ঢাকা, সোমবার ১৪ জুলাই ২০২৫
২৯ আষাঢ় ১৪৩২, ১৮ মহররম ১৪৪৭

ঢাকা, সোমবার ১৪ জুলাই ২০২৫
২৯ আষাঢ় ১৪৩২, ১৮ মহররম ১৪৪৭

স্বীকৃতি ঠেকাতে সর্বাত্মক চেষ্টা ছিল পাকিস্তানের

  • যুদ্ধাপরাধীদের রক্ষা ও যুদ্ধবন্দিদের মুক্তিই ছিল লক্ষ্য
মেহেদী হাসান
মেহেদী হাসান
শেয়ার
স্বীকৃতি ঠেকাতে সর্বাত্মক চেষ্টা ছিল পাকিস্তানের
বিজয়ের ৪৬তম বার্ষিকীতে গতকাল সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে ঢল নামে জনতার। ছবি : মঞ্জুরুল করিম

ঢাকায় বাংলাদেশি ও ভারতীয় বাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণে বাধ্য হলেও যুদ্ধবিজয়ী বাংলাদেশের পথচলা ঠেকাতে সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়েছিল পাকিস্তান। কোনো দেশ যাতে বাংলাদেশকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি না দেয় সেই চেষ্টার কোনো কমতি রাখেনি দেশটি। মুক্তিযুদ্ধের পর স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়ার সব শর্ত (জনসমর্থন, প্রতিনিধিত্বমূলক সরকার, ভূখণ্ডের ওপর কার্যকর নিয়ন্ত্রণ, স্থিতিশীলতা এবং আন্তর্জাতিক বাধ্যবাধকতাগুলো মেনে চলার আগ্রহ ও সামর্থ্য) পূরণ করলেও পাকিস্তানের কূটচালে তার সে সময়ের মিত্ররা বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দিচ্ছিল না।

বাংলাদেশ ১৯৭২ সালের ১৮ এপ্রিল কমনওয়েলথে অন্তর্ভুক্ত হয়।

আর বাংলাদেশকে সদস্য পদ দিতে প্রথমবারের মতো আলোচনা করতে হয়েছিল কমনওয়েলথকে। বাংলাদেশকে কমনওয়েলথে অন্তর্ভুক্তির প্রতিবাদে পাকিস্তান ওই সংস্থা ছেড়ে যায়।

জাতিসংঘে পাকিস্তানের হয়ে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রেখেছিল চীন। ১৯৭২ সালের আগস্ট মাসে বাংলাদেশকে জাতিসংঘের সদস্য পদ দেওয়ার প্রস্তাবে ‘ভেটো’ দেয় ওই দেশটি।

জাতিসংঘের এসংক্রান্ত নথি থেকে জানা যায়, নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে চীনা প্রতিনিধি আটক পাকিস্তানি যুদ্ধবন্দিদের ব্যাপারে সমাধানসহ বেশ কিছু প্রত্যাশার কথা জানিয়েছিলেন, যা ছিল পাকিস্তানেরই প্রত্যাশা।  বহু বাধা ডিঙিয়ে ১৯৭৪ সালের সেপ্টেম্বর মাসে বাংলাদেশ জাতিসংঘের সদস্য পদ লাভ করে।

১৯৭২ সাল শেষে বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেওয়া দেশের সংখ্যা ছিল ৯৫টি। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের অবস্থান তখন বেশ দৃঢ়।

কিন্তু তা সত্ত্বেও পাকিস্তান বাংলাদেশের স্বীকৃতি ঠেকানোর চেষ্টা করছিল।

সে সময়ের কূটনৈতিক নথিপত্র থেকে জানা যায়, পাকিস্তানের অন্যতম লক্ষ্য ছিল পাকিস্তানি যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ঠেকানো ও যুদ্ধবন্দিদের ফিরিয়ে নেওয়া। ১৯৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বর দখলদার পাকিস্তানি বাহিনীর প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল আমির আবদুল্লাহ খান নিয়াজি যে আত্মসমর্পণ দলিলে সই করেছিলেন সেখানে তৎকালীন পূর্বাঞ্চলীয় রণাঙ্গনে ভারতীয় ও বাংলাদেশি বাহিনীর জেনারেল অফিসার কমান্ডিং ইন চিফ লেফটেন্যান্ট জেনারেল জগজিৎ সিং অরোরা আত্মসমর্পণকারী পাকিস্তানিদের জেনেভা কনভেনশন অনুযায়ী সুরক্ষার নিশ্চয়তা দিয়েছিলেন। যুদ্ধ শেষে বাংলাদেশ ও ভারতের যৌথ কমান্ডের কাছে ৯২ হাজার ২০৮ জন যুদ্ধবন্দি ছিল। পরবর্তী সময়ে তাদের ভারতে নিয়ে ১৩টি যুদ্ধশিবিরে রাখা হয়।

পাকিস্তান ওই যুদ্ধবন্দিদের ফিরিয়ে নেওয়াকেই অগ্রাধিকার দেয়। শুরুতে ভারত ও পাকিস্তানের সঙ্গে এ বিষয়ে আলোচনা হলেও ত্রিপক্ষীয় ইস্যু হওয়ায় বাংলাদেশকে যুক্ত করা আবশ্যিক হয়ে ওঠে। বাংলাদেশ পাকিস্তানের কাছে স্বীকৃতি এবং এ দেশে আটকে পড়া পাকিস্তানিদের ফিরিয়ে নেওয়ার দাবি তোলে। কিন্তু পাকিস্তান এতে সাড়া দেয়নি।

বাংলাদেশ ১৯৫ জন পাকিস্তানি যুদ্ধাপরাধীর বিচারের উদ্যোগ নিলে পাকিস্তান এর বিরোধিতা করে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে প্রচারণা চালায়, পাকিস্তানের সেনারা ভৌগোলিক অখণ্ডতা রক্ষার জন্য লড়াই করেছে। তাই তাদের ভূমিকাকে যুদ্ধাপরাধ বলা ঠিক নয়। পাকিস্তান তার দেশে আটকে থাকা জ্যেষ্ঠ বাঙালি কর্মকর্তাদের বিচার করার হুমকি দেয়।

পাকিস্তান তার দেশের ১৯৫ যুদ্ধাপরাধীকে বাংলাদেশে বিচারের উদ্যোগ ঠেকাতে ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিজে গিয়েও আবার ফিরে আসে। তবে সেই আদালতে পাকিস্তানের পক্ষে যুক্তি তুলে ধরা হয়েছিল যে ওই যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের এখতিয়ার পাকিস্তানের।

১৯৭৪ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে লাখের ইসলামিক সম্মেলনের প্রাক্কালে বাংলাদেশকে পাকিস্তানের স্বীকৃতি দেওয়া না দেওয়ার প্রশ্ন নতুন রূপ ধারণ করেছিল। বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দিয়ে ইসলামিক সম্মেলনে আমন্ত্রণ জানাতে পাকিস্তানের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী জুলফিকার আলী ভুট্টোর ওপর মুসলিম দেশগুলো চাপ সৃষ্টি করেছিল। ১৯৭৪ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তান বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয়।

এরপর ৫ থেকে ৯ এপ্রিল নয়াদিল্লিতে বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে ত্রিপক্ষীয় আলোচনা শেষে উপমহাদেশে সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণের লক্ষ্যে একটি ত্রিপক্ষীয় চুক্তি সই হয়। ওই চুক্তির মাধ্যমে ১৯৫ পাকিস্তানি যুদ্ধাপরাধী পাকিস্তানে ফিরে যায়।

ওই চুক্তির অপব্যাখ্যা করে পাকিস্তান বাংলাদেশে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের বিরোধিতা করে আসছে। আর বিচারের বিরোধিতা করতে গিয়ে পাকিস্তান বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে বারবার হস্তক্ষেপ করছে, যার প্রভাব পড়ছে দ্বিপক্ষীয় ও আঞ্চলিক সম্পর্কে।

সাবেক রাষ্ট্রদূত ওয়ালিউর রহমান গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় কালের কণ্ঠ’র সঙ্গে আলাপকালে ১৯৭১ সালের বাংলাদেশের বিজয়ের আগে ও পরে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে পাকিস্তানের কূটনৈতিক তৎপরতার বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ১৯৭১ সালে বাংলাদেশে স্বাধীনতাযুদ্ধ ও বিজয়ের পরে তিনি জেনেভায় ছিলেন। ১৬ই ডিসেম্বর ঢাকায় পাকিস্তানি বাহিনীর আত্মসমর্পণের পরও পাকিস্তানের আশা ছিল কিছু হবে না। চীন ও যুক্তরাষ্ট্র পাকিস্তানের জন্য কিছু না কিছু করবে।

ওয়ালিউর রহমান বলেন, তখন জেনেভায় বাংলাদেশি কূটনীতিকদের সঙ্গে দেখা হলেও পাকিস্তানি কূটনীতিকরা কথা বলতেন না। বাংলাদেশি কূটনীতিকদের ‘ঢাকার প্রতিনিধি’ নামে ডাকতেন। তাঁরা বাংলাদেশ শব্দটিই উচ্চারণ করতেন না। বাংলাদেশকে তাঁরা বলতেন ‘ভারতের দখলকার পূর্ব পাকিস্তান’। দুর্ভাগ্যবশত এ দেশেরও কেউ কেউ বিদেশে বসে এমন কথা বলত।

ওয়ালিউর রহমান আরো বলেন, ‘আজ আমরা যে মুসলিম উম্মাহকে এত আপন মনে করি, ইরাক আর মিসর ছাড়া তাদের কেউই তখন আমাদের পাশে দাঁড়ায়নি। পাশে ছিল ভারত আর সোভিয়েত ইউনিয়ন (বর্তমানে রাশিয়া)।’

প্রতিবছর বাংলাদেশের বিজয় দিবসকে পাকিস্তান পালন করে থাকে ‘ঢাকার পতন দিবস’ হিসেবে। গত ১৪ ডিসেম্বর পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ব্রিফিংয়ে বিষয়টি উঠেছে। একজন সাংবাদিক প্রশ্ন করতে গিয়ে বলেন, ‘১৬ ডিসেম্বর আমরা ঢাকার পতন দিবস পালন করব। বাংলাদেশের সঙ্গে পাকিস্তানের উত্তেজনাকর সম্পর্কের প্রেক্ষাপটে বর্তমানে আমাদের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কটি কি আন্তরিক, স্বাভাবিক, নাকি প্রতিকূল?’

জবাবে পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেন, পাকিস্তান বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ককে ১৯৭৪ সালের ত্রিপক্ষীয় চুক্তির ভিত্তিতেই গড়তে চায়।

কূটনৈতিক সূত্রগুলো জানায়, পাকিস্তান ১৯৭৪ সালের ত্রিপক্ষীয় চুক্তির অপব্যাখ্যা করে বাংলাদেশকে অতীত ভুলে যাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকে। পাকিস্তানের জন্য ১৯৭১ সাল কলঙ্কজনক যুদ্ধাপরাধ ও গণহত্যার। অন্যদিকে বাংলাদেশের জন্য তা বীরত্বের। পাকিস্তান অতীত ভুলে যেতে বললেও বাংলাদেশের পক্ষে তা সম্ভব নয়। বরং পাকিস্তানের উচিত গণহত্যার জন্য বাংলাদেশের জনগণের কাছে নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়ে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার চেষ্টা করা। পাকিস্তানের অতীতকে অস্বীকারের সংস্কৃতির কারণে আঞ্চলিক শান্তি, স্থিতিশীলতা ও সহযোগিতামূলক উদ্যোগগুলো ভেস্তে যেতে বসেছে। পাকিস্তানকে বাদ দিয়েই এখন অন্য দেশগুলো সহযোগিতামূলক সম্পর্ক এগিয়ে নিচ্ছে।

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

আজ রাজপথে নামছে বিএনপি

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
আজ রাজপথে নামছে বিএনপি

পুরান ঢাকার মিটফোর্ড হাসপাতালের সামনে ব্যবসায়ী লাল চাঁদ ওরফে মো. সোহাগ হত্যাকাণ্ডের অপপ্রচার ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে শান্তিপূর্ণভাবে আজ থেকে রাজপথে থাকবে বিএনপি। বিএনপি মনে করছে, এই হত্যাকাণ্ড নিয়ে জামায়াতে ইসলাম, ইসলামী আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) রাজপথ দখল করার চেষ্টা করছে বলে মনে করছে বিএনপি। এ জন্য রাজপথে বিএনপিও শক্তি ও জনসমর্থন দেখাবে।

এখন পর্যন্ত এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত কাউকে ছাড় দিচ্ছে না দলটি।

এমনকি এ ধরনের ঘটনা যাতে আর না ঘটে সে জন্য দলে শুদ্ধি অভিযান চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন দলের শীর্ষ নেতা। দলের নেতারা বলছেন, হত্যার সঙ্গে সরাসরি জড়িত দুজনকে চিহ্নিত করতে পারেনি আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী। কিন্তু বিরোধী পক্ষ একতরফাভাবে বিএনপির ওপর দায় চাপাচ্ছে। বিএনপিকে উদ্দেশ্য করে কটূক্তি করছে।
এর জবাব দিতে রাজপথে শক্তি দেখাবে দলটি। এরই অংশ হিসেবে আজ সোমবার ছাত্রদল ও ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপি এবং অন্য অঙ্গসংগঠন পৃথক শোডাউন করবে। বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী কালের কণ্ঠকে বলেন, বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠন প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করবে। জনগণ বিএনপির সঙ্গে আছে।
জনগণকে নিয়ে দেশবিরোধীদের ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করা হবে।

মাঠে নামছে ছাত্রদল : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি জানান, গোপন তৎপরতায় দীর্ঘদিন ধরে অভ্যস্ত গুপ্ত সংগঠন কর্তৃক মব সৃষ্টির অপচেষ্টা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ বিনষ্ট করা এবং সারা দেশে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির প্রতিবাদে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল আজ রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে বিক্ষোভ মিছিল করবে। গুপ্ত সংগঠন বলতে ইসলামী ছাত্রশিবির ও তাদের সহযোগী সংগঠনকে বোঝানো হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির।

ছাত্রদলের ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী, আজ দুপুর ২টায় রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে শাহবাগ পর্যন্ত বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হবে। পাশাপাশি সারা দেশের সব জেলা ও মহানগরে বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হবে।

জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব ও সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির এ কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন।

কর্মসূচির বিষয়ে ঢাবি শাখা ছাত্রদলের সভাপতি গণেশ চন্দ্র রায় সাহস বলেন, গুপ্ত সংগঠন হিসেবে সেসব সংগঠনকেই বোঝানো হয়েছে, যারা প্রকাশ্যে নিজেদের রাজনৈতিক কার্যক্রম পরিচালনার বদলে গোপনে রাজনৈতিক এজেন্ডা বাস্তবায়ন ও সহিংসতা ছড়িয়ে দেওয়ার মাধ্যমে রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে অস্থিরতা ও বিশৃঙ্খলা তৈরি করছে। গত ৫ আগস্টের পর একটি মুক্ত রাজনৈতিক পরিবেশ থাকা সত্ত্বেও তাদের এহেন গুপ্ত কার্যক্রম এ দেশের রাজনৈতিক পরিবেশকে অসহনশীল করে তুলছে এবং রাজনৈতিক বিষয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত করে তুলছে। এ রকম কুচক্রী কার্যক্রমের বিরুদ্ধেই জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল তার কর্মসূচি গ্রহণ করেছে, যেন দেশবাসীকে এসব বিভ্রান্তিকর বিষয়ে সচেতন করে তোলা যায়।

গুপ্ত সংগঠন বলতে কাদের বোঝানো হচ্ছে জানতে চাইলে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির বলেন, ছত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর যারা ক্যাম্পাসগুলোতে মব সৃষ্টি করে সাধারণ শিক্ষার্থী নামে অপ্রীতিকর পরিস্থিতি তৈরি করছে, তারাই গুপ্ত সংগঠন। ছাত্রশিবির এবং গুপ্তভাবে সংগঠন পরিচালনা করতে ছাত্রশিবিরকে যারা পৃষ্ঠপোষকতা করে, আশ্রয়-প্রশ্রয় দেয় তারা।

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

সশস্ত্র বাহিনীর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেসির মেয়াদ আরো দুই মাস বাড়ল

বিশেষ প্রতিনিধি
বিশেষ প্রতিনিধি
শেয়ার
সশস্ত্র বাহিনীর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেসির মেয়াদ আরো দুই মাস বাড়ল

বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীতে কর্মরত সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন ও এর ওপরের সমপদমর্যাদার কর্মকর্তাদের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতার মেয়াদ আরো দুই মাস (৬০ দিন) বাড়ানো হয়েছে। এ বিষয়ে গতকাল রবিবার প্রজ্ঞাপন জারি করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। এর আগে গত ১৩ মে থেকে তাঁদের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেসির ক্ষমতার মেয়াদ দুই মাস বাড়ানো হয়েছিল। সেই মেয়াদ গতকাল শেষ হয় ।

মেয়াদ বাড়ানোর আদেশে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীতে কর্মরত সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন ও এর ওপরের সমপদমর্যাদার কমিশন্ড কর্মকর্তাদের (কোস্ট গার্ড ও বিজিবিতে প্রেষণে নিয়োজিত সমপদমর্যাদার কর্মকর্তারাসহ) ‌‘দ্য কোড অব ক্রিমিনাল প্রসিডিউর, ১৮৯৮-এর ১২(১) ও ১৭ ধারা অনুযায়ী স্পেশাল এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা অর্পণ করা হলো। এর মেয়াদ হবে ১৪ মার্চ থেকে ৬০ দিন পর্যন্ত। সারা দেশে তাঁরা এই ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারবেন বলেও প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে।

প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, সেনাবাহিনীর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা ফৌজদারি কার্যবিধি-১৮৯৮-এর ৬৪, ৬৫, ৮৩, ৮৪, ৮৬, ৯৫(২), ১০০, ১০৫, ১০৭, ১০৯, ১১০, ১২৬, ১২৭, ১২৮, ১৩০, ১৩৩ ও ১৪২ ধারার অপরাধগুলো বিবেচনায় নিতে পারবেন।

প্রথমে গত বছরের ১৭ সেপ্টেম্বর সেনাবাহিনীর কমিশন্ড অফিসারদের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছিল জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। পরে ৩০ সেপ্টেম্বর প্রজ্ঞাপন সংশোধন করে বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর কমিশন্ড অফিসারদের (সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন ও এর ওপরের সমপদমর্যাদার কর্মকর্তা) এই ক্ষমতা দেওয়া হয়। অর্থাৎ শুধু সেনাবাহিনী নয়, বিমান ও নৌবাহিনীর কমিশন্ড অফিসারদেরও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা দেওয়া হয়। তখন ৬০ দিনের জন্য এই ক্ষমতা দেওয়া হয়েছিল।

সেই মেয়াদ নভেম্বরের মাঝামাঝি শেষ হয়েছিল। পরে সেই ক্ষমতার মেয়াদ কয়েক দফায় বাড়ানো হয়।

মন্তব্য

শেখ হাসিনাসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে গুমের অভিযোগ বিএনপির

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
শেখ হাসিনাসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে গুমের অভিযোগ বিএনপির

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক ও সাবেক পুলিশপ্রধান (আইজিপি)  বেনজীর আহমেদসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর কার্যালয়ে গুমের অভিযোগ দিয়েছে বিএনপি।

গতকাল রবিবার দুপুরে ভুক্তভোগীদের সঙ্গে নিয়ে এই অভিযোগ দেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির নির্বাহী সদস্য এবং তথ্য সেলের সমন্বয়ক সালাহউদ্দিন খান।

অভিযোগ তদন্ত করে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম।

২০১৯ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত গুমের ঘটনায় ১১ জন ভুক্তভোগীর নাম উল্লেখ করা হয়েছে লিখিত অভিযোগে।

তাঁরা হলেনঝালকাঠির নলছিটির মোহাম্মদ আলী খান, সাবেক যুবদল নেতা মো. জিল্লুর রহমান, আকিদুল আলী, খোরশেদ আলম, অ্যাডভোকেট আশরাফ আলী, মো. বাবুল, এনামুল, এরশাদ আলী, মো. গিয়াস উদ্দিন খান, মো. কবির উদ্দিন খান ও নজরুল ইসলাম।

অভিযোগে বলা হয়েছে, ২০১৯ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন সময় এসব ভুক্তভোগীকে অপহরণের পর আয়নাঘরে আটকে রেখে নির্যাতন করা হয়। গত বছর ৫ আগস্ট সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পলায়নের পর মোহাম্মদ আলীকে হাত ও চোখ বেঁধে পূর্বাচলের শেষ প্রান্তে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে ফেলে আসা হয়। পাঁচ বছর তিন মাস ১৩ দিন পর তিনি মুক্তি পান।

এ ঘটনায় মোহাম্মদ আলী খান বিএনপি মহাসচিবের মাধ্যমে ন্যায়বিচার চেয়ে আবেদন করেন।

তাঁর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ১১ জন ভুক্তভোগীর নাম উল্লেখ করে আবেদনটি করা হয় বলে জানান সালাহউদ্দিন খান।

সালাহউদ্দিন খান সাংবাদিকদের বলেন, ভুক্তভোগীরা শেখ হাসিনাসহ ১৬ জন এবং অজ্ঞাতপরিচয় আরো ৩০ থেকে ৩৫ জনের নাম উল্লেখ করে ন্যায়বিচারের আশায় আবেদন করেছেন। ভুক্তভোগীরা বলেছেন, শুধু বিএনপি করার অপরাধে বিগত সরকারের নির্মম নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে তাঁদের।

মন্তব্য

সোহাগের পরিবারের পাশে তারেক রহমান

বরগুনা প্রতিনিধি
বরগুনা প্রতিনিধি
শেয়ার
সোহাগের পরিবারের পাশে তারেক রহমান

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে পুরান ঢাকায় নিহত ব্যবসায়ী লাল চাঁদ ওরফে সোহাগের পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছেন দলটির ভাইস চেয়ারম্যান নূরুল ইসলাম মনি। গতকাল রবিবার বিকেলে তিনি বরগুনা জেলার পাথরঘাটা উপজেলার কাকচিড়া ইউনিয়নের সোহাগের গ্রামের বাড়িতে যান। তিনি স্থানীয় কাকচিড়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে আয়োজিত সভায় বক্তব্য দেন।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে তিনি নিহত সোহাগের পরিবারকে ৫০ হাজার টাকা আর্থিক সহায়তা প্রদান করেন।

সোহাগের পরিবারের যেকোনো প্রয়োজনে পাশে থাকারও আশ্বাস দেন। এ ছাড়া হত্যাকাণ্ডের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে বিএনপির পক্ষ থেকে সব ধরনের সহায়তার আশ্বাস দেন। স্বামীর হত্যার বিচার চেয়ে তখন সোহাগের স্ত্রী লাকি আক্তার বলেন, আমি আমার স্বামীর হত্যাকারীদের ফাঁসি চাই। আমার পরিবারের নিরাপত্তা চাই।
সভায় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান নূরুল ইসলাম মনি বলেন, এই এলাকার সন্তান ঢাকার মিটফোর্ডের ব্যবসায়ী সোহাগকে তাঁর ব্যাবসায়িক পার্টনার ও তাদের ভাড়াটেরা নৃশংসভাবে হত্যা করেছে। বিএনপি ঘটনার সঙ্গে সঙ্গে তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। দলের পক্ষ থেকে এর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করা হয়েছে। সম্পৃক্তদের দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
বিএনপি কোনো অপকর্মকে প্রশ্রয় দেয় না। পাথরঘাটা উপজেলা বিএনপির আহবায়ক চৌধুরী মো. ফারুকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় বক্তব্য দেন বরগুনা জেলা বিএনপির সাবেক সহসভাপতি ফজলুল হক মাস্টার, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক কে এম সফিকুজ্জামান মাহফুজ, জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক জাবেদুল ইসলাম জুয়েল, জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম নাভিল প্রমুখ।

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ