ব্যাকরণিক শব্দশ্রেণি
বর্ণনামূলক প্রশ্ন
১। আবেগ শব্দ কাকে বলে? এটি কত প্রকার ও কী কী? উদাহরণসহ সংজ্ঞা দাও।
উত্তর : মনের নানা ভাব বা আবেগকে প্রকাশ করা হয় যেসব শব্দ দিয়ে, সেগুলোকে আবেগ শব্দ বলা হয়। এ ধরনের শব্দ বাক্যের অন্য শব্দগুলোর সঙ্গে সরাসরি সম্পর্কিত না হয়ে আলগাভাবে বা স্বাধীনভাবে ব্যবহৃত হয়।
যেমন— ছি ছি, আহা, বাহ্, শাবাশ, হায় হায় ইত্যাদি। আবেগ শব্দ বিভিন্ন ধরনের হয়ে থাকে।
নিচে বিভিন্ন ধরনের আবেগ শব্দের প্রয়োগ দেখানো হলো—
ক) সিদ্ধান্ত আবেগ :
এজাতীয় শব্দের সাহায্যে অনুমোদন, সম্মতি, সমর্থন ইত্যাদি ভাব প্রকাশ করা হয়। যেমন—
i. হ্যাঁ, আমাদের জিততেই হবে।
ii. বেশ, তবে যাওয়াই যাক।
খ) প্রশংসা আবেগ :
এ ধরনের শব্দ প্রশংসা বা তারিফের মনোভাব প্রকাশে ব্যবহৃত হয়। যেমন—
i. শাবাশ! এমন খেলাই তো চেয়েছিলাম।
ii. বাহ্, চমৎকার লিখেছ।
গ) বিরক্তি আবেগ :
এ ধরনের শব্দ অবজ্ঞা, ঘৃণা, বিরক্তি ইত্যাদি মনোভাব প্রকাশে ব্যবহৃত হয়। যেমন—
i. ছি ছি! এ রকম কথা তার মুখে মানায় না।
ii. জ্বালা! তোমাকে নিয়ে আর পারি না!
ঘ) আতঙ্ক আবেগ :
এ ধরনের আবেগ-শব্দ আতঙ্ক, যন্ত্রণা, কাতরতা ইত্যাদি প্রকাশ করে। যেমন—
i. উহ্, কী বিপদে পড়া গেল?
ii. বাপরে বাপ! কী ভয়ংকর ছিল রাক্ষসটা।
ঙ) বিস্ময় আবেগ :
এ ধরনের শব্দ বিস্মিত বা আশ্চর্য হওয়ার ভাব প্রকাশ করে।
যেমন—
i. আরে! তুমি আবার কখন এলে?
ii. আহ্, কী চমৎকার দৃশ্য!
চ) করুণা আবেগ :
এ ধরনের শব্দ করুণা, মায়া, সহানুভূতি ইত্যাদি মনোভাব প্রকাশ করে। যেমন—
i. আহা! বেচারার এত কষ্ট।
ii. হায় হায়, ওর এখন কী হবে!
ছ) সম্বোধন আবেগ :
এ ধরনের শব্দ সম্বোধন বা আহ্বান করার ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়। যেমন—
i. হে বন্ধু, তোমাকে অভিনন্দন।
ii. ওগো, তোরা জয়ধ্বনি কর।
জ) অলংকার আবেগ :
এ ধরনের শব্দ বাক্যের অর্থের পরিবর্তন না ঘটিয়ে কোমলতা, মাধুর্য ইত্যাদি বৈশিষ্ট্য এবং সংশয়, অনুরোধ, মিনতি ইত্যাদি মনোভাব প্রকাশের জন্য অলংকার হিসেবে ব্যবহৃত হয়। যেমন—
i. দূর! এ কথা কি বলতে আছে?
ii. যাকগে, ওসব কথা থাক।