<p>অপরূপ লাবণ্যে ও বর্ণের প্রাচুর্যে মহিমান্বিত সুন্দর একটি ফুল হলো ডালিয়া। অস্টেরেসি পরিবারের অন্তর্গত এর বৈজ্ঞানিক নাম <u>Dahlia pinnata</u>। এই গাছ এক ধরনের গুল্মজাতীয়, কন্দযুক্ত, সপুষ্পক ভেষজ বহুবর্ষজীবী। আদি নিবাস মেক্সিকো। লর্ডবুটি নামের এক ব্যক্তি স্পেন থেকে ডালিয়া ফুল প্রথমে ইংল্যান্ডে নিয়ে আসেন। সেই ফুল দেখে সুইডেনের উদ্ভিদতত্ত্ববিদ আন্দ্রিয়াস গুস্তাভ ডাল নিজের নামের অনুকরণে এই ফুলের নাম রাখেন ডালিয়া। শীতকালীন মৌসুমি ফুলের মধ্যে ডালিয়াই সর্ববৃহৎ ও আকর্ষণীয় রঙের ফুল। ১৯৬৩ সালে একে মেক্সিকোর জাতীয় ফুল হিসেবে ঘোষণা করা হয়।</p> <p>ডালিয়ার ৪২টি প্রজাতি রয়েছে। উন্নত জাতের মধ্যে সিঙ্গল, স্টার, অ্যানেমিন ফাওয়ার্ড, কলারেট, পিওনি ফাওয়ার্ড, ফরমাল ডেকোরেটিভ, ইন ফরমাল ডেকোরেটিভ, ডাবল শো ফ্যান্সি, পম্পন, রয়্যাল হোয়াইন, ক্যাকটাস, ভ্যারাইটি গার্ল প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য।</p> <p>ডালিয়া ফুল বীজ, কন্দ ও শাখা কলম পদ্ধতিতে বংশবিস্তার করা যায়। শাখা কলম তৈরি করার ভালো ও উপযুক্ত সময় হলো পৌষ থেকে মাঘ মাস পর্যন্ত। সাত থেকে আট দিনের মধ্যে ডালিয়ার শাখা কলমে শিকড় আসে। গাছে ফুল ফোটা শুরু করলে ফুলের আকার বড় করার জন্য প্রতি শাখায় একটি করে কুঁড়ি রেখে বাকিগুলো ভেঙে দিতে হয়। ডালিয়া গাছে সাধারণ রেড স্পাইডার এবং রেড মাইভ ধরনের পোকা হয়। এ পোকা থেকে রেহাই পাওয়ার জন্য প্রতি সপ্তাহে নিয়ম করে ক্যালিথিন বা নোবাকন নামের ওষুধের ২০ ফোঁটা এক লিটার পানি ভালো করে গুলিয়ে সেই মিশ্রণ দিয়ে ঝারির সাহায্যে গাছগুলোকে ভিজিয়ে দেওয়া যায়। এতে পোকার তীব্রতা কমে।</p> <p>একটি ডালিয়া গাছে সাধারণ ফুল থাকে ১৫ থেকে ১৬টি। গাছে ফুল সতেজ থাকে ৭-৮ দিন। এই ফুলের পাপড়ির সুন্দর ও অসাধারণ বিন্যাস ফুলটিকে অন্যদের থেকে আলাদা করে তোলে। ডালিয়া ফুল লাল, সাদা, কমলা, বেগুনি, হলুদ, ডিপ গোলাপি বিভিন্ন রঙের ও আকারের হয়। ডালিয়া গাছের চাষের জন্য আর্দ্র মাটি প্রয়োজন। তবে মাটি যাতে বেশি ভিজে কাদা কাদা না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। টবে চাষের জন্য মাঝারি বা বড় আকারের টব হলে ভালো হয়। দো-আঁশ ও বালি যুক্ত দো-আঁশ মাটি ডালিয়া চাষের জন্য বেশি উপযোগী।</p> <p><strong>ইন্দ্রজিৎ মণ্ডল </strong></p> <p> </p>