বাঁশখালীর বৈলছড়ী ইউনিয়নের পূর্ব চেচুরিয়া গ্রামে গত ১০ দিন ধরে চলছে হাতির তাণ্ডব। হাতির দল লোকালয়ে এসে তছনছ করে দিচ্ছে ঘর-বাড়ি, কাঁঠালবাগান, আমবাগান, লিচুবাগান ও নানা জাতের সবজি ক্ষেত। গ্রামবাসী সনাতন পদ্ধতিতে হাতি তাড়ানোর ব্যবস্থা করলেও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ নীতিমালায় বন বিভাগের কোনো সহযোগিতা পাচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠেছে।
গত ৪ মাস আগেও ওই গ্রামের ১৭ জন কৃষক ও বাসিন্দা হাতির আক্রমণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল।
ওই ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ বাবদ বন বিভাগ থেকে ক্ষতির টাকা এসেছে। কিন্তু মোট ক্ষতিপূরণের পরিমাণ কত তা জানা যায়নি। তবে প্রত্যেক ক্ষতিগ্রস্ত ২০ হাজার থেকে সর্বোচ্চ ৫০ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ পাচ্ছেন বলে জানা গেছে। কিন্তু ক্ষতিগ্রস্তদের দাবি ক্ষতির তুলনায় আর্থিক সহায়তা খুবই নগণ্য। এক থেকে দেড় লাখ টাকা ক্ষতি হলেও ক্ষতিপূরণ সর্বোচ্চ ৫০ হাজার টাকা। গ্রামবাসীর দাবি পাহাড়ের বনাঞ্চল সুরক্ষা করে হাতির দলকে হাতির আবাসস্থলে ফিরিয়ে দিলে হাতির দল বনাঞ্চলে ফিরে যাবে। পাহাড়ে বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে পাহাড় কাটা, বালু উত্তোলন ও বনের গাছ কাটা চলমান থাকায় হাতির দল বনাঞ্চল ছেড়ে লোকালয়ে অবস্থান করছে। বন বিভাগের পক্ষ থেকে বনাঞ্চল ধ্বংসকারী কারো বিরুদ্ধে স্থায়ী পদক্ষেপ না থাকায় এই পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে অভিযোগ রয়েছে।
হাতির আক্রমণের পর গত ২৯ মে চট্টগ্রাম দক্ষিণ বন বিভাগের জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ কর্মকর্তা খোরশেদ আলমের নেতৃত্বে একটি দল পূর্ব চেচুরিয়ার খদুল্যাপাড়া, অভ্যারখীলসহ ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেন। গ্রামের কৃষক ও ক্ষতিগ্রস্তদের সঙ্গে সচেতনতামূলক বৈঠক করেছেন বলে দাবি করেছেন।
চেচুরিয়া গ্রামের বাসিন্দা ও কৃষক সঞ্জীব দেব, রবিউল হক, ফাতেমা বেগমসহ অনেকের অভিযোগ হাতির আক্রমণের ভয়ে গত ১০ দিন ধরে রাতে ঘুমোতে পারি না। সকালে ওঠে দেখি, সবজি ক্ষেত, কাঁঠালবাগান, আমবাগান তছনছ করে দিচ্ছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কোনো সহযোগিতা পাচ্ছি না।
হাতির আক্রমণ থেমে নেই। বিশালকার হাতিগুলো দৈত্যের মতো এসে সব তছনছ করে দিচ্ছে। চেচুরিয়া বনবিট অফিসে দায়িত্বরত কালীপুর রেঞ্জার মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, লোকালয়ে হাতির তাণ্ডব রুখতে আমরা নানামুখি পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি। ১৭ জনের ক্ষতিপূরণের চেক এসেছে। তা শিগগিরই বিতরণ করা হবে।
আরও ৭/৮ জন ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক নতুন করে ক্ষতির আবেদন করেছেন। তাও তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।