যুক্তরাজ্যে করোনাভাইরাসের নতুন যে ধরনটি শনাক্ত হয়েছে, সেটি নিয়ে ধোঁয়াশা কাটছে না। এখনো পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে। তবে যতটা জানা গেছে, এর মধ্যে আমাদের জন্য উদ্বেগের ব্যাপার হচ্ছে—এই ধরনটি নাকি শিশুদের বেশি সংক্রমিত করতে সক্ষম। যদি তা-ই হয়, তাহলে কিন্তু বিপদের কথা। কারণ আমরা করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে বড় অস্ত্র হিসেবে যে টিকার দিকে তাকিয়ে আছি এবং এখন পর্যন্ত যে কয়টি টিকা আমাদের আশার আলো দেখাচ্ছে, সেগুলো কিন্তু শিশুদের জন্য নয়। ফলে যদি নতুন ধরনটি শিশুদের ক্ষতি করে তবে তা বর্তমান টিকায় রোধ করা যাবে না। দেখা যাবে এই টিকা দিয়ে বড়রা নিরাপদ হচ্ছে; কিন্তু ছোটরা অনিরাপদ থেকে যাচ্ছে, ঝুঁকিপূর্ণ থেকে যাচ্ছে। সেটা হবে খুবই দুঃখজনক ঘটনা। এ জন্য শিশুদের সুরক্ষায় আমাদের সতর্ক থাকতে হবে। বিদেশ থেকে যারা আসছে, তাদের অবশ্যই ১৪ দিন প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে রাখতে হবে। কোনো অবস্থায় এই ক্ষেত্রে শৈথিল্য দেখানোর সুযোগ নেই।
এ ছাড়া আমাদের আরেক ঘাটতি হচ্ছে গবেষণায়। আমাদের অবস্থা এতটাই খারাপ যে গবেষণার সক্ষমতা নেই। আমরা এই ভাইরাসটি কী ধরনের ও কতটা ক্ষতিকর, তা-ও বের করতে পারছি না। এত কিছু হচ্ছে অথচ এটা আমরা করতে পারছি না। গবেষণা করতে পারলে আমরা অনেকটা আশ্বস্ত হতে পারতাম, কিন্তু এখন আমাদের অন্য দেশের দিকে তাকিয়ে থাকতে হচ্ছে। যতক্ষণ তাদের গবেষণায় চূড়ান্ত কিছু পাওয়া না যায়, ততক্ষণ আমাদের অবশ্যই সর্তক থাকতে হবে। এ জন্য শুধু টিকার দিকে তাকিয়ে থাকলে হবে না, মাস্ক পরা ও বারবার হাত ধোয়া এবং শারীরিক দূরত্ব অবশ্যই মানতে হবে। তা না হলে বিপদের ঝুঁকি থাকবেই। এমনকি টিকা দেশে আসার পর তা দেওয়া হলেও আমাদের এগুলো মেনে চলতে হবে।
লেখক : ভাইরোলজিস্ট ও সাবেক উপাচার্য, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়
মন্তব্য