দক্ষিণ চীনের নানচুয়ান জেলার ছোট্ট শহর সুইজিয়াং। ছোট ছোট পাহাড়ঘেরা এই শহরের এক পাহাড়ে বাস করেন ৭৯ বছর বয়সী দিজুন। আর কিছু হোক না হোক, প্রতিদিন তাঁর একটুখানি গ্যাসোলিন তথা জ্বালানি তেল চাই। ৫০ বছর ধরে গ্যাসোলিন পান করে চলেছেন তিনি।
গ্যাসোলিনে চলছে মানব
- গ্যাসোলিন মানে জীবাশ্ম জ্বালানি। পেট্রল, অকটেন, ডিজেল—এ সবই হলো গ্যাসোলিন। এতে গাড়ি চলে, কারখানার ইঞ্জিন চলে। তবে চেন দিজুন নামের এক চীনা তাঁর দেহের ইঞ্জিনকে সচল রাখতেও প্রতিদিন কাপে করে পান করে চলেছেন গ্যাসোলিন! তাঁর গল্পটা শোনাচ্ছেন মেহেদী আল মাহমুদ
অন্যান্য

দিজুনের কপাল ভালো। পাহাড়ের নিচেই একটা পেট্রল পাম্প আছে। সেখান থেকে গ্যাসোলিন কিনে কনটেইনারে ভরে বাসায় নিয়ে আসেন। এরপর কাপে ঢেলে একটু একটু করে পান করেন।
দিজুনের গ্যাসোলিন পানের একটা ইতিহাস আছে। ১৯৬৯ সালের কথা। হঠাত্ একদিন দিজুনের কাশি শুরু হয়। সঙ্গে বুকে ব্যথা।
মাসে তিন থেকে সাড়ে তিন লিটারের মতো গ্যাসোলিন পান করলেও আজ পর্যন্ত শরীরে কোনো সমস্যা হয়নি এই চীনা মানুষটার। গত ৫০ বছরে তিনি কতটুকু গ্যাসোলিন পান করেছেন, তার সঠিক হিসাব জানা না গেলেও চায়না ডেইলির এক সাংবাদিক জানান, এর পরিমাণ হবে আনুমানিক দুই টন। তাঁর এই কর্মকাণ্ডে ডাক্তাররাও অবাক। স্থানীয় হংলু হাসপাতালের অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর ডাক্তার ফেং ফু দিজুনকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে বলেন, সামান্য শ্বাসকষ্ট ছাড়া তাঁর শরীরে কোনো সমস্যা পাওয়া যায়নি।
গ্যাসোলিন মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর। কিন্তু কোনো কারণে দিজুনের শরীরে গ্যাসোলিনের বিরুদ্ধে রেজিস্ট্যান্স বা প্রতিরোধক্ষমতা গড়ে উঠেছে। এ কারণে গ্যাসোলিন তার ক্ষতি করতে পারছে না। অন্যদিকে গ্যাসোলিনে ব্যথা কমে যাওয়া সম্পর্কে ডাক্তার বলেন, কোনো জ্বালানি তেলের ব্যথা কমানোর ক্ষমতা নেই। তবে এটা সম্ভবত কোনোভাবে দিজুনের ব্যথার অনুভূতিটাকে দমিয়ে রাখছে।
দিজুনের স্ত্রী ইউয়ান হুইবি স্বামীর অভ্যাসটি মোটেও পছন্দ করতেন না। তাঁদের তিন সন্তানেরও এটি অপছন্দ। কিন্তু দিজুন কারো কথায় কান দেননি। এ নিয়ে হয়েছিল ঝগড়া। ১৫ বছর হলো গ্যাসোলিনের টানে সংসারের মায়া ছেড়েছেন দিজুন। এখন বাস করছেন একা। কদিন আগে আক্ষেপের সঙ্গে সাংবাদিকদের বললেন, গ্যাসোলিনের দাম বাড়ার কারণে ইদানীং তাঁর খাওয়াদাওয়ায় সমস্যা হচ্ছে। সরকারের উচিত এর দাম কমানো।