<p>যৌতুক হলো মেয়ের বিয়েতে মা-বাবার সম্পত্তির হস্তান্তর প্রক্রিয়া। হিন্দু আইনে যৌতুককে নারীর সম্পত্তির (স্ত্রীধন) অন্যতম উৎস বলে উল্লেখ করা আছে, যে সম্পত্তি কোনো নারী তাঁর স্বামীর সম্মতি ব্যতিরেকে হস্তান্তরের নিরঙ্কুশ অধিকার রাখে। হিন্দু সমাজে নারীরা পুরুষের মতো একইভাবে সম্পত্তির উত্তরাধিকারী হয় না। তাই অনেক আগে থেকেই হিন্দু সমাজে নারীদের বিয়ের সময় যৌতুক দেওয়ার প্রচলন ছিল। কালক্রমে তা বিয়ের পণ হিসেবে আবির্ভূত হয়, যা একসময় কনেপক্ষের জন্য এক কষ্টকর রীতি হয়ে দাঁড়ায়।</p> <p>ঔপনিবেশিক আমলে ক্রমবর্ধমান যৌতুক সমস্যার রাশ টেনে ধরার বা যৌতুক নিরুৎসাহকরণে কোনো আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। কিন্তু ভারতে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনের অবসানের পর ভারত সরকার পণ হিসেবে বিয়ের আগে বা পরে কিংবা বিয়ের সময় যৌতুক দাবি করা বা গ্রহণ করাকে শাস্তিযোগ্য অপরাধ ঘোষণা করে যৌতুক নিষিদ্ধকরণ আইন-১৯৬১ বিধিবদ্ধ করে। বাংলাদেশে এই সামাজিক সমস্যার রাশ টেনে ধরার জন্য যৌতুক নিষিদ্ধকরণ আইন-১৯৮০ বিধিবদ্ধ করা হয়, যা ভারতের ১৯৬১ সালের যৌতুক নিষিদ্ধকরণ আইন দ্বারা প্রভূতরূপে প্রভাবিত।</p> <p>১৯৮০ সালের যৌতুক নিরোধক আইন অনুসারে ‘প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে যদি কোনো পক্ষ অপর পক্ষকে বিয়ের আগে-পরে-চলাকালীন যেকোনো সময় যেকোনো সম্পদ বা মূল্যবান জামানত হস্তান্তর করে বা করতে সম্মত হয়, সেটাই যৌতুক বলে বিবেচ্য হবে।’ বিয়ের সঙ্গে সরাসরি সম্পর্কিত নয় এমন কেউ ৫০০ টাকা বা তার চেয়ে কম মূল্যমানের কোনো বস্তু উপহার হিসেবে কোনো পক্ষকে দিলে তা যৌতুক হিসেবে বিবেচিত হবে না। তবে বিয়ের শর্ত হিসেবে এই সমপরিমাণ কোনো কিছু আদান-প্রদান করলে তা যৌতুক হিসেবে বিবেচিত হবে। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন-২০০০ অনুসারে বিয়ে স্থির থাকার শর্ত হিসেবে বা বিয়ের পণ হিসেবে প্রদত্ত অর্থ বা প্রদান করা হবে এই মর্মে কোনো শর্তে যেকোনো সম্পদ যৌতুক হিসেবে বিবেচিত হবে। মুসলিম সম্প্রদায়ের বিয়ের ক্ষেত্রে বিয়ের মোহরানা যৌতুক হিসেবে বিবেচিত হবে না।</p> <p> </p> <p>[আরো বিস্তারিত জানতে বাংলাপিডিয়া ও পত্রপত্রিকায় যৌতুক সম্পর্কিত লেখাগুলো পড়তে পারো।]</p>