<p> সিটাসিয়া বর্গভুক্ত জলজ স্তন্যপায়ী তিমি। যদিও তিমিকে প্রায়ই তিমি মাছ বলা হয়; এরা কিন্তু মোটেও মাছ নয়, বরং মানুষের মতোই স্তন্যপায়ী প্রাণী। জন্মের সময় নবজাতকরা লেজসহ ভূমিষ্ঠ হয়, যার ফলে এর ডুবে যাওয়ার ঝুঁকি কম হয়। জলজ পরিবেশে মা তিমি তার শিশুকে পেস্টের মতো দলা পাকানো দুধ পান করায়। এই দুধে প্রায় ৫০ শতাংশ ফ্যাট থাকে এবং শিশু তিমি প্রায় ছয় মাস বয়স পর্যন্ত এই দুধ পান করে। সমুদ্রে এদের বাস। তিমির প্রায় ৭৯ থেকে ৮৪টি প্রজাতি রয়েছে। এগুলোর আকার, আকৃতি ও চেহারায় রয়েছে বিস্তর পার্থক্য। তিমির বিভিন্ন প্রজাতির মধ্যে আছে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় প্রাণী নীল তিমি, খুনে তিমি (killer whale), পাইলট তিমি, হাম্পব্যাক তিমি ইত্যাদি। কিলার তিমিদের সাধারণত দেখা যায় বড় দলে ভ্রমণ করতে। অন্যদিকে হাম্পব্যাকরা একা থাকতে বা ছোট কোনো দলে থাকতেই বেশি পছন্দ করে। প্রজাতিভেদে তিমি লম্বায় ১১ থেকে ৯৮ ফুট পর্যন্ত হতে পারে। এ পর্যন্ত পাওয়া সবচেয়ে বড় তিমিটি ওজনে ছিল এক লাখ ৮২ হাজার কেজির বেশি। দলে তিমির সংখ্যা সাধারণত ২ থেকে ৩০-এর মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে। তবে ক্ষেত্রবিশেষে এ সংখ্যা ১০০-এর অনেক বেশি হতে পারে। সাধারণত যখন এরা খাদ্যের সন্ধানে ঘোরে বা সমুদ্রের এক স্থান থেকে অনেক দূরের কোনো স্থানে পাড়ি দেয়, তখন একসঙ্গে অনেক তিমি দেখা যায়। তিমির একেকটি দলকে ইংরেজিতে পড বলা হয়। তিমিরা নিজেদের মধ্যে যোগাযোগের জন্য বিশেষ ধরনের শব্দ করে। মূলত ওই শব্দের প্রতিধ্বনিকে কাজে লাগিয়ে তিমিরা যোগাযোগ স্থাপন করে। তিমিদের যোগাযোগের এ বিশেষ পদ্ধতিকে ইকোলেশন বলা হয়। সামুদ্রিক এই প্রাণী পানির নিচে শ্বাস নিতে পারে না। আর এ কারণে এরা কখনো পুরোপুরি ঘুমাতেও পারে না। শ্বাস নেওয়ার কাজটি চালানোর জন্য এদের সব সময়ই কিছুটা সচেতন থেকে ঘুমাতে হয়। তবে কোনো কোনো তিমি পানির নিচে একটানা দেড় ঘণ্টাও কাটিয়ে দিতে পারে বেশ স্বাচ্ছন্দ্যেই। তিমির কানের একটি বিশেষ অংশ দেখে এর বয়স কত তা বলা সম্ভব। তিমি বেশ সুরেলা শব্দ তৈরি করতে পারে। এদের গড় আয়ুষ্কাল নির্ধারণ করা কঠিন। তবে কোনো কোনো তিমি ১৩০ বছর পর্যন্তও বাঁচে।</p> <p> গ্রন্থনা : ইউসুফ শিমুল</p> <p>  </p> <p>  </p>