হাতি আর শেয়ালের গল্প
১। শব্দার্থ :
দিগন্ত—প্রান্তরের শেষে আকাশ যেখানে গিয়ে মাটির সঙ্গে মিশে গেছে বলে মনে হয়।
অহংকার—নিজেকে খুব বড় মনে করা।
তিরিক্ষি—খারাপ মেজাজ
তুলকালাম—এলাহি কাণ্ড
হুংকার—চিত্কার
মেদিনী—ভূপৃষ্ঠ
তটস্থ—ব্যতিব্যস্ত
শঙ্কিত—ভীত
শক্তিধর—শক্তি আছে যার
আস্তানা—বসবাসের জায়গা
উদগ্রীব—প্রতি মুহূর্তে অপেক্ষা করা
সমস্বরে—একসঙ্গে শব্দ করা বা কথা বলা।
২। শব্দগুলো দিয়ে বাক্য তৈরি করো।
দিগন্তের, অন্ধকার, তিরিক্ষি, তুলকালাম কাণ্ড, হুংকার, মেদিনী, শঙ্কিত, তটস্থ
উত্তর :
ক. বিদ্যুৎ চমকালে মেদিনী কেঁপে ওঠে বলে মনে হতে পারে।
খ. অহংকার পতনের মূল।
গ. কী হয়েছে, এত তটস্থ হয়ে আছ কেন?
ঘ. বনের সিংহ হুংকার দিলে মানুষের মনে ভয় জাগে।
ঙ. নিজের কলমটা খুঁজে না পেয়ে সে তুলকালাম কাণ্ড বাধিয়ে দিয়েছে।
চ. দিগন্তের ওপারে কী আছে কেউ জানে না।
ছ. মেজাজ তিরিক্ষি বলে তার কাছে কেউ ঘেঁষতে চায় না।
জ. তুমি এত শঙ্কিত কেন? কী হয়েছে?
৩। প্রশ্নগুলোর উত্তর বলি ও লিখি।
ক. অমিত শক্তিধর কাকে বলা হয়েছে?
উত্তর : সিংহকে অমিত শক্তিধর বলা হয়েছে। কারণ সিংহ পশুদের রাজা। তার চালচলন গুরুগম্ভীর ও ভারিক্কি।
সে কেশর দুলিয়ে চলে। গায়ে অনেক শক্তি ধরে বলে তাকে অমিত শক্তিধর বলা হয়েছে।
খ. বনের পশুদের ওপর অশান্তি নেমে আসার কারণ কী?
উত্তর : হাতিটার তুলকালাম কাণ্ডই বনের
পশুদের ওপর অশান্তি নেমে আসার কারণ।
বিশাল দেহী তিরিক্ষি মেজাজের হাতিটার শরীর আর শক্তি নিয়েই বেশি অহংকার ছিল। বনে ঢুকেই সে এমন ভাব শুরু করল, যেন সেই বুঝি বনের রাজা। একদিন নিরীহ একটা হরিণকে শুঁড়ে জড়িয়ে দূরে ছুড়ে ফেলে দিল, আরেকবার ছোট্ট একটা পিঁপড়ে পায়ের তলায় পিষে মেরে ফেলল। সেই থেকে বনের কোনো প্রাণী এমনকি সিংহ, বাঘও ভয় পেয়ে হাতির ছায়া মাড়াত না। কখন জানি কী হয়, এই ভয়ে বনের পশুদের ওপর অশান্তি নেমে আসে।
গ. গল্পে ‘মুক্ত স্বাধীন’ বলতে কী বোঝানো হয়েছে?
উত্তর : গল্পে ‘মুক্ত স্বাধীন’ বলতে হাতির অত্যাচার থেকে বনের পশুদের রক্ষা পাওয়ার কথা বোঝানো হয়েছে।
‘হাতি আর শিয়ালের গল্প’-এ বনের পশুপাখিরা শক্তিধর প্রাণী সিংহ, বাঘ প্রভৃতির সঙ্গে বেশ শান্তিতেই দিন কাটাচ্ছিল। দুর্বিনীত হাতি তাদের সেই শান্তি নষ্ট করে অশান্তি ডেকে আনে। হাতির অত্যাচার থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য বনের সব পশুপাখি শিয়ালকে দায়িত্ব দেয়। শিয়াল চালাকি করে হাতিকে মাঝ নদীতে নিয়ে যায়। হাতিটা বিশাল শরীর নিয়ে নদী পার হতে গিয়ে ডুবে মরে, আর এভাবেই হাতির অত্যাচার থেকে বনের পশুরা মুক্ত স্বাধীন হয়।
ঘ. শেয়াল হাতিকে শাস্তি না দিলে বনের পশুপাখিদের কী হতো ব্যাখ্যা করো।
উত্তর : অত্যাচারী, অহংকারী হাতি বনে ঢুকেই এমন ভাব শুরু করে দিল, যেন সেই বুঝি বনের রাজা। সবাই ভয়ে শঙ্কিত থাকে। তাই সব পশু পরামর্শ করে হাতিকে শাস্তি দেওয়ার জন্য শিয়ালকে দায়িত্ব দিল। শিয়ালের বুদ্ধিতে হাতিটা নদীতে ডুবে মরে আর রক্ষা পায় সব প্রাণীর জীবন। তাই বলা যায়, শিয়াল এভাবে হাতিকে শাস্তি না দিলে বনের সব প্রাণীর জন্য বিপন্ন হতো।