চিকিৎসকরা বলছেন, এবার ডেঙ্গু রোগের প্রবণতা ভিন্ন এবং লক্ষণ ভিন্ন ধরনের। এবার মূলত জ্বর কমে আসার পরই ডেঙ্গুজনিত জটিলতা বেশি দেখা যায়। তাই সাবধানতার পাশাপাশি জ্বর কমে আসার পর রোগীর পরিচর্যা গুরুত্বপূর্ণ। এ সময় রোগীর বেশ কিছু পরিচর্যা নেওয়ার কথা জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
জ্বর নেমে গেলে পরিচর্যাই আসল
কালের কণ্ঠ ডেস্ক

প্রতিবেদনে বলা হয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের খণ্ডকালীন শিক্ষক ও রাজধানী মোহাম্মদপুর এলাকার বাসিন্দা তাহমিনা আক্তার পলির সপ্তম শ্রেণিতে পড়ুয়া ছেলে নব জাহিদুল কবীরের গায়ে জ্বর উঠেছিল গত ২০ জুলাই। দেরি না করে দ্রুত তাঁরা সন্তানকে হাসপাতালে নিয়ে যান।
তাহমিনা আক্তার পলি বলেন, ‘যখন ছেলেকে হাসপাতালে নিলাম তখন জ্বর ছিল কম, কিন্তু রক্তচাপ কমে গিয়েছিল।
চিকিৎসকরা বলেন, এবারে যাদের ডেঙ্গু হয়েছে তাদের মধ্যে জ্বর খুব একটা বেশি উঠছে না। আবার উঠলেও সেটি দু-তিন দিনের মধ্যেই নেমে যাচ্ছে। তাঁদের মতে এবারের ডেঙ্গুর যে প্রবণতা সেটি আগের বছরগুলোর মতো নয়। এমনকি লক্ষণও কিছুটা ভিন্ন।
জ্বর নেমে গেলেও রোগীর পরিচর্যা জরুরি : বঙ্গবন্ধু মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্টারনাল মেডিসিন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক তানভীর ইসলাম বিবিসি বাংলাকে বলেন, তিন-চার দিনে জ্বর কমে আসার পরই মূলত ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর জটিলতা বেশি দেখা যাচ্ছে।
তিনি বলেন, রক্তের উপাদান কমে যাওয়া কিংবা রক্তের ঘনত্ব বেড়ে যাওয়ার মতো সমস্যা জ্বর চলে যাওয়ার পরেই দেখা যায়। অনেকে মনে করে, জ্বর কমে গেলে আশঙ্কা থাকবে না। আসলে তা নয়। জ্বর কমে গেলেও চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে হবে। তাহলেই ভয়ের কিছু থাকবে না।
তানভীর ইসলাম বলেন, যেসব জটিলতা সাধারণত দেখা যায় তা হলো রক্তের ভেতরের তরল অংশ বের হয়ে আসা, রক্ত ঘন হয়ে যাওয়া কিংবা রক্তের প্রেসার কমে যাওয়া। আর এর চিকিৎসা একটাই, স্যালাইন নেওয়া বা প্রয়োজনে শিরায় স্যালাইন নেওয়া।
তিনি বলেন, রক্তের প্লাটিলেট নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। প্লাটিলেট অতি মাত্রায় কমে না গেলে এ নিয়ে ব্যবস্থাও নিতে হয় না।
ডেঙ্গু ভাইরাস কি শরীরে থেকে যেতে পারে? : ডা. তানভীর বলেন, এ রকম কোনো সম্ভাবনা নেই। তাঁর মতে জ্বর চলে গেলে ভাইরাসটিও আস্তে আস্তে বিদায় নিতে থাকে। এরপর ভাইরাসের যেসব প্রতিক্রিয়া বিশেষ করে রক্তের তরল উপাদান কমে যাওয়া তার চিকিৎসা ঠিকমতো হওয়াটাই এর সমাধান।
ঝুঁকিগুলো কী হতে পারে : ডা. রাজীব কুমার সাহা বলেন, রোগী সচেতন হলেই ঝুঁকি এড়ানো যায়। কিন্তু বিলম্ব হলে ঝুঁকি তৈরি হয়। মোট কথা জ্বর চলে গেলেই যে ভালো হয়ে গেল তা নয়। পুরোপুরি বিশ্রাম নিতে হবে এবং প্রচুর পরিমাণে তরল খাবার খেতে হবে।
সম্পর্কিত খবর