<p>মানবদেহের পরিপাকতন্ত্রের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ যকৃৎ। পরিপাকক্রিয়ায় মুখ্য ভূমিকা পালন করে এই অঙ্গ। এটি মধ্যচ্ছদার নিচে উদর গহ্বরের ওপরে পাকস্থলীর ডান পাশে অবস্থিত। একে কলিজাও বলা হয়। যকৃৎ মানবদেহের সবচেয়ে বড় গ্রন্থি। এর রং লালচে খয়েরি। যকৃতের ডান খণ্ডটি বাঁয়েরটির থেকে আকারে কিছুটা বড়। সাধারণত একজন সুস্থ মানুষের যকৃতের ওজন প্রায় ১.২ থেকে ১.৫ কিলোগ্রাম হয়। চারটি অম্পূর্ণ খণ্ড নিয়ে যকৃৎ গঠিত। প্রতিটি খণ্ড ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র লোবিউল দিয়ে তৈরি। প্রতিটি লোবিউলে অসংখ্য কোষ থাকে। এ কোষ পিত্তরস তৈরি করে। এ ছাড়া যকৃতে বিভিন্ন রকম জৈব রাসায়নিক বিক্রিয়া সংঘটিত হয়, তাই একে জৈব রসায়ন গবেষণাগার বলা হয়। যকৃতের নিচের অংশ পিত্তথলি বা পিত্তালয় সংলগ্ন থাকে। এখানে পিত্তরস জমা হয়। পিত্তরস গাঢ় সবুজ বর্ণের এবং তিক্ত স্বাদবিশিষ্ট। পিত্তরসের মধ্যে পানি, পিত্তলবণ, কোলেস্টেরল ও খনিজ লবণ প্রধান। পিত্তরস খাদ্যের অম্লভাব প্রশমিত করে এবং ক্ষারীয় পরিবেশ সৃষ্টি করে। চর্বিজাতীয় খাদ্যকে ক্ষুদ্র দানায় পরিণত করে, নাইট্রোজেনঘটিত বর্জ্য পদার্থ তৈরি করে এবং স্নেহজাতীয় পদার্থ শোষণে সাহায্য করে। রক্তে কখনো গ্লুকোজের মাত্রা কমে গেলে যকৃতের সঞ্চিত গ্লাইকোজেনের কিছুটা অংশ গ্লুকোজে পরিণত হয় এবং রক্তস্রোতে মিশে যায়। এভাবে রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রিত রাখে। প্রতিটি মানুষকে সুস্থ থাকতে হলে শরীরের অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গের মতো যকৃতের যত্নও সমানভাবে নিতে হবে। এ ক্ষেত্রে সবজি, জামজাতীয় ফল, রসুন ইত্যাদি খেলে উপকার পাওয়া যায়।  </p>