পরীক্ষা হওয়ার এখনো মাস কয়েক সময় আছে। এ সময়টায় সব বিষয়ের ওপরই জোরালো প্রস্তুতি নিতে হবে।
গণিতভীতি আর নয়
ব্যাংকের চাকরির পরীক্ষায় সফল হওয়ার জন্য গণিতে দক্ষ হওয়া ছাড়া উপায় নেই। সমন্বিত ৯ ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের প্রিলিমিনারি পরীক্ষা হওয়ার সম্ভাব্য সময় আগামী ছয়-সাত মাস পর। তাই চাকরিপ্রার্থীদের প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য যথেষ্ট সময় হাতে আছে। এ জন্য এখন থেকে প্রতিদিন তিন-চার ঘণ্টা নিয়মিত গণিত অনুশীলন করতে হবে।
নিয়মিত গণিত অনুশীলন করতে পারলে আগামী ছয় মাসে গণিতভীতি কেটে যাবে। গণিতে যাঁদের ব্যাসিক দুর্বল, তাঁরা সপ্তম থেকে দশম শ্রেণির গণিত বই থেকে প্রস্তুতি শুরু করতে পারেন।
ইংরেজির ভয় করব জয়
ব্যাংকে চাকরি পেতে হলে আপনাকে ইংরেজির ভয়কে জয় করতেই হবে। শুধু ব্যাংক নয়, যেকোনো চাকরির জন্যই ইংরেজি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আপনার যদি ইংরেজিভীতি থাকে তাহলে আজ থেকেই এ ভীতি কাটানোর জন্য ইংরেজি বইয়ের সঙ্গে সখ্য গড়ে তুলুন।
প্রতিদিন নিয়ম করে ভোরবেলা ভোকাবুলারি পড়ুন। আগামী দিন পড়ার সময় আবার সেই ভোকাবুলারিগুলো রিভিশন দিন।
ভোকাবুলারির প্রস্তুতির জন্য Dr. Mohiuddin-এর An Exclusive book of synonyms and antonyms বইটির সাহায্য নিতে পারেন। এ ছাড়া প্রতিদিন ইংরেজি পত্রিকা পড়ার অভ্যাস করুন। অজানা শব্দগুলো নোট করে পড়ুন। গ্রামারের জন্য Cliffs Toefl I Barron’s Toefl বই দুটি ধীরে ধীরে পড়তে পারেন। বাজারের প্রচলিত গাইড বই থেকে বিগত সালের প্রশ্নগুলো অনুশীলন করুন। আশা করি, ইংরেজির ভয় আপনি জয় করতে পারবেন।
বাংলায়ও গুরুত্ব দিতে হবে
প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় ‘বাংলা’ থেকে সাধারণত ২০ নম্বরের মতো প্রশ্ন করা হয়। তাই বেশি নম্বর পেতে হলে বাংলা বিষয়েও গুরুত্ব দিতে হবে।
বাংলা অংশে সাধারণত ব্যাকরণ ও সাহিত্য থেকে প্রশ্ন করা হয়। ব্যাকরণ অংশে প্রস্তুতির জন্য নবম-দশম শ্রেণির বোর্ড ব্যাকরণ বইটা খুব ভালোভাবে পড়তে হবে।
এককথায় মুখস্থ করে ফেলতে হবে। ভাষা, ধ্বনি, বর্ণ, সমাস, কারক ও বিভক্তি, সন্ধিবিচ্ছেদ, বচন, শব্দের প্রকারভেদ, লিঙ্গান্তর, বাক্য, বাগধারা, এককথায় প্রকাশ ইত্যাদির ওপর প্রশ্ন থাকে বেশি। তাই এ বিষয়গুলোয় বেশি মনোযোগ দিতে হবে। তবে কিছু কিছু বিষয় আছে, যেগুলো নবম-দশম শ্রেণির ব্যাকরণ বইয়ের ওপর নির্ভর করলে চলবে না, বিস্তর প্রস্তুতি নিতে হবে। এ ক্ষেত্রে ড. সৌমিত্র শেখরের লেখা ‘বাংলা ভাষা ও সাহিত্য জিজ্ঞাসা’ বইটি পড়া যেতে পারে।
আর যেসব টপিক পড়তে হবে তা হলো—সমার্থক শব্দ, বিপরীত শব্দ, বাগধারা, বানান, শব্দের প্রয়োগ-অপপ্রয়োগ, এককথায় প্রকাশ, প্রবাদ-প্রবচন প্রভৃতি।
ব্যাকরণ ও সাহিত্যের কিছু বিষয় মনে থাকে না।
সাহিত্য থেকে সাধারণত কম প্রশ্ন আসে। সাহিত্য অংশে বিগত সালের বিভিন্ন নিয়োগ পরীক্ষায় আসা প্রশ্নগুলো ভালো
করে পড়তে হবে। এ ছাড়া গুরুত্বপূর্ণ কবি-সাহিত্যিকদের জীবনী, সাহিত্যকর্ম, তাঁদের বিভিন্ন কবিতা ও উপন্যাস, উক্তি, বিখ্যাত পত্রিকার সম্পাদকদের নাম ও প্রকাশ সাল প্রভৃতি সম্পর্কে সম্যক ধারণা রাখতে হবে।
যত পারেন মডেল টেস্ট দিন
পরীক্ষার আগ পর্যন্ত যত পারেন মডেল টেস্ট দিন। এ ছাড়া এ সময়ের মধ্যে অন্যান্য নিয়োগ পরীক্ষা থাকলে অংশ নেওয়ার চেষ্টা করুন। যদি ওই পরীক্ষা ভালো হয়, পাস করেন; তাহলে তো ভালোই। আর যদি না-ও পাস করেন, অন্তত প্রস্তুতি পর্বটা সাড়বে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফেসবুকের বিভিন্ন গ্রুপের মডেল টেস্ট পরীক্ষা নেওয়া হয়, সেখানে অংশগ্রহণ করা যেতে পারে। আর এসবের কোনো সুযোগই যদি না হয়, তাহলে ঘরে বসে সময় বেঁধে নিজেই নিজের মডেল টেস্ট নিন।
নেতিবাচক বিষয় থেকে নিজেকে দূরে রেখে নিজের সব মেধা ও পরিশ্রম সমন্বয় করুন। পরিশ্রম কখনো বৃথা যায় না।