ঢাকা, বৃহস্পতিবার ১০ জুলাই ২০২৫
২৬ আষাঢ় ১৪৩২, ১৪ মহররম ১৪৪৭

ঢাকা, বৃহস্পতিবার ১০ জুলাই ২০২৫
২৬ আষাঢ় ১৪৩২, ১৪ মহররম ১৪৪৭
মুসলিম মনীষী

বড়পীর আব্দুল কাদের জিলানি (রহ.)

মো. আবু তালহা তারীফ
মো. আবু তালহা তারীফ
শেয়ার
বড়পীর আব্দুল কাদের জিলানি (রহ.)

জন্ম ও উপাধি : বড়পীর আব্দুল কাদের জিলানি ৪৭০, মতান্তরে ৪৭১ হিজরি সালের পয়লা রমজান ইরাকের বাগদাদের জিলান নামক স্থানে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পুরো নাম সাইয়্যিদ মহিউদ্দীন আবু মুহাম্মদ আব্দুল কাদির আল-জিলানি আল হাসানী ওয়াল হুসাইনী।

বাবার দিক থেকে বড়পীর আব্দুল কাদের জিলানি (রহ.) হজরত আলী (রা.)-এর ১১তম বংশধর।

মায়ের দিক থেকে তিনি হজরত আলী (রা.)-এর অষ্টাদশ বংশধর।

শিক্ষাজীবন : হজরত আব্দুল কাদের জিলানি (রহ.) স্বীয় বাবা-মায়ের মাধ্যমেই প্রাথমিক স্তরের শিক্ষণীয় বিষয়গুলো ঘরে বসেই শেষ করেছিলেন। বলা হয়ে থাকে, তিনি মাতৃগর্ভ থেকেই ১৮ পারা কোরআনের হাফেজ হয়ে জন্মগ্রহণ করেন। মক্তব পড়া শেষ হতে না হতেই তাঁর বাবা মারা যান। বাবার ইন্তেকালের পর সাংসারিক যাবতীয় ভার পড়ে বড়পীরের ওপর।

কিন্তু তিনি ভেঙে পড়েননি। তাঁর মায়ের পরামর্শে উচ্চশিক্ষা অর্জন করার জন্য ৪৮৮ সনে ১৮ বছর বয়সে বাগদাদে রওনা হন। বাগদাদে গিয়ে তিনি শায়েখ আবু সাইদ ইবনে মোবারক মাখযুমী হাম্বলী, আবুল ওয়াফা আলী ইবনে আকীল এবং আবু মোহাম্মদ ইবনে হোসাইন ইবনে মোহাম্মদ (রহ.)-এর কাছে ইলমে ফিকাহ, শায়েখ আবু গালিব মুহাম্মদ ইবনে হাসান বাকিল্লানী, শায়েখ আবু সাইদ ইবনে আব্দুল করীম ও শায়েখ আবুল গানায়েম মুহম্মদ ইবনে আলী ইবনে মুহাম্মদ (রহ.) প্রমুখের কাছে ইলমে হাদিস এবং শায়েখ আবু যাকারিয়া তাবরেয়ী (রহ.) কাছে সাহিত্যের উচ্চতর পাঠ লাভ করেন। বড়পীর অল্প বয়সেই মাদ্রাসার পরীক্ষা দিয়ে শ্রেষ্ঠ সনদ অর্জন করেন।
মাত্র ৯ বছর শিক্ষা অর্জন করে ১৩টি বিষয়ের ওপর সনদ লাভ করেন।

ধর্ম প্রচার : বড়পীর আব্দুল কাদের জিলানি (রহ.) শিক্ষা-দীক্ষায় পূর্ণতা অর্জনের পর বসে রইলেন না। তিনি নিজেকে ইসলাম প্রচারের কাজে নিয়োজিত করেন। তিনি মাদ্রাসায় শিক্ষকতার মাধ্যমে ধর্ম প্রচার করেন। তা ছাড়া বড়পীর আব্দুল কাদের জিলানি দাওয়াত ও তাবলিগ এবং বিভিন্ন ওয়াজ মাহফিলে ইসলামের সুমহান আদর্শ যুক্তিপূর্ণ ভাষায় উপস্থাপন করেন।

তাঁর যুক্তিপূর্ণ বক্তব্য শুনে অসংখ্য অমুসলিম ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন।

রচিত গ্রন্থাবলি : আব্দুল কাদের জিলানি (রহ.) শুধু শরিয়ত ও মারফতের পণ্ডিত ছিলেন না। তিনি কাব্য, সাহিত্য, ইতিহাস, দর্শন, ভূগোল বিষয়েরও পণ্ডিত ছিলেন। তাঁর রচিত বহু গ্রন্থ রয়েছে। এসব গ্রন্থের মধ্যে 'ফতহুল গায়েব গুনিয়াতুত তালেবীন', 'ফতহুর রববানী', 'কালীদায়ে গাওসিয়া' উল্লেখযোগ্য।

ওফাত : আব্দুল কাদের জিলানি (রহ.) হিজরি ৬৬২ সনের ১১ রবিউস সানি পয়লা ফেব্রুয়ারি ইন্তেকাল করেন। তাঁর বয়স হয়েছিল ৯১ বছর। বড়পীর সাহেবের এই ওফাতের দিন সারা বিশ্বের মুসলমানরা গুরুত্বের সঙ্গে ফাতেহা-ই-ইয়াজদাহম পালন করে থাকে।

(সূত্র : ফতহুর রববানী, বড়পীরের পরিচয়)

লেখক : ছাত্র, সরকারি মাদ্রাসা-ই-আলিয়া, ঢাকা

 

 

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ