<p>বর্ষা এলেই বন্যায় অবর্ণনীয় দুর্ভোগ পোহাতে হবে, ঘটবে ফসলহানি, নদীভাঙনের কারণে হাজার হাজার মানুষ বাস্তুচ্যুত হবে, এ যেন বাংলাদেশের অবধারিত চিত্র। এবারও যমুনা, ব্রহ্মপুত্র, ধরলা ও তিস্তায় অব্যাহতভাবে পানি বাড়ছে। আগামী ১০ দিনের মধ্যে দেশের আট জেলার অনেক এলাকা পাঁচ থেকে সাত দিনের বন্যার মুখে পড়তে যাচ্ছে বলে আভাস দিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র। কুড়িগ্রামে ধরলা-ব্রহ্মপুত্র বিপত্সীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। প্লাবিত হয়েছে দুই শতাধিক চর ও দ্বীপচরের নিম্নাঞ্চল। এসব এলাকায় পানিবন্দি হয়ে পড়েছে প্রায় ২৫ হাজার মানুষ। নিমজ্জিত হয়েছে ফসল ও গ্রামীণ সড়ক।</p> <p>বর্ষার শুরু থেকেই এ চিত্র প্রতিবছরের। কিন্তু কোনো প্রতিকার নেই। কোনো বছরই আগাম ব্যবস্থা নেওয়া হয় না। কোথাও বন্যা দেখা দিলে তাত্ক্ষণিক ত্রাণ পৌঁছে না। অনেক সময় দেখা যায় গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর যে সাহায্য পৌঁছে, তা একেবারেই অপ্রতুল। আবার বন্যার পর উল্লেখযোগ্য পুনর্বাসন উদ্যোগও দেখা যায় না। অথচ বন্যার মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগ উপেক্ষা করার কোনো সুযোগ আমাদের নেই। আজ দেশের উত্তরাঞ্চলের আট জেলায় বন্যার আভাস পাওয়া গেছে। অন্যান্য অঞ্চলও যে সামনের দিনে বন্যাকবলিত হবে না এমন নিশ্চয়তা নেই। দেশের নদ-নদীর অবস্থা ভালো নয়। অনেক নদীতেই পানিপ্রবাহ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। পলি জমে নদ-নদীর ধারণক্ষমতা কমে গেছে। ফলে বর্ষা মৌসুমে পানি এলে তা দুই কূল ছাপিয়ে যায়।</p> <p>বর্ষায় বাংলাদেশের ওপর দিয়ে যে পরিমাণ পানি প্রবাহিত হয়ে বঙ্গোপসাগরে যায়, তার প্রায় ৯৪ শতাংশই আসে উজান থেকে। এই পানি আসা রোধ করার কোনো উপায় নেই। সেই সঙ্গে যোগ হয় বৃষ্টির পানি। অথচ আমাদের নদীগুলো ভরাট হতে হতে যে অবস্থায় এসেছে, তাতে এই পানির সামান্যই ধারণ করতে পারে। তখন নদীর দুই কূল ছাপিয়ে লোকালয় বা ফসলি জমি ডুবে যায়।</p> <p>এখন মানুষের কাছে পর্যাপ্ত ত্রাণ পৌঁছে দিতে প্রস্তুতি নিতে হবে। মানুষের পাশে দাঁড়াতে প্রশাসনকে উদ্যোগ নিতে হবে। আমরা আশা করব, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করবে।</p> <p> </p>