<p>পিরামিড (Pyramid) মূলত এক ধরনের ত্রিমাত্রিক জ্যামিতিক নকশা। এই নকশার ভূমি হয় একটি বহুভুজাকৃতির ক্ষেত্র। এই ক্ষেত্রের প্রতিটি বাহু থেকে ত্রিভুজাকার ক্ষেত্র ওপরের দিকে একটি বিন্দুতে মিলিত হয়। এর ফলে যে ত্রিমাত্রিক অবয়ব তৈরি হয়, তাকেই বলা হয় পিরামিড নকশা। পিরামিডের এই নকশার ধারণা গণিতশাস্ত্রে প্রবেশ করেছে প্রাচীন মিসরের স্থাপনা অনুসরণে। মূলত পিরামিড বলতে জ্যামিতিক নকশার চেয়ে অধিকতর প্রাধান্য পায় মিসরের পিরামিড নামের স্থাপত্য। যদিও পিরামিড বলতে মিসরের পিরামিডকেই মনে পড়ে।</p> <p>প্রাচীন মিসরের ফারাও রাজাদের সমাধির ওপর নির্মিত চতুর্ভুজাকার পিরামিডের স্থাপত্যকর্মই সাধারণভাবে মিসরের পিরামিড নামে পরিচিত। ২০০৮ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত মিসরে ছোট-বড় মিলিয়ে প্রায় ১৩৮টি পিরামিড পাওয়া গেছে। এই পিরামিডগুলোর বেশির ভাগই মিসরের রাজধানী কায়রোর কাছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বড়টির নাম গিজার পিরামিড বা খুফুর পিরামিড। এটি তৈরি হয়েছিল খ্রিস্টপূর্ব প্রায় পাঁচ হাজার বছর আগে। এর উচ্চতা প্রায় ৪৮১ ফুট এবং ৭৫৫ বর্গফুট জমির ওপর স্থাপিত। এটি তৈরি করতে সময় লেগেছিল ২০ বছর এবং শ্রমিক খেটেছিল এক লাখ। পিরামিডটি তৈরি করা হয়েছিল বিশাল আকৃতির পাথরখণ্ড দিয়ে। পাথরখণ্ডের একেকটির ওজন ছিল প্রায় ৬০ টন, আর দৈর্ঘ্য ছিল ৩০ থেকে ৪০ ফুট। এগুলো সংগ্রহ করা হয়েছিল দূর-দূরান্তের পাহাড় থেকে।</p> <p>মিসরবাসী মনে করত, মানুষ মারা যাওয়ার পর তাদের দেহ নষ্ট হলেও আত্মা বেঁচে থাকে। মৃত্যুর পর দেহ অক্ষুণ্ন থাকলে আত্মা সে দেহে আবার ফিরে আসবে, এমনটাই তারা বিশ্বাস করত। তাই তারা মৃতদেহকে মমি বানিয়ে পিরামিডের ভেতরে রাখত। সাধারণ মানুষের জন্য এই পদ্ধতি ব্যয়বহুল হলেও সম্রাটদের জন্য তা ছিল না। তাই তাঁরা তাঁদের সমাধিতে নিজেদের দেহ তো বটেই, তাঁদের দাস-দাসীদের পর্যন্ত হত্যা করে মমি বানিয়ে পিরামিডের ভেতর রেখে দিতেন। সম্রাটদের মৃতদেহের সঙ্গে তাঁদের ব্যবহার্য মূল্যবান সামগ্রীও পিরামিডের ভেতরের সুনির্দিষ্ট কক্ষে রাখা হতো।</p> <p><strong>ইন্দ্রজিৎ মণ্ডল</strong></p> <p>[আরো বিস্তারিত জানতে দ্বিজেন্দ্রনাথ বর্মনের অনুবাদ বই ‘মিশরের ইতিহাস’ ও পত্রপত্রিকায় পিরামিড সম্পর্কিত লেখাগুলো পড়তে পারো।]</p>