কালের কণ্ঠ : একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে কী ভাবছেন?
অ্যাডভোকেট নূরুল ইসলাম সুজন : একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে আমরা মাঠপর্যায়ে প্রস্তুতি নিচ্ছি। আমার নির্বাচনী এলাকায় সাংগঠনিকভাবে যেসব কর্মসূচি পালন করা দরকার, তা পালন করে যাচ্ছি। ইউনিয়নে তৃণমূল পর্যায়ে বর্ধিত সভা করা হচ্ছে।
কালের কণ্ঠ : নেতৃত্বে দ্বন্দ্বে জেলা আওয়ামী লীগ তিন ভাগে বিভক্ত।
মন্তব্য করুন।
অ্যাডভোকেট নূরুল ইসলাম সুজন : দলের মধ্যে কোনো বিভক্তি নেই। নির্বাচনে প্রার্থিতা নিয়ে কেউ কেউ নিজেকে উপস্থাপনের চেষ্টা করছেন। এইটুকু।
কালের কণ্ঠ : নির্বাচনের আগে কি এই বিভক্তি দূর হবে?
অ্যাডভোকেট নূরুল ইসলাম সুজন : আমরা সবাই একসঙ্গে কাজ করছি। দলের যে কেউ মনোনয়ন চাইতে পারেন, নির্ধারণ করবে মনোনয়ন বোর্ড।
কালের কণ্ঠ : অভিযোগ আছে, দলের মধ্যে সুবিধাবাদীরা ঢুকে পড়েছে। এদের কারণে নির্বাচনে ক্ষতির আশঙ্কা আছে কি?
অ্যাডভোকেট নূরুল ইসলাম সুজন : আমার আসনে এ রকম অভিযোগ নেই।
একজন সংসদ সদস্য হিসেবে যারা ভোট দিয়েছে তারাও আমার কাছে আসে, যারা দেয়নি তারাও আসে। সবার জন্যই আমাকে কাজ করতে হয়।
কালের কণ্ঠ : বলা হচ্ছে দলের নিবেদিতপ্রাণ নেতাদের কম মূল্যায়ন করা হচ্ছে।
অ্যাডভোকেট নূরুল ইসলাম সুজন : পাওয়া না পাওয়ার বিষয়টি আপেক্ষিক। সব মানুষের সব ইচ্ছা, সব আকাঙ্ক্ষা পূরণ করা সম্ভব নয়।
কালের কণ্ঠ : গত নির্বাচনে পঞ্চগড়-১ আসনটি শরিক দলকে দেওয়ায় ওই আসনে আওয়ামী লীগের জৌলুস কমেছে কি?
অ্যাডভোকেট নূরুল ইসলাম সুজন : এটা স্বাভাবিক, যখন আমাদের নিজস্ব লোক থাকবে না, তখন দলীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে কিছুটা হতাশা দেখা দেয়।
কালের কণ্ঠ : যদি পঞ্চগড়-১ আসন শরিক দলকে দেওয়া হয় তাহলে কী করবেন?
অ্যাডভোকেট নূরুল ইসলাম সুজন : এটা প্রার্থিতার ওপর নির্ভর করে। দলের মনোনয়ন পেলেই একজন বিজয়ী হবেন, এমন আশা করা ভুল। আগামী নির্বাচনে দলের প্রার্থী একটা বড় ফ্যাক্টর হিসেবে কাজ করবে। কাজেই বিরোধী দল, প্রতিদ্বন্দ্বী কে আসছেন, এর ওপর অনেকখানি নির্ভর করবে আমরা বিজয়ী হতে পারব কি না।
কালের কণ্ঠ : ক্ষমতাসীন দলের এমপি হিসেবে মানুষের প্রত্যাশা কতটা পূরণ করতে পেরেছেন বলে মনে করেন?
অ্যাডভোকেট নূরুল ইসলাম সুজন : আমার নির্বাচনী এলাকায় মোটা দাগে যেসব দাবি ছিল সেগুলো প্রায় শতভাগ পূরণ করেছি। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘আমরা যদি আরো পাঁচ বছর সুযোগ পাই তাহলে প্রত্যেক গ্রামকে শহরে রূপান্তরিত করা হবে। আমি মনে করি, সেই সুযোগ পেলে আমরা পঞ্চগড়ের সব গ্রামকে শহরে রূপান্তরিত করতে পারব।’
কালের কণ্ঠ : দেবীগঞ্জ উপজেলা থেকে স্বাধীনতার আগে ও পরে কোনো প্রার্থী মনোনয়ন পাননি। তাদের দাবি, এবার পঞ্চগড়-২ আসনে দেবীগঞ্জ থেকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মনোনয়ন দেওয়া হোক। এই দাবি কতটা যৌক্তিক?
অ্যাডভোকেট নূরুল ইসলাম সুজন: দেবীগঞ্জের মালেক চিশতী এই দাবি করেছিলেন। কিন্তু তিনি উপজেলা নির্বাচনেই হেরে গেছেন। তাঁর জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে। দল আমাকে যোগ্য মনে করেছে তাই গত নির্বাচনে মনোনয়ন দিয়েছে। আমি মনে করি, দেবীগঞ্জের মানুষের এমন দাবি নেই।
কালের কণ্ঠ : আগামী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে বিএনপিকে কেমন ভাবছেন?
অ্যাডভোকেট নূরুল ইসলাম সুজন : সাংগঠনিকভাবে এখন পর্যন্ত আওয়ামী লীগের যে ভিত্তি তা বিএনপির চেয়ে অনেক বেশি শক্তিশালী। এ ছাড়া জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি মোজাহার হোসেন মারা যাওয়ার পর তারা নেতা নির্বাচনে এখনো একমত হতে পারেনি। সেদিক থেকে মনে হয় আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগের জন্য সুবিধাজনক অবস্থাই থাকবে।
কালের কণ্ঠ : তার মানে আপনার দুটি আসনই ধরে রাখতে পারবেন বলে মনে করছেন?
অ্যাডভোকেট নূরুল ইসলাম সুজন : আমি তা-ই মনে করি। আমাদের জন্য এটা তুলনামূলকভাবে অনেক সহজ হবে।
প্রতিবেদক : মানুষ নৌকা প্রতীকে কেন ভোট দেবে বলে মনে করেন?
অ্যাডভোকেট নূরুল ইসলাম সুজন : আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গরিব-দুঃখী মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে বিশ্বে উন্নত দেশের স্বপ্ন বাস্তবায়নে দেশকে সফলভাবে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। সব সেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। কাজেই দেশের জনগণ এই সরকারকে কেন প্রত্যাখ্যান করবে? জনগণ এই সরকারের পক্ষেই থাকবে।