রমজান মাসজুড়েই রাজধানীর বিপণিবিতানগুলোতে ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড় দেখা যায়। এবার কিছুটা ব্যতিক্রম দেখা গেল রাজধানীর উত্তরার বেশ কিছু শপিং মলে। অর্ধেক রমজান মাস চলে গেলেও ক্রেতার উপস্থিতি গতবারের চেয়ে কম।
গতকাল বুধবার রাজধানীর উত্তরার শপিং মলগুলোতে দেখা মিলল এমনই চিত্র।
উত্তরার তিন নম্বর সেক্টরে অবস্থিত এইচ এম প্লাজার আনোয়ারা ক্লথ স্টোরের কর্মী মো. রুবেল মিয়া বলেন, ‘পনেরো রোজা পার হয়ে গেলেও লোক একটু কম। তবে যত দিন যাবে লোক সমাগম বাড়তে থাকবে। আমরা নিত্যনতুন ডিজাইনের পোশাক কালেকশনে রেখেছি।’
আজমপুর থেকে বান্ধবীদের সঙ্গে কেনাকাটা করতে আসা ফারিয়া জেরিন বলেন, ‘গত পরশু এসে দেখে গিয়েছিলাম।
আজ ইন্ডিয়ান বিবেক (পোশাকের নাম) কিনলাম। এখন বাসার লোকজনের জন্য কেনাকাটা করব।’
সততা ফেব্রিক্সের ম্যানেজার শায়খ ইসলাম ইভান বলেন, ‘নেটের ও মসলিন টিস্যুর ওপর কাজ করা পোশাকের চাহিদা এবার একটু বেশি। আপাতত সাপ্তাহিক বন্ধের দিনগুলোতে ভিড় বেশি হচ্ছে।
তবে আর কয়েকটি রোজা গেলে বিক্রির পরিমাণ আরো বাড়বে।’
উত্তরার রাজলক্ষ্মী, নর্থ টাওয়ার, মাসকাট প্লাজা, জমজম টাওয়ার, আলাউদ্দিন শপিং সেন্টার, রাজউক ট্রেড সেন্টারের (নিকুঞ্জ ২) দোকানগুলোতে গ্রাহকের উপস্থিতি কম। ঈদের কেনাকাটা অন্যান্য দিনের চেয়ে বাড়লেও এখনো সেভাবে শুরু হয়নি। ড্রিম প্লাজার মালিক রয়েল জাহিদ হাসান বলেন, ‘ঈদের কেনাকাটা এখনো সেভাবে জমজমাট হয়ে ওঠেনি। আমাদের গ্রাহকদের মধ্যে বেশির ভাগই চাকরিজীবী।
তাঁদের বেতন-ভাতা এখনো সম্ভবত হয়নি। আশা করছি ২০ রোজার পর থেকেই গ্রাহকদের সংখ্যা বাড়বে।’
তবে ক্রেতাদের ভিড় দেখা গেল উত্তরার ‘আড়ংয়ে। চাহিদার শীর্ষে মসলিন শাড়ি, অপেরা শাড়ি, ওয়ান পিস, কুর্তি ও পাঞ্জাবির। দোকানদারদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, মেয়েদের পোশাকের মধ্যে ভারতীয় ‘বিবেক’, ‘বিনয়’ বেশি চলছে। দেশি সুতির মধ্যে হালকা কাজের ওয়ান পিস, বুটিকের শাড়ি ও কুর্তির চাহিদা রয়েছে। এ ছাড়া চাহিদা আছে পাকিস্তানি গুল আহম্মেদ, ফেরদৌস, সানা-সাফিনা, তাওয়াতকাল মোমতাজ, জেরিন নামের থ্রিপিসের। শাড়ির বাজারে একচ্ছত্র আধিপত্য বাংলাদেশি শাড়ির। জয়পুরী সিল্কসহ ভারতীয় শাড়িগুলোর জনপ্রিয়তা কাটিয়ে এবার বাজারে জায়গা পোক্ত করে নিয়েছে ৮০০ থেকে ১৫০০ টাকার দেশি সুতি শাড়িগুলো। ছেলেদের পোশাকের মধ্যে সবচেয়ে বেশি চাহিদা দেশি সুতি পাঞ্জাবির।
জুতার ও গয়নার দোকানগুলোতে ছিল ক্রেতাদের ভিড়। সদ্য কেনা পোশাকের সঙ্গে মিলিয়ে কালের দুল, গলার হার কিনছিলেন অনেকে।