তথ্য সেলের সমন্বয়ক সালাহউদ্দিন খান।

অভিযোগ তদন্ত করে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম।

২০১৯ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত গুমের ঘটনায় ১১ জন ভুক্তভোগীর নাম উল্লেখ করা হয়েছে লিখিত অভিযোগে।

তাঁরা হলেনঝালকাঠির নলছিটির মোহাম্মদ আলী খান, সাবেক যুবদল নেতা মো. জিল্লুর রহমান, আকিদুল আলী, খোরশেদ আলম, অ্যাডভোকেট আশরাফ আলী, মো. বাবুল, এনামুল, এরশাদ আলী, মো. গিয়াস উদ্দিন খান, মো. কবির উদ্দিন খান ও নজরুল ইসলাম।

অভিযোগে বলা হয়েছে, ২০১৯ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন সময় এসব ভুক্তভোগীকে অপহরণের পর আয়নাঘরে আটকে রেখে নির্যাতন করা হয়। গত বছর ৫ আগস্ট সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পলায়নের পর মোহাম্মদ আলীকে হাত ও চোখ বেঁধে পূর্বাচলের শেষ প্রান্তে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে ফেলে আসা হয়। পাঁচ বছর তিন মাস ১৩ দিন পর তিনি মুক্তি পান।

এ ঘটনায় মোহাম্মদ আলী খান বিএনপি মহাসচিবের মাধ্যমে ন্যায়বিচার চেয়ে আবেদন করেন।

তাঁর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ১১ জন ভুক্তভোগীর নাম উল্লেখ করে আবেদনটি করা হয় বলে জানান সালাহউদ্দিন খান।

সালাহউদ্দিন খান সাংবাদিকদের বলেন, ভুক্তভোগীরা শেখ হাসিনাসহ ১৬ জন এবং অজ্ঞাতপরিচয় আরো ৩০ থেকে ৩৫ জনের নাম উল্লেখ করে ন্যায়বিচারের আশায় আবেদন করেছেন। ভুক্তভোগীরা বলেছেন, শুধু বিএনপি করার অপরাধে বিগত সরকারের নির্মম নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে তাঁদের।

মন্তব্য

সোহাগের পরিবারের পাশে তারেক রহমান

বরগুনা প্রতিনিধি
বরগুনা প্রতিনিধি
শেয়ার
সোহাগের পরিবারের পাশে তারেক রহমান

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে পুরান ঢাকায় নিহত ব্যবসায়ী লাল চাঁদ ওরফে সোহাগের পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছেন দলটির ভাইস চেয়ারম্যান নূরুল ইসলাম মনি। গতকাল রবিবার বিকেলে তিনি বরগুনা জেলার পাথরঘাটা উপজেলার কাকচিড়া ইউনিয়নের সোহাগের গ্রামের বাড়িতে যান। তিনি স্থানীয় কাকচিড়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে আয়োজিত সভায় বক্তব্য দেন।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে তিনি নিহত সোহাগের পরিবারকে ৫০ হাজার টাকা আর্থিক সহায়তা প্রদান করেন।

সোহাগের পরিবারের যেকোনো প্রয়োজনে পাশে থাকারও আশ্বাস দেন। এ ছাড়া হত্যাকাণ্ডের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে বিএনপির পক্ষ থেকে সব ধরনের সহায়তার আশ্বাস দেন। স্বামীর হত্যার বিচার চেয়ে তখন সোহাগের স্ত্রী লাকি আক্তার বলেন, আমি আমার স্বামীর হত্যাকারীদের ফাঁসি চাই। আমার পরিবারের নিরাপত্তা চাই।
সভায় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান নূরুল ইসলাম মনি বলেন, এই এলাকার সন্তান ঢাকার মিটফোর্ডের ব্যবসায়ী সোহাগকে তাঁর ব্যাবসায়িক পার্টনার ও তাদের ভাড়াটেরা নৃশংসভাবে হত্যা করেছে। বিএনপি ঘটনার সঙ্গে সঙ্গে তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। দলের পক্ষ থেকে এর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করা হয়েছে। সম্পৃক্তদের দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
বিএনপি কোনো অপকর্মকে প্রশ্রয় দেয় না। পাথরঘাটা উপজেলা বিএনপির আহবায়ক চৌধুরী মো. ফারুকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় বক্তব্য দেন বরগুনা জেলা বিএনপির সাবেক সহসভাপতি ফজলুল হক মাস্টার, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক কে এম সফিকুজ্জামান মাহফুজ, জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক জাবেদুল ইসলাম জুয়েল, জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম নাভিল প্রমুখ।

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ