<p style="text-align: center;"><strong>সৃজনশীল প্রশ্ন</strong></p> <p style="text-align: center;"><strong>পঞ্চম অধ্যায়</strong></p> <p style="text-align: center;"><strong>স্বল্প ও মধ্যমেয়াদি অর্থায়ন</strong></p> <p>১। রুমি সাহেব গোরানে তাঁর নিজস্ব জমিতে একটি ছয়তলা ফ্ল্যাট নির্মাণের সিদ্ধান্ত নিলেন। সিদ্ধান্ত মোতাবেক এক বছরের পরিকল্পনা নিয়ে তিনি কাজ শুরু করলেন; কিন্তু ছয় মাস যাওয়ার পর তিনি দেখলেন, কাজের যা অগ্রগতি তাতে বাকি ছয় মাসে কাজ শেষ করা সম্ভবপর হবে না, আরো এক বছর লাগবে। তাই তিনি বিকল্প অর্থায়নের জন্য খোঁজখবর নেওয়া শুরু করলেন।</p> <p>ক) স্বতঃস্ফূর্ত অর্থায়ন কী?</p> <p>খ) মূলধন সংগ্রহের কোন উৎসটি সর্বাপেক্ষা উত্তম এবং কেন?</p> <p>গ) রুমি সাহেব প্রথমে যে ধরনের অর্থায়নে কাজ শুরু করেছিলেন, সেখানে তহবিলের উৎসসমূহ কী কী?</p> <p>ঘ) রুমি সাহেব বিকল্প অর্থায়নের ক্ষেত্রে কোন কোন প্রতিষ্ঠানের সাহায্য-সহায়তা পেতে পারেন?</p> <p> </p> <p><strong>সৃজনশীল প্রশ্ন-১-এর উত্তর</strong></p> <p>ক) যে ধরনের অর্থায়ন দৈনন্দিন স্বাভাবিক ব্যবসায় কার্যক্রম থেকে উদ্ভব হয় তাকে স্বতঃস্ফূর্ত অর্থায়ন বলা হয়।</p> <p> </p> <p>খ) অর্থসংস্থানের ক্ষেত্রে বহুল প্রচলিত ও জনপ্রিয় এবং সর্বাপেক্ষা উত্তম পদ্ধতি হলো স্বল্পমেয়াদি অর্থসংস্থান।</p> <p>স্বল্পমেয়াদি অর্থসংস্থান বলতে অর্থসংস্থানের এমন ধারণাকে বোঝায়, যা স্বল্পকালের জন্য অর্থ বা তহবিল ধার করা বা ধার দেওয়াকে অন্তর্ভুক্ত করে। মূলধন সংগ্রহের ক্ষেত্রে স্বল্পমেয়াদি উৎসটি সর্বাপেক্ষা উত্তম; কারণ স্বল্পমেয়াদি অর্থসংস্থানে পরিশোধ মেয়াদ সর্বোচ্চ ১ বছর। এ ঋণ অল্প সময়ে পরিশোধ করা যায়। এ অর্থায়নের মেয়াদ কম হওয়ায় সুদের হার কম, ফলে ব্যয়ও কম। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই স্বল্পমেয়াদি অর্থায়নের জামানত লাগে না। চলতি মূলধন সংগ্রহ ও চলতি সম্পত্তিতে বিনিয়োগের উদ্দেশ্যে স্বল্পমেয়াদি অর্থায়ন করা।</p> <p> </p> <p>গ) রুমি সাহেব প্রথমে স্বল্পমেয়াদি অর্থায়নে কাজ শুরু করেছিলেন।</p> <p>স্বল্পমেয়াদি অর্থায়ন যেসব উৎস থেকে সংগৃহীত হয়ে থাকে তাকে আমরা দুইভাবে ভাগ করতে পারি। যথা : ১) প্রাতিষ্ঠানিক উৎস এবং ২) অপ্রাতিষ্ঠানিক উৎস। প্রাতিষ্ঠানিক উৎস বলতে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে যেমন—বাণিজ্যিক ব্যাংক থেকে ঋণ গ্রহণ করাকে বোঝায়। অন্যদিকে অপ্রাতিষ্ঠানিক উৎস বলতে আত্মীয়-স্বজন, বন্ধুবান্ধব থেকে ঋণ গ্রহণ করাকে বোঝায়। এসব ঋণ জামানতযুক্ত বা জামানত ছাড়াও হতে পারে।</p> <p>বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান কমবেশি স্বল্পমেয়াদি ঋণ প্রদান করলেও বাণিজ্যিক ব্যাংক মূলত এই ঋণের প্রধান উৎস। মুদ্রাবাজার হলো স্বল্পমেয়াদি—অর্থাৎ অনধিক এক বছরের কম সময়ের জন্য অর্থ ও আর্থিক সম্পদ সৃষ্টিকারী ও লেনদেনকারী বাজার। আরো একটি উদ্দেশ্য হলো বাণিজ্যিক পত্র, যা এক ধরনের জামানতবিহীন, স্বল্পমেয়াদি হস্তান্তরযোগ্য প্রতিজ্ঞাপত্র। স্বল্পমেয়াদি অর্থায়নের আরো একটি উৎস হলো ব্যাংকের স্বল্পমেয়াদি জামানতবিহীন ঋণ। এসব উৎস ছাড়া আরো অনেক উৎস থেকে স্বল্পমেয়াদি তহবিল সংগ্রহ করা যায়।</p> <p> </p> <p>ঘ) রুমি সাহেব বিকল্প অর্থায়নের ক্ষেত্রে মধ্যমেয়াদি অর্থায়নের ব্যবস্থা করতে পারেন।</p> <p>এক বছরের বেশি সময়ের জন্য সংগ্রহ করা তহবিল মধ্যমেয়াদি অর্থায়ন নামে পরিচিত। এ তহবিলের খরচ অথবা সুদের হার স্বল্পমেয়াদি থেকে বেশি; কিন্তু দীর্ঘমেয়াদি থেকে কম হয়। বিভিন্ন উৎস থেকে মধ্যমেয়াদি অর্থায়ন সংগ্রহ করা যায়। যেমন—বাণিজ্যিক ব্যাংক, বিশেষায়িত আর্থিক প্রতিষ্ঠান, বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, মূলধনী বাজারের প্রতিষ্ঠান। এসব প্রতিষ্ঠানের সাহায্য-সহযোগিতার মাধ্যমে রুমি সাহেব বিকল্প অর্থায়নের ব্যবস্থা করতে পারেন।</p> <p>মধ্যমেয়াদি অর্থায়নের প্রধান উৎস বাণিজ্যিক ব্যাংক। এরা সাধারণত চলতি ও স্থায়ী সম্পত্তির জামানতের বিপরীতে ঋণ দেয়। বাণিজ্যিক ব্যাংক ঋণ প্রদানের আগে বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক নির্ধারিত সুদের হার ও ঋণের চাহিদা বিচার করে নির্দিষ্ট সুদের হারে ঋণ দেয়। অথবা বিশেষ কিছু আর্থিক প্রতিষ্ঠান আছে, যারা বিশেষ বিশেষ খাতের উন্নয়নের জন্য নিয়োজিত থাকে। এসব প্রতিষ্ঠান থেকে মধ্যমেয়াদি ঋণ গ্রহণ করা যায়। এ ছাড়া আমাদের দেশে অনেক এনজিও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান হিসেবে প্রতিষ্ঠিত ও কর্মরত আছে, যেগুলো বিভিন্ন মেয়াদে ঋণ দিয়ে থাকে। বিভিন্ন ধরনের মূলধনী প্রতিষ্ঠান আছে, যেমন—বীমা কম্পানি, বিনিয়োগ ব্যাংক, আর্থিক মধ্যস্থতাকারী প্রতিষ্ঠান ও অব-লেখকরাও  মধ্যমেয়াদি ঋণ প্রদান করে।</p>