<p>টেস্টিং সল্ট হচ্ছে এক ধরনের লবণ, যা খাবারকে সুস্বাদু করার জন্য, বিশেষ করে প্রক্রিয়াজাত খাবার যেমন—নুডলস, চিপস, ফাস্ট ফুড ও চায়নিজ খাবারে ব্যবহার করা হয়। এটি আসলে মনোসোডিয়াম গ্লুটামেট। প্রোটিন বা আমিষের উৎস হচ্ছে গ্লুটামেট। বিশ শতকের শুরুর দিকে ১৯০৮ সালে জাপানি রসায়নবিদ ও টোকিও ইমপেরিয়াল ইউনিভার্সিটির গবেষক কিকুনেই ইকেদা এই টেস্টিং সল্ট উদ্ভাবন করেন। তখন এটি যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে খাবার সুগন্ধকারী উপাদান হিসেবে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে। কিন্তু কৃত্রিম স্বাদ বৃদ্ধিকারী টেস্টিং সল্ট মানবদেহের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। টেস্টিং সল্ট শরীরে অ্যাক্সসাইটোটক্সিন হিসেবে কাজ করে। এটি নানাভাবে মস্তিষ্কের ক্ষতি সাধন করে। তাই একে অভিহিত করা হয়েছে ‘স্নায়ু বিষ’ হিসেবে। এটি মস্তিষ্ককে একভাবে উদ্দীপ্ত করে যে মনে হয় খাবারটি খুবই সুস্বাদু, যা খাবারের প্রতি আসক্তি বৃদ্ধি করে। স্নায়ুতন্ত্রের ওপর টেস্টিং সল্টের এমন প্রভাবে স্নায়ুর ক্ষতি হয়। এটি হৃদ্যন্ত্রের কোষকে ক্ষতিগ্রস্ত করে, দেহের স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহত হয়। চিকিৎসাবিজ্ঞানীদের আশঙ্কা, টেস্টিং সল্টের প্রতিক্রিয়ায় তীব্র মাথা ব্যথা, হজমযন্ত্রের গোলযোগ, উচ্চ রক্তচাপ, স্ট্রোক, খিঁচুনিসহ বিভিন্ন রকম সমস্যা, এমনকি দীর্ঘ মেয়াদে মস্তিষ্কের ক্যান্সার পর্যন্ত হতে পারে। যাঁদের অ্যাজমার সমস্যা আছে, তাঁরা টেস্টিং সল্ট খেলে শ্বাসকষ্ট হয়। শিশুদের জন্য এটি আরো মারাত্মক। এটি বাচ্চাদের মেধা বিকাশে বিঘ্ন ঘটাতে ও স্মৃতিশক্তি হ্রাস করতে পারে। গবেষণায় দেখা গেছে, যাঁরা খাবারে বেশি টেস্টিং সল্ট ব্যবহার করেন, তাঁদের ওজন বৃদ্ধি ঘটে দ্রুত। কারণ এটি মানুষের খাওয়ার চাহিদা বাড়িয়ে দেয়। অনেকে আবার মুখের রুচি বাড়াতে এ লবন খেয়ে থাকেন। কিন্তু চিকিৎসকদের পরামর্শ হলো—টেস্টিং সল্ট বর্জন করাই ভালো।            ► ইন্দ্রজিৎ মণ্ডল</p> <p> </p>