'ইসম' শব্দের অর্থ নাম আর 'আজম' শব্দের অর্থ মহান বা শ্রেষ্ঠ। আল্লাহ তাআলার অনেক নাম রয়েছে। এসব নামের মধ্যে যে নামগুলো দিয়ে আল্লাহ সুবহানাহু তাআলার বড়ত্ব ও শ্রেষ্ঠত্ব সবচেয়ে বেশি প্রকাশিত হয়, সেই নামগুলোকে 'ইসমে আজম' বলা হয়। অর্থাৎ ইসমে আজম অর্থ আল্লাহর নামসমূহের মধ্যে শ্রেষ্ঠ নামগুলো।
ইসমে আজম কী ও কেন
মুফতি মুহাম্মদ মর্তুজা

ইসমে আজমের ফজিলত
বিভিন্ন হাদিসে আল্লাহ তাআলার কিছু গুণবাচক নামকে 'ইসমে আজম' বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে।
হজরত আনাস ইবনে মালেক (রা.) থেকে বর্ণিত, একদিন রাসুল (সা.) নামাজের পর দোয়ারত জায়েদ ইবনে সামেত (রা.)-এর পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন। দোয়াতে তিনি বলছিলেন, 'আল্লাহুম্মা ইন্নি আস-আলুকা বি-আন্না লাকাল হা'মদু লা-ইলা-হা ইল্লা-আনতা ওয়াহ'দাকা লা-শারিকা লাকাল মান্না-ন, ইয়া বাদিআ'স্ সামা-ওয়া-তি ওয়াল আরদ্বি, ইয়া জাল জালালি ওয়াল ইকরাম। ইয়া হাইয়্যু ইয়া কাইয়্যুম।' তখন রাসুল (সা.) তাঁকে বললেন, 'তুমি আল্লাহর দরবারে ইসমে আজমের মাধ্যমে দোয়া করেছ, যার মাধ্যমে দোয়া করলে আল্লাহ তাআলা কবুল করেন এবং কিছু চাইলে তা দান করেন।' (মুসনাদে আহমদ : ১২২০৫)
হজরত আসমা বিন ইয়াজিদ (রা.) সূত্রে বর্ণিত, রাসুল (সা.) ইরশাদ করেন, 'ইসমে আজম এই দুটি আয়াতের মধ্যে নিহিত।
হজরত বুরাইদা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) দুজন লোককে এটা বলতে শুনেছেন যে 'আল্লাহুম্মা ইন্নি আস আলুকা, বিআন্নি আশহাদু আন্নাকা আংতাল্লাহ, লা-ইলাহা ইল্লা আংতাল আহাদুস সামাদ, আল্লাজি লাম ইয়ালিদ ওয়া লাম ইউলাদ ওয়ালাম ইয়া কুল্লাহু কুফুওয়ান আহাদ।' তখন রাসুল (সা.) বলেন, 'তোমরা আল্লাহর কাছে ইসমে আজমের মাধ্যমে চেয়েছ, যার মাধ্যমে চাইলে আল্লাহ দান করেন এবং দোয়া করলে আল্লাহ কবুল করেন।' ( আবু দাউদ : ১৪৯৩)
হাফেজ ইবনে হাজার আসকালানি (রহ.) বলেন, 'ইসমে আজমের ব্যাপারে বর্ণিত হাদিসগুলোর মধ্যে এটি সবচেয়ে বিশুদ্ধ।' (তুহফাতুজ জাকিরিন ১/৮২)
আমাদের দেশের প্রচলিত অজিফার বইগুলোতে অনেক বানোয়াট নামকে ইসমে আজম বলে চালিয়ে দেওয়া হয়েছে। যেগুলো আসলে ইসমে আজম নয়। তাই এসব ভুল তথ্যের পেছনে না পড়ে বিজ্ঞ আলেমদের পরামর্শ ও মানসম্মত বই-পুস্তক থেকে ধর্মীয় জ্ঞান অন্বেষণ করাই বাঞ্ছনীয়।
লেখক : প্রাবন্ধিক, গবেষক