মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন গতকাল বৃহস্পতিবার উদ্বেগ জানিয়ে বলেছেন, রাশিয়া ও উত্তর কোরিয়ার মধ্যে সামরিক সম্পর্ক ক্রমেই ‘বাড়ছে ও বিপজ্জনক’ হয়ে উঠছে। তিনি উত্তর কোরিয়াকে ‘সংযত করার জন্য’ কট্টর কমিউনিস্ট দেশটির মিত্র চীনের প্রতি আহবান জানান। গতকাল বুধবার দক্ষিণ কোরিয়ার সিউলে এক সংবাদ সম্মেলনে এ মনোভাব প্রকাশ করেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
যুক্তরাষ্ট্র ও তার এশীয় মিত্র দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপান ইউক্রেনে আগ্রাসন চালিয়ে যেতে রাশিয়াকে সহযোগিতা করার অভিযোগ তুলে উত্তর কোরিয়ার সমালোচনা করে আসছে।
সিউল বলেছে, অস্ত্র ও গোলাবারুদের বিনিময়ে রাশিয়ার কাছ থেকে মহাকাশ প্রযুক্তির ক্ষেত্রে সহযোগিতা পাচ্ছে পিয়ংইয়ং।
সদ্য টোকিওতে বিশ্বের শিল্পোন্নত রাষ্ট্রগুলোর জোট জি৭-এর পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠকে অংশ নেওয়ার পর ব্লিনকেন গতকাল দক্ষিণ কোরিয়া সফরে যান। সেখানে তিনি প্রেসিডেন্ট ইয়ুন সুক ইওলসহ শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। পরে প্রেসিডেন্ট ইয়ুনের উপস্থিতিতে এক সংবাদ সম্মেলনে ব্লিনকেন বলেন, রাশিয়ার সঙ্গে উত্তর কোরিয়ার ক্রমবর্ধমান ও বিপজ্জনক সামরিক সহযোগিতায় যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়া গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছে।
ব্লিনকেন বলেন, ‘আমরা লক্ষ করছি, ইউক্রেনে যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার জন্য রাশিয়াকে অস্ত্র সহায়তা দিচ্ছে উত্তর কোরিয়া। আমরা এ-ও দেখতে পাচ্ছি, (বিনিময়ে) উত্তর কোরিয়ার মহাকাশ ও সামরিক কর্মসূচিতে সহযোগিতা করছে রাশিয়া।’
ইউক্রেনে আগ্রাসনের জন্য রাশিয়া এবং পারমাণবিক অস্ত্র ও ক্ষেপণাস্ত্র বিষয়ক কর্মসূচির কারণে উত্তর কোরিয়া আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞার আওতায় রয়েছে। এই দুই দেশের সামরিক সহযোগিতা যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের জন্য মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
বিশেষ করে গত সেপ্টেম্বরে রাশিয়ায় দেশটির প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও উত্তর কোরিয়ার সর্বোচ্চ নেতা কিম জং উনের সামনাসামনি বৈঠক তাঁদের উদ্বেগ আরো বাড়িয়েছে।
দক্ষিণ কোরিয়া বলছে, অস্ত্র সরবরাহের বিনিময়ে রাশিয়ার কাছ থেকে উত্তর কোরিয়া মহাকাশে সামরিক গোয়েন্দা স্যাটেলাইট স্থাপন করার প্রযুক্তিবিষয়ক সহায়তা পাবে। তবে উত্তর কোরিয়া যে রাশিয়াকে অস্ত্র সরবরাহ করছে সে বিষয়ে কেউ কোনো প্রমাণ দেখাতে পারবে না বলে গত মাসে দাবি করেছিল ক্রেমলিন।
চীন নিয়ে জেনারেলের উদ্বেগ
এদিকে জ্যেষ্ঠ মার্কিন জেনারেল চার্লস ফ্লিন সাম্প্রতিক বছরগুলোতে প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে চীনা বাহিনী ‘বিরাট অগ্রগতি’ করেছে বলে মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেছেন, চীন এ অঞ্চলে তার সক্ষমতা বাড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে ‘আরো আক্রমণাত্মক’ হয়ে উঠেছে, যা অত্যন্ত উদ্বেগের।
জেনারেল ফ্লিন প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলভিত্তিক এক লাখ সাত হাজারেরও বেশি মার্কিন সেনা পরিচালনার দায়িত্বে।
সূত্র : এএফপি