একজন ব্যক্তির আদর্শ ওজনের তুলনায় যদি ১০ ভাগ ওজন বেশি থাকে তবে তিনি স্থূলতায় ভুগছেন বলে ধরে নেওয়া হয়। এর মানে তিনি বেশি ওজনজনিত সমস্যায় ভুগছেন। বাংলাদেশেও সমস্যাটি দিন দিন বেড়ে চলছে। ফলে কিডনি, লিভার, ডায়াবেটিস, হার্টের রোগসহ নানা ধরনের অসুখে ভুগছেন অনেকে।
ওজন কমানো খাবার
- অতিরিক্ত ওজন ডায়াবেটিস, কিডনি, হার্টের রোগসহ নানা রকম স্বাস্থ্যঝুঁকির কারণ। বিশ্বব্যাপী ভয়ংকর সমস্যাগুলোর অন্যতম। খাবার যেমন ওজন বাড়ায়, তেমনি কিছু খাবার আবার ওজন কমায়ও। বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কথা বলে জানাচ্ছেন আতিফ আতাউর
অন্যান্য

বুঝেশুনে খাবার খাওয়া
চটজলদি ওজন কমাতে খাবার খেতে হবে জেনে-বুঝে। শরীরে যাতে ক্যালরির মাত্রা না বাড়ে, নজর রাখতে হবে সেদিকেও। তেলে ভাজা খাবার, কোল্ড ড্রিংকস, সাদা পাউরুটি, মিষ্টি ও জাংক ফুড এড়িয়ে চলতে হবে।
না খেয়ে থাকা নয়
অনেকেই মনে করেন, না খেয়ে থাকলেই বুঝি ওজন কমে। ধারণাটি একেবারেই ভুল। অতিরিক্ত ওজন কমাতে না খেয়ে থাকা কাজের কথা নয়। অনেকেই ওজন কমাতে খাওয়া কমিয়ে দেন কিংবা একবেলা খান না কিংবা এতটাই কম খান যে সারা দিন চলার মতো শক্তিও থাকে না। খাবার খেতে হবে। তবে হিসাব করে, পরিমাণমতো আর জেনে-বুঝে। বারডেম জেনারেল হাসপাতালের পুষ্টি বিভাগের সাবেক প্রধান পুষ্টিবিদ আখতারুন নাহার আলো বলেন, ‘ওজন কমাতে খাবার নিয়ন্ত্রণ করা উচিত। কিন্তু খাওয়া বাদ দেওয়া চলবে না। রোগ প্রতিরোধের জন্যও চাই সুষম খাবার। বুঝেশুনে না খেলে ওজন বাড়বে এটা যেমন ঠিক, তেমনি খাবার খেয়েই বাড়তি ওজন কমাতে হবে। এ জন্য সারা দিনের খাবারে কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন, শাকসবজি ও ফলমূল জাতীয় খাবার রাখতে হবে।
ব্যালান্স ডায়েট জরুরি
ওজন কমাতে দারুণ ভূমিকা রাখে ব্যালান্সড ডায়েট। মানুষকে সুস্থ ও সুন্দর রাখতে ব্যালান্সড ডায়েটের বিকল্প নেই। ডায়েট ঠিক না থাকলে চুল পড়ে, ত্বকের উজ্জ্বলতা কমে যায়, হাত ও পায়ের নখ ফেটে যায়, সহজেই ভেঙে যায়। অনেকেই রোগা হয়ে পড়েন। এ জন্য নিয়মিত সঠিক ডায়েট মেনে চলা জরুরি।
বিশেষজ্ঞের পরামর্শ
ওজন কমাতে কোন খাবার কী পরিমাণ খাবেন এটা নিয়ে দ্বিধায় ভোগেন বেশির ভাগ মানুষ। তার আগে আপনার ওজন বেশি কি না এটা জানতে হবে। এ জন্য পুষ্টিবিদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন। তিনি আপনার ওজন ও উচ্চতার হিসাব করে বের করবেন আপনি বেশি ওজন সমস্যায় ভুগছেন কি না। এরপর পুষ্টিবিদ আপনার ওজন ও উচ্চতার তারতম্যভেদে একটি সঠিক ব্যালান্সড ডায়েট চার্ট অথবা খাদ্যতালিকা নির্ধারণ করে দেবেন। এমন ডায়েটে সুষম খাদ্যতালিকা থেকে কিছু না কিছু নির্বাচন করে নেওয়া হয়। যেমন—কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন, ফলমূল, খনিজ, ভিটামিন ইত্যাদি।
ওজন কমাতে সঠিক খাদ্যতালিকা
ওজন কমানোর জন্য আপনার খাদ্যতালিকাটি পাঁচ থেকে ছয় বেলায় ভাগ করে নিন। সকালের খাবারে ক্যালরির পরিমাণকে প্রাধান্য দিতে হবে। সকালে বেশির ভাগ মানুষ পরোটা কিংবা ভাত খান। আপনার ওজন বেশি হলে পরোটা ও ভাত খাওয়ার অভ্যাস থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। পরিবর্তে লাল আটার রুটি খান। ডিম অমলেট না খেয়ে সিদ্ধ করে খান। ডিমে প্রচুর প্রোটিন রয়েছে, যা অনেকক্ষণ পেট ভরিয়ে রাখে। এ ছাড়া সকালের খাবারে মুরগির স্যুপ ও টক দই রাখতে পারেন।
সকালের নাশতা খাওয়ার পর ১০ থেকে ১১টার দিকে ফল খেতে পারেন। মৌসুমি ফল হলে ভালো হয়, বিশেষ করে পেঁপে, পেয়ারা, নাশপাতি, আমড়া কিংবা জাম্বুরা, আম ইত্যাদি।
দেড়টা থেকে ২টার মধ্যে দুপুরের খাবার খান। দুই থেকে তিন কাপ ভাত, এক কাপ সবজি, সালাদ এক কাপ, মাছ বা মাংসের টুকরা এবং অর্ধেক কাপ ডাল বেছে নিন। লাল চালের ভাত খান।
বিকেলের নাশতায় ফাস্টফুড জাতীয় খাবার পরিহার করতে হবে। পরিবর্তে ছোলা, ফলের সালাদ, সরবত খান।
রাতের খাবার ৯টার মধ্যে খেয়ে নিন। ওজন কমাতে চাইলে রাতে শর্করাজাতীয় খাবার এড়িয়ে চলুন। চেষ্টা করুন স্যুপ খাওয়ার। মুরগির মাংস বা ডালের স্যুপ খেতে পারেন কিংবা ডালের মধ্যে বিভিন্ন রকম সবজি মিশিয়ে এক বা দুই টুকরা মুরগির মাংস দিয়ে খেতে পারেন। চেষ্টা করুন ভাতের পরিবর্তে অন্য কিছু দিয়ে পেট ভরাতে।
দুপুর ও রাতের খাবারে সবাই কমবেশি মাছ খেয়ে থাকি। ওজন কমাতে চাইলে মাছ না ভেজে রান্না করে খেতে হবে। কারণ ১ চা চামচ তেল থেকে প্রায় ৪৫ কিলোক্যালরি পাওয়া যায়। এ জন্য ওজন কমাতে চাইলে খাদ্যতালিকা থেকে যথাসম্ভব তেল বাদ দেওয়ার চেষ্টা করতে হবে। আরেকটি জিনিস গুরুত্বপূর্ণ। সকালের চেয়ে রাতের খাবার অবশ্যই পরিমাণে কম হতে হবে। সকালে একটু বেশি খেলেও তেমন অসুবিধা হয় না। কারণ সারা দিন নানা কাজের মধ্য দিয়ে আমরা প্রচুর ক্যালরি বার্ন করি। কিন্তু রাতে খাবার খেয়ে ঘুমিয়ে যাওয়ার ফলে কায়িক পরিশ্রম হয় না বলে ক্যালরি বার্নের সুযোগ থাকে না। এতে ওজন বেড়ে যায়। ওজন কমাতে টক দই খুব ভালো কাজ করে। এ জন্য প্রতি বেলা খাবার খাওয়ার পর এক কাপ টক দই খেতে পারেন। এটা খাবার হজম করতে এবং ক্যালরি বার্ন করতে সাহায্য করে। এ ছাড়া প্রতিদিন দুই থেকে পাঁচটি বাদাম খেতে পারেন। বাদাম শরীরের ফ্যাট বার্ন করে। খাদ্যতালিকায় ওট মিল ও প্রচুর সালাদ রাখুন। মনে রাখতে হবে, ওজন কমানোর জন্য আমাদের শর্করাজাতীয় খাবার গ্রহণ কমাতে হবে। পরিবর্তে প্রোটিন, ফলমূল ও সবজি জাতীয় খাবার বেশি রাখতে হবে। রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করা ওজন কমানোর মূল চাবিকাঠি। তাই প্রতি বেলা খাবারের মাঝে খুব বেশি বিরতি রাখা যাবে না। বিরতি বেশি হলে রক্তে শর্করা বেড়ে ওজন বৃদ্ধি পায়। রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণে রাখতে চাইলে প্রতি বেলার খাবারের মাঝে চার ঘণ্টা বিরতি রাখুন। গবেষণা থেকে জানা গেছে, সময়মতো খাওয়া শরীরে মেদ জমতে বাধা দেয়। এ ছাড়া খাওয়ার আগে পানি খেয়ে নিতে পারেন। এতে পেট ভরে থাকার কারণে খাবার কম খাওয়া হয়।
ওজন কমানোর মাত্রা
ওজন ও উচ্চতা ভেদে আদর্শ ওজন ভিন্ন ভিন্ন হয়ে থাকে। আপনার ওজন অতিরিক্ত হয়ে থাকলে কতটুকু কমাবেন তা একজন পুষ্টিবিদের সঙ্গে পরামর্শ করে ঠিক করে নিন। কী কারণে ওজন বেড়েছে সেটা আগে জানা জরুরি; কিংবা ওজন বাড়ার ফলে শরীরের কোনো ক্ষতি হয়েছে কি না তা জানা দরকার। এ জন্য রক্তের হিমোগ্লোবিন, কোলেস্টেরল মাত্রা, ডায়াবেটিস ও থাইরয়েডের কিছু টেস্ট করিয়ে নিন। বয়স চল্লিশের বেশি হলে কিডনি ও লিভারের পরীক্ষা করিয়ে নেওয়া উচিত। তবে স্বল্প সময়ের মধ্যে বেশি ওজন কমাতে যাওয়া ঠিক নয়। এ জন্য পুষ্টিবিদের পরামর্শ মেনে চলুন।
দরকার শরীরচর্চাও
শুধু খাবার নয়, এর সঙ্গে যদি নিয়মিত শরীরচর্চা করা যায় তবে তা ওজন কমাতে আরো বেশি কাজে দেয় বলে জানান ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের অনারারি মেডিক্যাল অফিসার ডা. মো. রায়হান উদ্দিন।
তাঁর মতে, শুধু যে ওজন কমানো তা নয়, বরং সুস্থ থাকার জন্য প্রত্যেক ব্যক্তিরই দিনে কিছু সময় শরীরচর্চা করা উচিত। সকালে ব্যায়াম করা বা হাঁটা সবচেয়ে ভালো। সকালে সময় করতে না পারলে অফিস বা কাজ থেকে ফেরার পরে সিঁড়ি দিয়ে (পাঁচতলা পরিমাণ) টানা তিনবার ওঠানামা করলেও অনেক উপকার পাওয়া যায়। হাঁটতে হলে কমপক্ষে টানা ৩০ মিনিট একই গতিতে হাঁটুন। এতেও উপকার পাওয়া যায়। শরীরের রক্ত সঞ্চালন বাড়ে, ফ্যাট বার্ন হয়। ব্যায়ামে ঘামের ফলে শরীর থেকে বর্জ্য বের হয়, মন ফুরফুরে থাকে।
পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া
অতিরিক্ত ওজন কমানোর কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া আছে। তবে এগুলো তেমন ক্ষতিকর নয়। শুরুর দিকে অতিরিক্ত ক্ষুধাবোধ, শরীর দুর্বল অনুভূত হওয়া, মাথা ব্যথা, অবসাদ, ঘুম ঘুম ভাব পেয়ে বসতে পারে।
তবে শিগগিরই এসব পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার সঙ্গে শরীর মানিয়ে নেয়। ফলে আর কোনো অসুবিধা মোকাবেলা করতে হয় না।

কখন কোথায় কী

সাঁতার শেখার কোর্স
সাঁতার শেখার সুযোগ দিচ্ছে ঢাকা রিজেন্সি হোটেল অ্যান্ড রিসোর্ট। সুসজ্জিত সুইমিংপুলে অভিজ্ঞ প্রশিক্ষকের তত্ত্বাবধানে আগ্রহী যে কেউ সাঁতার শিখতে পারবে। এই কোর্সের অধীনে ২১ হাজার টাকায় রয়েছে ১৪টি সেশন। আগ্রহীদের জন্য রয়েছে তিন দিনের ফ্রি ট্রায়াল।
বিস্তারিত জানতে ফোন করুন এই নম্বরে ০১৭১৩৩৩২৫৪০।
মূল্যছাড়
কে ক্রাফটে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত মূল্যছাড়
ঋতু উপযোগী বিভিন্ন পোশাকের ওপর ৫০ শতাংশ পর্যন্ত মূল্য ছাড় দিচ্ছে কে ক্রাফট। মেয়েদের কামিজ, শাড়ি, টপস, টিউনিক, কটি, পোলো, টপস, স্কার্ট, টি-শার্ট এবং ছেলেদের শার্ট, ফতুয়া, পোলো, টি-শার্ট, ডেনিম জিন্স ও পাঞ্জাবিতে পাওয়া যাবে মূল্যছাড়। সোনামণিদের পোশাকেও মিলবে অফার। আউটলেট থেকে তো বটেই, অনলাইন কেনাকাটায়ও মিলবে এই মূল্যছাড়।
লা রিভে মিড সিজন সেল
লা রিভে চলছে মিড সিজন সেল ফেস্টিভাল ২০২৫। নারী, পুরুষ ও শিশুদের পোশাক কেনাকাটায় ব্র্যান্ডটিতে পাওয়া যাবে ফ্ল্যাট ৫০ শতাংশ মূল্যছাড়। সামার ক্যাজুয়াল, সামার উপযোগী পার্টি, অফিস টু পার্টি এবং কমফোর্ট ওয়্যারকে প্রাধান্য দিয়ে সাজানো হয়েছে এ বছরের মিড সিজন সেল। এই অফারে নারীদের জন্য টিউনিক, কামিজ, শাড়ি, আবায়া, টপ, কটি, শ্রাগ, টি-শার্ট, পালাজ্জো, স্কার্ট, হারেম লেগিংস, ফরমাল প্যান্ট এবং পুরুষদের জন্য পাঞ্জাবি, শার্ট, টি-শার্ট ও জিন্স প্যান্ট পাওয়া যাবে। শিশু ও নবজাতকদের জন্যও সুলভ মূল্যে মিলবে পোশাক।
সারায় মিলবে ৩০ শতাংশ ছাড়
প্রায় দুই লাখ পণ্যের ওপর ৩০ শতাংশ মূল্য ছাড় দিচ্ছে সারা। ১৫টি আউটলেট, ওয়েবসাইট ও সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম থেকে এই ছাড়ে পণ্য কিনতে পারবেন ক্রেতারা। এই অফার চলাকালে অন্য সব অফার বন্ধ থাকবে। পুরুষদের শার্ট, পাঞ্জাবি, কটি, পোলো ও টি-শার্ট এবং মেয়েদের টু-পিস, থ্রি-পিস, শার্ট, ক্রপ টপ, মডেস্ট, নাইট ওয়্যার, শাড়ি, ওড়না, পার্টি ওয়্যার, সিঙ্গল পিস, টি-শার্ট এবং ছোটদের জন্য শার্ট, জাম্পসুট, টু-পিস, কাবলি, কাতুয়া, পাঞ্জাবি ও ফ্রক পাওয়া যাবে।

জেলে নৌকায় টাঙ্গুয়ার হাওরে
- বর্ষা মৌসুমে সুনামগঞ্জের টাঙ্গুয়ার হাওর দেখলে সমুদ্র বলে ভ্রম হয়। বিস্তীর্ণ জলরাশি, করচগাছ ও মেঘালয় পাহাড়বেষ্টিত হাওর মন কাড়বে যে কারো। জেলে নৌকায় বিশাল জলরাশির এই হাওর ঘুরে এসে লিখেছেন সোহেলী তাহমিনা

সাঁতার জানি না বলে বেশ দোটানায় ভুগছিলাম। একজন ভ্রমণপ্রেমী বলেছিলেন, খুব সুন্দর জায়গা। শুধু বাথরুমের সমস্যা। কিন্তু ঠিক কী বোঝাতে চেয়েছিলেন, তখন বুঝতে পারিনি।

দলের সদস্য ৭২ জন।
পাহাড়ের কোলে ভারতীয় সীমান্তঘেঁষা ছোট্ট গ্রামটি প্রথমে ভালোভাবে দেখতে পারিনি। পৌঁছতেই সন্ধ্যা হয়ে গিয়েছিল। রাতে টেকেরঘাট বাজারে চা, ঝালমুড়ি খেয়ে নৌকায় ফিরে এলাম। একটু পর বসল গানের আসর। আসর শেষে মুরগির ঝোল ও সবজি দিয়ে রাতের খাবার শেষে আকাশে ফানুস ওড়ালাম। রাতে নৌকার ওপর চাদর বিছিয়ে ঘুমিয়ে পড়ল অনেকেই। কেউ কেউ চলে গেল ছইয়ের নিচে ঘুমাতে। সদস্য অনেক, তাই থাকার জন্য কটেজ এবং স্থানীয় লোকজনের বসতবাড়িতে ব্যবস্থা করা হয়েছিল। সেখানেও চলে গেল অনেকে। আমি শুয়ে পড়লাম নৌকার পাটাতনে। সকালে টেকেরঘাট দেখে প্রেমে পড়ে গেলাম, যেন ছোটবেলায় পড়া কোনো গল্পের বইয়ের পৃষ্ঠা থেকে তুলে আনা গ্রাম। এত সুন্দর! একটু দূরে নীলাদ্রি লেক। বাংলার কাশ্মীর নামে পরিচিত স্থানটির সৌন্দর্য উপভোগ করতে অল্প সময়ের জন্য ছোট্ট একটি ডিঙি নৌকা ভাড়া করলাম। নৌকায় ফিরে বৃষ্টিতে ছাতার নিচে বসে খিচুড়ি-ডিম দিয়ে সকালের নাশতা সারলাম। সকাল ১১টায় নৌকা বয়ে চলতে থাকল জাদুকাটা নদীর ওপর দিয়ে। ভারতের মেঘালয়ের পাহাড় থেকে সৃষ্ট নদীটির কাচবালি দেশের খনিজ শিল্পে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এই নদীর পারেই প্রায় ১৫০ ফুট উঁচু বারিক্কা টিলা। এখান থেকে নদীর অপরূপ দৃশ্য মন ভরিয়ে দেয়। দুপুরে জাদুকাটা নদীর পানিতে দাপাদাপি করে হাঁসের মাংস দিয়ে খাবার সেরে ফিরতি যাত্রা শুরু। পথেই রাত নেমে এলো। পূর্ণিমা রাত। পূর্ণ চাঁদের আলোর নিচে মনোমুগ্ধকর এক হাওর দেখার সৌভাগ্য হলো।
কিভাবে যাবেন
ঢাকা থেকে বাসে সুনামগঞ্জ। এরপর লেগুনায় যেতে হবে তাহিরপুর বাজার। বাজারের কাছেই ঘাটে বেড়ানো নৌকা পাবেন। দরদাম করে উঠে পড়বেন। ঢাকা থেকে সুনামগঞ্জ যাওয়া, হাওরে থাকা, খাওয়া এবং ফিরে আসতে প্যাকেজে জনপ্রতি পাঁচ থেকে সাত হাজার টাকা খরচ পড়বে।

আচার ভালো রাখার উপায়
- আচার মূলত মসলা আর লবণের কারসাজি। আম, জলপাই, তেঁতুল, বরই বা চালতা—যে ফলই হোক, মসলায় মিশে তা হয়ে ওঠে টক-ঝাল-মিষ্টি আচার, বাঙালির পাতে যার কদর বেশ। সংরক্ষণ করে সারা বছর এটি খাওয়া যায়। তবে কায়দা-কানুন না জানলে নষ্ট হয়ে যায় স্বাদের সেই আচার। আচার সংরক্ষণের পদ্ধতি জানাচ্ছেন তুলি রহমান

আচার খেতে ভালোবাসেন না এমন বাঙালি খুব কমই পাওয়া যাবে। একবার আচার তৈরি করে রাখলে দীর্ঘদিন ধরে খাওয়া যায়। তবে তৈরি করতে হবে ঠিকঠাক পদ্ধতিতে। তৈরি করেই নিশ্চিন্ত থাকার উপায় নেই।
রোদে আচার তাজা
আচার সংরক্ষণের ক্ষেত্রে রোদ অত্যন্ত জরুরি। তৈরির পর প্রথম এক সপ্তাহ প্রতিদিন আচারের বয়াম কিছুক্ষণ রোদে রাখতে হবে। এমনকি সারা বছর ধরেই মাঝেমধ্যে আচারের পাত্রটিকে কিছু সময় রোদে দিতে হবে—গ্রামের বাড়িতে উঠানে, শহরে বাড়ির ছাদে বা বারান্দায়।
তেল-মসলার সঠিক ব্যবহার
আচার তৈরির সময় ব্যবহূত মসলাগুলোও সংরক্ষণের উপযোগী হতে হবে। শুকনা খোলায় মসলা হালকা ভেজে নিলে সেগুলো বেশিদিন ভালো থাকে।
সঠিক পাত্র নির্বাচন
আচার সংরক্ষণের জন্য সঠিক পাত্র নির্বাচন অত্যন্ত জরুরি। সাধারণত কাচের পাত্র বা সিরামিকের পাত্রে আচার সংরক্ষণ করা হয়। কারণ এগুলোতে আচার দীর্ঘ সময় ভালো থাকে এবং এর স্বাদ থাকে অক্ষুণ্ন। তবে ব্যবহার করার আগে তা ভালোভাবে ধুয়ে, কড়া রোদে শুকিয়ে নেওয়া দরকার, যেন এক ফোঁটাও পানি না থাকে। জলীয় অংশ আচারের শত্রু। একবার পানির স্পর্শ লাগলে দ্রুতই সাধের আচার নষ্ট হয়ে যেতে পারে। কাচের পাত্রে আচার সংরক্ষণ করলে এর ভেতরের অংশ দেখা যায়। ফলে আচার নষ্ট হওয়ার কোনো লক্ষণ দেখা গেলে তা সহজেই চিহ্নিত করা সম্ভব হয়। প্লাস্টিকের পাত্র বা ধাতব পাত্র এড়িয়ে চলা উচিত। কারণ প্লাস্টিকের পাত্রে কেমিক্যাল লিক হতে পারে এবং ধাতব পাত্র আচারকে অক্সিডাইজ করে দিতে পারে। এতে আচার নষ্ট হয়ে যাবে এবং স্বাদও বদলে যাবে।
সংরক্ষণের স্থান
আচার সংরক্ষণের স্থান নির্বাচনও গুরুত্বপূর্ণ। ঠাণ্ডা, শুষ্ক এবং আলো-বাতাস চলাচল করে না এমন জায়গা আচারের জন্য সবচেয়ে ভালো। যেমন—রান্নাঘরের কেবিনেট বা আলমারির ওপরে। সরাসরি সূর্যের আলো আচারকে নষ্ট করতে পারে এবং এর প্রিজারভেটিভ ক্ষমতা কমিয়ে দেয়। স্বল্প সময়ের জন্য বানানো আচার ফ্রিজে সংরক্ষণ করা যেতে পারে। ফ্রিজের তাপমাত্রা আচারকে ঠাণ্ডা রাখে এবং এটি ব্যাকটেরিয়া বা ছত্রাকের বৃদ্ধিকে বাধা দেয়। আচার খারাপ হতে শুরু করলে সাধারণত ওপরের দিকে ছত্রাক দেখা যায়। যদি সেটি কেবল ওপরের অংশে থাকে এবং আচারের গভীরে না যায়, তবে ওই অংশটুকু সরিয়ে ফেলা যায়। তবে গন্ধে তীব্র পরিবর্তন এলে কিংবা আচারের ভেতরের অংশেও ছত্রাক ছড়িয়ে পড়লে পুরোটা ফেলে দিতে হবে।

ভেজা জুতার যত্ন
- বৃষ্টিতে বাইরে গেলে জুতা ভিজবেই। ভেজা জুতা বেশিক্ষণ পরে থাকা উচিত নয়। যত্ন না নিলে সহজেই জুতা নষ্ট হওয়ার ভয় থাকে। বর্ষায় জুতার যত্ন নিয়ে লিখেছেন আহমেদ ইমরান

বৃষ্টির দিনেও বাইরে যেতে হয় অনেকের। এ সময় পা ঢাকা জুতা বেছে নিতে পারেন। চেষ্টা করুন ছোট ছোট ছিদ্রযুক্ত জুতা পরার। এতে পা ভিজলেও দ্রুত শুকিয়ে যায়।
ভেজা জুতার যত্ন
১। ভেজা জুতা রোদে শুকাতে দেবেন না। এতে চামড়া শক্ত হয়ে যায় এবং ফেটে যেতে পারে।
২।
৩। শুকিয়ে গেলে ভেজা টিস্যু দিয়ে কাদা মুছে নিন।
৪। চামড়ার জুতা ভিজে গেলে সরাসরি রোদে না শুকিয়ে বাতাস অথবা জুতার ভেতর পুরনো পত্রিকা ভরে রেখে ধীরে ধীরে শুকাতে দিন।
৫। ভেজা জুতা নরম কাপড় দিয়ে মুছে পরিষ্কার করে তারপর শুকিয়ে পলিশ করুন।
৬। লেদার কন্ডিশনার ব্যবহার করুন। এতে চামড়া থাকবে নরম, জুতা থাকবে দীর্ঘস্থায়ী।
৭। অফিসে যাওয়ার পথে জুতায় কাদা লাগলে অফিসে পৌঁছে ভেজা টিস্যু দিয়ে পরিষ্কার করে এরপর শুকনা টিস্যু দিয়ে মুছে নিন।
যা করবেন না
৮। চামড়ার জুতা পরে বৃষ্টিতে হাঁটা থেকে বিরত থাকুন।
৯। ভেজা জুতা তুলে রাখবেন না।
১০। জুতায় কাদা লেগে গেলে সঙ্গে সঙ্গে ঘষবেন না। এতে জুতায় দাগ বসে যাবে।
১১। বৃষ্টির সময় পেনসিল বা বড় হিলের জুতা ব্যবহার না করাই ভালো। এতে পড়ে গিয়ে দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা থাকে।
১২। জুতা পরিষ্কারের জন্য সাবান ব্যবহার করা উচিত নয়।
টিপস
১। বৃষ্টির দিনে জুতায় ওয়াটারপ্রুফ স্প্রে ব্যবহার করতে পারেন। এতে জুতায় পানি লাগলেও সহজে ভিজবে না।
২। গাড়িতে অতিরিক্ত এক জোড়া জুতা সঙ্গে রাখতে পারেন। অফিস বা গন্তব্যস্থলে পৌঁছে ভেজা জুতা জোড়া খুলে অতিরিক্ত স্যান্ডেল বা স্লিপার পরে নিন।
৩। বৃষ্টির সময় বাইরে বের হলে জুতার ওপর রেইন শু কাভার পরে নিন। জুতায় পানি ও কাদা লাগবে না।
৪। রাস্তায় জমে থাকা ময়লা, পানি ও কাদা থেকে বাঁচতে উঁচু সোলের জুতা বা স্যান্ডেল পরুন।
৫। যাঁদের বৃষ্টির দিনে বেশি সময় বাইরে থাকতে হয়, তাঁদের পায়ের চারপাশ ঢেকে রাখে এমন জুতা ব্যবহার করা ভালো।