<p>কোনো জীব প্রজাতির প্রতিটি স্বতন্ত্র জীব যেসব বংশগতিমূলক তথ্য (বংশাণু বা জিন) বহন করে, তাদের সমষ্টিকে জিনোম বলে। একে সহজভাবে বলা চলে জীবনের নীলনকশা বা কোনো জীবের জীবনবিধান। জীবের বৃদ্ধি, প্রজনন, পরিবেশের সঙ্গে খাপ খাওয়াসহ  যাবতীয় কার্যক্রম পরিচালনা করে জিনোম। যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল হিউম্যান জিনোম রিসার্চ ইনস্টিটিউটের তথ্য অনুযায়ী, এককোষী ব্যাকটেরিয়া থেকে শুরু করে পৃথিবীর যাবতীয় প্রাণী কিংবা উদ্ভিদ জিনোমে গঠিত হয়েছে। ফলে জিনোমের সামান্য পরিবর্তন করে জীব বা প্রাণীর জীবনচক্রের বড় ধরণের পরিবর্তন করা সম্ভব।</p> <p><img alt="" src="http://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/ckfinder/innerfiles/images/Print Version Online/print /2021/09.Septembar/04-09-2021/Kk-21'09'04-3.jpg" style="float:left; height:58px; margin:10px; width:150px" />১৯২০ সালে জার্মানির হামবুর্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদবিজ্ঞানের অধ্যাপক হ্যান্স উইংকলার ইংরেজি জিন (বংশাণু) ও ক্রোমোজোম (বংশসূত্র) শব্দ দুটি জোড়া লাগিয়ে জিনোম শব্দটি উদ্ভাবন করেন।</p> <p>মানুষের জিনোম মানুষের প্রতিটি দেহকোষের কোষকেন্দ্রের ভেতরে অবস্থিত ২৩ জোড়া ক্রোমোজোম পাওয়া যায়। প্রতিটি ক্রোমোজোমে দুটি ডিএনএ অণুর সূত্র সর্পিলাকারে একে অপরকে ঘিরে পেঁচিয়ে থাকে। ডিএনএ এক ধরনের পলিমার অণু। ডিএনএর সাংগঠনিক একক তথা মনোমার অণুগুলোকে নিউক্লিওটাইড বলে। একটি পলিমার ডিএনএ অণুর ভেতরে অসংখ্য মনোমার নিউক্লিওটাইড অণু নির্দিষ্ট অনুক্রমে সজ্জিত থাকে। নিউক্লিওটাইডগুলোর এই অনুক্রমগুলোতেই জিনোম থাকে। জিনোমের পুরোটাই জিন নয়, বরং জিনের একটি অংশ মাত্র। জিন বলতে জিনোমের সেই অংশকে বোঝানো হয়, যা নির্দিষ্ট কোনো প্রোটিন তৈরির কোড ধারণ করে। যেমন—মানুষের শরীরে ৩০০ কোটি জোড়া বেইসের মধ্যে জিন রয়েছে ২০ হাজারের মতো। এই জিনগুলো সম্মিলিতভাবে মানবের সব বৈশিষ্ট্য ধারণ করে।</p> <p>প্যারিস জাপোনিকা নামের একটি ফুলগাছের জিনোম জীবজগতে দীর্ঘতম বলে আবিষ্কৃত হয়েছে। ফুলটি আকারে ছোট, শুভ্র বর্ণ। পাহাড়ি এই ফুলের বিকাশের গতি অত্যন্ত ধীর। যুক্তরাজ্যের কিউই গার্ডেনস উদ্যানে এই ফুলের চাষ করা হয়েছে। কিউই গার্ডেনসে কর্মরত গবেষকরা আবিষ্কার করেন যে এই ফুলের জিনোম অনুক্রম মানুষের জিনোমের তুলনায় ৫০ গুণ দীর্ঘ। এই ফুলের জিনোমে ১৫ হাজার কোটি বেইস জোড় রয়েছে।                 </p> <p> ►  ইন্দ্রজিৎ মণ্ডল</p>