<p>চিকা (Shrew) Insectivora বর্গের Sorcidae গোত্রের ইঁদুরের মতো দেখতে স্তন্যপায়ী প্রাণী। এদের মুখের অগ্রভাগ সরু ও দাঁত ধারালো; চোখ অপূর্ণাঙ্গ ও ক্ষুদ্রাকৃতি; নরম, পুরু, কোমল পশম; লম্বাটে দেহের গড়ন এদের প্রধান বৈশিষ্ট্য। এ ছাড়া এদের ছোট পা; প্রশস্ত পায়ের পাতা, লম্বা ও শক্তিশালী থাবার অধিকারী। ইউরোপ, এশিয়া ও উত্তর আমেরিকার দেশগুলোতে মাটির গর্তে এদের প্রধান আবাসস্থল।</p> <p><img alt="" src="http://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/ckfinder/innerfiles/images/Print Version Online/print /2021/10.October/05-10-2021/Kk-21'10'05-2.jpg" style="float:left; height:50px; margin:10px; width:150px" />এরা ছুঁচো বা গন্ধমুষিক নামেও পরিচিত। বাংলাদেশে ধূসর চিকা ও বামন চিকা—এই দুই প্রজাতির চিকা আছে।  ধূসর চিকা শহর, গ্রাম ও বনাঞ্চলসহ দেশের সর্বত্র পাওয়া যায়। তবে বামন চিকা বর্তমানে বাংলাদেশে দুর্লভ। ধূসর চিকার মাথা থেকে লেজের গোড়া পর্যন্ত দৈর্ঘ্য ১৫ সেমি ও লেজের দৈর্ঘ্য ৮ সেমি। এদের দেহের দুই পাশে কানের পেছনে অবস্থিত দুটি গ্রন্থিতে গন্ধ উৎপন্ন হয়। রাতে চিকার তীক্ষ ও কর্কশ চিঁচিঁ ডাক শোনা যায়।</p> <p>বামন চিকার মাথা থেকে লেজের গোড়া পর্যন্ত দৈর্ঘ্য ৪.৮ সেমি ও লেজের দৈর্ঘ্য ৩ সেমি। ওজন মাত্র ২.৫ গ্রাম। এরা স্থলভাগের স্তন্যপায়ী প্রাণীদের মধ্যে আকারে সবচেয়ে ছোট।</p> <p>চিকা একাকী জীবনধারণ করলেও প্রজনন ঋতুতে জোড় বাঁধে। গর্ভবতী চিকা মাটিতে গর্ত করে শুকনো লতাপাতা, খড়কুটো দিয়ে বাসা বানায়। চতুষ্পদী প্রাণী হিসেবে চিকা তার সামনের শক্তিশালী পা জোড়ার থাবা দিয়ে খুব দ্রুত মাটি খনন করতে পারে। চলাফেরার সুবিধার্থে মাটির অভ্যন্তরে অনেক প্রকোষ্ঠসহ ভূমি সংযোগকারী গর্ত তৈরি করে থাকে। প্রজাতিভেদে এরা ৫-১০টি সন্তান প্রসব করে। এরা ভূ-গর্ভস্থ মাটি খননের মাধ্যমে কেঁচো ও পোকামাকড়ের ডিম সংগ্রহ করে খেয়ে জীবনধারণ করে। এরা মূলত পতঙ্গভোজী হলেও ফল, ফুল, বীজও খেয়ে থাকে। এরা দেড় বছর থেকে প্রজাতিভেদে চার-পাঁচ বছর বাঁচে।</p> <p>►   ইন্দ্রজিৎ মণ্ডল</p>