শব্দগুলো পাঠ থেকে খুঁজে বের করে অর্থ লেখো।
কুমার, শাহজাদা, বারি, চরণ, শির, শাহানশাহ, প্রক্ষালন, কুর্নিশ
উত্তর : কুমার — রাজার ছেলে (রাজকুমার)
শাহজাদা — বাদশার পুত্র
বারি — পানি
চরণ — পা
শির — মাথা
শাহানশাহ — বাদশাহ, রাজাধিরাজ
প্রক্ষালন — ধোওয়া, পানি দিয়ে পরিষ্কার করা
কুর্নিশ — মাথানত করে অভিবাদন করা।
৩। ঘরের ভেতরের শব্দগুলো খালি জায়গায় বসিয়ে বাক্য তৈরি করো।
(চ) অন্যায়ের কাছে কখনো ্ব নত করব না।
উত্তর : ক) চরণে খ) বারি গ) কুমার ঘ) কুর্নিশ ঙ) শাহানশাহ চ) শির।
৪। প্রশ্নগুলোর উত্তর লেখো।
ক) বাদশাহ্ আলমগীরের পুত্রকে কে পড়াতেন?
উত্তর : বাদশাহ্ আলমগীরের পুত্রকে দিল্লির এক মৌলভি সাহেব পড়াতেন।
খ) একদিন সকালে বাদশাহ কী দেখতে পেলেন?
উত্তর : একদিন সকালে বাদশাহ দেখতে পেলেন, শাহজাদা একটা পাত্র হাতে নিয়ে তাঁর মৌলভি শিক্ষকের পায়ে পানি ঢেলে দিচ্ছেন, আর শিক্ষক খুশি মনে চোখ নিচু করে নিজের হাতে তার নিজের পায়ের ধুলা ধুয়ে মুছে পরিষ্কার করছেন।
গ) বাদশাহকে দেখে শিক্ষক প্রথমে কী ভাবলেন?
উত্তর : বাদশাহকে দেখে শিক্ষক প্রথমে ভাবলেন—দিল্লির বাদশাহর পুত্রকে দিয়ে তিনি নিজের পায়ে পানি ঢালিয়ে নিয়েছেন, অমন স্পর্ধার কাজ কোনোকালে কেউ করেনি। সেই অপরাধের জন্য হয়তো তিনি সব হারাবেন, কিছুতেই আর নিস্তার পাবেন না।
ঘ) ‘প্রাণের চেয়ে মান বড়’— শিক্ষক এ কথা বললেন কেন?
উত্তর : ‘শিক্ষকের মর্যাদা সবার ওপরে’— এই বিশ্বাস থেকে শিক্ষক উপর্যুক্ত মন্তব্যটি করেছেন।
‘শিক্ষাগুরুর মর্যাদা’ কবিতার বাদশাহ আলমগীরের পুত্রকে দিল্লির যে মৌলভি সাহেব পড়াতেন, তিনি একদিন শাহজাদাকে দিয়ে পায়ে পানি ঢালিয়ে নিয়েছিলেন। বাদশাহ তা দেখে ফেলাতে শিক্ষক প্রথমে খুব ভয় পেলেও পরে ভাবেন শিক্ষক সবার শ্রেষ্ঠ অর্থাৎ তাঁর মর্যাদা সবার ওপরে, আর বাদশাহ যদি তার পরও তাঁকে শাস্তি দিতে চান তাহলেও তিনি ভয় পাবেন না, কারণ প্রাণ যাওয়ার ভয়ের থেকে মান-সম্মান অনেক বড়— এ কথাই তিনি বাদশাহকে বোঝাতে চেষ্টা করবেন।
ঙ) বাদশাহ আলমগীর শিক্ষককে প্রথমে কী বললেন?
উত্তর : বাদশাহ আলমগীর শিক্ষককে প্রথমে বললেন যে— তাঁর পুত্র তাঁর শিক্ষাগুরুর কাছে প্রকৃতপক্ষে বেয়াদবি ও গুরুজনকে অবহেলা করা ছাড়া কোনো সৌজন্যবোধ শেখেনি। তারপর তিনি বললেন যে, সেদিন প্রভাতে তিনি দেখেছেন মৌলভি সাহেব নিজের হাতে তাঁর চরণ পানি দিয়ে পরিষ্কার করছেন আর শাহজাদা শুধু পাত্র থেকে গুরুর পায়ে পানি ঢেলে দিচ্ছেন। নিজের হাতে তিনি কেন গুরুর চরণ ধুয়ে দেননি, তা ভেবে বাদশাহ মনে ব্যথা অনুভব করেন।
চ) শিক্ষক কী বলে বাদশাহর সুনাম করলেন?
উত্তর : বাদশাহকে মহান ও উদার বলে শিক্ষক তাঁর সুনাম করলেন।
‘শিক্ষাগুরুর মর্যাদা’ কবিতার বাদশাহ আলমগীর পুত্রের মৌলভি শিক্ষককে যখন জানালেন যে, তাঁর পুত্র শিক্ষককে যথাযথ মর্যাদা দিতে শেখেনি বলে তিনি অন্তরে ব্যথা পেয়েছেন। শিক্ষক বাদশাহর কাছ থেকে এমন অশাতীত সম্মান পেয়ে বাদশাহকে কুর্নিশ করে উচ্চস্বরে বললেন, শিক্ষাগুরুর শির বাদশাহ আলমগীরই চির উন্নত করলেন।
৫। কথাগুলো বুঝে নাও।
শিক্ষকে ডাকি বাদশাহ কহেন, ‘শুনুন জনাব তবে,
পুত্র আমার আপনার কাছে
সৌজন্য কি কিছু শিখিয়াছে?
বরং শিখেছে বেয়াদবি আর গুরুজনে অবহেলা,
নহিলে সেদিন দেখিলাম যাহা স্বয়ং সকাল বেলা।’
উত্তর : উদ্ধৃত অংশটুকু কাজী কাদের নওয়াজ রচিত ‘শিক্ষাগুরুর মর্যাদা’ কবিতা থেকে নেওয়া হয়েছে।
এখানে বাদশাহ আলমগীর শিক্ষককে তাঁর প্রাপ্য মর্যাদা সম্পর্কে সচেতন করেছেন।
বাদশাহ আলমগীরের পুত্র তার শিক্ষকের পায়ে কেবল পানি ঢেলে দিয়েছেন। কিন্তু বাদশাহ এতে অসন্তুষ্ট হন। তাই শিক্ষককে ডেকে জানান যে; শাহজাদা তার শিক্ষকের কাছে অসৌজন্যমূক আচরণ, বেয়াদবি ও গুরুজনকে অবহেলা করতে শিখেছেন, যা তিনি নিজে সকালবেলা প্রত্যক্ষ করেছেন।
৬। ক্ষ, স্ব, স্ম, স্ত্র — প্রত্যেকটি যুক্তবর্ণ ব্যবহার করে তিনটি করে শব্দ লেখো।
উত্তর : ক্ষ = ক্ + ষ — ক্ষয়, শিক্ষা, সক্ষম
স্ব = স্ + ব — স্বপ্ন, স্বরবর্ণ, স্বার্থ
স্ম = স্ + ম — স্মৃতি, স্মরণীয়, স্মারক
স্ত্র = স্ + ৎ + র — অস্ত্র, শাস্ত্র, বস্ত্র
৭। বিপরীত শব্দগুলো ঠিকমতো সাজাই।
বড় — অপযশ
মান — অবনত
যশ — বিকেল
বিষাদ — অপমান
উন্নত — ছোট
সকাল — হর্ষ
্উত্তর : বড় — ছোট
মান — অপমান
যশ — অপযশ
বিষাদ — হর্ষ
উন্নত — অবনত
সকাল — বিকেল
কবি পরিচিতি
নাম : কাজী কাদের নওয়াজ।
জন্ম : ১৯০৯ সালের ১৫ জানুয়ারি।
জন্মস্থান : মুর্শিদাবাদ জেলার তালিবপুর গ্রাম।
শিক্ষা গ্রহণ : কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি সাহিত্যে অনার্স ও বিটি পাস।
চাকরিজীবন : প্রথমে সাব ইন্সপেক্টর, পরে বিভিন্ন স্কুলে প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন।
সাহিত্যকর্ম : নীতিকথা ও কাহিনিমূলক শিশুতোষ কবিতা।
মৃত্যু : ১৯৮৩ সালের ৩ জানুয়ারি।