ঢাকা, শুক্রবার ২৫ জুলাই ২০২৫
১০ শ্রাবণ ১৪৩২, ২৯ মহররম ১৪৪৭

ঢাকা, শুক্রবার ২৫ জুলাই ২০২৫
১০ শ্রাবণ ১৪৩২, ২৯ মহররম ১৪৪৭

৭ বছরের শিশুকে ধর্ষণ ও হত্যা : শুক্কুর আলীর আমৃত্যু কারাদণ্ড

কালের কণ্ঠ অনলাইন
কালের কণ্ঠ অনলাইন
শেয়ার
৭ বছরের শিশুকে ধর্ষণ ও হত্যা : শুক্কুর আলীর আমৃত্যু কারাদণ্ড

মানিকগঞ্জে ৭ বছরের শিশুকে ধর্ষণের পর হত্যার দায়ে শুক্কুর আলীর ফাঁসির দণ্ড কমিয়ে আমৃত্যু কারাদণ্ড দিয়েছেন আপিল বিভাগ। ফাঁসির আদেশের বিষয়ে রিভিউ করলে শুনানি শেষে আপিল বিভাগ এ আদেশ দেন। প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার নেতৃত্বে চার সদস্যের আপিল বেঞ্চ সোমবার এ আদেশ দেন।
এর আগে গতকাল রবিবার শুক্কুর আলীর রিভিউ আবেদনের শুনানি শেষ হয়।

আদালতে শুক্কুর আলীর পক্ষে বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড ট্রাস্ট সার্ভিসের (ব্লাস্ট) হয়ে প্রথম দিনে শুনানি করেন এম কে রহমান।
শুনানিতে তিনি বলেন, ''বিচারিক আদালতের রায়ের সময় তার বয়স অল্প থাকায় তাকে সর্বোচ্চ দণ্ড দেওয়া ঠিক হয়নি। এ ছাড়া, আইনের যে দুটি ধারায় বিচার করে তাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছিল, হাইকোর্ট ও আপিল বিভাগ যেহেতু ধারা দুটি অবৈধ ঘোষণা করেছেন, সেহেতু তাকে দণ্ড থেকে রেহাই দেওয়া যায়।''
প্রসঙ্গত, ১৯৯৬ সালের ১১ জুন শুক্কুর আলী মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলার শিবরামপুর গ্রামের সাত বছর বয়সী এক শিশুকে ধর্ষণ শেষে হত্যা করে।
পরে মানিকগঞ্জের নারী ও শিশু নির্যাতন বিশেষ ট্রাইব্যুনাল ১৯৯৫ সালের নারী ও শিশু নির্যাতন আইনের ৬ (২) ধারায় এ মামলায় আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরু করেন। বিচার প্রক্রিয়া শেষে ২০০১ সালের ১২ জুলাই শুক্কুর আলীকে মৃত্যুদণ্ড প্রদান করেন বিচারিক আদালত।
বিচারিক আদালতের মৃত্যুদণ্ডের রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে জেল আপিল দায়ের করেন শুক্কুর আলী। কিন্তু হাইকোর্ট তার আবেদন খারিজ করে দিয়ে ২০০৪ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি ফাঁসির রায় বহাল রাখেন।

পরে ২০০৫ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি আপিল বিভাগও মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখেন। এ রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে আপিল বিভাগে রিভিউ আবেদন করেন শুক্কুর আলীর পক্ষে রাষ্ট্র নিয়োজিত আইনজীবী এ বি এম বায়েজীদ। আপিল বিভাগ একই বছরের ৪ মে পুর্নবিবেচনার আবেদনও খারিজ করে দেন। রিভিউ খারিজের পর ২০০৫ সালে শুকুর আলীর মা রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা চেয়ে একটি আবেদন জমা দেন।
এদিকে বিচারিক আদালত শুক্কুর আলীকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার এক বছর আগে ২০০০ সালে জাতীয় সংসদ ১৯৯৫ সালের আইনটি বাতিল করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ নামে আরেকটি আইন প্রণয়ন করে।
ওই আইনে ধর্ষণের ফলে বা ধর্ষণের পর কাউকে হত্যা করা হলে তার শাস্তির বিধান রাখা হয় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড বা মৃত্যুদণ্ড।
কিন্তু শুক্কুর আলীর বিচার হয় ১৯৯৫ সালের আইনে। যে আইনে ধর্ষণের পর হত্যার অপরাধের শাস্তির বিধান ছিল শুধুমাত্র মৃত্যুদণ্ড। এ বিষয়টিকে সামনে এনে শুক্কুর আলীর পাশে দাঁড়ায় বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট (ব্লাস্ট)। তারা ১৯৯৫ সালে প্রণীত নারী ও শিশু নির্যাতন আইনের ৬(২) ধারায় যেখানে শাস্তির বিধান ছিল কেবল মৃত্যুদণ্ড, তার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন। হাইকোর্ট ২০১০ সালের ২ মার্চ ৬(২) ধারাকে অসাংবিধানিক ঘোষণা করেন।
কিন্তু শুক্কুর আলীর বিচার নিয়ে হাইকোর্ট কোনো মন্তব্য করেননি।
পরে বিষয়টি আপিলে যাওয়ার পর গত ৫ মে হাইকোর্টের রায় বহাল রাখেন আপিল বিভাগ। একই সঙ্গে শুক্কুর আলীর দণ্ডও বহাল রাখেন।
শুক্কুর আলীর দণ্ড বহাল রাখা সংক্রান্ত আপিল বিভাগের এ রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউ পিটিশন দায়ের করে বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড ট্রাস্ট সার্ভিস।

মন্তব্য

খায়রুল হকের শুনানিতে চলে গেল বিদ্যুৎ, মোবাইল ফোনের আলোতে চলল শুনানি

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
খায়রুল হকের শুনানিতে চলে গেল বিদ্যুৎ, মোবাইল 
ফোনের আলোতে চলল শুনানি
সংগৃহীত ছবি

যাত্রাবাড়ীতে যুবদলকর্মী আবদুল কাইয়ুম আহাদ হত্যা মামলায় সাবেক প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হককে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।

বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) ঢাকার অতিরিক্ত মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. ছানাউল্ল্যাহের আদালত শুনানি শেষে এ আদেশ দেন। এ মামলার শুনানি চলাকালে ৮টা ৩২ মিনিটে বিদ্যুৎ চলে যায়। তখন মোবাইলের লাইট জ্বালিয়ে অবশিষ্ট শুনানি শেষ হয়।

 

আরো পড়ুন
সাগরে লঘুচাপ, সারা দেশে ভারি বৃষ্টির পূর্বাভাস

সাগরে লঘুচাপ, সারা দেশে ভারি বৃষ্টির পূর্বাভাস

 

এদিন রাত ৮টার দিকে তাকে আদালতে হাজির করা হয়। এ সময় তাকে আদালতের হাজতখানায় রাখা হয়। এরপর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা যাত্রাবাড়ী থানার পুলিশ পরিদর্শক মো. খালেদ হাসান তাকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন। এরপর সোয়া ৮টায় তাকে আদালতের কাঠগড়ায় হাজির করা হয়।

এরপর তার হেলমেট খোলা হয়। ৮টা ১৬মিনিটে বিচারক এজলাসে উঠেন। এরপর শুনানি শুরু হয়। এক পর্যায়ে রাত ৮টা ৩২ মিনিটে বিদ্যুৎ চলে যায়।
তখন মোবাইলের লাইট জ্বালিয়ে শুনানি শেষ করা হয়। পরে শুনানি শেষে আদালত তাকে জেল হাজতে পাঠানোর আদেশ দেন। 

মামলার সূত্রে জানা গেছে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে গত বছরের ১৮ জুলাই সন্ধ্যা ৬টার দিকে যাত্রাবাড়ী থানাধীন এলাকায় আব্দুল কাইয়ুম আহাদের ওপরে হত্যার উদ্দেশ্য গুলি বর্ষণ, ধারালো অস্ত্র ধারা আঘাত, টিআরশেল, সাউন্ড বোমসহ নানা ধরনের অস্ত্র দিয়ে আক্রমণ করা হয়। এ সময় গুলির আঘাতে আব্দুল কাইয়ুম আহাদের মুখে, বুকে গুলি লাগলে যাত্রাবাড়ী থানাধীন কাজলা পুলিশ বক্সের সামনে মাটিতে লুটে পড়ে। পরবর্তীতে আসামি যাত্রাবাড়ী থানার তৎকালীন ওসি আবুল হোসেন ভুক্তভোগী আব্দুল কাইয়ুম আহাদের দুই পায়ে ব্রাশ ফায়ার করেন।

ভুক্তভোগী আহাদকে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। 

এ ঘটনায় গত ৬ জুলাই নিহতের বাবা মো. আলা উদ্দিন বাদী হয়ে যাত্রাবাড়ী থানায় মামলা করেন। এতে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ৪৬৭ জনকে এজাহারনামীয় ও অজ্ঞাত এক থেকে ২ হাজার ব্যক্তিকে আসামি করা হয়। এ মামলার এজাহারনামীয় ৪৪ নং আসামি হলেন এ বি এম খায়রুল হক। 

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য
আদালতের নির্দেশ বহাল

হরেন্দ্রনাথের মামলা খরচ ২০ লাখ টাকা দিতেই হবে

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
হরেন্দ্রনাথের মামলা খরচ ২০ লাখ টাকা দিতেই হবে

প্রায় চার দশক আইনি লড়াইয়ের পর গতবছর অর্থ আত্মসাতের মামলা থেকে রেহাই পেয়েছিলেন কুষ্টিয়ার খোকসার হেলালপুর গ্রামের বাসিন্দা হরেন্দ্রনাথ চন্দ্র (৭৮)। মামলার খরচ হিসেবে তাঁকে ২০ লাখ টাকা দিতে সোনালী ব্যাংক কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছিলেন সর্বোচ্চ আদালত।

ওই রায়ের পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) চেয়ে আবেদন করেছিল সোনালী ব্যাংক। বৃহস্পতিবার সেই আবেদন খারিজ করে আগের রায়ই বহাল রেখেছেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন ছয় বিচারপতির আপিল বিভাগ বেঞ্চ।

আদালতে হরেন্দ্রনাথের পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ওমর ফারুক। তিনি সুপ্রিম কোর্ট লিগ্যাল এইডের হয়ে হরেন্দ্রনাথকে আইনি সহায়তা দিয়েছেন। সোনালী ব্যাংকের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী শামীম খালেদ।

আইনজীবী ওমর ফারুক কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘সোনালী ব্যাংকের রিভিউ খারিজ করায় হরেন্দ্রনাথকে ২০ লক্ষ টাকা দিতেই হবে সোনালী ব্যাংককে।

এই টাকা না দেওয়ার আর কোনো সুযোগ নেই।’ 

মামলা বৃত্তান্ত 
বিএ পাস করে ১৯৭৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর ক্যাশিয়ার-কাম ক্লার্ক পদে সোনালী ব্যাংকে ঢাকার একটি শাখায় যোগ দেন হরেন্দ্রনাথ চন্দ্র। তিন বছর পর পদোন্নতি পেয়ে সিনিয়র ক্যাশিয়ার-কাম ক্লার্ক হন। এরপর ব্যাংক তাঁকে যাত্রাবাড়ী শাখায় বদলি করে।

সেখানে যোগ দেওয়ার পর এই শাখা থেকে ১৬ লাখ ১৬ হাজার ১০০ টাকা আরেকটি শাখায় স্থানান্তর করেন হরেন্দ্রনাথ। সংশ্লিষ্ট শাখার কর্মকর্তা সিল-স্বাক্ষর দিয়ে পুরো টাকা বুঝে নেন। এর কিছুদিন পর ১৯৮৫ সালে ব্যাংকের অভ্যন্তরীণ তদন্তে ওই টাকা পাওয়া যায়নি বলে প্রতিবেদন দাখিল করা হয়। পরে তহবিল তছরুপের অভিযোগে ওই বছরই হরেন্দ্রসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা করে সোনালী ব্যাংক। ১৯৮৬ সালের মার্চ মাসে তাদের সবাইকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।

এদিকে, গ্রাহকের টাকা আত্মসাতের অভিযোগে আরেক মামলায় ১৯৮৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে স্থাপিত সামরিক আদালতের বিচারে হরেন্দ্রনাথের সাত বছর কারাদণ্ড হয়। ১৯৯০ সালে হরেন্দ্রনাথ জেল খেটে বের হন। এর আগে ১৯৮৫ সালের ২৯ জুলাই হরেন্দ্রনাথসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে ঢাকার বিশেষ আদালতে ফৌজদারি মামলা করে তৎকালীন দুর্নীতি দমন ব্যুরো। বিচারে ১৯৮৬ সালের ১৫ নভেম্বর বেকসুর খালাস পান হরেন্দ্রনাথসহ সবাই। 

মামলায় হেরে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ গোপনে ১৯৮৮ সালে হরেন্দ্রসহ সবার বিরুদ্ধে অর্থঋণ আদালতে মামলা করে। সেই মামলায় একতরফা রায়ে তাদের দোষী সাব্যস্ত করে পুরো অর্থ ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দেন আদালত। এর বিরুদ্ধে আবেদন (মিস কেস) করেন হরেন্দ্রনাথ। ১৯৯২ সালের ১৯ আগস্ট ঢাকার যুগ্ম জেলা জজ আদালত আপিল গ্রহণ করে বিচারিক আদালতের আদেশ বাতিল করেন। এই রায়ের বিরুদ্ধে সোনালী ব্যাংক ২০১৯ সালে হাইকোর্টে আপিল করে। ২০২২ সালের ২৯ আগস্ট আপিল খারিজ করে দেন হাইকোর্ট। 

২০২৩ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) করে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। সেই আবেদন খারিজ করে এবং হাইকোর্টের রায় বহাল রেখে গত বছর ৯ ডিসেম্বর রায় দেন আপিল বিভাগ। ওই রায় পুনর্বিবেচনা চেয়েই আবেদন করেছিল সোনালী ব্যাংক, যা বৃহস্পতিবার খারিজ করে দেওয়া হয়।

মন্তব্য

খায়রুল হকের ফাঁসি চেয়ে আইনজীবীদের বিক্ষোভ

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
খায়রুল হকের ফাঁসি চেয়ে আইনজীবীদের বিক্ষোভ
ছবি : কালের কণ্ঠ

যাত্রাবাড়ীতে যুবদলকর্মী আবদুল কাইয়ুম আহাদ হত্যা মামলায় সাবেক প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হককে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) ঢাকার অতিরিক্ত মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. ছানাউল্ল্যাহের আদালত শুনানি শেষে এ আদেশ দেন। পরে খায়রুলের ফাঁসি চেয়ে বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা বিক্ষোভ করেন। 

এদিন রাত ৮টার দিকে তাকে আদালতে হাজির করা হয়।

এ সময় তাকে আদালতের হাজতখানায় রাখা হয়। এরপর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা যাত্রাবাড়ী থানার পুলিশ পরিদর্শক মো. খালেদ হাসান তাকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন। এরপর সোয়া ৮টায় তাকে আদালতের কাঠগড়ায় হাজির করা হয়। এরপর তার হেলমেট খোলা হয়।
রাত ৮টা ১৬ মিনিটে বিচারক এজলাসে ওঠেন। এরপর শুনানি শুরু হয়। এক পর্যায়ে রাত ৮টা ৩২ মিনিটে বিদ্যুৎ চলে যায়। তখন মোবাইলের লাইট জ্বালিয়ে শুনানি শেষ করা হয়।
পরে শুনানি শেষে আদালত তাকে জেলহাজতে পাঠানোর আদেশ দেন। পরে আদালতে অবস্থান করা বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা খায়রুল হকের ফাঁসি চেয়ে বিক্ষোভ করেন। তাকে নিয়ে নানা স্লোগান দিতে থাকেন। এ সময় ঢাকা আইনজীবী সমিতির সভাপতি খোরশেদ মিয়া আলম, সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ নজরুল ইসলাম, জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম ঢাকা বার ইউনিটের আহ্বায়ক খোরশেদ আলম, সদস্যসচিব নিহার হোসেন ফারুক প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। 

আরো পড়ুন
কাউকে গ্রেপ্তারের ১২ ঘণ্টার মধ্যে পরিবারকে জানাতে হবে

কাউকে গ্রেপ্তারের ১২ ঘণ্টার মধ্যে পরিবারকে জানাতে হবে

 

মামলার সূত্রে জানা গেছে, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে গত বছরের ১৮ জুলাই সন্ধ্যা ৬টার দিকে যাত্রাবাড়ী থানাধীন এলাকায় আব্দুল কাইয়ুম আহাদের ওপরে হত্যার উদ্দেশ্যে গুলিবর্ষণ, ধারালো অস্ত্র দ্বারা আঘাত, টিয়ারশেল, সাউন্ড বোমসহ নানা ধরনের অস্ত্র দিয়ে আক্রমণ করা হয়।

এ সময় গুলির আঘাতে আব্দুল কাইয়ুম আহাদের মুখে, বুকে গুলি লাগলে যাত্রাবাড়ী থানাধীন কাজলা পুলিশ বক্সের সামনে মাটিতে লুটে পড়েন। পরবর্তীতে আসামি যাত্রাবাড়ী থানার তৎকালীন ওসি আবুল হোসেন ভুক্তভোগী আব্দুল কাইয়ুম আহাদের দুই পায়ে ব্রাশ ফায়ার করেন। ভুক্তভোগী আহাদকে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় গত ৬ জুলাই নিহতের বাবা মো. আলা উদ্দিন বাদী হয়ে যাত্রাবাড়ী থানায় মামলা করেন। এতে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ৪৬৭ জনকে এজাহারনামীয় ও অজ্ঞাত এক থেকে দুই হাজার ব্যক্তিকে আসামি করা হয়। এ মামলার এজাহারনামীয় ৪৪ নং আসামি হলেন এ বি এম খায়রুল হক।

মন্তব্য

কর্মের মধ্য দিয়েই ঘৃণা বা ভালোবাসা তৈরি হয় : খায়রুলের শুনানিতে বিচারক

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
কর্মের মধ্য দিয়েই ঘৃণা বা ভালোবাসা তৈরি হয় : খায়রুলের শুনানিতে বিচারক
ফাইল ছবি

যাত্রাবাড়ীতে যুবদলকর্মী আবদুল কাইয়ুম আহাদ হত্যা মামলায় সাবেক প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হককে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।

আজ বৃহস্পতিবার ঢাকার অতিরিক্ত চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. ছানাউল্ল্যাহের আদালত শুনানি শেষে এ আদেশ দেন। এ মামলার শুনানিতে বিচারক বলেছেন, ‘কর্মের মধ্য দিয়েই ঘৃণা বা ভালোবাসা তৈরি হয়।’

এদিন রাত ৮টার দিকে তাকে আদালতে হাজির করা হয়।

এ সময় তাকে আদালতের হাজতখানায় রাখা হয়। এরপর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা যাত্রাবাড়ী থানার পুলিশ পরিদর্শক মো. খালেদ হাসান তাকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন। এরপর সোয়া ৮টায় তাকে আদালতের কাঠগড়ায় হাজির করা হয়। এরপর তার হেলমেট খোলা হয়।
৮টা ১৬ মিনিটে বিচারক এজলাসে ওঠেন। এরপর শুনানি শুরু হয়। তখন তিনি চারদিকে তাকাতে থাকেন। 

শুনানিতে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম ঢাকা বার ইউনিটের আহ্বায়ক খোরশেদ আলম বলেন, ‘তিনি হাসিনার কৃতদাস ছিলেন।

হাসিনার নির্দেশে বিচার বিভাগকে ধ্বংস করেছেন। সেই অবিচারের ফলে তিনি আসামির কাঠগড়ায় দাঁড়িয়েছেন। হাসিনার সব মামলায় তাকে করা অভিযুক্ত হোক—সেই প্রত্যাশা করছি।’ 

এরপর ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর আজিজুল হক দিদার বলেন, ‘তিনি সাবেক কলঙ্কিত প্রধান বিচারপতি। তার কারণে দীর্ঘ ১৭ বছর হাজার হাজার মানুষ নির্যাতন, গুম, হত্যার শিকার হয়েছে।

তিনি প্রধান বিচারপতি হওয়ায় ছাত্র-জনতার আন্দোলনে হাজার হাজার মানুষকে জীবন দিতে হয়। তার কারণে শেখ হাসিনা স্বৈরাচার হতে বাধ্য হয়েছেন।’

ঢাকা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ নজরুল ইসলাম বলেন, ‘তিনি হত্যা মামলার আসামি। তিনি এই হত্যাকাণ্ডের উসকানিদাতা। এই মামলায় তার সর্বোচ্চ শাস্তি প্রত্যাশা করছি।’ 

ঢাকা আইনজীবী সমিতির সভাপতি খোরশেদ মিয়া আলম বলেন, ‘এমন একজন লোক কিভাবে প্রধান বিচারপতি হন, সেটা আমাদের বোধগম্য নয়। তিনি প্রধান বিচারপতি জায়গাটা কলঙ্কিত করেছেন। তিনি ছোট থেকেই অনেক পাপী ছিলেন। উনার যে পাপ শত বছর বাঁচলে কিছুটা পূরণ হবে।’

এরপর রাত ৮টা ৩২ মিনিটে বিদ্যুৎ চলে যায়। তখন মোবাইলের লাইট জ্বালিয়ে শুনানি শেষ করা হয়। এ সময় বিচারক বলেন, ‘আপনাদের কথায় অনেক কিছুই উঠে এসেছে। আপনারা বলছেন, আগে আপনারা বিচারকদের সম্মান করতেন, শ্রদ্ধা করতেন। কিন্তু কিছু কারণে আপনারা শ্রদ্ধার জায়গা থেকে সরে এসেছেন। মানুষের শ্রদ্ধা তার কর্মের মাধ্যমে অর্জন করতে হয়। কর্মের মধ্য দিয়েই ঘৃণা বা ভালোবাসা তৈরি হয়। এ ঘটনার (এ বি এম খায়রুল হক) মধ্য দিয়ে অনেক কিছু শেখার আছে। আপনি যদি শ্রদ্ধা করেন সেটাও আমার কর্মের কারণে, আবার ঘৃণা করলেও সেটাও কর্মের জন্যও।’ 

পরে শুনানি শেষে আদালত তাকে জেলহাজতে পাঠানোর আদেশ দেন। তবে শুনানিতে তার পক্ষে কোনো আইনজীবী ছিলেন না। শুনানি শেষে বিএনপি পন্থী আইনজীবীরা তার ফাঁসি চেয়ে বিক্ষোভ করেন। 

এর আগে বৃহস্পতিবার সকালে ধানমণ্ডির বাসা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। 

মামলা সূত্রে জানা গেছে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে গত বছরের ১৮ জুলাই সন্ধ্যা ৬টার দিকে যাত্রাবাড়ী থানাধীন এলাকায় আব্দুল কাইয়ুম আহাদের ওপরে হত্যার উদ্দেশ্যে গুলিবর্ষণ, ধারালো অস্ত্র দ্বারা আঘাত, টিয়ারশেল, সাউন্ড বোমসহ নানা ধরনের অস্ত্র দিয়ে আক্রমণ করা হয়। এ সময় গুলির আঘাতে আব্দুল কাইয়ুম আহাদের মুখে, বুকে গুলি লাগলে যাত্রাবাড়ী থানাধীন কাজলা পুলিশ বক্সের সামনে মাটিতে লুটে পড়ে। পরবর্তীতে আসামি যাত্রাবাড়ী থানার তৎকালীন ওসি আবুল হোসেন ভিকটিম আব্দুল কাইয়ুম আহাদের দুই পায়ে ব্রাশফায়ার করেন। ভিকটিম আহাদকে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। 

এ ঘটনায় গত ৬ জুলাই নিহতের বাবা মো. আলা উদ্দিন বাদী হয়ে যাত্রাবাড়ী থানায় মামলা করেন। এতে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ৪৬৭ জনকে এজাহারনামীয় ও অজ্ঞাত এক থেকে দুই হাজার ব্যক্তিকে আসামি করা হয়। এ মামলার এজাহারনামীয় ৪৪ নং আসামি হলেন এবিএম খায়রুল হক। 
 

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ