সপ্তম অধ্যায় : মানবাধিকার
যোগ্যতাভিত্তিক প্রশ্ন
১। সমাজে মানবাধিকার বিরোধী দুটি কাজের উল্লেখসহ এগুলো রক্ষায় তোমার ভূমিকা কী হবে? ব্যাখ্যা করো।
উত্তর : সমাজে মানবাধিকারবিরোধী দুটি কাজ হলো শিশু নির্যাতন, নারী ও শিশু পাচার। মানবাধিকার রক্ষায় আমার ভূমিকা হলো : মানবাধিকার রক্ষায় শিশুশ্রম বন্ধ করার চেষ্টা করব।
নারী-পুরুষের মজুরির বৈষম্য দূর করার চেষ্টা করব। বাড়ির কাজে সহায়তাকারীদের নির্যাতন বন্ধ করার চেষ্টা করব। নারী ও শিশু পাচারের মতো মানবাধিকারবিরোধী কাজ প্রতিরোধ করে তবে তাকে এ বিষয়ে সচেতন করব, প্রয়োজন হলে মানবাধিকারবিরোধীদের আইনের হাতে তুলে দেব। সরকার কর্তৃক এ লক্ষ্যে প্রণীত বিভিন্ন আইন মেনে।
২। শিশুশ্রম কী? এর ফলে শিশুরা কী কী সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে?
উত্তর : অপ্রাপ্ত বয়সে পড়াশোনা বাদ দিয়ে শ্রমিক হিসেবে কাজে নিয়োজিত শিশুদের কাজকেই শিশুশ্রম বলা হয়ে থাকে। শিশুরা যে যে সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয় তা হলো :
i. শিশু শ্রমিকরা লেখাপড়ার সুযোগ পায় না।
ii. অনেক ক্ষেত্রে সঠিক মজুরি পায় না।
iii. খাওয়াদাওয়া, থাকার জায়গা, সুচিকিৎসা, পোশাক থেকে বঞ্চিত হয়।
iv. শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়।
v. শিশুর শারীরিক বৃদ্ধি ও মেধার বিকাশ ঘটে না।
৩। পঞ্চম শ্রেণিতে তোমার একজন সহপাঠী রয়েছে।
সহপাঠীর মা-বাবা হঠাৎ একদিন তার বিয়ে ঠিক করে। এ ক্ষেত্রে তোমার পাঁচটি করণীয় লেখো।
উত্তর : আমার পঞ্চম শ্রেণির সহপাঠীর বাবা হঠাৎ একদিন তার বিয়ে ঠিক করে ফেললে আমার করণীয়—
i. বন্ধু-বান্ধবদের নিয়ে শিক্ষককে জানাব।
ii. শিক্ষকের সাথে গিয়ে তার বাবা-মাকে বোঝানোর চেষ্টা করব।
iii. বাল্যবিবাহের কুফল সম্পর্কে ওই সহপাঠীসহ শ্রেণির সবাইকে সচেতন করব।
iv. এ ধরনের বিয়ে যে অপরাধ তা বোঝানোর চেষ্টা করব, প্রয়োজনে পুলিশকে খবর দেব।
v. দারিদ্র্য বা অন্য কোনো কারণে এ বিয়ে সংঘটিত হলে, সেই বাধা সবাই মিলে দূর করার চেষ্টা করব।
৪। কোন প্রতিষ্ঠান মানবাধিকারকে প্রথম স্বীকৃতি প্রদান করে? কখন, কবে করে?
উত্তর : জাতিসংঘ সর্বপ্রথম মানবাধিকারকে স্বীকৃতি প্রদান করে। জাতিসংঘ ১৯৪৮ সালের ১০ ডিসেম্বর মানবাধিকারের ‘সার্বজনীন ঘোষণাপত্র’ অনুমোদন করে। ঘোষণাপত্র অনুযায়ী জাতি, ধর্ম, বর্ণ, বয়স, নারী-পুরুষ সবার সমান অধিকার। বিশ্বের সব দেশের সব মানুষের এই অধিকারগুলো আছে। এই অধিকারগুলোই মানবাধিকারের অন্তর্ভুক্ত।
৫। শিশুশ্রমের কারণে শিশুরা কোন অধিকারগুলো থেকে বঞ্চিত হয়?
উত্তর : শিশুরা যে যে সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয় তা হলো—
i. শিশু শ্রমিকরা লেখাপড়ার সুযোগ পায় না।
ii. অনেক ক্ষেত্রে সঠিক মজুরি পায় না।
iii. খাওয়াদাওয়া, থাকার জায়গা, সুচিকিৎসা, পোশাক থেকে বঞ্চিত হয়।
iv. শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়।
v. শিশুর শারীরিক বৃদ্ধি ও মেধার বিকাশ ঘটে না।
৬। মানবপাচার বলতে কী বোঝায়?
উত্তর : যদি কোনো ব্যক্তি প্রলোভনের মাধ্যমে কোনো শিশু ও নারীকে অপহরণ করে সংঘবদ্ধ চক্রের কাছে বিক্রি করে দেয় তখন তাকে মানবপাচার বলে। একটি সংঘবদ্ধ চক্র আর্থিক মুনাফার লোভে এ হীন কাজ করে থাকে। পাচারকৃত নারীকে পতিতাবৃত্তিতে বাধ্য করা হয়। আর শিশুদের উটের জকি অথবা হত্যা করে কিডনি বিক্রয় করা হয়। দক্ষিণ এশিয়ায় মানবপাচারের যে অবস্থা লক্ষ করা যায়, সেখানে মানবপাচারের অন্যতম প্রধান দেশ বাংলাদেশ।
৭। অটিজমের প্রতিকার সম্পর্কে তোমার অভিমত দাও।
উত্তর : অটিজমের প্রতিকার সম্পর্কে আমার অভিমত নিচে দেওয়া হলো :
i. অটিজম সমস্যার ধরনগুলো জেনে সঠিক শিক্ষা দিয়ে অটিস্টিক শিশুদের স্বাভাবিক জীবনে অভ্যস্ত করা।
ii. তারা যাতে উত্তেজিত হয় এমন আচরণ না করা।
iii. অটিজম যেহেতু রোগ নয়, আচরণগত সমস্যা তাই আচরণ পরিবর্তনের কৌশল নেওয়া।
iv. তাদের পছন্দকে গুরুত্ব দেওয়া, তাদের কষ্ট পাওয়া আচরণগুলো পরিহার করা।
v. তাদের বিরক্ত না করা।