পৃথিবীর দীর্ঘতম হিমবাহ হলো ল্যামবার্ট। এটি অ্যান্টার্কটিকা মহাদেশে অবস্থিত
হিমবাহ (Glacier) হলো বরফের বিরাট চলমান স্তূপ বা নদী। সাধারণত পার্বত্য অঞ্চলে শীতকালে তুষার পড়ার হার গ্রীষ্মে গলনের হারের চেয়ে বেশি হলে পাহাড়ের ওপরে তুষার জমতে শুরু করে এবং জমে শক্ত বরফে পরিণত হয়। এই বরফ জমা এলাকাটিকে বরফক্ষেত্র (Ice field) বলে। যখন এই জমা বরফ নিজের ওজনের ভারে এবং মাধ্যাকর্ষণের টানে ধীরগতিতে পাহাড়ের ঢাল বেয়ে নিচে নামতে শুরু করে, তখন তাকে হিমবাহ বলে।
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞানী ফ্লিন্টের মতে, ‘হিমবাহ হলো এক বিশাল আকৃতির বরফের স্তূপ, যা তুষার জমাট বেঁধে তৈরি হয়ে বিস্তীর্ণ অঞ্চলে অবস্থান করছে এবং চলন্ত অবস্থায় রয়েছে বা কোনো এক সময় চলন্ত অবস্থায় ছিল। মহাদেশের বিস্তীর্ণ অঞ্চলজুড়ে থাকা হিমবাহগুলোকে মহাদেশীয় হিমবাহ বলে; যেমন— অ্যান্টার্কটিকা মহাদেশীয় হিমবাহ, যার বিস্তৃৃতি প্রায় ১৩০ লাখ বর্গকিলোমিটার। গ্রিনল্যান্ড মহাদেশীয় হিমবাহ, যা প্রায় ১৮ লাখ বর্গকিলোমিটার এলাকায় ছড়িয়ে আছে। পার্বত্য অঞ্চলের উঁচু অংশে মাধ্যাকর্ষণ শক্তির প্রভাবে যে ধীর চলমান হিমবাহ দেখা যায়, তাকে পার্বত্য বা উপত্যকা হিমবাহ বলে। এগুলো কয়েক কিলোমিটার থেকে দুই হাজার কিলোমিটার পর্যন্ত বিস্তৃত হতে পারে। যেমন—ভারতের সিয়াচেন হিমবাহ। পার্বত্য বা উপত্যকা হিমবাহের আরেক নাম আল্পীয় হিমবাহ।
তাপমাত্রা বেড়ে গেলে হিমবাহ গলে যায়, তখন সমুদ্রের পানির উচ্চতাও বেড়ে যায়। বিশ্বের অনেক দেশেই হিমবাহ দেখা যায়। দক্ষিণ মেরুর অ্যান্টার্কটিকার পাশাপাশি আমেরিকা, আর্জেন্টিনা, আইসল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, ইতালির সীমান্তবর্তী আল্পস পর্বতমালায় বড় ধরনের হিমবাহ দেখা যায়। পাকিস্তানের বেলুচিস্তানের কারাকোরাম পর্বতমালার বিয়াফো হিমবাহের দৈর্ঘ্য ৬৭ কিলোমিটার। বিশ্বের বড় হিমবাহের মধ্যে এটি একটি। পৃথিবীর দীর্ঘতম হিমবাহ হলো ল্যামবার্ট। এটি আন্টার্কটিকা মহাদেশে অবস্থিত।
[আরো বিস্তারিত জানতে পত্রপত্রিকায় হিমবাহ সম্পর্কিত লেখাগুলো পড়তে পারো। ]