<p> উপকার</p> <p> ১. অন্তরের ময়লা ও অপবিত্রতা দূর হয়।</p> <p> ২. আল্লাহ তায়ালার মহব্বত বাড়ে।</p> <p> ৩. প্রতিটি হরফে ১০টি করে নেকি বা সাওয়াব পাওয়া যায়। না বুঝে পড়লেও এই নেকি পাওয়া যায়। যারা মনে করে, না বুঝে পড়লে কোনো লাভ নেই, তারা হয়তো মূর্খ, না হয় বদ-দ্বীন।</p> <p> আদব</p> <p> ১. তেলাওয়াতকারী এই নিয়ত করবে যে- আমি আল্লাহ তায়ালাকে কোরআন শুনাচ্ছি।</p> <p> ২. তেলাওয়াত শুরু করার আগে মিসওয়াক করা।</p> <p> ৩. ওজু অবস্থায় তেলাওয়াত করা। ওজু ছাড়াও পড়া যাবে, তবে স্পর্শ করা যাবে না। কিন্তু কারো ওপর গোসল ফরজ হলে স্পর্শও করতে পারবে না, পড়তেও পারবে না।</p> <p> ৪. পবিত্র স্থানে বসে তেলাওয়াত করা।</p> <p> ৫. কিবলামুখী হওয়া।</p> <p> ৬. বিনয় ও একাগ্রতার সঙ্গে পড়া।</p> <p> ৭. শুরুতে আউজুবিল্লাহ পড়া।</p> <p> ৮. বিসমিল্লাহ পড়া।</p> <p> ৯. তেলাওয়াতের মাঝে হাসি-তামাশা ও অনর্থক কথাবার্তা থেকে বিরত থাকা।</p> <p> ১০. কোরআন শরিফের পরিপূর্ণ আদব রক্ষা করা।</p> <p> সুরা কাহাফের ফজিলত</p> <p> ১. হজরত আবু দারদা (রা.) সূত্রে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, যে ব্যক্তি সুরায়ে কাহাফের প্রথম ১০টি আয়াত মুখস্থ করবে, সে দাজ্জালের অনিষ্ট থেকে মুক্ত থাকবে। (মুসলিম, আবু দাউদ)</p> <p> আল্লামা ত্বীবী (রহ.) বলেন, যেভাবে আসহাবে কাহাফ জালেম বাদশাহর জুলুম থেকে নিষ্কৃতি পেয়েছেন, ঠিক তদ্রূপ আল্লাহ তায়ালা সুরায়ে কাহাফের প্রথম ১০ আয়াতের তেলাওয়াতকারীকেও যেকোনো জালিমের জুলুম থেকে রক্ষা করবেন।</p> <p> ২. সাহল ইবনে মু'আজ (রা.) সূত্রে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেন, যে ব্যক্তি সুরায়ে কাহাফের প্রথম এবং শেষ আয়াতটি তেলাওয়াত করবে, তার জন্য তার মাথা থেকে পায়ের তলা পর্যন্ত একটি নূর হবে, আর যে ব্যক্তি পুরো সুরাটি তেলাওয়াত করবে, তার জন্য একটি নূর হবে, যার পরিধি জমিন থেকে আসমান পর্যন্ত। (মুসনাদে আহমদ)</p> <p> ৩. আবু সাঈদ খুদরী (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেন, যে ব্যক্তি জুমআর দিন সুরায়ে কাহাফ তেলাওয়াত করবে, তার জন্য একটি নূর সৃষ্টি হবে, যা এক জুমআ থেকে পরবর্তী জুমআ পর্যন্ত বিস্তৃত হবে। (বাইহাকি, দাওয়াতুল কবীর)</p> <p> সুরা ইয়াসিনের ফজিলত</p> <p> ১. হজরত আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, প্রতিটি জিনিসের একটি কলব বা হৃদয় রয়েছে, আর কোরআনের কলব হলো সুরায়ে ইয়াসিন। যে ব্যক্তি সুরায়ে ইয়াসিন তেলাওয়াত করবে, আল্লাহ তায়ালা তাকে ১০ বার পুরো কোরআন তেলাওয়াতের সাওয়াব দান করবেন। (তিরমিজি, দারেমি)</p> <p> ২. রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, যে ব্যক্তি দিনের শুরুতে সুরা ইয়াসিন তেলাওয়াত করবে, তার যাবতীয় চাহিদা-লক্ষ্য পূরণ হবে। (দারেমি)</p> <p> ৩. হজরত মা'কাল ইবনে ইয়াসার আল মুযানী (রা.) সূত্রে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেন, যে ব্যক্তি শুধু আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের আশায় সুরা ইয়াসিন তেলাওয়াত করবে, তার পূর্ববর্তী সব গুনাহ মাফ করে দেওয়া হবে।</p> <p> সুতরাং এই সুরাটি তোমরা মৃত্যুশয্যায় শায়িত বা মৃতের কবরের পাশে তেলাওয়াত করো। (বাইহাকি)</p> <p> ৪. হজরত আবু যর (রা.) থেকে বর্ণিত, মৃত্যুশয্যায় শায়িত ব্যক্তির পাশে সুরা ইয়াসিন তেলাওয়াত করা হলে তার মৃত্যু সহজতর হয়। (ইবনে হিব্বান)</p> <p> সুরা ওয়াকি্বআহ্র ফজিলত</p> <p> ১. হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) সূত্রে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেন, যে ব্যক্তি প্রতি রাতে সুরা ওয়াকি্বআহ্ তেলাওয়াত করবে, তার ঘরে কখনো অভাব-অনটন আসবে না।</p> <p> ইবনে মাসউদ (রা.) তাঁর মেয়েদের প্রতি রাতে সুরা ওয়াকি্বআহ্ তেলাওয়াত করার হুকুম করতেন (বাইহাকি, শুআবুল ইমান)</p> <p> তাফসিরে ইবনে কাসিরে বর্ণনাটি এভাবে উল্লেখ করা হয়েছে যে যখন ইবনে মাসউদ (রা.) মৃত্যুরোগে আক্রান্ত, তখন হজরত উসমান (রা.) তাঁকে দেখতে যান এবং জিজ্ঞেস করেন, আপনার কোনো কষ্ট আছে কি? ইবনে মাসউদ (রা.) বলেন, গুনাহের কষ্ট আছে। উসমান (রা.) জিজ্ঞেস করেন, আপনার চাহিদা কি? ইবনে মাসউদ (রা.) বলেন, আল্লাহর রহমত। উসমান (রা.) বলেন, আপনার চিকিৎসার জন্য কোনো ডাক্তার নিয়ে আসব? ইবনে মাসউদ (রা.) বলেন, ডাক্তারই তো আমাকে রোগ দিয়েছেন (উদ্দেশ্য আল্লাহ তায়ালা)। উসমান (রা.) বলেন, বায়তুল মাল থেকে আপনার জন্য কিছু উপঢৌকন পাঠিয়ে দেব? ইবনে মাসউদ (রা.) বলেন, কোনো প্রয়োজন নেই। উসমান (রা.) বলেন, গ্রহণ করুন! তা আপনার মৃত্যুর পর আপনার মেয়েদের কাজে আসবে। ইবনে মাসউদ (রা.) বলেন, আমার মেয়েদের অভাবের শিকার হওয়ার ভয় আপনার হলেও আমার নেই, কারণ আমি মেয়েদের প্রতি রাতে সুরা ওয়াকি্বআহ্ পাঠ করার তাগিদ করেছি, যেহেতু রাসুল (সা.)-কে আমি বলতে শুনেছি, যে ব্যক্তি প্রতি রাতে সুরা ওয়াকি্বআহ্ পাঠ করবে, সে কখনো অভাবগ্রস্ত হবে না। (ইবনে কাসির)</p> <p> লেখক : গবেষক , ফতোয়া সংকলন বিভাগ</p> <p> ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার, বসুন্ধরা, ঢাকা।</p> <p>  </p> <p>  </p> <p>  </p> <p>  </p>